আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিমু (থুরি থুরি মহিলা হিমু)

তুমি ক্ষমাশীল হও, সৎ কাজের আদেশ কর, আহাম্মকদের থেকে দূরে থাকো. -সুরা আরাফ, আয়াত.১৯৯ তিনি সামান্য গম্ভির ভাবে বসে আছেন, ঠোটের কোনায় সামান্য হাসি। ভদ্রলোক এই কলেজের অধ্যক্ষ। সামনে ক্যামেরা ম্যান, হাতে ক্যামেরা, ওনার একটা ছবি তোলা হচ্ছে। সেই ছবিটার আদলে, কলেজের সামনে চিনা মাটির ভাংয়া টুকরা দিয়ে ওনার একটা প্রতিকৃতি গড়া হবে। তিনি নিজেই এই কাজটা করিয়ে যেতে চান।

কারন তেনার মতে তিনিই এই জুগের সবচেয়ে আধুনিক মানুষ। অতীত ইতিহাসের কিছু কিছু জায়গায় তিনি বিরাট ভুল খুজে পেয়েছেন। ভুল গুলো করাও নাকি হয়েছিলো নানান উদ্দেশ্য নিয়ে। সেখানে নাকি যে মানুষকে- যে স্হানে সম্মানীত করার কথা, তাকে সেখানে সেইভাবে সম্মান দেওয়া হয়নাই। এমন কি, মাঝে মাঝে ভুল মানুষকেও সম্মানীত করা হয়েছে।

তাই তিনি তার প্রতীকৃতি বানানোর ব্যাবস্হা হাতে নিয়েছেন। কারিগর খোজা হচ্ছে, একজন কে পাওয়া গেছে। সে বলেছে- "স্যার চিন্তা নিয়েন না, এমন প্রতীকৃতি বানামু তাজমহল যেমনে মানুষ সখ কইরা দেখতে যায় তেমনি আপানর টাও দেখতে আসবো। আমি কাজী নজরুল সাবের প্রতিকৃতি বানানের সময় ইটবালু গুলানের কাজ করছি। পাচ বছরের ইট বালু মিলানের অভিগ্যতা।

তিনি ঐ ছেলেকে কাজ টা দেয়া নিয়ে দোটানার মধ্যে আছেন, দুনিয়াতে যারা অকাজে কথা বেশি বলে, তারা কাজের ক্ষেত্র- নিস্কর্মা। তারমতে রোকেয়া (বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন) একটা মস্তবড় ভুল করেগেছেন। ভদ্রমহিলা একটা ছবি রেখে গেছেন সেটাও মাথায় ঘোমটা আর ফুল হাতার ব্লাউজ পরা, কোন মানে হয়? উনি নাকি আবার নারী জাগরনের অমুক- তমুক। তার মতে তার নাকি নারী উন্নয়নে কোন ভুমিকাই নাই, নারী উন্নয়নের সবচেয়ে বড় ভুমিকা নাকি পোষাকের উপর নির্ভর করে। আর যেটা করেছে তাসলিমা নাসরিন।

তাই তিনি তার কলেজ থেকে বোরকা কে বাতিল মাল বলে ঘোষনা দিয়েছেন এবং এই কারনে তার মনে হচ্ছে ইতিহাসের পরিবর্তন দরকার। রোকেয়া সাখাওয়াতের নাম মুছে সেখানে ওনার নাম ঢোকানোর জোড় তদবির উনি চালাচ্ছেন। এর মধ্যেই বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে যোগা যোগ করা হয়েছে, প্রশাসনের উপরের লেভেলে উনার হাত আছে। তাই দাড়ি আলা মোল্লাদের ঘ্যান ঘ্যানানিতে উনার কিছু আসে যায়না। ধর্মের মতন একটা বাতিল মাল নিয়ে মানুষ কিভাবে যে লাফায়? তাই তিনি বুঝতে পারেন না।

