আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটা প্রশ্ন মনের মাঝে ঘড়ির কাটার মতো টিক্ টিক্ করছে, আর কতদিন সময় পার হলে এই বাঙ্গালী ও সংস্কৃতির উপর নগ্নথাবার যথাযত বিচার হবে ???

ইশাতের দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম ০১/০১/১৪১৯ বাংলা সনের নববর্ষের শুভেচ্ছ দিয়ে শুরু করিতেছি। নিজেকে নেটিজেন হিসেবে পরিচয় দিতে যাহারা ভালবাসে তাহারা দিনের প্রায় সিংহভাগ সময় অনলাইনেই অতিবাহিত করিতে স্বাচ্ছন্দবোধ করে আমিও তাহাদের ব্যাতিক্রম নই বিধায় আজ বাঙ্গালীদের এহেন শুভ ও উৎসব মূখর দিনে নিজেকে পথে না নামিয়ে ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ এর মধ্যেই রেখে দিলাম। নববর্ষের উৎসব উদযাপনের জন্য নিঃসন্দেহে রাজধানীর রমনা বটমূল ও চট্টগ্রামের ডিসি হিল একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান। প্র্রতি বৎসর বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকি। এবার মনটা একটু খারাপ আমার প্রিয়তমা দূরে থাকার কারণে।

ফেসবুক বলেন, সামু বলেন..., বাঙ্গালী নেটিজেনরা সচরাচর যে সব স্থানে বিচরন করে সব সাইটেই ধুমাধুম বৈশাখী আমেজ। নববর্ষের বর্ণিল সাজ। সবই মন মাতানো। আসুন আমরা একটু পেছনে ফিরে তাকাই ....., নববর্ষের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, রমনা বটমূলে গান হচ্ছে.... মধুর আমেজ। আজ হতে ঠিক ১১ বছর আগে. হঠাৎ বোমা বিষ্ফোরণ, জাতি পেলো ইতিহাসের একটি নিকৃষ্ঠতম বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।

দুঃখ নেই.., কারণ এখন অনেক নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয়। কিন্তু আমাদের শাসক গোষ্টীর প্রতি ঘৃণা জন্মে না?? যারা ১১ বছর পেরিয়ে যাবার পরও এই ঘটনার কোন সঠিক সুরাহা জনগনের সামনে আজো তুলে ধরতে পারেনি। রমনার সেই দিনটার কথা মনে হলেই, মনে পড়ে সকল নিহত ও পঙ্গু হওয়া সেই মানুষদের কথা। তারাতো আমাদের শোনাতে এসেছিল নতুন আগমনী বার্তা আসেননি কোন রাজনৈতিক জনসভা সফল করতে। তারা আমাদের মতই সাধারণ মানুষ যারা মনের আনন্দে এসেছিল বর্ষবরণ করতে।

আমরা কি মনে রেখেছি তাদের? কেমন আছেন তারা যারা চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন? কেমন আছেন সেই দিন প্রান হারানো ব্যক্তিদের পরিবার-পরিজনরা? তাদের জীবনে পহেলা বৈশাখ কি আর কখনো কোনো আনন্দের দিন হবে? যেভাবে আমরা আজকের দিনটি অতিবাহিত করলাম। পহেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠানে বোমা হামলার সাত বছর ৭ মাস ১৬ দিন পর গত ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর হরকাতুল জিহাদের শীর্ষনেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। ক। রমনা থানার মামলা নং ৪৬(৪)০১ বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩/৪ ও ৫ ধারা। খ।

রমনা থানার মামলা নং ৪৬ তারিখ ১৪-৪-০১ ধারা ৩৪২/৩২৬/৩০৭/৩০২/৩৪ দঃবিঃ। ১৪ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। পুরো নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় ৮ জনকে চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়। উক্ত মামলায় ৮ বার তদন্ত কর্মকর্তা বদল হয়েছে। মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- মুফতি আবদুল হান্নান, আরিফ হাসান সুমন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, মাওলানা আকবর হোসাইন ওরফে হেলাল উদ্দিন, বিগত চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন আহমেদ, শাহাদাত উল্লাহ ওরফে জুয়েল, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাবি্বর, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, মুফতি শফিকুর রহমান, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া ও মুফতি আবদুল হাই।

কিন্তু আজ এগার বছর হওয়ার পরও আমরা এই মামলা দুটির কোন কূল কিনারা দেখতে পাইনি। অপরদিকে এমনই প্রতিবার নববর্ষের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান এলেই আহত ও নিহতদের চোখের পানি টলমল করে না?? আমরা কি একবারও স্বরণ করি যারা সেদিন প্রাণ হারিয়েছিলেন তাদের কথা ? তারাও তো কোন না কোন বাংলা মায়ের সন্তান। রসঙ্গত, ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে চলছিল বাঙালির মননের উৎসব পহেলা বৈশাখ বর্ষবরণ। ছায়ানটের আয়োজনে অনুষ্ঠান চলাকালে মঞ্চের কাছে বোমার বিস্ফোরণ হয়। ঘটনাস্থলে মারা যান আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মোহাম্মদ এমরান হোসেন, অসীম চন্দ্র সরকার, ইসমাইল হোসেন স্বপন, আনসার আলী মামুন হোসেন, রিয়াজুল ইসলাম ও জান্নাতুল ফেরদৌস শিল্পীসহ ৯ জন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন মারা যান। নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় এখনও মেলেনি। আহতদের মধ্যে রয়েছে- রেজাউল করিম, আফজাল হোসেন, আমানুল্লাহ, জাহাঙ্গীর হোসেন, স্বপন কুমার দাস, মাহমুদুল কবির, ইব্রাহিম খলিল, রফিকুল ইসলাম, পিযুষ কান্তি সরকার ও ওমর ফারুক। তাদের মধ্যে রেজাউল করিম, আমানুল্লাহ, ইব্রাহিম খলিল ও রফিকুল ইসলামকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তাদের দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ গ্রেফতার করে ডেমরার মাদানীনগর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আকবর হোসেন ওরফে আলী আকবরকে।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য মামলাটি ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। সে আদালতে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে মাত্র ১৩৫ কার্যদিবসে ৮০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। কিন্তু আইনের বাধ্যবাধকতার কারণে মামলাটি দ্রুত বিচার থেকে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসার পরই মূলত এর বিচারের গতি ফের মন্থর হয়ে পড়ে। অন্তত আজকের দিনে প্রচন্ড মানসিক যন্ত্রণা অনুভব করছি। একটা প্রশ্ন মনের মাঝে ঘড়ির কাটার মতো টিক্ টিক্ করছে, আর কতদিন সময় পার হলে এই বাঙ্গালী ও সংস্কৃতির উপর নগ্নথাবার যথাযত বিচার হবে ??? যদিইবা একটি জাতীয় উৎসবের মামলা নিষ্পত্তি করতে লাগে ১১ টি বৎসর কেনইবা দরকার এই ভ্রান্ত, পঙ্গু বিচার ব্যাবস্থার।

আমার ফেবু  ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.