আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আধুনিক ইরান গড়তে চান সংস্কারপন্থী রুহানি

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ধর্মীয় নেতা হাসান রুহানি সংস্কার ও মধ্যপন্থী হিসেবে পরিচিত। নির্বাচনী প্রচারের সময় একটি আধুনিক ইরান গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
গত শুক্রবার দেশটিতে ১১তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিস্মিত করে ওই নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন রুহানি।
বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির প্রভাবশালী সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির অনুগত কট্টর রক্ষণশীল ছয়জন কট্টরপন্থী প্রার্থীকে হারিয়েছেন রুহানি।

সে হিসেবে তিনি ছিলেন কার্যত একজন বিরোধী প্রার্থী।
৬৪ বছর বয়স্ক রুহানি এক কোটি ৮৬ লাখ ভোট পেয়েছেন, যা প্রদত্ত ভোটের ৫০ দশমিক ৬৮ শতাংশ। অন্যদিকে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তেহরানের মেয়র কট্টরপন্থী নেতা মোহাম্মদ বাঘের ঘালিবাফ পেয়েছেন ৬০ লাখ ৭৭ হাজার ২৯২ ভোট, যা প্রদত্ত ভোটের ১৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ। রুহানি ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাওয়ায় তাঁকে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে অংশ নিতে হবে না।
হাসান রুহানির জন্ম ১৯৪৮ সালে ইরানের সেমনান প্রদেশের সোরখেহ শহরে।

ধর্মীয় পরিবারে বেরে ওঠা রুহানি ১৯৬০ সালে সেমনানে ইসলাম ধর্ম নিয়ে পড়ালেখা শুরু করেন। ১৯৬০ সালে ইরানের কোম নগরীতে চলে যান তিনি। সেখানে তিনি অনেক খ্যাতিমান ও জ্ঞানীগুণী শিক্ষাবিদদের সান্নিধ্য পান।
১৯৬৯ সালে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন রুহানি। ১৯৭২ সালে আইনশাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

১৯৯৫ সালে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো কালেডোনিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং ১৯৯৯ সালে পিএইচডি অর্জন করেন রুহানি।
তরুণ বয়সেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন রুহানি। ইরানের তত্কালীন শাসক রেজা শাহের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন তিনি। এ জন্য বেশ কয়েকবার কারাবরণও করেছেন।
ইরানে ইসলামী বিপ্লবের পর বেশ কয়েকবার সাংসদ নির্বাচিত হন রুহানি।

ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনী, পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকারসহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন এই ধর্মীয় নেতা।
ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সচিব হিসেবে ১৬ বছর কাজ করেছেন রুহানি। সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামির অধীনে ইরানের প্রধান পরমাণু মধ্যস্থতাকারী ছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি সর্বোচ্চ নেতার নীতি নির্ধারণী পরিষদের কৌশলগত গবেষণা কেন্দ্রের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন।
রুহানি কট্টরপন্থীদের বড় সমালোচক হিসেবে পরিচিত।

তিনি মনে করেন, প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদ পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি যে ধরনের নীতি অনুসরণ করছেন, তা ইরানকে চরম সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
রুহানির পেছনে সাবেক সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামি ও আরেক মধ্যপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট রাফসানজানির সমর্থন রয়েছে।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় কট্টরপন্থীদের সমালোচনা করে রুহানি বলেছেন, পশ্চিমাদের ব্যাপারে তাঁরা যে ধরনের নীতি অনুসরণ করছে, তা ইরানকে চরম সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছে। পশ্চিমাদের সঙ্গে আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টি করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে একটি আধুনিক ইরান গড়ারও কথা বলেছেন এই নেতা।


আহমাদিনেজাদের সমালোচনা করে রুহানি বলেছেন, তাঁকে অসচেতন, বেহিসাবি ও অদূরদর্শী কথাবার্তার জন্য দেশকে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে।
সংস্কারপন্থী রুহানি একাধিক ভাষায় দক্ষ। তিনি ইংরেজি, জার্মানি, ফ্রান্স, রুশ ও আরবিতে অনর্গল কথা বলতে পারেন। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।