আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জন্মদিন পোস্টঃ যে কথাটি ৩৬৫ দিন আগে বলা হয়নি

I realized it doesn't really matter whether I exist or not. জন্মদিন। শুনতেই কেমন যেন উৎসবের একটা আমেজ তৈরি হয়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে কেন যেন সবসময়ই ব্যতিক্রম হয়ে এসেছে। ছোটবেলা থেকেই অনেকটা একা একা বড় হওয়ার কারণেই হোক অথবা অনেক বন্ধু-বান্ধব না থাকার কারণেই হোক কিংবা এতদূর বয়সে অনেকখানি বাস্তবতা অনুভব করার কারণেই হোক, উৎসব কেন যেন খুব একটা আমেজ তৈরি করে না আর মনে। ২০০৬-এর এপ্রিল থেকে ব্লগ লেখা শুরু করে আজ অবধি মাত্র দু'বার জন্মদিন নিয়ে পোস্ট দিয়েছি।

একবার জুন ২০০৭ -এ আরেকবার জুন ২০০৯ -এ। কিন্তু কোনোবারই ততোটা খুশির আমেজ নিয়ে পোস্ট দিতে পারিনি কেন যেন। যেভাবেই হোক, আমার হাতেগোণা কয়েকজন ফ্রেন্ডের মধ্যেই বেস্ট ফ্রেন্ডের জায়গাটা দখল করে নেয় সে। কোনোকিছু করতে গেলেও যেমন ওর সঙ্গে পরামর্শ না করে করা হয় না, তেমনি কোনো কথা কারো সঙ্গে শেয়ার করা না গেলেও সেই ফ্রেন্ডটার সঙ্গে চোখ বন্ধ করে শেয়ার করা যেতো। কিছু কারণে আমার সমস্যাগুলোর কথা ওর মতো ভালো আর কেউ বুঝতো না।

এমনকি এখনও বোঝে না। আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে এই দিনে আমার জন্মদিন উপলক্ষ্যে খুব মজা করে বিশাল এক পোস্ট লিখেছিল সে। সেই পোস্টে বাহারি সব খাবারের রসালো সব ছবি দিয়ে ভরপুর ছিল। বুঝতে কোনো কষ্ট হয়নি, অনেক শখ করে সময় নিয়ে ও পোস্টটা তৈরি করেছিলো আমার জন্য উদ্দেশ্য করে। কিন্তু সে যখন জিজ্ঞেস করলো তার উইশ করে করা পোস্টটা কেমন লেগেছে, তখন আমি তার মনের দিকে না তাকিয়ে সোজা জবাব দিয়েছি, 'ভালো লাগেনি।

' সে আমার কথা ঠিকভাবেই শুনেছে সেটা নিশ্চিত করার জন্য দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করলো। আমিও আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধুটার মনের দিকে না তাকিয়ে আর সবসময়ের মতোই ঠিক মনের সত্যি কথাটা বলে দিলাম। কিছু কিছু সত্যি কথা কখনো বলতে হয় না। কিন্তু ঐ মূহুর্তে এই তত্ত্ব কেন যেন মাথায় আসেনি। তাই তার মনটাই খারাপ করে দিয়েছিলাম।

কিন্তু আজ ৩৬৫ দিন পার হয়ে গেলেও তাকে বলা হয়নি কেন আমি সেদিন তার এতো সুন্দর করে গোছানো পোস্টটাকে ভালো লাগাতে পারিনি। অনেকে হয়তো অনেকভাবে নেবে কারণটা। কিন্তু আমি আজ সত্যিটাই বলবো। অর্থনৈতিক টানাপোড়েন ছাড়াও অনেকটা একা একা বা ঘরে থেকেই বড় হওয়ার কারণে বড়লোকদের অনেক কিছুর সঙ্গেই আমি পরিচিত নই। আরও স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, এক বছর আগে ছিলাম না।

গত এক বছরে অনেক কিছু শিখেছি, জেনেছি। গত জন্মদিনে ওর লেখা পোস্টটায় যেসব খাবারের নাম ছিল তার একটার নামও কখনো আমি শুনিনি। ছবি দেখেও চিনতে পারিনি। তাই তাৎক্ষণিকভাবে একটু মন খারাপ হয়েছিল। মনে হচ্ছিল, বন্ধুদের সঙ্গে, এমনকি সবচেয়ে কাছের ভালো বন্ধুটার সঙ্গেও তাল মিলিয়ে চলার যোগ্যতা বা জ্ঞানটুকুও নেই।

যুক্তিটা যতোই সিলি হোক, সেই সময় এটাই আমার কাছে অনেক খারাপ লেগেছিল। বন্ধুত্বে কোনো শ্রেণীবিভেদ থাকে না যদিও, তবুও আমার এটাই মনে হয়েছিল বারবার। আর এ জন্যই নিজের সম্পূর্ণ অচেনা সব খাবার-দাবারের নাম দেখে একটু বিব্রতকর অথবা মন খারাপ করা অবস্থায় পড়ে গিয়েছিলাম। আজ এক বছর পর পেছন ফিরে তাকালে একটু একটু মনে হয় যে সেটা ছেলেমানুষী ছিল। কিন্তু ছেলেমানুষী বন্ধুত্বেও থাকতে পারে।

তুই হয়তো একবার জিজ্ঞেস করলে পারতি, কেন ভালো লাগেনি। আজ এক বছর পর সেই পোস্ট লেখারও কেউ নেই। পৃথিবীটা একইভাবে ঘুরতে থাকলেও এর কাণ্ড-কারখানা যে কীভাবে প্রতিনিয়ত বদলাতে থাকে; সত্যিই অদ্ভূত! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.