আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রক্তাক্ত প্রান্তর (আপনি যদি আওয়ামি / বিএনপি এর কট্টর সমর্থক হয়ে থাকেন তবে এই গল্পটি আপনার জন্যে নয়)

মিথ্যেবাদী নই, প্রেমিক আমি ! ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনি পরাজিত হয়েছে। বিদ্রোহের শাস্তি স্বরূপ পাকিস্তান সরকার বাঙালির কাছ থেকে মানুষের মৌলিক অধিকারগুলোসহ তার আত্মপরিচয়টুকু কেড়ে নিয়েছে। পুর্ব বাংলার বর্তমান নাম ডিসট্রিক্ট ইলেভেন। পরাধিন বাঙালির রক্ত মাংস ও অশ্রুতে গড়ে উঠেছে আধুনিক ইউনাইটেড স্টেটস অফ পাকিস্তান। তারপর কেটে গেছে বেশ কিছু সময়।

কিন্তু এখনও কিছু বাঙালি স্বপ্ন দেখে স্বাধীনতার, স্বপ্ন দেখে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের। সেরকম কিছু মানুষকে নিয়েই আমাদের এই গল্প। পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের রাজধানি করাচি। পৃথিবীর দশম বৃহত্তম শহর। প্রায় ১৯ মিলিয়ন মানুষের বাস এই শহরে।

পাকিস্তানের শিল্প-বানিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু এই করাচি। দেশটির সবচে বড় সমুদ্র বন্দরটিও এখানে অবস্থিত। করাচিকে অনেকে বলে নিও টোকিও। সাউথ এশিয়ার স্বপ্ন ও সম্ভাবনার প্রতীক এই করাচি। এখানে কল্পনারা পুর্নতা পায়, আশারা বাস্তবে রুপ নেয়।

সত্যি কি নেই এই শহরে! শিল্পে ও সৈন্দর্যে, বিজ্ঞানে ও আধুনিকতায় গোটা এশিয়াতে এর জুড়ি মেলা ভার। পৃথিবীর একটি মডেল টাউন এই করাচি। তবে এসবই সাত দিন আগের কথা। করাচি এখন এক বিষাক্ত মরুভূমি। আমরা বরং কিছু দিন পিছিয়ে গিয়ে আমাদের গল্প শুরু করি।

আমাদের গল্প শুরু হবে ডিসট্রিক্ট ইলেভেন (প্রাক্তন পুর্ব পাকিস্তান) এর রাজধানি ঢাকার অদুরে সাভার থেকে। রুমি এই মুহুর্তে বদি-এর বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। তার এক হাতে গরম এক মগ কফি। তার দৃষ্টি চলে গেছে বহু দূরে। অবশ্য সে মনযোগ দিয়ে কিছু দেখছে না।

তাকে দেখে মনে হতে পারে সে অন্যমনস্ক হয়ে কিছু ভাবছে। বদি এসে তার ঘোর ভাঙাল। “ কিরে কফি তো ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। দামি জিনিস, নষ্ট করিস না। ” রুমি কফির মগে চুমুক দিল।

বদির কথা ঠিক। এই ধরনের বিলাসি পানীয় এখন ডিসট্রিক্ট ইলেভেনের সাধারণ মানুষের কাছে দুর্লভ। অনেক দিন পর পুরনো বন্ধু ও সহযোদ্ধার সাথে মিলিত হয়ার আনন্দে আজ বদির ঘরে কফি পান চলছে। “কি ভাবছিলি?” বদি জিজ্ঞেস করে। “কিছু না,” রুমি জবাব দেয়, “সেদিনের পর থেকে আর কিছুই ভাবতে পারছি না।

” “চিন্তা করিস না। সব আয়োজন তো করেই ফেলেছি। বিকেলের মধ্যে ভ্যান্টাও যোগার হয়ে যাবে। ” “হু”... মায়ের লাশটা পথের পাশেই মাটি চাপা দিয়ে এসেছে রুমি। সাভারে এসে বহু কষ্টে বদির সাথে যোগাযোগ করেছে।

