আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"সন্দেহের প্রতি ফলন "

সন্দেহ শব্দটি ছোট। কিন্তু এর ব্যপকতা অধিক। সন্দেহ মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃস্টি হয়। এমনকি মারামারিও হয়ে থাকে। দুদলের মধ্যে চির দিনের জন্য প্রাচীরও সৃষ্টি হয়।

যেমন- এক মহিলার একটি মাল হাড়িয়ে গেছে। অনেক খুজেঁও তা পাওয়া যায়নি। ঐ সময় তার স্বামীর বোন ঐ বাসায় বেড়াতে এসেছিল। ঐ বোন(ননদ) যাওয়ার পর থেকেই মালটি নিখোজ হয়েছে। এক পর্যায়ে মহিলা তার স্বামীকে বলল আমার অমুক জিনিসটি তোমার বোনই নিয়েছে।

সে যাওয়ার পর থেকেই জিনিসটি পাচ্ছিনা। সে ছাড়া অন্য কেই এই বাসায় আসেনি। সে-ই নিয়েছে। এ নিয়ে স্বামী স্ত্রীরর মধ্যে প্রাই ঝগড়া লেগেই থাকত। এ নিয়ে বাসায় ছেলে মেয়েদের মধ্যে বিভিন্ন প্রক্রিয়া সৃস্টি দেখা দিত।

স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিষয়টি এক পর্যায়ে তাদের বাসায় অশান্তি বিরাজ করছিল। এ ভাবে অনেক দিন কেটে গেল। এক দিন বাসা পরিস্কার করতে গিয়ে মহিলা বাসার বিভিন্ন মালামাল সরিয়ে ফেলল। মালামাল সরাতে গিয়ে দেখল সোফার নীচে জিনিসটি পড়ে আছে। জিনিসটি দেখতে পেয়ে বিপাকে পড়ে গেল।

এটার জন্য এত কিছু হয়ে গেল। আজ অনেক দিন যাবৎ অন্যকে দোষারোপ করে আসছিল । এখন স্বামীকে কি বলে বুঝাবে ? জিনিসটি পাওয়ার পর আবার স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ভীষন ঝগড়া বেধে গেল। এক পর্যয় তাদের একমাএ ছেলে মাকে বলে উঠল যে ,আমি এক দিন তোমার সাথে রাগ করে ঐটা সোফার গদির নীচে লুকিয়ে রেখেছিলাম । তোমাকে বলতে মনে ছিলনা।

এখন মনে পড়েছে। তখন মা আরও রেগে ছেলেকে মারধর করতে লাগল। তখন বাবা বলল ওকে মেরে লাভ কি? ওতো ছোট মানুষ। ওর ভুল হতে পারে। তুমি না বুঝেনাজেনে আমার বোনকে দোষারোপ করেছিলে।

এটা বুদ্ধিমানের কাজ ছিলনা। এজন্য না জেনে না শুনে কাকেও সন্দেহ করা ঠিক নয়। "কথায় আছে যা দেখি র্দু নয়নে বিশ্বাস করনা গুরুরও বচ্চনে "এখন দেখেন সামান্য সন্দেহে একটা পরিবারে কত কিছু হয়ে গেল। অতএব আমরা নাজেনে নাবুঝে কাউকে সন্দেহ করবনা। এক গ্রামের দুইজন লোকের মধ্যে জমাজমি নিয়ে বিবাদ ছিল।

তারা পরস্পর এক জনের ছায়া অন্য জনে দেখতেও পারতোনা। একদিন একজনের একটি ছেলে নিখোঁজ হল। ছেলের পিতামাতা অনেক খোজাখুজি করেও ছেলেটিকে পেলনা। বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং পোষ্টারিং এবং পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েও ছেলেটিকে পেলনা। ছেলেটির বাবা তার প্রতিপক্ষকে সন্দেহ করল।

সে-ই আমার ছেলেকে গুম করেছে। সে ছাড়া একাজ অন্য কেহ করেনি। ছেলের বাবা এলাকার বিভিন্ন লোকের কাছে বলতে লাগল যে ,তার ছেলে প্রতিপক্ষই গুম করেছে। লোকটি প্রতিপক্ষের নামে মামলা করল। মামলার বিভিন্ন তারিখ পড়তে লাগল।

দুজনেরই অনেক টাকা পয়সা খরচ হয়ে গেছে। কিন্তু মামলা শেষ না হলেও অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এ ভাবে অনেক দিন চলে গেল। মামলার তারিখ পড়ে অনেক দিন পরে। গ্রামের কেহ কেহ মামলা তুলে নেয়ার কথাও বলে এবং গ্রামের শালিশের মাধ্যমে বিবাদ মিটায়ে ফেলার জন্যও কেইকেউ বলে।

তাতেও কোন সুরাহা হয়নি। আসলে ছেলেটি গুম হয়নি। সে পিতামাতার অজান্তে রাগ করে অনেক দুরের এক শহরে গিয়ে একটি হোটেলে বয়ের কাজ নেয়। ছেলেটি অনেক দিন যাবৎ ঐ হোটেলে থাকে। তাদের গ্রামের একলোক ঐ শহরে ব্যবসার জন্য যায় এবং ঐ হোটেলে থাকা খাওয়া করে।

হঠাৎ এক দিন লোকটি ঐ ছেলেটিকে দেখে চিনতে পারল। লোকটি ছেলের বাবাকে সংবাদ দিয়ে ঐ শহরে যেতে বলল। ছেলের বাবা ঐ শহরে গিয়ে তার ছেলেকে দেখতে পেল। ছেলেটি তার বাবাকে দেখে ভয়ে পালাতে চেষ্টা করছিল। কিন্তু পালাতে পারলনা তার বাবার হাতে ধরা পড়ে গেল।

ছেলের বাবাতো এখন কঠিন বিপদে পড়ছে। সে তার প্রতিপক্ষেকে কি জবাব দেবে। কত মামলা মকদ্দমা হল। দুপক্ষের অনেক টাকা পয়সা খরচ হলো। অনেক হয়রানী হল।

দু দলের মধ্যে মারামারি হল। সকল গ্রামের মানুষের মধ্যে জানাজানি হলো। ছেলের বাবা লেলেকে নিয়ে দেশে আসতে সাহস পেলনা। কি করবে সেভেবে পাচ্ছেনা। বাড়ী এসে নিকটতম লোকদের কাছে ঘটনা বলল।

দেশের আতœীয় স্বজন দু পক্ষেকে মিমাংশা করে দিল । ছেলের বাবা প্রতিপক্ষর নিকট ক্ষমা চেয়ে নিল। এখন দেখেন সন্দেহ করে লোকটি প্রতিপক্ষের নামে মামলা দিয়ে দুজনেই নিঃস্ব হয়ে গেল এবং প্রতি পক্ষের নিকট ক্ষমা চেয়ে নিতে হল। কত অপদস্ত হলো লোকটি । তাই ভাই সকল সন্দেহ করে কাউকে বিপদে ফেলা উচিৎ নয়।

পবিত্র হাদিসে শরীফও আছে সন্দেহ করা থেকে বিরত থাকার জন্য । সন্দেহ করে কিছিু করলে গুনাহ হয় । তাই আমরা সন্দেহ করবনা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.