আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিউম্যান রাইট্স ওয়াচ এবং র‌্যাব

আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী পরে....... বাংলাদেশে মানবাধিকারের বিপর্যয় সম্পর্কিত হিউম্যান রাইট্স ওয়াচের একটি প্রতিবেদন বাংলাদেশ সরকার অগ্রহনযোগ্য, ভিত্তিহীন ও কল্পনাপ্রসূত বলে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে ও সারা বিশ্বের মানুষ এই প্রতিবেদনটিকে উড়িয়ে দিবেনা। বোধকরি এই প্রতিবেদনের ফলে গোটাবিশ্বে বাংলাদেশের দুর্নাম আরো এক ডিগ্রী বাড়লো। হিউম্যান রাইট্স ওয়াচের এই প্রতিবেদনটিকে উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ভাবার কোনোই কারন নেই। কেননা, নিউইয়র্কভিত্তিক এই মানবাধিকার সংগঠনটি ত্রিশ বছরের ও বেশী সময় ধরে সারা বিশ্বের মানুষের ন্যায়-বিচার ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। এমনকি এই সংস্থাটি আমেরিকায় সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনা নিয়েও সোচ্চার ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনটিতে, ২০০৯ সালে ঘটা বিডিআর বিদ্রোহের পর শত শত সন্দেহভাজন আটক ব্যক্তিদের উপর নির্যাতনের বিবরন ও তাদের বিচারপ্রক্রিয়ায় ন্যায়বিচার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে। একই সাথে সরকারের তৈরী করা বাহিনী “র‌্যাব” এসব নির্যাতনের সাথে যুক্ত বলে সংস্থাটি অভিযোগ করেছে ও র‌্যাব কে ভেঙ্গে দেয়ার জন্য ও সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে। সরকার এসব অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে, এবং অনেক আগে থেকেই র‌্যাবের ভুমিকা নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভুগছে। বি ডি আর বিদ্রোহের বিচার নিয়ে এখানে বেশী কিছু বলছি না, কিন্তু সারাদেশে র‌্যাবের কর্মকান্ড কি আসলেই প্রশ্নবিদ্ধ নয়? প্রতিনিয়ত “ক্রসফায়ার” বা “এনকাউন্টারের” নামে কাউকে হত্যা করা কতটুকু সমীচীন, হোক সে কুখ্যাত সন্ত্রাসী। তাকে বিচারের প্রক্রিয়ায় না এনে খোদ আইনকে নিজের হাতে তুলে নিয়ে র‌্যাব এই পূণ্য অর্জন করে চলেছে।

যার কারনে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও র‌্যাবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে দেশে বিচার বিভাগের প্রয়োজনটা কোথায়? এই বিচারবহির্ভুত হত্যার বলি যে সাধারন মানুষ হবে না তারও বা কি গ্যারান্টি? আমরা ইতিমধ্যে এর নজির ও পেয়ে গেছি। র‌্যাবের গুলিতে পঙ্গু হয়ে যাওয়া নিরপরাধ ছাত্র লিমন এর জ্বলন্ত প্রমান। এই লিমনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ১৪ মাস আগে র‌্যাবের করা বানোয়াট মামলা কোর্টে দাখিল করা হয়েছে। নিশ্চয়ই র‌্যাবকে ঘিরে চলমান বিতর্কের প্রেক্ষিতে নিজেদের গা বাঁচাতে র‌্যাব এটা করেছে।

একজন নিষ্পাপ মানুষও যদি র‌্যাবের এই তথাকথিত “ক্রসফায়ার” বা “এনকাউন্টারের” স্বীকার হয়, তাহলে বলতে হয় - হিউম্যান রাইট্স ওয়াচ -র‌্যাব ভেঙ্গে দেয়ার কথা বলে যে পরামর্শ দিয়েছে তা অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত। হতে পারে, বাংলাদেশের মাটিতে এসে এভাবে সরাসরি বলাটা কুটনৈতিক শিষ্ঠাচার বহির্ভুত। তবে, মানবাধিকারের ভুলুন্ঠিত অবস্থা থেকে উত্তরনের জন্য এদেশের সরকারের টনক নড়াতে এ ধরনের বেরসিক হস্তক্ষেপের গোড়ায় পানি ঢালার জন্য আমরাই দায়ী। আমাদের সরকারের ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরনের পথে ক্রমাগত ব্যর্থতাই হিউম্যান রাইট্স ওয়াচকে এ ধরনের পরামর্শ দিতে অনুপ্রাণিত করেছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.