আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের জাতীয় রোগ-চুলকানি(কিঞ্চিত ১৮+)

আমাদের একটা জাতীয় রোগ আছে আর তার নাম হচ্ছে চুলকানি। চুলকানিটা হয় তলপেটের সামান্য নিচে। এর অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যায়। যেমনঃ ভারত পাকিস্তান এই দুই নামে বেশিরভাগ লোকের চুলকানি। নামটা শুনলেই চুলকানি শুরু হয়, শেষ হবার কোন ঠিক নাই।

এর হাজার হাজার প্রমান আছে। লেটেস্টটা দিয়ে শুরু করি। ১. গত ৪-৫ বছর ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেট টিমের প্র্যাকটিস জার্সির রঙ নীল। তার আগে হলুদ-কাল ছিল। তখন কার কোন কথা শোনা যায়নি কিন্তু জেই সাহারা ওই নীল রঙ্গেরই প্র্যাকটিস জার্সি দিল শুরু হল কিছু লোকের চুলকানি।

NEWAY নামটা যখন বড় করে লেখা ছিল BANGLADESH এর জায়গায় তখন যত প্রতিবাদ হয়েছিল এখন তার চেয়ে বেশি হচ্ছে। কারন একটাই- চুলকানি। ২. Airtel বর্জন নিয়ে অনেক কিছু হইছে। প্রধান কারন এটা দেশি কোম্পানি না, দেশের টাকা বিদেশে যাচ্ছে। GP, Banglalink, Robi এই সব কবে দেশি হইল তা জানতে খুব ইচ্ছা হয়।

এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ নাই কেন??? কারন ভারতীয় চুলকানি নাই এদের গায়ে। অথচ জিপি নরওয়ের কোম্পানি যেই দেশে নবী(সাঃ) কে নিয়ে ব্যাঙ্গ চিত্র প্রকাশ হয়। কিন্তু এইটা ভারতীয় কোম্পানি না তাই কার চুলকানিও উঠে না। ৩. ৭১ এর কারনে পাকিস্তান খারাপ। আমাদের অর্থনৈতিক ভাবে ভারত মার দিয়ে যাচ্ছে।

একই সাথে চীন ও আমাদের বাজারের একটা বড় অংশ দখল করে রাখছে। এই সেই চীন যারা ৭১ এ পাকিস্তানকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছিল যার কারনে এই দেশের লাখ লাখ নীরিহ মানুষ শহীদ হয়। কিন্তু তাও চীন খারাপ না। কারন এরা ভারত বা পাকিস্তান না। এই দুইটা দেশ হইলেই চুলকানি শুরু হয় বাকিদের সময়...... তাই কেউ কিছু বলে না।

৪. ভারতীয় চ্যানেল বর্জন করার বিশাল হাক ডাক হয়। এমনি সময় ভারতীয় চ্যানেল এ চুলকানি হলেও খেলা দেখার সময় ঠিকি ভারতীয় চ্যানেল দেখে। স্বার্থের সময় চুলকানি বন্ধ হয়ে যায় আর কি। ৫. ভারতীয় সিরিয়াল আমাদের সংস্কৃতি নষ্ট করে দিচ্ছে। কথা সত্য অবশ্যই কিন্তু এমনও অনেকেই আছে যারা ইংলিশ সিরিয়াল ও দেখে।

ইংলিশ সিরিয়াল কি আমাদের সংস্কৃতির অংশ??? ভারতীয় সিরিয়াল এ যাদের চুলকানি উঠে তাদের ইংলিশ সিরিয়াল এ চুলকানি উঠে না কেন??? কারন ইংলিশ সিরিয়াল ভারতীয় না, ৬. পাকিস্তানের কিছু ভাল বললেই রাজাকার!! পাকিস্তান নাম শুনলেই এক দলের চুলকানি উঠে। পাকিস্তানের শিয়ালকোটের ক্রিকেটীয় সরঞ্জামেরও প্রসংশা করা যাবে না। পাকিস্তান মানেই খারাপ। চুলকানি আর কি। ।

ধর্ম নিয়েও চুলকানি আছে। জেমনঃ ১. যারা ইসলাম ধর্মের অনুশাসন মানে চলার চেষ্টা করে তাদের এখন বলা হয় জঙ্গি। একদল আছে যাদের ইসলাম এর নাম শুনলেই চুলকানি উঠে। আবার অনেকেই আছে যাদের ধর্মের কথা শুনলেই চুলকানি উঠে। তবে ইসলামকে পচাইতেই এদের বেশি চুলকানি।

