আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুভি রিভিউঃ Nausicaä of the Valley of the Wind (1984)

স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা অনেকেই হয়তো নাক সিঁটকাবেন ১৯৮৪ সালের একটা জাপানিজ ২ডি অ্যানিমেশন ফিল্ম এর কথা বলছি দেখে। কিন্তু ট্রাস্ট মি, আপনি যদি সিনেমাভক্ত হয়ে থাকেন তাহলে এই সিনেমা না দেখলে মনে করবেন জীবনে একটা কিছু মিস করে ফেলেছেন। আমি অনেকদিন ধরেই এটার কাভার পিক টা যেখানে সেখানে দেখছিলাম - অনেকদিন মানে প্রায় ৪ বছর - কিন্তু কোন না কোন কারনে দেখা হচ্ছিলো না। কাল রাতে কি মনে করে দেখতে বসলাম; এবং ১০ মিনিটের মাথায় ঘুমিয়ে গেলাম। যা মনে করছেন তা নয়, মুভিটা বোরিং না, আমি নিজে খুব টায়ার্ড ছিলাম ১১৬ মিনিটের এই সিনেমার প্রথম ৩০ মিনিট একটু স্লো মনে হতে পারে যেহেতু শুরুর দিকে ডিরেক্টর হায়াও মিয়াজাকি চরিত্রগুলো এবং পরিবেশ ও পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারনা দেয়ার চেষ্টা করেছেন।

কিন্তু ৩০ মিনিটের মাথায় একটি অ্যাকশন দিয়ে সেই যে আপনি ফিল্মে ঢুকবেন, এরপর বের হতে গিয়ে আপনার কষ্ট হবে। আইএমডিবি তে ৮.১ এবং রোটেন টমেটোতে ৮২% পাওয়া এই ফিল্ম ১৯৮৪ সালে নির্মান করা হলেও এর ব্যাপ্তি অনেকদূর যেহেতু এটা হাজার বছর পরের কোন একটা সময়ের কথা বলা হচ্ছে। ইকোলজী এবং ফ্যান্টাসীর চরম উপমা হতে পারে এই সিনেমাটি। পরিচালক হায়াও মিয়াজাকির তার সাই-ফাই কমিক সিরিজ 'নসিকা অফ দ্যা ভ্যালে অফ অফ দ্যা উইন্ড' এর প্রথম ৬ টি চ্যাপ্টার নিয়ে তৈরী করেছিলেন এই এপিক মাস্টারপিস। চলুন দেখে আসি মুভির ট্রেইলারটি সিনেমাটর স্কোর করেছেন জো হিসাইশি।

ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর গুলো এখনো অনেক জনপ্রিয়। অন্য একটা স্কোর শুনুন এই মুভি থেকে। খেয়াল করে দেখবেন অনেক পরিচিত গানের ছোয়া পাচ্ছেন তবে এটি কিন্তু সেই ১৯৮৪ সালেই করা। ও আচ্ছা, কাহিনী কই নাই, না?? দেখলেই তো হয় রে ভাই; জেনে যাবেন পৃথিবীতে ঘটে গেছে বিশাল এক যুদ্ধ। তারপর কেটে গিয়েছে এক হাজার বছর।

সারা বিশ্ব দুষিত বাতাসে ভরপুর এবং জঙ্গলগুলো বিভিন্ন প্রজাতির পোকা মাকড়ে ভরপুর। এর মাঝে অল্প কিছু ছোট খাটো রাজ্য টিকে আছে এদিক সেদিক। ভ্যেলে অফ দ্যা উইন্ড হলো এরকম একটি ছোট রাজ্য যে রাজ্যের প্রিন্সেস ঘিরেই সিনেমার গল্প এগিয়েছে। প্রিন্সেস নসিকা একাধারে ফাইটার যে কিনা তার রাজ্যের অধিবাসীদের বাঁচাতে বদ্ধ পরিপক্কর, আবার অন্যদিকে পোকামাকড় মেরে বিষাক্ত জঙ্গল সাফ করার বিপক্ষে। অল্প বয়সী এই মেয়েটির চরিত্রে যেমন আমরা কোমলতা দেখতে পাই, তেমনি দেখতে পাই প্রয়োজনে সে কঠোর হতে জানে।