তার মতে ধর্ম হইলো বুল সিট। আমি একদিন ওনাকে জিগ্যেস করেছিলাম, স্যার বুলে পয়খানা করলে হয়, বুল সিট। আর গরু পায়খানা করলে কেন কাউ ডাং হয়? তিনি কিছু ক্ষন আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বললেন, সোন মেয়ে আমার সাথে ফাইজলামি করবা না, ফাইজলামির ফল ভালো হয়না। আমি জানতে চাই, "স্যার ফল কি মিষ্টি হয়, না টক হয়?" টক হইলে খুব ভালো হয়, মিষ্টি আমার অতটা ভালো লাগেনা, তবে মিস্টি হইলেও সমস্য নাই, এখন চিনির বড়ই দাম। তিনি কাপা কন্ঠে বললেন, "এই মেয়ে তুমি বের হও আমার রুম থেকে, নাহলে জুতা দিয়ে বের করে দেব।

" আমি বুঝতে পারি স্যার রেগে গেছেন, মানুষকে রাগানোর মধ্যে আনন্দ আছে বিষয়টা আজকে জানলাম, স্যারকে আর একটু রাগানোর জন্য বললাম, " স্যার জুতার সাথে এক জোড়া মোজা দিলে কেমন হয়?" স্যার কিছু বললেননা কেবল আংয়ুল দিয়ে ইশারা করলেন, যার মানে বের হ, নাইলে অর্ধ চন্দ্র দিয়ে বের করেদেবো পিশাচিনী। অর্ধ চন্দ্র ব্যাপারটা আমার মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকে, অর্ধ চন্দ্র যদি গলা ধাক্কা হয় তাহলে পুরা চন্দ্র মানে কি হতে পারে গলা টেপা? এমন সময় আমার সামনে আমাদের আয়া নসিমন এসে দ্বাড়ায়, নসিমন ঠোটে গাড় লিপিষ্টিক দিয়েছে, চুলে দুইটা বেনি করে তার মাথার শেষে লাল ফিতা বেধেছে, সে গলায় একটা খুকি খুকি ভাব এনে জিগ্যেস করে , "আফা মনি এই খানে কি করেন? ক্লাস তো চলতেছে, যান ক্লাসে যান। " আমি নসি মনকে জিগ্যেস করি, নসিমন বলোতো অর্ধ চন্দ্রমানে কি? নাসিমন বলে কি জানি চন্দ্র মানে চান এইডা বুঝি, পাচ কেলাসের বিদ্যা পেটে আছে। তয় হইছে কি? আফা। মাইয়া মানষের বেশি বিদ্যার দরকার নাই, পুরষগো কেমনে সুখ দেওন যায় সেই বিদ্যা জানা থাকলেই দেখবেন জীবনে সুখের অভাব নাই।

আর তাছাড়া স্বামীর পায়ের তলায় হইলো স্ত্রীর বেহেশ্ত। তোমারে কে বল্ল, "স্বামীর পায়ের তলায় স্ত্রীর বেহেস্ত। " বরং হাদিস শরীফে আছে যে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত। কথাটার মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে মায়ের সেবা করার মাধ্যমে সন্তান বেহেস্ত পেতে পারে। আমার এই মেয়েকে বিভ্রান্ত করে দিতে ইচ্ছা হচ্ছে, আমি চেহারার সামন্য ভোলা ভালা ভাব এনে বলি, কথা তুমি ঠিকই বলছো, তুমি তো এই সুখ দেওয়ার ব্যাপারে বিশাল এক্সপার্ট, তোমার একটা ভিডিও আছে আমার কাছে, পহেলা বৈশাখের দিনের কলেজ বন্ধ ছিলো তুমি আর প্রিন্সিপাল স্যার দুই জনই আইছিলা কলেজের ময়লা ঝাড়তে।

