আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গুডবাই পূর্ণিমা!

কয়েক মাস আগেও পত্রিকার পাতা উলটালে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই পূর্ণিমার নতুন নতুন কাজের খবর মিলত। যতই দিন যাচ্ছে, পূর্ণিমার ছবির খবর ততই কমে আসছে। আর এর প্রধান কারণ পূর্ণিমা নিজেই। এ দেশের সিনেমাকে একরকম গুডবাই জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
নতুন কোনো ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব একেবারেই গ্রহণ করছেন না।

মাঝে টুকটাক টিভি নাটকে অভিনয় করলেও তারও কোনো নতুন খবর নেই। ঢাকার নিকুঞ্জে নিজের বাড়ি থাকলেও শ্বশুরবাড়ি চট্টগ্রামে হওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম আসা আর যাওয়ার কাজটিই শুধু এখন পূর্ণিমার নিয়মিত কাজ।

অবশ্য সিনেমার অভিনয়ে ইতি টানার ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত সরাসরি কোনো কিছুই জানাননি পূর্ণিমা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্ণিমা তাঁর কাছের নির্মাতাদের ছবিতে অভিনয় না করার ব্যাপারে এক রকম ইঙ্গিত দিয়েই দিয়েছেন। তাঁদের ভাষ্য, সামনে হয়তো নতুন কোনো ছবিতে পূর্ণিমাকে আর না-ও দেখা যেতে পারে।

সংসার নিয়েই এখন বেশি মনোযোগী হয়েছেন তিনি।

পূর্ণিমা অভিনীত দুটি ছবি মুক্তির অপেক্ষায় আছে। ছবি দুটি হচ্ছে সোহানুর রহমান সোহানের ‘লোভে পাপ পাপে মৃত্যু’ ও মুহাম্মদ মোস্তফা কামালের ‘ছায়া-ছবি’। পূর্ণিমা অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি হচ্ছে এফ আই মানিক পরিচালিত ‘জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার’। বিগ বাজেট ও অনেক তারকাসমৃদ্ধ এ ছবিটি প্রত্যাশা অনুযায়ী সফলতা পায়নি।



পূর্ণিমা-ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এখন স্বামী-সংসার নিয়েই ব্যস্ত থাকছেন তিনি। নিয়মিত ঢাকা-চট্টগ্রাম আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকতে হয় তাঁকে। এ ছাড়া সিনেমায় অভিনয়ে নাকি শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরও রয়েছে ঘোর আপত্তি। নাটকে অভিনয়ের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিলেও ঈদের বেশ কয়েকটি নাটকের প্রস্তাবও পূর্ণিমা ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। সব বিষয়ে পূর্ণিমার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।



‘শত্রু ঘায়েল’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করলেও জাকির হোসেন রাজুর ‘এ জীবন তোমার আমার’ ছবির মধ্য দিয়ে নায়িকা পূর্ণিমার যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯৮ সালে জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ছবিটিতে পূর্ণিমা অভিনয় করেন রিয়াজের বিপরীতে। প্রথম ছবিতে সফলতার দেখা না পেলেও আস্তে আস্তে চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা নায়িকা হয়ে ওঠেন পূর্ণিমা। ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘হূদয়ের কথা’, ‘প্রেমের নাম বেদনা’, ‘ছোট্ট একটু ভালোবাসা’, ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’, ‘সুলতান’, ‘শাস্তি’, ‘শুভা’, ‘মেঘের পরে মেঘ’, ‘স্বামী-স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘পিতামাতার আমানত’ ‘মাটির ঠিকানা’, ‘সাথী তুমি কার’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘মায়ের জন্য পাগল’, ‘মাটির ঠিকানা’সহ অসংখ্য ভালো মানের ছবিতে অভিনয় করে প্রশংসিত হন পূর্ণিমা। আর হয়ে ওঠেন ঢাকাই ছবির নির্মাতাদের ভরসাও।



কাজী হায়াত্ পরিচালিত ‘ওরা আমাকে ভালো হতে দিল না’ ছবির জন্য ২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জন করেন পূর্ণিমা।

মৌসুমী, শাবনূর, পপির পর বাংলা চলচ্চিত্রে নিজেকে নির্ভরযোগ্য একজন নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন পূর্ণিমা। কিন্তু মৌসুমী, পপির চলচ্চিত্রে অনিয়মিত থাকা, শাবনূরের অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ আসা-যাওয়ার পর পূর্ণিমার এই যোগাযোগহীনতা চলচ্চিত্রের নায়িকা সংকটটা আরও প্রকট হবে বলে মনে করছেন চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট অনেকেই। পাশাপাশি চলচ্চিত্রে এখন মানসম্পন্ন গল্পেরও একটা বড় অভাব রয়েছে বলেও শিল্পীদের অভিমত। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।