অন্য একটি রাজ্য থেকে সোলজার পাঠানো হয় যেনো ভ্যালে অফ দ্যা উইন্ড এর পাশের বিষাক্ত জঙ্গল থেকে সকল পোকামাকড় মেরে ফেলা হয়। কিন্তু নসিকা জানতে পারে যে পোকা মাকড়দের মেরে ফেললে তার রাজ্য এবং তার লোকজন সবার আগে মারা যাবে। প্রায় ৩০০ বছর ধরে পোকামাকড়দের পাশেই ঘর বসতি করে আসছে ওরা, জঙ্গলের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে, এছাড়া বিশেষ ক্ষমতাবলে নসিকা জানে যে পোকা মাকড়রা আসলে মানব জাতির জন্য ক্ষতির কারন নয়। খুবই আর্টিস্টিক উপায়ে পরিচালক মিয়াজাকি উপস্থাপন করেছেন আমাদের পরিবেশ-সচতেনতা বাড়ানোর কথা। খুব স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে যে আমাদের উচিত আমাদের জঙ্গল কেতে সাফ না করা।

পোকামাকড় তাদের নিজ নিজ কাজ করছে, তারা মানব সভ্যতার জন্য উপকারী ও বটে। নসিকাকে পদে পদে বিপদের মুখে ফেলে রাইটার-ডিরেক্টর মিয়াজাকি ফিল্মীওভাব সম্পূর্ন অক্ষুন্ন রেখেছেন। টরেন্ট লিঙ্ক (৭০০ মেগাবাইট) - Click This Link স্টেজভু লিঙ্ক (৮৮৪ মেগাবাইট) - http://stagevu.com/video/pizhcnvfhsif কিছু তথ্যঃ যদিও ১৯৮৪ সালের মার্চের ৪ তারিখ টয়েই কোম্পানী নসিকা মুভিটি রিলিজ দেয় এবং শুরুতেই মিলিওন টিকেট বিক্রী করে থাকে, তথাপি সে সময়ে নিউ ওয়ার্ল্ড পিকচার্স নর্থ আমেরিকায় এই সিনেমাটি রি-এডিট করে বাজারে ছাড়ে। কিন্তু শিশুতোষ করতে গিয়ে তারা মুল সিনেমাকে এতো বেহসী এডিট করে ফেলে যে সেটা তেমন মার্কেট পায়নি। নিউ ওয়ার্ল্ড পিকচার্স সেই সিনেমার নাম দিয়েছিলো ওয়ারিওর অফ দ্যা উইন্ড - যারা এটা দেখেছেন তাদের জন্য রইলো সমবেদনা ... পরবর্তীতে ২০০৫ সালে বেনা ভিস্তা হোম এন্টারটেইনম্যান্ট বাজারে নিয়ে আসে নসিকার আন-কাট এবং আন-ডাবড ভার্সন।

অবশ্য তারা ডিভিডিতে ইংলিশ সাবটেইটেল যুক্ত করে দেয়। ২০১১ তে মঞ্চে আসে ডিজনী ডিজনী স্টুডিও এই মুভির ব্লুরে ভার্সন বাজারে ছাড়ে এবং তার অনেক আগেই এটার ইংলিশ ডাবড ভার্সন রিলিজ পায়। উল্লেখ্য, ইংলিশ ভার্সনে কিল-বিল খ্যাত উমা থারমানের ভয়েস রয়েছে ১৯৮৪ সালে এই সিনেমা অ্যানিমেইগ অ্যানিমে গ্র্যন্ড প্রিক্স পুরষ্কার জিতে নেয়।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.