আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বহুজাতিক ভেঙ্কি'দের হাতে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্প

রাস্তাঘাটে CP লেখা যেসব ফ্রাইড চিকেনের ছোট ছোট দোকান দেখা যায় সেগুলোর মালিক হলো থাইল্যান্ড ভিত্তিক বহুজাতিক চ্যারয়েন পোকপ্যান্ড(Charoen Pokphand) যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো CP কোম্পানির মতো কতগুলো বৃহৎ কর্পোরেশানের হাতে চলে যাচ্ছে দেশের পোল্ট্রি খাত। গত কয়েক বছরে মোট ৭ টি বহুজাতিক কোম্পানির হাতে চলে গেছে দেশের পোল্ট্রি শিল্পের শতকরা ৪০ ভাগ! এর মধ্যে ৫টি-ই ভারতীয় কোম্পানি। থাইল্যান্ডের এবং চীনের কোম্পানি একটি করে। সামনে আরো ৮টি কোম্পানি দেশে বিনিয়োগ করার কথা যেগুলো আসলে দেশের পোল্ট্রি সেক্টরের ৮০ শতাংশই চলে যাবে বহুজাতিক পুজির হাতে! সূত্র: দেশি উদ্যোক্তাদের হাতছাড়া হচ্ছে পোল্ট্রি শিল্প মুরগির খাদ্য উত্পাদনকারী বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান থাইল্যান্ডের CP ১৯৯৬-৯৭ সালে বাংলাদেশে পোলট্রিশিল্পে বিনিয়োগ করে। বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা প্রথম পোলট্রি খামার এগ অ্যান্ড হেনস লিমিটেড কেনার মাধ্যমে বাংলাদেশে যাত্রা তাদের।

১৯৬৪ সালে গাজীপুরের কড্ডায় ৩০ একর জমির ওপর একরাম হোসেন নামে এক উদ্যোক্তা খামারটি প্রতিষ্ঠা করেন। নানা সংকটে খামারটি ১৯৯৬ সালে বন্ধ হয়ে গেলে তা কিনে নেয় সিপি। এরকম চাইনিজ কোম্পানির নাম হলো নিউ হোপ যারা New Hope Feed Mill Bangladesh Ltd নামে শতভাগ চাইনিজ মালিকানায় বাংলাদেশে ব্যাবসা করছে। ভারতের কোম্পানি গুলো হলো— ভিএইচ গ্রুপ, গোদরেজ, সগুনা, টাটা ও অমৃত গ্রুপ। এর মধ্যে স্রেফ গত ২ বছরেই এসেছে তিনটি ভারতীয় কোম্পানি- ভিএইচ গ্রুপ, সগুনা এবং অমৃত ।

সবচেয়ে ভয়ংকর হলো Venkateshwara Hatcheries Group যা ভিএইচ গ্রুপ নামে পরিচিত। ভিইএচ গ্রুপের বাংলাদেশী সাবসিডিয়ারি'র নাম উত্তরা ফ্ডি এন্ড ফুড লিমিটেড যার মাধ্যমে Venky ব্র্যান্ডের মুরগীর খাবার উৎপাদন করছে বাংলাদেশে। ভারতের পোল্ট্রি বাজারের ৮৫ শতাংশ দখল কারী এই কোম্পানিটি বর্তমান সরকারের আমলে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সঞ্জয় দত্ত ও ব্রেট লি'কে এনে আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাদেরকে স্বাগত জানান মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। সূত্র: Indian poultry giants lured in by growth prospects ছবি: বঙ্গবন্ধু সন্মেলন কেন্দ্রে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১০ এ ব্রেট লি ও সঞ্জয় দত্তের ভিএইচ গ্রুপের বাংলাদেশ অপারেশন এর উদ্বোধন: সূত্র ডেইলিস্টার সস্তায় মাংস, ডিম ও পোল্ট্রি খাবার সরবরাহের কথা বলে বিদেশী পুজি প্রবেশের সুযোগ করে দেয়া হলেও দিন দিন এসবের দাম বাড়ছেই।

উপরন্তু বার্ড ফ্লু সহ বিভিন্ন দুর্যোগে দেশের পোল্ট্রি খামার গুলো যখনই দুর্বল হয়ে পড়ে তখনই বিদেশী ফার্ম গুলো সস্তায় এদেরকে কিনে নেয়। তাছাড়া এরা বড় পুজির কোম্পানি হওয়ার কারণে বৃহৎ আকারে উৎপাদন, দক্ষতা, কম সুদে পুজি যোগার করার সামর্থ্য ইত্যাদি কোন ক্ষেত্রেই দেশীয় পোল্ট্রি খামার গুলো এসব কর্পোরেশনের সাথে পেরে উঠছে না ফলে ধীরে ধীরে গোটি পোল্ট্রি শিল্পই চলে যাচ্ছে বহুজাতিক ভেঙ্কিদের হাতে। বিদেশী বিনিয়োগ যে দেশীয় শিল্প খাতকে কেমন বিপর্যস্ত করে দিতে পারে তার জ্বলন্ত উদাহরণ হলো পোল্ট্রি খাতে বিদেশী বিনিয়োগের ফলে এই শিল্প ক্রমশ বিদেশী পুজির হাতে চলে যাওয়ার ঘটনা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.