আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হুমায়ূন আহমেদের সুস্থতা কামনায়----

যেথায় পড়শী বসত করে, আমি একদিন ও না দেখিলাম তারে। একটা বয়স ছিল, যে সময়ে হুমায়ুন আহমেদের যেকোন লেখা গোগ্রাসে গিলতাম। কত দিন, কত রাত তার বই হাতে নিয়ে পার করেছি, হিসেব নেই। তার খুব কম সংখ্যক বইই আছে, যা পড়া হয়নি। তার লেখা বই পড়ে কখনো হেসে উঠেছি মনের অজান্তে, আবার কখনো ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠেছি।

সম্ভবতঃ 'অনন্ত নক্ষত্রবীথি' তার লেখা আমার প্রথম পড়া। এটা পড়েই তার ভক্ত হয়ে গেলাম। একে একে তার বেশিরভাগ লেখাই পড়ে ফেললাম। তার লেখা নাটক দেখতাম পরিবারের সবাই মিলে। কি অসাধারণ ভাবে তিনি ফুটিয়ে তুলতে পারতেন মধ্যবিত্তের জীবনযাপন।

কত সহজভাবে উপস্থাপন করতেন গভীরতম কোন জীবনবোধ। কত সূক্ষ্ম স্যাটায়ারের মাধ্যমে সমাজের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরতেন। তিনি তার লেখাকে সমাজের সকল শ্রেণী, বিশেষ করে তরুন-তরুণীদের মাঝে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলেন। এর প্রধান কারণ হয়তো, তিনি তাদের প্রানস্পন্দনের ছন্দ কে ধরতে পেরেছিলেন। সত্যি কথা বলতে কি, একটা সময় পর, তার লেখা আর ভাল লাগত না।

এটুকু না বললে পুরোপুরি সত্য বলা হবে না, তার লেখা শেষের দিকের কিছু নাটক, কিছু উপন্যাস অত্যন্ত নিম্নমানের এবং অরুচিকর মনে হয়েছিল। যেকোন কারণেই হোক তার লেখার মান হয়তো কমে গিয়েছিল, অথবা, দর্শক-পাঠক হিসেবে আমার একঘেয়েমী এসে গিয়েছিল। সে যাই হোক, কারো জীবন ই এক সরলরেখায় চলেনা। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতে মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়, সে ভিন্নভাবে জীবন কে দেখতে চেষ্টা করে। তার সবকিছুই যে সবার ভাল লাগতে হবে, এটাও না।

তিনি বাংলা সাহিত্যকে যে সম্পদ দিয়ে গিয়েছেন তা অমূল্য। তার সৃষ্ট চরিত্রগুলি মানুষের হৃদয়ে চিরকাল জাগ্রত থাকবে। উদাহরণসরূপঃ বাকের ভাই-মোনা-কাদের, মীর্জা সাহেব, বহুব্রীহির পুরো পরিবার, এইসব দিনরাত্রির সকল চরিত্র, এছাড়া হিমু, মিসীর আলী, শুভ্র, রূপা তো আছেই। তার বিভিন্ন উদ্ধৃতি, সংলাপ, যুগে যুগে মানুষের মুখে মুখে ফিরবে। তার শারীরিক অবস্থার কথা শুনে মন খুব খারাপ লাগছে।

আশা করি, তিনি আবার সুস্থ হয়ে দর্শক-পাঠকের মাঝে ফিরে আসবেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.