তোমার সাদার উপরে লাল পার শাড়ীটা তোমারে ভালোই মানাইছেলো। নসিমনের মুখ সামান্য হা হয়ে আছে, খুব সম্ভব ওর শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে, ওকে আর একটু বিভ্রান্ত করার জন্যে বলি ভিডিওটা তোমার স্বামীর কাছে পাঠানোর ব্যাবস্হা হচ্ছে, তোমার স্বামী ঐ জিনিস দেখলে তোমারে তার পায়ের নিচের হাবিয়া দোজখ দেখাবে, আর তোমার অর্ধচন্দ্র দেবার পাশা পাশি ফুল চন্দ্রও দিয়া দিতে পারে, চিন্তা নিওনা। বলে আমি ক্লাসে চলে আসি। নসিমন ওখানেই দ্বাড়িয়ে থাকে, ওর হক চকানি থামতে আরো সময় লাগবে। ও ভালো কথা আগে আমার পরিচয়টা দিয়ে নেই, আমি মিলু, হুমায়ুন আহম্মেদ স্যারের হিমু পড়তে পড়তে আমার মধ্যে কিছুটা হিমু ভাব চলে এসেছে, স্যার আমার খুব প্রিয় লেখক সেটা বলবোনা তবে ভদ্রলোকের বিশাল গ্যান, ওনার কিছু গল্প পড়ে আমার চোখে জল এসে গিয়েছিলো।

তবে হিমুটা আমি গুলে খয়ে ফেলেছি, একবার ভেবেছিলাম হিমুর বই গুলো সব ধিরে ধিরে ব্লান্ডার করে খেয়ে ফেলবো, ছোট মামা কে বলেছিলাম তিনি বললেন ভালো তো অবশ্যই খাবি, তুই বই খেয়ে রেকর্ড করবি, গিনিচ বুকের লোক জন আসবে, ছবি ছাপা হবে পত্রিকায়, চার ফর্মার নিউজ হবে। নিউজ হবে এরকম...। আমি মামাকে থামিয়ে বললাম মামা আগে ব্লান্ডারের ব্যাবস্হা করতে হবে, মামিরটা নষ্ট করলে বাড়ী থেকে বার করেদিবে, তখন রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করে খেতে হবে, মামা মাথা ঝাকিয়ে বলেন তা ঠিক। মামা সেদিনের মধ্যে ব্লান্ডার কিনে আনলেন সাথে কিছু ফল বললেন মারে বই খাবার প্লান বাদ দে, আমি আশ্চর্য হয়ে জানতে চাই মামা কেন আমার গিনিচ বুকের কি হবে? মামা বল্লেন আর বলিস না আমার এক বন্ধু আছেনা ফুড এন্ড নিউট্রেসনে চাকরি করে, ব্লান্ডার কিনতে গিয়ে দেখা ওর সাথে। কথায় কথায় বল্লাম তোর বই খাবার কথা ব্যাটা বলে কিনা মানুষের ডাইজেষ্টিভ সিষ্টেম নাকি বই হজম করতে পারবেনা, আর তাছাড়া বইয়ের মলাট গুলা নাকি ডাষ্টবিনের কাগজ ময়লা দিয়ে মন্ড বানিয়ে বানায়, বলে ব্যাটা ফল কিনে দিলো।

আমার আর বই গুলে খাওয়া হলোনা, আপেলের জুস খেতে হলো। মামা বানিয়েদিলেন, এরকম অক্ষাদ্য খাওয়ার চেয়ে মনে হয় বই খাওয়াই ভালো ছিলো। তবুও মামা কে খুশি করতে খেয়েছি। ও ভালো কথা আমারও হিমুর মতন বাবা মা নেই। ছোট বেলা থেকে শুনেছি ওনারা দুজন নাকি গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা গেছেন, তবে ঘটনা অন্য, এর পরথেকে মামা ই আমার বাবা মা, মামি ও আদর করে, তবে মামার মতন না।

আমরা তিন জন একসাথে হলেই মামা ছোট কবিতা বলে, তাই তাই তাই মামা বাড়ী যাই, মামা দিলো দুধ ভাত। দুয়ারে বইসা খাই। মামি আইলো ঠেংগা লইয়া পলাই পলই। আমার মামি অবশ্য ঠেংগা নিয়া আসা মামিনা। তিনি বিশিষ্ট নারী উন্নয়ন, নারী ক্ষমতায়ন বিষয়ের কর্ম কর্তা।

