আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অতীতে ফিরে যাবার জটিলতা এবং পার্টিক্যাল ফিজিক্স!

আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই! সকাল বেলা হাটতে বেরুলেন রহমান সাহেব। বয়সের এই সময়টায় তিনি ভুগছেন রক্তের উচ্চচাপ আর ডায়াবেটিসে। হার্টের অবস্হাও ভালো নয়। শরীরে বাতের কারনে কঠিন কোনো কাজও করতে পারেন না।

তাই সকাল বেলা হাটার নির্দেশ। সকাল বেলা হাটতে বেরিয়ে রহমান সাহেবের প্রথম কাজ হলো পার্কটাকে ৩ বার চক্কর দেয়া। তারপর একটা সিগারেট ধরানো এবং কোথাও বসে পুরোনো স্মৃতি চারন করা নিজের সাথে। তারপর একটু বাজারের দিকে হাটা দেয়া। দিন যত যায় তার বয়স বাড়ছে, এরকম হাটাহাটির পর লুকিয়ে লুকিয়ে সিগারেট খেয়ে তার যে খুব একটা লাভ হচ্ছে সেটা নয়, আসলে ক্ষতিই বেশী হচ্ছে! উপরের ঘটনাটার আসল কথা হলো আমরা সবাই ভবিষ্যতের দিকে এগুচ্ছি।

আমাদের কারো অবস্হা অতীতের মতো হওয়া সম্ভব না। রহমান সাহেব আবারও কখনো ২৫ বছরের যুবকের ন্যায় শক্তিশালী হার্ট পাবেন না অথবা যৌবনের সেই দিন গুলো ফিরে পাবেন না। এটাই আমাদের দুনিয়ার রীতি!একে বলে সময়ের তীর সামনের দিকে। কিন্তু দুনিয়ার রীতি পার্টিক্যাল ফিজিক্সে খাটে না। সোজা বাংলায় ধরেন আপনি একটা মাইক্রোস্কোপে একটা এটমে চোখ রেখে দেখলেন ইলেক্ট্রন গুলো কোয়ান্টাম জাম্প দিয়ে এক এনার্জী স্তর থেকে অন্য এনার্জী স্তরে যাবার সময় ফোটন নির্গত হচ্ছে আবার ইলেক্ট্রন সেই এনার্জী স্তরে ফিরে আসছে।

আপনি ধরতে পারবেন কোনটা কখন কার বর্তমান বা ভবিষ্যত বা অতীত রূপ। যেখানে সময়টা অনেকখানী আপেক্ষিক। এখানে সময়ের তীর সামনে পিছনে দুটোই হতে পারে। মূল কাহিনীতে যাই। সিপি সিমেট্রি আর ভায়োলেশন: সিমেট্রি বা প্রতিসাম্য একটা দারুন জিনিস।

আপনি আয়নার সামনে দাড়ালে আপনি নিজেকেই দেখবেন। চুলে স্টাইল থেকে শুরু করে সবকিছু কিন্তু সমস্যা একটাই আপনার উল্টা ছবি দেখবেন। বাম ডান এসপার ওসপার হওয়া। একে বলে প্রতিসাম্য। পার্টিক্যাল ফিজিক্সেও এমন কিছু আছে তবে সেখানে আয়না ব্যাব হার ছারাই এরকম যমজ পাওয়া যায়।

পার্টিক্যাল, এন্টি পার্টিক্যাল আরকি। ধরেন আপনারা দুই যমজ বোন। সামনা সামানি দাড়ালে আপনাদের সবকিছুই এক কিন্তু ঐ ডান বাম। পার্টিক্যালের ক্ষেত্রে ধরেন একটা ব্যারিওনিক পার্টিক্যাল(তিনটি (১/৩+১/৩+১/৩=১) কোয়ার্ক দিয়ে গঠিত কনিকা) যদি পজিটিভ চার্জ বিশিষ্ট হয় তাহলে এর এন্টি পার্টিক্যাল হবে নেগেটিভ চার্জের। একে বলে চার্জ কনজ্যুগেট মানে যমজ চার্জ।

যেমন আপনারা দুটো যমজ বোন। এটা হলো সিপি সিমেট্রির সি সিমেট্রি। এখন পি সিমেট্রিতে আসি। এখন ধরেন আমি এমন একটা পার্টিক্যাল নিলাম যার কোনো চার্জ নাই ধরা যাক একটা চার্জ নিরপেক্ষ পাইওন। এই পাইওন শুধু ঘুরে।

