ছড়াকার ফারুক নেওয়াজ অনেক আগে একটি ছড়া লিখেছিলেন, তার দুইটি লাইন এখনো মনে আছে।
লাইনদুটো হলো:
জীবনের দাম নেই আমাদের----
এই কথা আব্দুস সামাদের
এই কথা এখন প্রতিদিন সত্য হয়ে উঠছে।
সামাদের জীবনের দাম নেই। বদরের জীবনের দাম নেই। হযরতের জীবনের দাম নেই।
তাহলে কাদের জীবনের দাম বেশি? মন্ত্রী, সাবেক সংসদ সদস্য, আমলা, রাজনীতিক? কার জীবনের দাম আছে? যে দেশে মানুষের জীবনের দাম নেই সেই দেশ কার?
ইলিয়াস আলী গুম হলেন। তার কথা পত্রিকার পাতায় পাতায়। তার ড্রাইভারের কথা কেউ বলছে কি? নাকি ইলিয়াস আলীর দাম বেশি, অন্যরা সবই আব্দুস সামাদ!
ঘুমন্ত অবস্থায় একজন ড্রাইভার বদর খুন হলেন। সেও কি আবদুস সামাদ?
ইলিয়াস আলীর জীবনের দাম অনেক বেশি। তার টাকা আছে, গুলশান বনানীতে বাড়ী আছে, আবার তিনি সাবেক সাংসদ।
পুলিশের কাছেও তিনি অনেক দামী কারণ ছাত্রজীবন থেকে তার নামে হাজারো কেইস আছে। যারা রাজনীতি করেন তাদের কাছেও তিনি দামী কারণ অনেক পাওয়ার আছে। কিন্তু ওই ড্রাইভারদের কোনো দাম নেই। ওরা ইদুর বেড়ালের মতো মরবে এবং আমরা কেউ উহু আহুও করবো না।
আমার দৃষ্টিভঙ্গী আলাদা।
আমার মনে হয় এই ড্রাইভারদের জীবনের মূল্য ওইসব পতিত রাজনীতিকদের চেয়েও বেশি। এইসব রাজনীতিকরা অনেক টাকার মালিক। তাদের জন্য স্মরণসভা হবে, হরতাল ধর্মঘট হবে, পারলে সৌধ নির্মাণ করা হবে। এই রাজনীতিকরা তো দেশের জন্য জীবন দিবেন বলে কথা দিয়েছেন অতএব তাদের পরিবার তাকে আগে থেকেই তাকে হারিয়েছে। তাই তো হওয়ার কথা তাদের জীবনে।
কারণ ব্যক্তি থেকে দল বড় আর দলের চেয়ে দেশ বড়।
কিন্তু ওই ড্রাইভারদের ঘরে খাবার আসবে কোথা থেকে? তাদের সন্তানরা কি পড়াশুনা শিখতে পারবে। তাদের বৃদ্ধ মা বা স্ত্রী কি কোনো অবলম্বন পাবেন তাদের জীবনে?
ইলিয়াস সাহেব বেচে থাকুক, তিনি ফিরে আসুক তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু এই ড্রাইভারদের কি হলো বা তাদের পরিবারের কি হবে সে বিষয়টিও একটু ভাবুন? এদের জন্য ভাবার লোক আজ খুব বেশি করে প্রয়োজন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।