ওনার ঘরে বেগম রোকেয়ার একটা ছবি আছে, মামির ঘরে রাতে যেতে ভয় করে, মনে হয় বেগম রোকেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ভয়ের ব্যাপারে হিমুর বাবা কি কিছু বলেছে? হিমুকে। কি জানি বলতেও পারে, হিমুর বাবার তো আবার হুমায়ুন স্যারের মতন বিসাল গ্যান, আমার মাঝে মাঝে মনে হয় হিমুর বাবা টাবা বলে কেউ নেই, হুমায়ুন স্যারই হিমুর বাবা। যাহোক এবার মুল বিষয়ে আসি, যার বর্ননা প্রথমে দিয়েছি তিনি আমাদের প্রিন্সিপাল স্যার ওনার নাম পরিমল, নামটার সাথে একধরনের মল মু্ত্র টাইপের গন্ধ আছে, মেয়েরা তার নাম নিয়ে ছোট একটা ছড়া বানিয়েছে, কমডের ভিতরে, করি মল মুত্র পরিমল, খান,,র পুত্র। আমি কড়ি ডোর পার করে ক্লাসে যাই, অনন্যা আমাকে বসার জায়গা করে দেয়, মেয়েটা মোটা চশমা পড়ে, একেবারে "জেইসি জেসি কৈ নেহির" কাঠ পোক এই মেয়ে টিভি সিরিয়াল মানে অগ্যান, থাক ও অগ্যান, এমন সময় খান.র পুত্র এসে আমাদের ক্লাসে ঢোকে, তিনি এসেছেন কিছু গ্যান গর্ভ আলোচনা করতে, ভদ্র লোক লজিক দিতে খুব ওস্তাদ, এক দিন অত্যান্ত গম্ভির ভাবে, (আমারা এই গম্ভির ভাবের নাম দিয়েছি এরিস্টেটলিয় বালিকা ভাব) বললো আমি ভেবে দেখলাম হিন্দু আর মুসলমানের ধর্মের মধ্যে কোন পার্থাক্যনাই, আমাদের ক্লাস নিচ্ছিলেন তখন নুসরাত ম্যাডাম, খুব ধার্মিক টাইপের মহিলা, তিনি ভ্রু সংকুচিত করলেন, এবং জানতে চাইলেন কিভাবে মল সাহেব, ক্লাসে চাপা একটা হাসির ঢেউ বয়ে গেলো, তিনি তখন তার সেই বালিকা(বাল) ভাব নিয়ে বললেন দেখুন হিন্দুরা প্রতিমার সামনে মাথা নত করে, আর মুসলমান রা মাজার, কাবা ঘর এগুলার সামনে মাথা নত করে, প্রার্থনার ব্যাবস্হাতো সেই জড় বস্তুর সামনেই করা হলো তাইনকি? বলে ক্লাসের ছাত্রিদের দিকে ইসারা করলেন, সবাই সমস্বরে বললো জ্বি স্যার, কেবল আমি বললাম জি জনাব, তিনি আমার দিকে ঘুরে তাকালেন বললেন এই মেয়র জি জনাব মানেকি, এই সব পুরাতন ভাব ধারা কোথা থেকে পাও আধুনিক হও বুঝেছো, আমি আবার বললাম জি জনাব, তিনি ক্ষেপেগেলেন, বললেন তোমাকে না বলেছি আধুনিক হতে, আমি বললাম ইএস হানি, তিনি কিছুটা ম্যানেজড হলেন, নুসরাত ম্যাডাম বললেন আচ্ছা জনাব, তিনি ম্যাডাম কে থামিয়ে বললেন আপনিও তো মান্ধ্যাতার আমলে ল্যাংগোয়েজ ব্যাবহার করছেন, স্যার বলতে কি লজ্জা লাগে নাকি? ম্যাডাম এবার কোন সম্মধন না করে বলেলন বলেন তো কোন হিন্দু কি তার পুজনীয় প্রতীমার উপরে ওঠে? তিন গম্ভির হয়ে বলেলেন না।