এক ধরনের পাইওন আছে বাম দিকে ঘুরে আর এর যমজটা আছে ডান দিকে ঘুরে। একটা একটার উল্টো কাজ করে। এটা হলো পি সিমেট্রি। তাহলে আমরা যদি সিপি সিমেট্রির কথা বলি তাহলে সেরকম একটা কনা হলো আমাদের ইলেক্ট্রন। চার্জ নেগেটিভ বাম ঘূর্নী আর এর এন্টি ইলেকট্রন যাকে আমরা পজিট্রন হিসেবে চিনি সে পজিটিভ চার্জের ডান ঘূর্নী।

এটা হলো সিপি সিমেট্রি। সিপি ভায়োলেশন হলো এর কোনোটার ব্যাতিক্রম হলে। যেমন নীচের কায়ন সিস্টেম আমরা সহজ ভাবে বলতে পারি। নীচের সিস্টেমে ব্যারিওনিক পার্টিক্যালের মধ্যে থাকা স্ট্র্যান্জ কোয়ার্কের যমজ হিসেবে দুটো ব্যারিওনিক পার্টিক্যাল নেই যেটাকে তার নিজস্ব চ্যানেলে ক্ষয় হবার সুযোগ দেই। সিপি সিমেট্রি অনুযায়ী নীচের ছবির মতো এদের কাজ করবার কথা।

এই ছবি অনুযায়ী ঠিক থাকলেও যখন আমরা এটাকে গ্রাফে নিয়ে যাই তখন বেশ কিছু অসঙ্গতি দেখতে পাই। উপরের ছবি অনুযায়ী বায়ের দুটো গ্রাফ K++π− এর সর্বেশেষ দশা আর ডানের দুটো K−+π+ এর সর্বেশষ দশা। নীচের দুটো ছবি উপরের ছবি দুটোর সাথে মিলে গেলেও y অক্ষাংশে একটু সমস্যা আছে। কালচে নীলটা পুরো মিল আছে, লাল দাগ Bd→K+π কে নির্দেশ করে, কালচে লালটা Bd→K+π এর ভুল চিহ্ন আর হালকা নীল টা Bd→π+π ভালো করে আইনডেন্টিফাই করা যায় নি, হলুদ লাইনের Bs→K+K একই অবস্হা। সবুজ লাইনটা হলো Bs→K+π।

উপরের ড্যাশ লাল লাইন টা Bd এবং Bˉd এর এমপ্লিচুডের তারতম্য আর নীচের সবুজ ড্যাশ লাইনটা বুঝাচ্ছে Bs এবং Bˉs তারতম্য! তারমানে পার্থক্য পাওয়া গেলো এমপ্লিচুডে। এটাই হলো সিপি ভায়োলেশন। সিপিটি ভায়োলেশন: এখানে এক্সট্রা টি ভায়োলেশন হলো সময়ের ব্যাপার। ধরা যাক একটা পার্টিক্যালকে আমরা যদি তার ক্ষয়ের বিভিন্ন সময়ের হিসাব বিবেচনা করি তাহলে কি হবে? কি দৃশ্য হওয়া উচিত। প্রথমে আমরা যদি টাইম সিমেট্রির কথা চিন্তা করি তাহলে নীচের ছবিটা বুঝতে সহায়তা করবে! এই ছবিটা ক্রামারের থিওরী অনুসারে পি সিমেট্রির উপর ভিত্তি করে বানানো।

