আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইতিহাসের আলোচিত ৫ কন্যার কাহিনীঃ কল্প নয় আবার গল্পও নয়- রীতিমত গালগপ্প

পথ্য তো রোগীরও লাগে না ভালো! যদিও এটা তার রোগ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করবে,তথাপিও! ১) অহল্যা, গৌতম মুনরি স্ত্রী, সদ্য স্নাতা (গোসল) এবং আদ্র (ভেজা) বস্ত্র পরিহিতা অবস্থায় আশ্রমে প্রত্যাবর্তন কালে পথিমধ্যে গৌতম শিষ্য দেবরাজ ইন্দ্রের সাথে তার সাক্ষাত ঘটে। আদ্র বস্ত্রের মিথ্যা আবরণকে ভেদ করে উদগত যৌবনা অহল্যার রূপ লাবণ্য বিশেষ আকর্ষণীয় হয়ে ফুটে উঠায় ইন্দ্রদেবের পক্ষে ধৈর্য ধারণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে, তিনি গুরুপত্নী অহল্যার সতীত্ব হরণ করেন। ত্রিকালজ্ঞ গৌতম মুনির কাছে একথা অজ্ঞাত থাকে না। তার অভিশাপে অহল্যা প্রস্তরে পরিণত হয়। আর ইন্দ্রদেবের সারা দেহে সহস্র যোনির উদ্ভব ঘটে।

এটা দ্বাপর যুগের ঘটনা (হিন্দু ধর্মশাস্ত্রের বর্ণনা অনুযায়ী হিন্দুদের যুগ চারটি সত্য, দ্বাপর, ত্রেতা, কলি। এই চারটি যুগে মোট ৩৬০ জন ভগবান এসেছেন। )। সুদীর্ঘকাল পরে ত্রেতাযুগে ঈশ্বরের অবতার রূপে শ্রীরাম চন্দ্র আবির্ভূত হন, তার পদ স্পর্শে অহল্যার পাষাণত্ব অপনোদিত হয়। (পঞ্চ পুরাণ, ষষ্ঠ খণ্ড, ৬৯০ পৃষ্ঠা, মহাভারত, কৃত্তিবাসী রামায়ণের আদিকাণ্ডের ৬৫১ পৃষ্ঠা) - অহল্যা ছিলেন পঞ্চ কন্যার একজন।

কৃত্তিবাসী রামায়নে যতটা না দেবরাজ ইন্দ্রের দোষ দেওয়া হয়েছে তার চেয়ে বেশি দোষী সাবস্ত্য করা হয়েছে অহল্যাকে। অহল্যা যদি নির্দোষ-নিঃষ্পাপ হতেন, তবে গৌতম মুনি তাকে অভিশাপ দিতে পারতেন না। এবার আসি দেবরাজ ইন্দ্রের কথায়, প্রথমত তিনি গৌতম মুনির শিষ্য ছিলেন, দ্বিতীয়ত তিনি একজন দেবতা ছিলেন। একজন দেবতার পক্ষেও কি এমন কাজ করা সম্ভব? ২) দ্রৌপদি : বিখ্যাত পঞ্চ পাণ্ডব অর্থৎ যুধিষ্ঠির, অর্জুন, নকুল, সহদেব, ভীম প্রভৃতি পাঁচ ভ্রাতার পত্নী। - আমাদের সমাজে বহুবিবাহকে ঘৃণার চোখে দেখা হয়, আবার বিধবা বিবাহও সে সময় সিদ্ধ ছিল না (বিধবা বিবাহ আইন চালু হয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সময়কাল থেকে)।

তাহলে, পঞ্চ পাণ্ডবের সাথে দ্রৌপদির বিয়ে কোনো অর্থ বহন করে? ৩) তারা : বালী নামক বানরের স্ত্রী। বালীর সাথে ছোট ভ্রাতা সুগ্রীবের বিরোধ ছিল, সুগ্রীব ছিলেন বিশাল যোদ্ধা। সুগ্রীবকে হাত করার জন্য শ্রীরামচন্দ্র বালীকে অন্যায়ভাবে (অর্থাৎ, বালী ও সুগ্রীবের লড়াইয়ের সময় ভগবান শ্রীরামচন্দ্র বালির দৃষ্টির আড়াল থেকে বালিকে বাণ ছুড়ে বধ করেন) হত্যা করেন; পরে বালীর স্ত্রী দেবর সুগ্রীবের হস্তগত এবং স্ত্রীরূপে ব্যবহৃত হন। (অগ্নি পুরাণ ৯অঃ ১-৩ শ্লোক ও শ্রীরামচরিতামানস এবং কৃত্তিবাসী রামায়ণ-কিষ্কিন্ধ্যা কাণ্ড, পৃষ্ঠাঃ ৬৬২-৬৬৪। ) - দেবীরা তাহলে বানর প্রাণীকেও বিয়ে করতেন? সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ যদি মানুষ হয়ে থাকে; তবে শ্রেষ্ঠ জীব কিভাবে নিকৃষ্ট প্রাণীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে? তাছাড়া, বানরের বাকশক্তিও নেই।