কিন্তু মুসলমান রা তো কাবার উপরে ওঠে, মক্কা বিজয়ের পর কাবার উপরে উঠে প্রথম আজান দিয়েছিলো যে লোকটা তার নাম জানেন, তিন বললেন হ্যা জানি একটা দাস বলে মুক কুচকালেন, ম্যাডাম বললেন হ্যা বেলাল সেই সাহাবির নাম। তিনি আবার মুখ কুচকে বললেন, মুহাম্মদের কোন রুচি ছিলোনা, একটা দাস কে এরকম সম্মান দেখানোর কোন মানেহয়, ম্যাডাম বল্লেন মহাম্মাদ (সঃ) ছিলেন সাম্যের নবী, আর তিনি যে ধর্ম প্রচার করেছেন সেখানে কোন উচু নিচু নেই, ইসলামে ব্রাম্মন, ক্ষত্রিয়, সুদ্র, দাস বলে কেউ নেই, সবাই মানুষ। সবাই ভাই ভাই। আমাদের স্রষ্ঠা কাউকে পা দিয়ে তৈরী করেনি, সাবাইকে হাত দিয়ে তৈরী করেছে। মাজারে সেজদার ব্যাপারে আপনি কি বলবেন? শুনুন আমি আমার সাধারন গ্যানে যা বুঝি আমি আপনার মতন অতটা গ্যানি না! তার পরো বলি, মুসলামানরা যদি মাজার পুজাই করতো তাহলে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মাজার হতো প্রিয় নবীর রওজা মোবারক, কিন্তু সেখানে সেজদাতো দুরের কথা কেউ মাথা নত করলেও লাঠি দিয়ে কপালে খোচা দেয়া হয়, মল সাহেব মোবারক শব্দটা উচ্চারন করে তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলেন।

ম্যাডামের কথা শুনে আমি কিছুটা ঘোরের মধ্যে চলে যাই, হুমায়ুন স্যার প্রায়ই লেখে প্রকৃতি নাকি নানান ঘটনা ঘটায় যা কিনা একটা শক্তি হিসেবে দেখানো হয়, হিমুরও এক ধরনের আধ্যাত্যিক ক্ষমতা আছে, এই আধ্যাত্য মানুষ পায় কোথায়? প্রকৃতি টা কে? মল সাহেব একবার প্রশ্ন করেছিলো আল্লাহ কে? কোথায় থাকে? দেখতে কেমন? সব শেষে বলেছিলেন যেহেতু আল্লাহ এবং আত্যা দেখা যায় না তাহলে আমি আল্লাহ এবং আত্যেয় বিশ্বাস করি না। মল সাহেব কে তখন আমি একটা প্রশ্ন করেছিলাম, আপনি যে আপনার মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নিয়েছিলেন সেটাতো আপনি দেখেন নি তাহলে কি আপনি বিশ্বাস করেননা তিনি আপনার মা। তিনি বলেছিলেন শোন ইয়াং লেডি আমি যে আমার মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নিয়েছি সেটার সাক্ষি আছে আমার দাই যিনি আমার জন্মের পুরো প্রকৃয়াটা দেখেছে, কিন্তু এমন কাউকে দেখাতে পারবে যে আল্লাহকে দেখেছে। হিমু নানান সময় মানুষ কে বিভ্রান্ত করতে চায় বিভ্রান্তির মাঝে সে জীবনের সমাধান খোজে, মল সাহেবও আমাকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছেন তিনি আমাকে বিভ্রান্ত করে ধর্ম থেকে সরিয়ে আনতে চাচ্ছেন, তিনি ধর্মমানেন না কিন্তু শ্রী কৃষ্নের দেবতা দের মাসব্যাপি কাম লিলার বর্ননা দিতে ভালো বাসেন, কামই নাকি ধর্ম ওনার কাছে, ওনার মতে কাম দেবতা ছাড়া আর কারোর নাকি দরকার নাই উপাসনা করার, আর সে দেবতা আলাদা ভাবো বানানোর কোন দরকার নাই সে দেবতা আছে দেহের ভেতরে, রাধা আরাধনায়ই নাকি দেহের মুক্তি। তিনি মনে করেন কামকে স্পর্স করাযায় আলিংগন করাযায় উপভোগ করা যায় তাই কামই সৃষ্টি কামই জগৎ, আমার এক বান্ধবি আছে ভিষন ঠোটকাটা ওর নাম জাসরা ইসলাম জেবিন, ও জানতে চেয়েছিলো, স্যার আপনি আল্লাহকে দেখেন নি বলে তাকে বিশ্বাস করেন না, কিন্তু কাম সাধনার পরিতৃপ্তি কে বলছেন সৃষ্ট, আচ্ছা আপনি কি পরিতৃপতি কে দেখেছেন মানে সুখ দেখেছেন? যদি দেখে থাকেন তাহলে বলুন সুখের দৈর্ঘ প্রস্থ উচ্চতা কত? সুখকে অনুভব করে যে মন সেই মন কে কি কখোন দেখেছেন? দেখেথাকলে তার দৈর্ঘ প্রস্থ উচ্চতা বলুন।

