আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বন্ধুত্ব

পৃথিবীতে বন্ধুত্বের সংজ্ঞা এতো বেশি যে, বলে শেষ করা যায় না। একজনের কাছে বন্ধুত্ব একরকম তো অন্যজনের কাছে বন্ধুত্বের সংজ্ঞা অন্যরকম। বন্ধুত্বের একটি সংজ্ঞা নিয়েই হতে পারে বিশাল বই। আবার হতে পারে দীর্ঘ বক্তৃতা, হতে পারে আমার বিরক্তিকর লেখা। তবে মনে হয় জন হে-এর এই সংজ্ঞাটা না দিলে বন্ধুত্ব বুঝা যায় না 'বন্ধুত্ব হলো জীবনের সূর্যোদয়।

" সত্যি অবাক করার বিষয়, তিনি তার বন্ধুদের কতো বড় করে দেখছেন। গোটা পৃথিবীর কাছে তুমি একজন মানুষ মাত্র, বন্ধুর কাছে তুমি গোটা পৃথিবী। ভালো বন্ধু সে-ই যে মনে করে, তুমি একটা ভালো ডিম, যদিও সে জানে ডিমটা খানিকটা ফাটা। আবার বন্ধুত্ব হচ্ছে চুইংগামের মতো হৃদয়ের কাছাকাছি, যা একবার মনে স্থান করে নিলেই হলো, ছাড়তে চাইলেও তা সম্ভব হয় না। বন্ধুত্ব তিন ধরনের (১) খাবারের মত, যাদের ছাড়া চলে না।

(২) ঔষধের মত, যাদের মাঝে মাঝে দরকার হয়। (৩) অসুখের মত, যাদের কেউ চায় না। 'তুমি যদি ৫শ' বছর বেঁচে থাকো, আমি যেনো একদিন কম বাঁচি, যাতে তোমায় একদিনের জন্যেও মিস না করি। 'বন্ধুত্ব নিয়ে সুবচনের শেষ নেই। আবার বন্ধুত্বের সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞাও নেই।

তবে এটা অস্বীকার করার কোনো জো নেই যে, বেঁচে থাকতে হলে অবশ্যই ভালো বন্ধু প্রয়োজন। ভালো বন্ধুর মাধ্যমে তুমি আর কিছু না বুঝ বা না পাও কিন্তু তুমি কেমন, তোমার ভুলটা সে দেখাবে, আবার তোমাকে তোমার ভালো কাজের প্রশংসাও সেই করবে। "তোমার ভালো বন্ধু সে-ই যে তোমার মধ্যকার সর্বোত্তম গুণটা বের করে আনবে। "-হেনরি ফোর্ড। বন্ধুত্ব হচ্ছে দু'জনের পরস্পরের প্রতি গ্রহণযোগ্য ও প্রত্যাশিত আচরণ।

বন্ধুত্ব হচ্ছে 'বিশ্বাস'। বন্ধুত্ব হচ্ছে 'দু'দেহ একমন। ' --- এরিস্টটল। বন্ধুরা জানে এবং মানে তারা পরস্পরের ক্ষতি করবে না। এটা সত্যি যে, বন্ধুত্ব গড়ে উঠে কিছু প্রদর্শিত মূল্যবোধের ওপর, যার মধ্যে রয়েছে বন্ধুর বেলায় সবচেয়ে ভালোটাই ঘটুক এ প্রত্যাশার লালন, সহানুভূতি ও একাগ্রতা, সত্যবাদিতা, সততা ও পারস্পরিক সমঝোতা।

মানব সভ্যতাই গড়ে উঠেছে বন্ধুত্বের ছায়ায়। একজন ভালো বন্ধু সবারই কাম্য। একজন সৎ বন্ধুর কাছে বা তার সানিধ্য পেতে সবাই ব্যাকুল থাকে। কবি এ এস বলেছেন "সত্যিকার বন্ধুত্বে সত্যবাদিতা চাই-ই চাই। " একজন সত্যিকার ও সত্যবাদী বন্ধু তোমাকে ভালোবাসবে আবার তোমার মন্দ কাজগুলোর সরাসরি সমালোচনাও করবে।

তবে অনেক বন্ধুই আছে সুদিনের!! যাদের দুর্দিনে খুঁজে পাওয়া যায় না বা চাইলে ও পাওয় যায় না। সত্যিকারের বন্ধু সম্পর্কে অস্কার ওয়াইল্ড লিখেছেন, "যে তোমাকে পেছনে থেকে নয়, সামনে থেকে ছুরি মারতে পারে সে-ই। " কী ভয়ানক উক্তি। তবে এই কথার অন্তরালে অনেক ভালো কথা লুকিয়ে আছে। বন্ধুত্বের রশিটা সব সময়ই জৈব সীমার উর্ধে রাখা উচিত।

বয়স ও অর্থ দিয়ে বন্ধুকে পরিমাপ করা উচিত নয়। বন্ধুত্বের জায়গাটা মনের মধ্যে বিশাল করা দরকার। বর্তমান সময়ের বন্ধুত্ব কেমন এবার তা নিয়ে একটু আলোচনা করি। যুগ বদলাচ্ছে। এটা বেশ পুরোনো কথা।

যুগের সঙ্গে বদলাচ্ছে সবকিছু এটাও সবার জানা। তেমনি বদলে যাচ্ছে বন্ধুত্বের আবেগ-অনুভূতি, গতি-প্রকৃতি। নদীর নাব্যতার মতো কমে যাচ্ছে বন্ধুর গভীরতা। বন্ধুত্বে সৃষ্টি হয়েছে অনেক বিভাজন। আমাদের এখন অনেক বন্ধু।

স্কুলের বন্ধু, কলেজের বন্ধু, অফিসের বন্ধু, ক্লাবের বন্ধু, কিংবা পার্টির বন্ধু, এফ বির বন্ধু। অনেক ধরনের বন্ধু আমাদের। যার কাছে স্বার্থ নেই সেই আমাদের বন্ধু। কিন্তু প্রকৃত বন্ধু? কমে যাচ্ছে সেই সংখ্যা। কারও কারও নেই বললেই চলে।

এই সময়ে শিশু-কিশোরদের বড় বন্ধু কে?সরাসরি উত্তর-কম্পিউটার। শতকরা ৮৫ ভাগ শহুরে শিশুর ক্ষেত্রে এটা সত্যি। তাদের প্রিয় বন্ধুর নাম মহান কম্পিউটার। হবেই তো কম্পিউটার, কারণ এর সঙ্গেই তো তারা বেশি সময় কাটাচ্ছে। তারা খেলতে পারছে না।

ঘুরতে পারছে না। বাবা মাও বন্ধু হচ্ছে না। কারণ বাবা-মাকে ঠিকমত কাছে পাচ্ছে না তারা। আর তাদের এসব চাহিদা পূরণে সর্বদাই নিয়োজিত মহান বন্ধু কম্পিউটার। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।