আমি হুমায়ুন আহমেদ পড়া শুরু করি কলেজ জীবন থেকে। লেখার চরিত্রগুলোতে খামখেয়ালীপনা অনুভব করি। অন্যান্য লেখকের উপন্যাস, নাটক, গল্পের চরিত্রের থেকে এই লেখকের চরিত্রগুলো একটু আলাদা। কিন্তু খুব ভালো লাগে। একটা বই সম্পূর্ণ শেষ না করে উঠতে পারতাম না।
তারপর দেখা পাই হিমু চরিত্রের। অসম্ভব এক ব্যতিক্রমি সৃষ্টি হিমু। হিমু হুমায়ুন আহমেদের স্বতন্ত্র এবং অনবদ্য সৃষ্টি। হয়তো হিমু হুমায়ুন আহমেদের মানস চরিত্র। হিমুকে তিনি অতিমানবীয় গুণাবলী দিয়ে সৃষ্টি করেছেন অত্যন্ত যত্ন করে।
তাই হিমু আর গল্পের চরিত্র হয়ে থাকেনি হিমু হয়ে উঠেছে জীবন্ত। এক সময় ঢাকা শহরে অনেককে দেখা গেছে হিমুর মত হলুদ পাঞ্জাবী আর জিন্স পরে ঘোরা ফেরা করতে। তারপর 'কোথাও কেউ নেই' নাটকের বাকের ভাইয়ের যখন ফাঁসি হয় তখনতো এ নিয়ে মিছিল হয়েছে। এটা কল্পনা করা যায় না যে দর্শকের মন কতটুকু নাড়া দিলে এমনটি হতে পারে। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তাঁহাকে আমি বেশি ভালো লাগতো না।
আমি ব্লগে এ বিষয় নিয়ে লিখেছিলাম। কিন্তু আজ দুপুর বেলা আমি খবরটি শুনে টিভি খুলে এর সত্যতা পাই। তারপর থেকে মনটা খারাপ। দুপুরে আমি একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলাম আর ঘুমের মধ্যে হুমায়ুন আহমেদের জন্য অজোরে কেঁদে উঠি। এমনটি আমার খুব বেশি হয়নি।
জীবনে হয়তো ঘুমের মধ্যে ৪/৫ বার কেঁদেছি। নিয়তির এক অব্যাখ্যাত কারণে ৫/৬ বছর বয়সে যখন মা'কে ছেড়ে ছলে আসি তখন আসার পথে ট্রেনে খুব কেঁদেছিলাম। তার পর থেকে আমি বাস্তবে কাঁদি না। কাঁদতে পারি না। আজো যখন ট্রেনের শব্দ পাই তখন বুকের ভেতর কষ্ট জাগানিয়া স্মৃতি গুলো মনে ভেসে উঠে।
(ব্যক্তিগত বিষয় গুলো উল্লেখ করলাম বলে দুঃখিত) সেগুলো মায়ের কথা মনে করে। কিন্তু আজ আমি এমন একজনের জন্য কেদেছি যাকে আমি কখনো সম্মুখে (চাক্ষুস) দেখিনি। যিনি আমার রক্তের কেউ নন। কিন্তু মনে হয় আমি তার গল্পের চরিত্র গুলোকে চিনি। আমি তাদের মত হতে চেষ্টা করি।
জীবনকে যিনি এত করে বুঝেন। যিনি জীবনকে ছেড়ে যেতে চাননি তার এ অকাল প্রয়ানে-
শ্রদ্ধাঞ্জলী
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।