দুখঃ কি? দেখতে কেমন দৈর্ঘ প্রস্থ উচ্চতা কত? বলবেন না যেন দুখঃ পেলে মানুষ কাদে, মন খারাপ করে, আপনি সঠিক ভাবে দুখঃ কে চিনিয়ে দিন। প্রফেসার সাহেব দেখলেন অবস্হা বেগতিক, তিনি ঘরির দিকে তাকিয়ে বললেন এখোন ঘন্টা দিচ্ছেনা কেন? মজিদ এই মজিদ বলতে বলতে ক্লাস থেকে বের হয়ে গেলেন। আমি জেবিনের কথা মনে করে স্যারের বিভ্রান্তির ব্যাড়া ভেংয়ে বেড়িয়ে এলাম, সত্যিতো আমরা মন দেখিনি তার পরো মনকে বিশ্বাস করি, তেমনি আল্লাহ কে কেনো নাদেখে বিশ্বাস করা যাবেনা, একদিন কোরআন পড়তে পড়তে ভেবে ছিলাম যদি কোরআন কে ভুল প্রমান করতে চায় কেউ তাহলে দুটি উপায় মানুষের খুব হাতের কাছেই আছে, যেমন আল্লাহ তালা কথা দিয়েছিলেন কোরআনর কেউ বিকৃত করতে পারবেনা, এখোন পর্যন্ত কোরআন অবিকৃত অবস্হায় আছে, আর একাটা বলা আছে ইহুদিরা কোনদিন মুসলমানের বন্ধু হবেনা। কেউ যদি কোরআন কে মিথ্যা প্রমান করতে চায় তাহলে কোরান কে বিকৃত করে দেখাক অথবা এক দিনের জন্য ইহুদিদের কে মুসলমানের বন্ধু বানিয়ে দেখাক। গল্পটা এবার শেষ করি,খুব সংক্ষেপে শেষ করছি কারন মনটা ভালো না, এখনো যখন দেখি সাধারন মানুষ পিরের গোসলের পানি খায়, মাজার পুজাকরে, গাজা খায়, মাজারের পিছনে কনসান্ট্রেসন থেরাপি করে, আক্ষেপ হয়, কাদের জন্য লিখি, ইসলামের মতন একটা সহজ ধর্মকে গাজার পুটলির মধ্যে ভরে যারা কলকিতে টেনে সাধারন মানুষের কাছে দুর্বুদ্ধ করে দেয়, যারা সেখায় পিরের ঠেং না ধরলে বেহেস্ত হবেনা, অথচ কেয়ামতের দিন পিরের পরনে লুংগি থাকবে কিনা? আল্লাহ তালাই ভালো জানেন।