গত কিছু দিন ওর এখানেই গা ঢাকা দিয়ে ছিল। পরিস্থিতি শান্ত হবার আশায়। তারা ঠিক করেছে আজ রাতে ভ্যান নিয়ে গিয়ে পথের পাশ থেকে জাহানারা ইমামের লাশটা উঠিয়ে এনে একটা প্রপার ফ্যুনারেলের ব্যবস্থা করবে। ভেতরের ঘর থেকে বদির মেয়ে দুটোর হুটোপুটির আওয়াজ আসছে। তাদের একজনের বয়স নয়, অপরজনের এগারো।

দুই বোনকেই এখনও তাদের মায়ের ভাত মেখে মুখে তুলে লহাইয়ে দিতে হয়। মেয়ে দুটো সারাক্ষন হাসে। এত দুঃখ কষ্টের মধ্যেও ওরা এত আনন্দ কোথেকে খুঁজে নেয় কে জানে। তাদের মা মেয়ে দুটোকে নিয়ে বড়ই ব্যতিব্যস্ত। রুমি বদির দিকে ফিরে বলল, “তুই তো ভালই আছিস।

বউ বাচ্চা নিয়ে চমৎকার সংসার করছিস। ” “হুম, ভালো আছি। এই পরিস্থিতিতে যতটা ভালো থাকা যায় আরকি। এই সময়ে ভালো থাকার সবচে ভালো মন্ত্র কি জানিস? তুই জীবন নিয়ে স্বপ্ন দেখা ছেরে দিবি। প্রতিটি দিন এমন ভাবে বেঁচে থাকবি যেন পৃথিবীর বুকে এটাই তোর শেষ দিন।

আগামি বলে কিছু নেই। এভাবে চিন্তা করতে পারলে দেখবি মনে হবে জীবনটা তো মন্দ নয়। ” “তোর কি তাই হয়েছে? তুই কি সত্যি আর স্বপ্ন দেখিস না?” “আমি স্বপ্ন দেখা ছেরে দিয়েছি অনেক আগে। ” রুমি একটা নিঃশ্বাস ফেলল। ৭১ এ রুমি আর বদি একই আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে কাধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে।

কিন্তু ৭৩ এ মুজিবের আত্মহত্যার পর বদির সব স্বপ্ন ভেঙে গেছে। দেশকে নিয়ে সে আর ভাবতে চেয় না। তাই রুমি, চুন্নুরা যখন ৭৪ এ নতুন করে মুক্তি বাহিনি গড়ে তুলল, তখন বদি ওদের সাথে আর যোগ দেয়নি। সে আন্দোলন থেকে দূরে সরে নিজের জন্যে সহজ শান্ত এক জীবন সাজিয়ে নিয়েছে। তার এখন নিজের একটা পরিবার রয়েছে, দেশ গড়ার স্বপ্ন তাকে এখন আর আগের মত টানে না।

বদি বলল, “সামনের দিকে তাকা, তুই কি দেখতে পাচ্ছিস?” “মানুষ। ” রুমি ছোট্ট করে জবাব দেয়। “মানুষ, এদেরকে তোর মানুষ মনে হয়? এদের জীবন কি মানুষের জীবন?” রুমি উত্তর দেয় না। বদির বাড়িটা একটু উঁচু ভিটার উপর অবস্থিত। এখান থেকে নিচে বেশ কিছু দুর পর্যন্ত দেখা যায়।

যত দূর চোখ যায় শুধু বস্তি। নিচের ওই বস্তিতে কয়েক লাখ মানুষ গায়ে গা লাগিয়ে কিট পতঙ্গের মত বেঁচে আছে। দূর থেকে এই বস্ত্রহীন কঙ্কালসার মানুষগুলোকে দেখতেও লাগে কিট পতঙ্গের মত। সারা ডিসট্রিক্ট ইলেভেন জুরেই এই একই দৃশ্য। কোন পথ ঘাট নেই, পয়-নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই।

