আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রক্তাক্ত ফাল্গুন!©

We have a best in our self and I have unlashed mine. YEAH, I FEEL COOL!!!
বয়স তখন কতই বা হবে, বড় জোর ১৬। হ‍্যাঁ তখন বয়স ষোলই ছিল এবং দিনটা ছিল পয়লা ফাল্গুন। একজনকে ভালো লেগেছিল। তাকে একটা গোলাপ দিয়ে মনের কথা বলব বলে স্থির করেছিলাম। আকাশে রাঙ্গা মেঘ সে দিন জমেছিল।

বৃষ্টি হবে ভেবে ছাতা নিয়ে বেরিয়েছিলাম। পাশের বাড়িতে এক কবি থাকতেন। উনি ফুল খুব ভালোবাসতেন। বেশী ভালোবাসতেন রক্ত গোলাপ। কবিরানী যখন বাগানে আসতেন তখন উনার কানে একটা রক্তগোলাপ গুঁজে দিতেন।

কবির সাথে দেখা করে একটা রক্ত গোলাপ আনার জন‍্য বেরিয়েছি। এক বন্ধু দৌড়ে এসে বলল, চল শহর যেতে হবে। ভাষা নিয়ে সমস‍্যা হচ্ছে। বন্ধুকে বলেছিলাম তুই যা আমি আসছি। বন্ধু চলে গিয়েছিল।

আমি কবির বাগানে যেয়ে উপস্থিত হলে কবিরানী বলেছিলেন, কবিতো শহরে চলে গিয়েছেন। বাংলা ভাষায় নাকি আর কবিতা লিখতে পারবেন না। তুমি কেন এসেছো? আমি গম্ভীর হয়ে বলেছিলাম, একটা রক্তগোলাপ নেবার জন‍্য এসেছিলাম। কবিরানী মাথা দিয়ে ইশারা করে বলেছিলেন, নিয়ে যাও একটা। আমি একটা রক্তগোলাপ হাতে নিয়ে শহরের দিকে রওনায় হয়েছিলাম।

আকাশে মেঘ জমতেই ছিল কিন্তু বৃষ্টি হচ্ছিল না। শহরে গিয়ে কবি এবং বন্ধুর সাথে মিলত হয়ে সব জানলাম এবং গোলাপটাকে একটা বোতলে রেখেছিলাম। আশ্চর্যের বিষয় ছিল, গোলাপটা শুকাচ্ছিল না। দিন দিন রক্তাক্ত হচ্ছিল এবং টপ টপ করে কষ পড়ে বোতলের পানি রক্তলাল হচ্ছিল। তারপর, বাংলা তারিখটা স্মরণ নেই, তবে সে দিন ইংলিস তারিখ ছিল ২১ তারিখ।

আমাদের মুখ বন্ধ করার জন‍্য পাকহানারা গুলি করছিল এবং তখন আকাশ কাঁদছিল। আমি দূর থেকে দেখেছিলাম, বোতলে রাখা রক্তলাল গোলাপটা সাদা হয়ে গিয়েছিল। ভাষা শহীদেরকে সালাম জানাই।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।