আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন আশাবাদী পথিক আমি: পথের মাঝে পথ খুঁজি...

লেবাসধারীতা থেকে মুক্তি পাওয়ার এক যন্ত্রনায় ছটফট আমার আর্তনাদ। দুঃখ-কষ্ট, আনন্দ-বেদনার এ জীবনে মানুষ সুখ খুঁজতে চেষ্টা করেছে কখনও গণতন্ত্র, কখনও সামন্ততন্ত্র, কখনও সমাজতন্ত্র আবার কখনও ধর্মীয় বিধানের মাঝে। সর্বদা সুখ পেয়েছে একটি গোষ্ঠী। বঞ্চিত গোষ্ঠী আবার ব্যস্ত ছিল নতুন পথের সন্ধানে। আবার প্রচলিত পথের ব্যর্থতাও প্রেরণা জুগিয়েছে নতুন পথ খুঁজতে।

এই তো জীবন, ইতিহাসের কালক্রম। সভ্যতার এ ধারাবাহিকতায় বঞ্চিত জনগোষ্ঠী বারবার প্রমাণ করেছে তারাও মানুষ! মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার অধিকার তাদেরও ছিল, আছে। তারাও পেতে চায় সভ্যতার আলো। একে একে পতন ঘটিয়ে দিয়েছিল পুরাতন জীর্ণতা, আবিষ্কার করেছিল নতুন নিশানা। জীবন জগতের এসব নব নব পথের সন্ধান, বিপ্লবের চাবিকাঠি সব সময় নিয়ন্ত্রণ করছিল চেতনায় জাগ্রত তরুণরা।

এটা যে ধ্রুব সত্য নতুন পথ নির্মাণে উদ্দাম তারুণ্যের বিকল্প নেই। তারুণ্য আঁকড়ে থাকা ক্ষমতাগোষ্ঠীকে গুঁড়িয়ে দিয়ে বারবার উন্মোচন করেছিল এবং করছে নতুন দিগন্তের। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আরব বিশ্বের তরুণ চেতনা জানান দিতে সক্ষম হয়েছিল এখনও আমরা পারি নব দ্বার খুলতে। নতুন এ বিপ্লবের বারুদ তরুণ আরবরা অগোচরে যেন তৈরি করে রাখছিল। তিউনিসীয় তরুণ বুআজিজির আত্মাহুতির বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিল বিদ্রোহের এ দাবানল।

যার আত্মত্যাগ নাড়া দিয়েছিল আরব তরুণের পুঞ্জীভূত ক্ষোভকে। যার প্রেরণাই হাজার হাজার মানুষ নেমে এসেছিল রাস্তায়। মরণকে তুচ্ছজ্ঞান করে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছিল। ছিনিয়ে আনল বিজয়। বের করল নতুন পথ।

এরপর মাত্র ১৮ দিনের গণবিপ্লবে মিসরের লৌহমানব হোসনি মোবারকের পতন। এরপর সে আগুন যেন মশাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ল আরব জাহানে। আরব বিপ্লবের এ শক্তি নিহিত ছিল তরুণদের চেতনায়। তারা বিশ্বের বঞ্চিত মানুষকে জানিয়ে দিয়েছে, বিপ্লবেই মুক্তি, নবপথ সৃষ্টিই মুক্তি। আমরা বাংলাদেশী, স্বাধীন হয়েছি, স্বাধীনতার ৪০ বছর পার করেছি।

পারিনি স্বাধীনতার সে অপূর্ণ স্বাদ মেটাতে। কারণ সত্যিকারের গণতন্ত্র বা জনগণ-বান্ধবতন্ত্র এ দেশের শাসকরা দিতে পারেনি। দেশ চলে আসছে ইচ্ছা-মর্জিরতন্ত্রে। সংসদীয় ব্যবস্থা, বাকশাল ব্যবস্থা, সামরিক শাসন, প্রেসিডেন্টের শাসন নানা নামে এলেও এক ব্যক্তিরই শাসন। নব্বইয়ের পর থেকে রাজনীতি হয়ে উঠেছে উত্তরাধিকারতান্ত্রিক, পরিবারতান্ত্রিক, গোষ্ঠীতান্ত্রিক।

দিন যত যাচ্ছে উত্তরাধিকারতন্ত্রের এই জগদ্দল পাথরটা উত্কটভাবে দৃশ্যমান বেশি হচ্ছে। অনেকটা হাল ছেড়ে মানুষ ভেবে নিয়েছে মুক্তি আর সম্ভব নয়। দেশে যে নির্বাচনের ব্যবস্থা আছে তা গত ২০ বছর ধরেই ‘একই লোক’ মাতায়। একই কাজ একই চরিত্র। শুধু চেহারা ভিন্ন, দলের নাম ভিন্ন! তাই বঞ্চিত গোষ্ঠীবঞ্চিত রয়েই যাচ্ছে।

শাসনব্যবস্থা বদলানো হয়তো সময় সাধনার ব্যাপার। কিন্তু সামাজিক শক্তির আবির্ভাব ঘোচাতে পারবে এ বঞ্চনাগুলো। এক সময় সম্ভব হবে নতুন স্বপ্ন বাস্তবায়নের। স্বপ্ন দেখছি, একদিন এক বীর এসে মুক্তি দেবে। কারণ দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে বিকল্প থাকবে না, তখনই আগমন ঘটবে।

আজকের এ পথ থেকে বের হবে সে নতুন পথ। তখন মাতম উঠবে বিদ্রোহের, নতুন পথের, নতুন দিনের। এ বীরের আগমন ঘটবে পরিবর্তনের আশা হয়ে, জাগরণের সংকল্প হয়ে, নাম হবে জনগণ, এর চেহারা হবে তারুণ্যে ভরপুর, এর প্রকাশ হবে নতুন পথের উন্মোচন। আমি সেই আশাবাদী তরুণ। স্বপ্ন বুনতে ভালবাসি, লালন করতে পছন্দ করি।

স্বপ্নেরা ও আশারা ফিরে আসুক বাস্তবে-এই প্রত্যাশায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.