এই প্রজন্মটা বেরে উঠছে কোন উচ্চ শিক্ষার স্পর্শ ছাড়াই। নিচের ওই বস্তিতে মাদক আর যৌন ব্যবসাই মানুষের প্রধান জীবিকা। আইন শৃঙ্খলার বালাই নেই, যার হাতে অস্ত্র আছে তার কথাটাই আইন। রোগ-ব্যধি, মহামারি, খুন খারাবি ইত্যাদি লেগেই আছে। সভ্যতা এই ডিসট্রিক্ট থেকে খুব দ্রুত লোপ পাচ্ছে।

প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠেই যাকে বারান্দা থেকে এই দৃশ্য দেখতে হয় তার পক্ষে আশাবাদি হয়া কঠিন। *** রাত বারোটা বাজে। বদি ও রুমি চাদরে মুখ ঢেকে এগিয়ে যাচ্ছে। বদির বাড়ির কাছে গাড়ি নেবার যায়গা নেই। তাই পিকআপ ভ্যন অপেক্ষা করছে বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে।

দুই জনই বেশ সতর্ক, এত রাতে টহল পুলিশের চোখে পড়লে ঝামেলা হতে পারে। ভ্যনের কাছে পৌছে বদি কিছুটা অবাক হল। ওর বিশ্বস্ত একটা ছেলেকে ভ্যনের কাছে দার করিয়ে রেখে গিয়েছিল। ভ্যনের ব্যবস্থা ওই ছেলেটাই করেছে। কিন্তু এখন তাকে চোখে পরছে না।

আশ্চর্য ছেলেটা কোথায় গেল? বদি চাপা গলায় এদিক সেদিক হাঁকডাক দিল, কোন সাড়া পাওয়া গেল না। চারপাশে এত ঘুটঘুটে অন্ধকার, একহাতের বেশি দৃষ্টি চলে না। ঝিঝি পোকা ডাকছে। রাতের নিস্তব্ধতায় ঝিঝির ডাকটাই বড় বেশি করে কানে বাজছে। এমনই সময় ঝিঝির ডাক চাপা দিয়ে কাছেই কোথাও কান ফাটানো শব্দে একটা কিছু বিস্ফোরিত হল তার পরেই শোনা গেল টানা গুলির আওয়াজ।

রুমি ও বদির অভিজ্ঞ কান এই শব্দ চিনতে ভুল করল না, সাব মেশিন গান!! নারি ও শিশু কন্ঠের সম্মিলিত চিৎকার শোনা গেল। “কি... কি হচ্ছে?” রুমি জিজ্ঞেস করে। “মনে হয়, মনে হয় স্ন্যেচার” বদির গলা কেঁপে উঠে। কাছেই কোথাও আগুন লাগানো হয়েছে। ভৌতিক হলুদাভ আলোয় এলাকাটা ভেসে যাচ্ছে।

পাকিস্তানি দেহ ব্যবসায়িদের স্থানিয় নাম স্ন্যেচার। এরা ডাকাতের মত অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ঘর থেকে কম বয়েসি নারি ও শিশুদের তুলে নিয়ে যায়। মেয়েগুলোকে ওরা বেশ্যা বানিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে পাচার করে। আর বাচ্চাগুলোর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মোটা দামে কালোবাজারে বিক্রি হয়। ডিসট্রিক্ট ইলেভেনে এটা একটা বৈধ ব্যবসা।

“রুমি... আমাকে বাচ্চাদের কাছে যেতে হবে। ওরা ঘরে একা। আমি তোর সাথে যেতে পারব না। ” “চল, আমিও আসছি। ” রুমি তারা দেয়।

“না না, তোর আসা ঠিক হবে না। তুই ওদের চোখে পরে গেলে আর রক্ষা নেই। তুই এখনই ভ্যনটা নিয়ে পালা। ” “কি বলছিস তুই, তোর এই বিপদে...” “এমন বিপদ আমাদের রোজই আসে। তুই নিজেকে বাঁচা।