বর্তমান বানরদের মধ্যে কথা বলা বানর কেউ কি দেখেছেন? এমন একটা প্রাণীর সাথে সংসার করেছেন ‘তারা’ দেবী। ‘তারা’ দেবী বানরের সাথে সংসার করুক আর নাই করুক, তাতে কিছুই আসে যায় না। কিন্তু, বালীকে হত্যা করার দায়ে কেন ভগবান শ্রীরামচন্দ্রকে অভিশাপ দিলেন? ভগবান শ্রীরামচন্দ্র বড়- না ‘তারা’ দেবী? কাকে হত্যা করতে হবে, আর কাকে বাঁচাতে হবে- সে তো ভগবানেরই কাজ। বালীকে হত্যা করটা ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের জন্য দোষের কিছু নয়। ৪) মন্দোদরী : রাক্ষস রাজ রাবণের স্ত্রী।

৫) কুন্তি : পাণ্ডুর স্ত্রী, বিয়ের পূর্বে সূর্যের ঔরসে কর্ণ নামক পুত্রের জন্ম হয়, বিবাহিত অবস্থায় ধর্মের (যমরাজ) ঔরসে যুধিষ্ঠির, বায়ুদেবের ঔরসে ভীম এবং দেবরাজ ইন্দ্রের ঔরসে অর্জুনের জন্ম হয়। (অগ্নিপুরাণ ৮-১২ শ্লোক, কাশীদাসী মহাভারত- মহামুনি বেদব্যাস প্রণীত মূল সংস্কৃত থেকে পণ্ডিত কাশীরাম দাস কর্তৃক বাংলায় অনূদিত, বেণীমাধব শীল ও প্রমথনাথ চট্টোপাধ্যায় কাব্যরত্ন কর্তৃক সম্পাদিত, মহাভারতের কাহিনী- বিধায়ক ভট্টাচার্য্য সম্পাদিত, পৃষ্ঠা নং- ১২১০-১২১৪ এবং মহাভরতের চরিতাবলী- সূর্যদাস গুপ্ত, অবলম্বনে) - কুন্তি দেবী অবিবাহিত অবস্থায় সূর্যের ঔরসে, বিবাহিত অবস্থায় যমরাজের ঔরসে, বায়ুদেবের ঔরসে এবং দেবরাজ ইন্দ্রের ঔরসে যথাক্রমে কর্ণ, যুধিষ্ঠির, ভীম ও অর্জুনের জন্ম দেয়। স্বামী থাকা সত্ত্বেও কুন্তি দেবী এক এক করে পাঁচজন দেবতাকে আহ্বান করেছিলেন কেন? - সে তো পান্ডুর অক্ষমতার জন্যে… - পান্ডু সন্তান দিতে পারেননি বলে কুন্তি দেবী অন্যান্য দেবতাদের আহ্বান করেছিলেন, কিন্তু চারজন দেবতাকে আহ্বান করার কি দরকার ছিল? একজন দেবতা কি যথেষ্ট ছিল না? তাছাড়া, বিবাহের পূর্বে সূর্যদেবকে আহ্বান করেছিলেন কেন? - কিশোরী কুন্তি দেবী গুরুদেবের দেওয়া মন্ত্রের গুরুত্ব না বুঝে ভূলক্রমে বিবাহের পূর্বে সন্তান প্রার্থনার মন্ত্রটা পাঠ করে ফেলেছিল কিনা… - তাহলে দেবীদেরও ভুল হয়? কুন্তি দেবী না হয় ভুল করে মন্ত্র পাঠ করেছিলেন, কিন্তু সূর্যদেব তো ভুল করে কুন্তিদেবীর কাছে আসেননি? দেবতা নাকি সকলের মনের খোঁজ খবর রাখেন, তাহলে সূর্যদেব কেন বুঝলেন না কুন্তিদেবী ভুল করে মন্ত্র পাঠ করেছিলেন? ঠাকুর আপনিই বলুন আমি কি এই সব দেবীর নাম জপতপ করে পাপ মুক্ত হতে পারব? সূত্রঃ "সত্যভূত" লেখকঃ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান http://www.oneallah.org/ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।