আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গ্লোবালাইজেশন ইতিহাস ~ বহুজাতিক একীকরণ যুগ

www.facebook.com/mahamudul.hasan.9619 ভ্রমন, লেখালেখি, বিজ্ঞান ওয়েবসাইট দেখা, বই _ম্যাগাজিন পড়া ও ওয়েবসাইট প্রোগ্রামিং করা পছন্দ।
বিশ্বায়নের ইতিহাস গত যা ৫০০ বছর ধরে অতিবাহিত – আমরা তা তিনটি পর্যায়ক্রমের মধ্যে ভাগ করতে পারি।



ধাপ ১: প্রারম্ভিক যাত্রাপথ অনুসন্ধান ও উপনিবেশ স্থাপন যুগ - ১৪৯২
ধাপ ২: বহুজাতিক একীকরণ যুগ (১৮৫০-১৯১৪)
ধাপ ৩: বিশ্বায়ন আধুনিক যুগ (১৯৪৫ - বর্তমান)

বিশ্বায়নের দ্বিতীয় পর্যায় বা ধাপ ২ - এই সময়ের জুড়ে, পরিবহন ব্যবস্থার প্রচণ্ড আন্তর্জাতিকীকরণ, যোগাযোগ, বাণিজ্য, বিজ্ঞান, এবং অন্যান্য অনেক মানুষের কার্যকলাপ দিয়ে পূর্ণ ।



মধ্য উনবিংশ শতাব্দীর মাঝে থেকে বিশ্বায়ন উন্মুক্ত এবং ১৯১৪ এর আগস্ট মাসে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের যে ফলাফল তা দ্বিতীয় পর্যায় গ্লোবালাইজেশনেৱ পতন ঘটায়।

উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে, পশ্চিমী বিশ্ব একটি তীব্র নাটকীয় অভিজ্ঞতা লাভ করে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেএে চার অগ্রসর প্রযুক্তির কারণে- ট্রেন, বাষ্পচালিত জাহাজ (Steam ships), টেলিগ্রাফ, এবং পোস্টাল সিস্টেম/ডাক ব্যবস্থা।



১৮৮০ সাল থেকে ১৯১৪ সালের সময়সীমায় বিশ্ব অর্থনৈতিক একটি স্তর আজকের বিশ্ব অর্থনীতির একীকরণের সঙ্গে মিলেছে বা এমনকি অতিক্রম করেছে।

বিনিয়োগের জন্য যে মূলধন সারা বিশ্বে প্রবাহিত হয়েছিল এর বেশীরভাগই উদ্ভব লন্ডনে, তা বিশ্বব্যাপী ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সাবেক উপনিবেশ - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড এর অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখে।

সারা বিশ্বে ব্রিটিশ দখল এ যত ক্ষুদ্র ও দূরবর্তী যেমন- কেম্যান দ্বীপপুঞ্জ, বাহামা, এবং হংকং তারাও গ্লোবাল ইকনমিক এলিটের সেবায় নিয়োজিত। অনেক এ ক্ষুদ্র রাষ্ট্র আজও ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণে অধীনস্ত।

অন্যান্য ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যগুলো, আফ্রিকায় তাদের উপনিবেশগুলির সঙ্গে তাদের নিজস্ব আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পথ স্থাপন করে, যাদের স্বাধীনতা বিংশ শতাব্দীর শেষ দশক পর্যন্ত আসে নাই।



বাস্তবিকই, উপনিবেশ জনগোষ্ঠীর নিপীড়ন ও শোষণ সবসময় গ্লোবাল ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ।



কাঁচামাল এবং আরো বিচিত্র পণ্য সমুদ্রপথ দিয়ে উপনিবেশ থেকে ইউরোপে যেত।

বিংশ শতাব্দীর দিকে যাত্তয়ার সময়, আগস্ট ১৯১৪ সালের চরম ঘটনার আগে - লন্ডনের একজন ধনী বাসিন্দা অনেক বছর বিদেশী পণ্য ব্যবহারের সুযোগ ছিল। কিন্তু ১৯১৪ সালের ঘটনা বিশ্বের এই আন্তর্জাতিক সংযোগ নজিরবিহীন গভীরভাবে ব্যাহত করে।

উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে, বহুজাতিক অনেক প্রতিষ্ঠানের অসাধারণ বিস্তার হয়- এই সংস্থাগুলির এবং তাদের বিশ্বব্যাপী প্রচারণা ও আন্দোলন আদর্শবাদী আন্তর্জাতিকতাবাদ বলা যায়-

*সুইস ব্যবসায়ী এবং সামাজিক কর্মী হেনরি ডুনান্ট (Henri Dunant) ১৮৬৩ সালে “রেড ক্রস” প্রতিষ্ঠা।



*“স্যালভেশন আর্মি” (The_Salvation_Army) খ্রীষ্টান আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ১৮৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

*এবং এ যুগে - বিশ্বের একমাত্র জীবিত ভাষা আন্দোলন “এস্পেরান্তো” (Esperanto) ১৮৮৭ আবির্ভুত হয়। লুডউইগ জামেন্হফ (Ludwig Zamenhof) পোল্যান্ড এর ভাষা প্রতিবন্ধকতা এবং জাতিগত সংঘাত দ্বারা পরিবেষ্টিত যুদ্ধরত দলগুলির মধ্যে শান্তি তৈরীর আশায় কৃত্রিম ভাষা আবিষ্কারক, যা এস্পেরান্তো নামে পরিচিত।

*ফরাসি অভিজাত বংশীয় ব্যক্তি পিয়ের দ্য কুবেরত্যাঁ (Pierre de Coubertin), ব্রিটিশ খেলাধুলা ব্যবস্থার গুণগ্রাহী, প্রতিযোগী দেশগুলির মধ্যে ভালো আন্তর্জাতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৮৯৪ সালে “আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি” প্রতিষ্ঠা করেন।

*সুইডিশ শিল্পপতি আলফ্রেড নোবেল যে কোন দেশের বিজ্ঞানীদের জন্য ১৯০১ সালে “নোবেল প্রাইজ” প্রদান শুরু করেন।



*স্বীকৃত আন্তর্জাতিকতাবাদী এবং প্রকাশ্যে বর্ণবাদী লর্ড বেডন পাওয়েল ১৯০৮ সালে “স্কাউটিং” আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করেন।

এ সকল দ্বিতীয় পর্যায়ের আন্তর্জাতিক সংস্থা, তারা আজও বিশ্বায়নের দ্বিতীয় পর্যায় পরিচিত, তবে আংশিক এস্পেরান্তো বাদে।


হয়ত এ সময় কিছু মানবতাবাদী সক্রিয় কর্মী উপলব্ধি করেছে, ইউনিভার্সাল পোস্টাল ইউনিয়নের (Universal_Postal_Union) (১৮৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত) বাস্তবসম্মত আন্তর্জাতিকতাবাদ ছাড়া, ট্রান্সআটলান্টিক বাষ্পচালিত জাহাজ কোম্পানীর সেবা ও তাদের আদর্শবাদী প্রজেক্ট অদম্য বাঁধার মুখোমুখি হবে।


চলবে...
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।