আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ট্যাক্স না দিলে কি গুনাহ হবে ?

জীবন এক প্রবাহমান নদী, এখানে দু:খগুলো ভাটার মত, যা বাধ দিয়ে সংরক্ষনও করতে পারেন আবার জোয়ারের অপেক্ষায় ধৈর্যও ধরতে পারেন । ”তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছ, তোমরা আল্লাহ, তার রাসুল এবং তোমাদের মধ্যে যার হাতে কর্তৃত্ব রয়েছে তাদের মেনে চল “ কোরআন ৪:৫৯ হযরত আবু হুরাইরা রা: বলেন, মুহাম্মদ সা: বলেছেন যে আমাকে মেনে নিল যেন সে আল্লাহকে’ই মেনে নিল, আর যে আমাকে অমান্য করেছে সে যেন আল্লাহকে’ই অমান্য করল এবং যে তার নেতৃত্বস্থানীয়দের কথা মেনে নিল সে যেন আমাকে মেনে নিল আর যে মেনে নিল না সে যেন আমাকেই অমান্য করল । বুখারী এবং মুসলিম এই কোরআন এবং হাদীস উল্লেখ করার অর্থ হলো... আজকাল অনেকেই ধর্মের কথা বলে ট্যাক্স দিতে চায় না । বলে যে যাকাত’ত ২.৫% আমি কেন ১৫% কর দেব ! এরুপ যারা বলে তাদের বোঝার উদ্দেশ্যে এই আয়াত এবং হাদীস খানাই যথেষ্ট । এখানে, বুঝতে হবে যে কর হলো আমাদের সামাজিক ব্যবস্থা.... সামাজিক প্রতিষ্ঠান সংসদের নির্দেশ অনুযায়ী আমাদেরকে অবশ্যই কর দিতে হবে ।

যেহেতু আল্লাহ এবং তার রাসুল এ ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন সেহেতু কেউ যদি তা মানতে না চায় ...তাহলে ওই ব্যাক্তি নিঃসন্দেহে আল্লাহ এবং তার রাসুলের হুকুম অমান্য করল । এই হুকুম অমান্য করার মধ্যে রাষ্ট্রীয় সমস্ত আঈন-কানুন ও বিদ্যমান । মুসলিমদের অবশ্যই তা মেনে চলা উচিত । যদি কেউ বলে যে আমি ট্যাক্স দিলে তা দূর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ৭০% ই লুটেপুটে খাওয়া হবে….মানে দূর্নীতিতে সহযোগিতা করা হবে , যা আরেকটি পাপ কাজকে সহযোগিতার অপরাধে দুষ্ট হবে ! তাহলে তাকে বুঝতে হবে যে যদি সে কর না দেয় তবে সে তার নির্ধারিত কর না দিয়ে যেন ১০০% ই দূর্নীতি করে খেয়ে নিল ! মানে কর না দিয়ে সে আরো বেশি দূর্নীতিগ্রস্থ হয়ে গেল, আর বড় পাপ করে ফেলল । যদি কেউ বলে যে রাষ্ট্রীয় ট্যাক্স ২.৫% এর বেশি নিতে পারবে না….কারন এটা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমারেখা ! তাহলে তাকে এটাও বুঝতে হবে যে রাষ্ট্র তার প্রয়োজন অনুযায়ী জনপ্রতিনিধিদের সাথে পরামর্শ করে তার নিজস্ব প্রয়োজন অনুযায়ী কর নিতে পারবে ।

ব্যাপারটা অনেকটা এ রকম যে আপনার এলাকাতে জলাবদ্ধতার সমস্যা আছে , আর সে সমস্যা সমাধানের জন্যে এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে চাদাঁ তুলে যেন সেই সমস্যাটির সমাধান করলেন । তাহলে এখানে জনপ্রতি চাদাঁ নির্ধারনটা এলাকার নেতৃত্ব স্থানীয়রা সবার সাথে বসে নির্ধারন করেন…একই রকমভাবে রাষ্ট্র ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে বসে করের পরিমান নির্ধারন করতে পারবে । আপনি যেমন সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও এলাকাবাসীর সাথে শরীক না হয়ে উপায় নেই একই রকমভাবে রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত অমান্য করারও উপায় নেই । আপনি যদি গোয়ার্তুমি করে রাষ্ট্রীয় কর ফাকি দেন তাহলে কর আদায়ের শৃংখলা রক্ষার তাগিদে রাষ্ট্র আপনার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে পারবে । তবে এখানে এই দুটো করের মধ্যে একটু পার্থক্য আছে, পার্থক্যটা হলো রাষ্ট্রীয় কর আদায় করা হয় তার নাগরিকের আয় হতে কিন্তু ধর্মীয় কর আদায় করা হয় ধার্মিকের মোট জমানো সম্পদ হতে ।

মানে এক বছর যদি আপনি ১০ লক্ষ টাকা আয় করেন তাহলে আপনাকে ১৫% হারে ১.৫লক্ষ টাকা কর দিতে হবে । আর ধর্মীয় ক্ষেত্রে, আপনি আগের বছর যত টাকাই যাকাত দেন না কেন, ওই বছরগুলোর জমানো টাকা সহ এ বছরের জমানো টাকারও ২.৫% হারে যাকাত দিতে হবে । এখানে যাকাতের নিসাব হচ্ছে ৫২.৫ ভরি রুপা বা ১২০০ টাকা ভরি হিসেবে ৬৩,০০০ টাকা । এখানে, একটি কথা যাকাত কিন্তু দান নয়….একই রকমভাবে করও দান নয় । দুটোই দেওয়া আপনাদের সামাজিক এবং ধর্মীয় দায়িত্ব ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.