তোর বেঁচে থাকাটা ইম্পর্ট্যন্ট। ” রুমি কেন যেন আর কথা বারায় না। নিরবে ভ্যানের ড্রাইভিং সিটে উঠে বসে। বদি একবার হাত নারে, তারপর দ্রুত রাতের আঁধারে অদৃশ্য হয়ে যায়। *** সেই রাতে আওয়ামীলীগের কর্নধার ও মুক্তিবাহিনির নেতা এম (বেগম খালেদা জিয়া, মেজর জিয়াউর রহমানের স্ত্রি) পুলিসের হাতে ধরা পড়েন।

তার সাথে আওয়ামিলিগের অ্যাঁরও কিছু গুরুতবপুর্ন নেতা ও কর্মিকে পুলিস আটক করে। তাদের বর্তমান হদিস সবার অজানা। এমতাবস্থায় নেতৃত্বহিন আওয়ামিলিগ ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতে পারতো। কিন্তু সঠিক সময়ে দলের হাল ধরেন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রাক্তন সৈনিক হুসেন মুহম্মদ এরশাদ। অতি দ্রুততার সাথে তিনি দিশেহারা দলটিকে আবার পুনর্সংঠিত করে ফেলেন, সেই সাথে দেশ জুড়ে মুক্তিবাহিনীর নেটয়ার্ক কে আবার মজবুত করে তোলেন।

এই কাজে তিনি এক রকম অতি মানবীয় দক্ষতা প্রদর্শন কলেন। তার নেতৃত্ব দানের ভঙ্গি ও তার ব্যপক আক্রমণাত্মক বেপরোয়া মনোভাব দলের প্রতিটি নেতা কর্মিকে শিহরিত করে তোলে। তাদের মধ্যে নতুন প্রানের সঞ্চার হয়। কিন্তু হুসেন মুহম্মদ এরশাদ শুধু দলের নেতৃত্ব নিয়েই বসে থাকলেন না। দলের হাল ধরেই তিনি মুক্তিবাহিনিকে সাথে নিয়ে এক মহাপরিকল্পনা সম্পাদনে মাঠে নেমে গেলেন।

তার মহাপরিকল্পনার একটি অংশ ছিল করাচিতে অনুষ্ঠেয় গ্র্যন্ড এশিয়ান এক্সপো তে বোমা হামলা চালানো। অবশ্য এই পরিকল্পনার অনেকটা বেগম খালেদা জিয়াই এগিয়ে রেখে গেছেন। তবে এর সাথে এরশাদের নিজের আর একটি গোপন পরিকল্পনা ছিল। ১৯ জুলাই এশিয়ান এক্সপোতে স্যবটাজ করা হল, বেশকিছু ক্ষয় ক্ষতি হল, কিছু মানুষ মারাও গেল। কিন্তু আসলে এই স্যবোটাজটা ছিল একটা ডাইভারসন।

এরশাদের মুল পরিকল্পনা ছিল করাচি শহরের অদুরে গড়ে উঠা দেশের সর্ববৃহৎ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যন্টটা উড়িয়ে দেয়া। সেই অনুযায়ি তিনি সকল সরঞ্জাম সহ একটা সুপ্রশিক্ষিত সুইসাইড বোম্বিং টিম তৈরি করেও রেখেছিলেন। এম এর চোখ এরিয়ে এত কাজ তিনি কিভাবে করেছেন এটা একটা রহস্য। তার পরিকল্পনা মতই কাজ এগুলো। এশিয়ান এক্সপো তে বোমা হামলা চলল।

তার আধাঘন্টা পরেই করাচির উত্তরে আল হাবিব পাওয়ার প্ল্যন্টের দুইটা চুল্লি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হল। এর ফলাফল হল অভাবনীয়। ভয়ঙ্কর সাইস্মিক রিএকশ্যন ও ভূমিকম্পে করাচির বড় বড় সবগুলো দালান এক সাথে ধ্বসে পড়ল। বাতাসের সাথে নিউক্লিয়ার ফ্যক্টরির তেজস্ক্রিয়তা ছরিয়ে পড়ল সাড়া শহর জুড়ে। করাচির আকাশ ঘন ছাইয়ের মেঘে ঢাকা পড়ল।