মুসলিম কিছু করলেই জঙ্গি কিন্তু বাকিরা যাই করুক ভাল। চে গুয়াভারার বিপ্লব ভাল কিন্তু মুহাম্মাদ(সাঃ) এর বিপ্লব জঙ্গিবাদ। এইসব লোকের অন্য সময় চুলকানি না উঠলেও ইসলামের সময় উঠবেই। ২. এর উল্টাও আছে। একদল মহা ধর্মপ্রাণ ব্যাক্তি ধর্ম প্রচার করে নানান জায়গায় ঈশ্বরের নাম দেখায়!! সারা সপ্তাহ ১৮+ জোক্স নিয়ে চুলকায় আর শুক্রবার আসলেই ধর্মপ্রাণ হয়ে যায়।

একদিনের জন্য চুলকানির বিরতি। ৩. সারা বছর ধর্ম নিয়ে চুলকাবে মানবতার বানী দিয়ে। কিন্তু ঈদ, পূজা আসলেই চুলকানি বন্ধ। তখন ঠিকি খাইতে হাজির হবে। যে কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান একজন ঈশ্বরকে উৎসর্গ করা হয় সব ধর্মেই।

এই সব লোকেদের আবার ঈশ্বরকে উৎসর্গ করা কিছু খেতে ভাল লাগে, চুলকানি কমে মনে হয়। চুলকানি আছে রাজনীতি নিয়েও। যেমনঃ ১. সারা বছর মানুষের জন্য রাজনীতির কথা চুলকায় ভোট নিবে তারপর চুলকানি বন্ধ হয়ে যাবে ভোটে জিতলেই। ২. ধর্ম নিয়ে রাজনীতির নামে চুলকাবে কিন্তু কোন ধর্মের কাজ করতে দেখা যাবে না। ৩. প্রতিপক্ষের কার নামে কিছু দেখলেই চুলকানি, নাম না পাল্টানো পর্যন্ত শান্তি নাই।

রাজনীতি নিয়ে আর বেশি না বলাই ভাল। খেলা নিয়েও আমাদের চুলকানি আছে। যেমনঃ সাকিবকে KKR না খেলাইলে সাকিব এর কত প্রসংশা!!(এই ছেলেটার জন্য যে কোন প্রসংশা কম হয়ে যায়) কিন্তু একদিন খারাপ খেললেই বেশিরভাগ চুলকানি সমর্থকদের চুলকানি উঠে, গালি দিতেও বাধে না তাদের। আর একতা চুলকানির উদাহরনঃ দেশের অর্ধেকের বেশি জেলার মানুষ গ্যাস লাইন এ পায় না, সিলিন্ডার এ কিনতে হয় যার দাম ১৬০০ তাকার মত। কিন্তু ঢাকায় Unlimited Gas মাত্র ৪৫০ টাকায়।

জারা ১৬০০ টাকা দিয়ে গ্যাস কিনে তারা দাম ও বেশি দিচ্ছে আবার পাচ্ছেও কম। কিন্তু এই ৪৫০ টাকা বাড়াইতে চাইলেই চুলকানি। সব শেষে একদম সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা সমস্যা। ৭১ এ আমাদের দেশের বিশাল একতা অংশ পাশের দেশে চলে গিয়েছিল। জেই কারনেই হক তারা আমাদের আশ্র্য় দিয়েছিল।

আজ মানবতাবাদীদের চুলকানি নাই কেন???? এখানে ধর্মের ব্যাপারটা বাদ দিলাম, সাধারন মানবতাবোধ থেকেই তাদের সাহায্য করা উচিত। গোটা পৃথিবী যেখানে তাদের সাহায্যের কথা বলছে আমাদের সেইদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নাই। একদল মানুষ ধর্মীয় অনুভূতির দিক দিয়ে সমবেদনা জানাচ্ছে সেই সাথে কিছু ভুলভাল তথ্য দিচ্ছে। তাদের রাগ অং সাং সূচির উপর। কিন্তু উনি নিজেও এই দাঙ্গা বন্ধের জন্য বলে যাচ্ছেন।

জাতিসংঘ সাহায্যের চেষ্টা করছে আর আমরা ধর্মীয় দিক দিয়ে বিবেচনা করেই আমাদের দায়িত্ব শেষ ভাবছি। চুলকানিময় জাতির কাছে আর কি বা আশা করা যায়!! ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.