কিন্তু বাস্তবে এই মহাবিশ্বে টাইম সিমেট্রি সম্ভব না। এর প্রধান কারন হলো থার্মোডিনামিক্সের দ্বিতীয় সূত্র। এক্সটার্নাল ম্যাকানিজম বা ফোর্স নিয়ে কথা বলা যায় হয়তো কিন্তু সেটা এখানে আপাতত সম্ভব না, তবে ভবিষ্যতে যে অসম্ভব হতে পারে সেটাও বলাটা বোকামী (কেন বোকামী সেটা নিয়ে আলোচনা করলে অনেক বড় হয়ে যাবে পোস্টটি, তবে যারা বিশ্বাস করে টাইম মেশিন আবিষ্কার সম্ভব এবং ফিজিক্সের নিগূঢ় বিষয় সমূহ নোখের ডগায় তারা এই আলোচনায় অংশগ্রহন করতে পারেন কমেন্টে!) তার মানে বাস্তবিক অর্থে সিপিটি ভায়োলেশনটাই আমরা দেখছি যেটা প্রকৃতি নিজে নিজে ধারন করতে পারেনি (হয়তো)। এক্সপেরিমেন্ট: ২ দিন আগে বাবর ( BaBar ) কোলাবোরেশন কিছু ডাটা জার্নাল আকারে প্রকাশ করে যেখানে এরকম সিপিটি ভায়োলেশন খুজে পাওয়া যায়। এখানে বি মেসন কনিকার বিভিন্ন ক্ষয়ের উপরই এরা এক্সপেরিম্যান্ট চালিয়েছে যেখানে দেখা গেছে উপসাইলন (4S) কনিকা হতে বি মেসনের দুটো এনট্যাঙ্গলড রূপের যে ক্ষয় দেখা যায় সেই ক্ষয়ের ফলের রুপান্তরিত অবস্হাগুলোতে অনুরূপ সিপিটি ভায়োলেশন ঘটেছে! কেন কিভাবে কি জন্য ঘটলো সেটা নিয়ে আলোচনা করলে পোস্ট অনেক বড় হয়ে যাবে এবং সেটা নিয়ে আলোচনা করা যাবে কমেন্টে কিন্তু আমরা নীচের চারটা ছবি দেখি তাহলে ব্যাপারটা একটু ক্লিয়ার হবে! উপরে চিত্রগুলোতে যে ক্ষয় গুলো হয়েছে তার বর্ননা a) B0 → B− (ℓ+X, c¸K0 S), b)B+ → B0 (c¸K0 S, ℓ+X), c) B0 → B+ (ℓ+X, J/ψK0 L), d)B− → B0 (J/ψK0L, ℓ+X) এই ইকোয়েশন দেখে ভয়ের কিছু নাই।

এগুলো বুঝতে হবে এমন কোনো কথা নাই শুধু দিলাম কারন ডিরেকশন বুঝবার জন্য। ছবি তে দেখেন a) এবং d) গ্রাফে B0 আর B- যখন একে অপরের সাথে রুপে রূপান্তর হলো তখন তাদের লাল লাইনের এমপ্লিচুডটা দেখেন সমান নয়। আবার বাকী দুটো গ্রাফে তাদের পরিবর্তনটাও একরকম না। কতটা কম বেশী সেটা নিরূপনের জন্য নীচের যোগ বিয়োগ করে দেখেন: S+(ℓ+,K0)=0.55 ± 0.09 ± 0.06 S−(ℓ+,K0)=−0.66 ± 0.06 ± 0.04 C+(ℓ+,K0)=0.01 ± 0.07 ± 0.05 C−(ℓ+,K0)=−0.05 ± 0.06 ± 0.03 উপসংহার: আসলে এইটা দিয়ে কি বুঝাতে চাইলাম। সময় বলতে আসলে ফিজিক্যালি কোনো মাত্রা পাই না যেটা পাই সেটা হলো অনেকটা এর ফলে আমাদের চলমান ধাবমান ক্ষমতা ভবিষ্যতের দিকে।

আমরা যা করে এসেছি বা আমাদের যে পূর্বাবস্হা ছিলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমরা ফিরে যেতে পারি না। তবে এটা এমন না যে এটা সম্ভব না। প্রকৃতি আজ যে মহীরুহ হয়ে আমাদের লালন করছে সেটার পিছনে প্রকৃতি যেসব প্রক্রিয়ায় গঠিত সেসব প্রক্রিয়াগত কারনেই টাকে পূর্বাবস্হায় ফিরে যেটে হয়। কোনো কারনে সেটা আগের মতো মসৃন না, ফলে পূর্বাবস্হায় ফিরে গেলেও বেশ কিছু তারতম্য থাকে। ধরা যাক আপনি এখন ৬০ বছরের বৃদ্ধ, আপনাকে যদি পূর্বাবস্হায় ফিরে যেটে হয় মানে ২৫ বছরের যুবক তাহলে দেখা যাবে তখন আপনি যেরকম শক্তিশালী বা যেরকম হবার কথা সেরকম আপনি হবেন না, তবে অনুরূপ হবেন আশা করা যায়! এটাই হলো এই এক্সপেরিমেন্টের মূল কনসেপ্ট! তবে এই এক্সপেরিমেন্ট মূল দিক হলো এটা পার্টিক্যাল লেভেলে কাজ করবে, আমাদের এই বাস্তবিক জগতে কাজ করার মতো সময় বা ভবিষ্যদ্বানী করার মতো সময় এখনো আসেনি।

তবে আমরা আশা করতে পারি যেহেতু পার্টিক্যাল লেভেলে এটা সম্ভব সেহেতু কেন নয় আমাদের লেভেলে!!!! সূত্র: Click This Link Click This Link http://en.wikipedia.org/wiki/T-symmetry http://en.wikipedia.org/wiki/B_meson ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.