যেখানে, কেবল কোরআন আর হাদিস মেনে জীবন পরিচালনা করলেই ধর্মপালনের আগা গোড়া সম্পন্ন হয় সেটা না করে আমরা খুজি দয়াল বাবা রে, আফসুস হয় বড়ই আফসোস, কবে সত্যি কারের মুসলমানরা জাগবে, যারা খারিজি প্রথা থেকে ফিরবে সঠিক ধারায়। যা হোক গল্পটা এবার শেষ করি, আমাদের কলেজের প্রায় শেষ জেবিন একদিন প্রন্সিপাল স্যারের কোচিংয়ে গিয়েছিলো প্রাক্টিক্যাল খাতায় সাইন করাতে, তার পরের ঘটনা আমি আর ডিটেইল লিখবোনা, কেবল এতটুকু বলছি কামদেব তখন স্যারের মাথায় ভর করেছিলো। এর কিছুদিন পরে সেই কাম সাধনার ধারন করা দৃশ্য ছড়িয়ে পড়েছিলো হাজারো মানুষের হাতে বিশ্বের দরবারে আবারো লান্চিত হয়েছিলো আরো একজন কিশোরী, উহু ভুল বল্লাম একজন নয় দুজন কিশোরী দিতীয় জানর নাম পরে লিখছি, স্যার এখন জেল খানায় আছে, স্যার যেখানে তার মনু মেন্ট বানাতে চেয়েছিলো সেখানে মেয়েরা স্যারের একরটা ছবি একেছে গলায় জুতার মালা দেওয়া আমি সেখানে এক জোড়া মোজাও একে দিয়েছি আহারে বেচারা মোজা ছাড়া জুতা পরবে কিভাবে? ভিডিও ফুটেজটা ছড়িয়েছিলো আমাদের আয়া, তাকেও সেদিন স্যার তার কোচিংয়ে যেতে বলেছিলো, ঘটনা চাউর হবার পর থেকে আয়াকে আর পাওয়া যাচ্ছেনা, তবে ট্রেনে কাটা পরা অগ্যাত এক মহিলার লাশ পাওয়া গেছে মহাখালির দিকে, জাসরার পাশে দাড়িয়েছে মামির সংগঠন। সংগঠনের দাবি পরিমলের বিচার চাই, মামিরা একটা মানবন্ধন করেছিলো সেখানে আমি আর মামা গিয়েছিলাম, ফেরার পথে মামার কাছে যানতে চেয়েছিলাম মামা প্রকৃতি আর আল্লাহ কি এক? মাম বলেছিলেন নারে মা প্রকৃতি আর আল্লাহ এক না, আল্লাহ সৃষ্টি কর্তা আর প্রকৃতি আল্লার সৃষ্টি। শেষ কথা আগামি কাল কেও একটা মানব বন্ধনে যেতে হবে, পরিমল স্যারের মেয়ে মিষ্টি কে তার টিচার নাকি রেপ করেছে এবং তার পর সেই ভিডিও নাকি ছেড়েছে নেটে, আমি আবার মামা কে জিগ্যেস করলাম- হচ্ছেটা কি দেশে?মামা।

মামা বললেন মারে মানুষ যত ধর্ম থেকে দুরে সরে যাবে ততই পতিত হবে, সামাজিক অবক্ষয়ের আর এর কারন ধর্ম হীনতা, মানুষকে বেধে রাখার একমাত্র অশ্র হচ্ছে ধর্ম বুঝলি মা। দ্বিতীয় কিশোরী টা কে সেটা নিশ্চই আর বলে বুঝাতে হবেনা। প্রকৃতি মানুষ কে ক্ষমা করেনা, কিন্তু আল্লাহ করে, আল্লাহ তায়ালা ক্ষমাশীল, সব দুয়ার বন্ধ হয়েগেলেও তার দুয়ার সবার জন্য খোলা থাকে টুয়েন্টি ফোরআওয়ারস্। উৎসর্গঃ রাজুউক কলেজের নিপীড়িত বোনদের। মুখ বন্ধঃ এই গল্পের ব্যাক্তি চরিত্র গুলো সম্পুর্ন কাল্পনিক, জীবিত, মৃত, অর্ধমৃত, জন্ম নেবার অপেক্ষায় রত কারো সাথে কোন প্রকারের মিল খুজে পেলে সেটা কেবল কাক তালিয়ই নয় টিয়া তালিয়, ময়না তালিও বটে।

লেখাটায় অনেক বানানের ভুল আছে, টাইপো তে আমি এখনো দুর্বল, আপনারা যারা কষ্ট করে আমার লেখা পড়েন তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ও ভালো কথা আমার অন্য লেখার ভিতরে গল্পের সাথে মিল রেখে ছবি দেয়া থাকে, এই লেখাটায় দিলাম না কারন লেখাটা এমনিতেই অনেরক বড় হয়ে গেছে, ছবি দিলে হয়তো শেষ পর্যন্ত অনেকের পড়ার ধৈর্য থাকবেনা। ধন্যবাদ। আমার আগের লেখার লিংকঃ বুদ্ধং সরনং গচ্ছামী (অহিংসা পরম ধর্ম) ফেইস বুকে আমাকে আমার পেইজ দেখতে চাইলে নিচের লিংকে যানঃ View this link  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৩৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।