হতাহতের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ১৫ মিলিয়নে!! শোকে, আতঙ্কে পাকিস্তান সহ পুরো পৃথিবী স্তম্ভিত হয়ে পড়ল। এতটা এমনকি এরশাদ নিজেও আশা করেননি!!! অত্যন্ত খোশ মেজাজে এরশাদ নিজের কাঁধ চাপড়ে দিলেন। তিনি একজন বর্ন লিডার। তিনি কখন অন্যেকে অনুসরণ করেন না, সবাই তাকেই অনুসরণ করে। জন্ম থকেই তিনি উচ্চাভিলাষী, এবং নিজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

অন্যের কাছ থেকে অর্ডার নেয়া তার ধাতে নেই, তিনি অর্ডার করবেন আর সবাই শুনবে। নিজেকে উচ্চতার পরম শিখরে প্রতিষ্ঠিত করতে যে কোন মুল্য দিতে তিনি প্রস্তুত। এমন একজন মানুষ নেবেন এম এর মত এক অশিক্ষিত মহিলার অর্ডার! কক্ষনো না!! তাই তো তিনি অতি সুকৌশলে জাল পেতেছেন। বহু দিন লাগিয়ে তিনি এর প্রস্তুতি নিয়েছেন। নিজের বিশ্বস্ত একটা বাহিনি গড়ে তুলেছেন, যারা তার জন্যে চোখ বুজে জীবন দিতে প্রস্তুত।

এম এর ধরা পড়ার সম্পুর্ন নাটকটা তিনি নিজেই সাজিয়েছেন। নিজের পরিচয় গোপন রেখে পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছেন এম এর বর্তমান অবস্থানের ঠিকানা। এক ঢিলে এম সহ আওয়ামিলিগের কয়েকজন উর্ধতন নেতাকে তিনি নিজের পথ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। বাকি কাজটুকুও তার প্ল্যন মাফিক এগুলো। ১৯ জুলাই করাচি ধ্বংসের পরের দিন তিনি সরকারের প্রতি অল আউট ওয়্যার ঘোষণা করলেন।

এই কাজে তাকে তেমন একটা বাধার সম্মুখিন হতে হল না। পরাধিন বাঙ্গালির প্রতি অবজ্ঞা থেকেই হোক আর নিজেদের দূরদৃষ্টির অভাব থেকেই হোক, ডিসট্রিক্ট ইলেভেনে পাকবাহিনি আর আগের মত অতটা কড়া অবস্থান নিয়েছিল না। করাচি ধ্বংসে হতবিহবল পাক সেনাদের উপর এরশাদ নিয়ন্ত্রিত মুক্তিবাহিনি হিংস্র নেকড়ের মত ঝাঁপিয়ে পড়ল। প্রায় কোন রকম বাঁধা ছাড়াই এক ধাক্কায় এরশাদ দক্ষিন বাংলার একটা বড় অংশ নিজের দখলে নিয়ে নিলেন। যেখানে যত পশ্চিম পাকিস্তানি নাগরিক পাওয়া গেল, সবাইকে টেনে রাস্তায় নামিয়ে জিবন্ত পুড়িয়ে মারা হল।

বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ধর্ষণের ঘটনাও ঘটল। এরশাদ তার বাহিনীর প্রতি অত্যন্ত উদার আচরন করলেন। ৭১ পাকসেনারা যা করেছে তার তুলনায় তো এটা কিছুই না! বির দর্পে মুক্তিবাহিনি ঢাকার দিকে এগিয়ে চলল। ৩ই আগস্ট বেলা তিনটায় ঝালকাঠি জেলা সদরে এক ঐতিহাসিক সম্মেলনে এরশাদ ডিসট্রিক্ট ইলেভেন কে স্বাধীন ঘোষণা করলেন। (চলবে) এই পর্বটি লিখেছেনঃ আসিফ রেহমান আগের পর্বের লিংকঃ আরেক পৃথিবী গল্পটি একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা।

মোট তিনজন ব্লগার মিলে গল্পটি লিখছি। EPISODE CREDIT: হারানো ছায়া, নাজিম উদ দৌলা ও আসিফ রেহমান। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।