আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লেখাটি শুধু জীবন যুদ্ধে পরাজিত মানুষদের জন্য

ব্লগার না পাঠক হওয়ার চেষ্টায় আছি জীবনের অর্থ একেক জনের জন্য একেক রকম। কারও কাছে জীবন আনন্দময় আবার কারও কাছে অর্থহীন। সম্প্রতি নিজের খুব কাছের মানুষজনদের হতাশায় নিমজ্জিত হতে দেখেছি। ব্যক্তিজীবনে আমি নিজেও প্রচণ্ড হতাশ ও চূড়ান্ত ভাবে ব্যর্থ। কিন্তু আমি গভীর ভাবে বিশ্বাস করি এই হতাশাবাদীরাই পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে! শুধু প্রয়োজন নিজের প্রতি আস্থা আর বিশ্বাস।

আর এই আস্থা এবং বিশ্বাসের সাথে থাকতে হবে কাজ করার অদম্য স্পৃহা। আপনার এই স্পৃহাই আপনাকে পৌছে দিবে গন্তব্যে। আপনার সবকিছুতেই ব্যর্থ, আশেপাশের সব মানুষ আপনার জীবনকে নিয়ে উপহাস করছে এমতবস্থায় আপনি কি হাল ছেড়ে দিয়ে বসে থাকবেন?? না কখনই না। মানুষ যা খুশি বলুক। জীবনটাতো আপনার।

মানুষজনের কথায় নিজের জীবনকে ব্যর্থ ভাববেন না। আপনার জীবনকে আপনি আপনার মত করে সাজান। আমি প্রচুর খেলা দেখি। তাই খেলার একটা উদাহরন দেই- ভারত ধোনির ক্যাপ্টেন্সিতে প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল। পুরষ্কার বিতরন অনুষ্ঠানে যখন ধোনিকে ডাকা হয়েছিল তখন সেখানে ধারাভাষ্যকার ছিলেন সুনীল গাভাস্কার এবং মাইক পেয়েই ধোনি গাভাস্কারকে বললেন- “আপনি বলেছেন ভারত কোনদিন এই দল নিয়ে জিততে পারবে না।

খেলোয়াররা আপনাকে দেখিয়ে দিল। ” কথাটি একটু বেখাপ্পা মনে হলেও আমার কাছে মোটেও অদ্ভুত লাগে নি! কারন ওই ভারতের বিশ্বকাপে শুরুর দিকের পারফরম্যান্স ছিল চূড়ান্ত রকমের বাজে। গ্রুপ পর্বের খেলায় শেষ ম্যাচটি ছিল দঃআফ্রিকার বিপক্ষে এবং ভারতকে দ্বিতীয় পর্বে উঠার জন্য শুধু ওই ম্যাচ জিতলেই হত না বরং আফ্রিকাকে ৩০(সঠিক রানটি মনে নেই) রানের চেয়ে বেশি রানে হারাতে হত! ভারত যখন এই অবিশ্বাস্য এক সমীকরনের মুখোমুখি, তখন গাভাস্কার বলেছিলেন ভারতের এই দলের জেতার কোন যোগ্যতা নেই! অবশেষে ভারত সম্পূর্ণ অবিশ্বাস্যভাবে ৫০ রানের বেশি ব্যবধানে জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দিয়ে দ্বিতীয় পর্বে উঠল এবং অবশেষে শিরোপা জিতে নিল!! আপনার জীবনে আর কোন আশা নেই। কিন্তু দয়া করে হাল ছেড়ে দিবেন না। আপনি যদি হাল ধরে রাখেন সফলতা আসবেই।

আপনি সফল কি না ওটা ভাবতে যাবেন না। আপনি শুধু আপনার কাজটা করে যান। আর কাজটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কখনই হাল ছেড়ে দিবেন না। কখনই না। এবার আরেকটা ছোট উদাহরন দেই- গত বিশ্বকাপ ফুটবলে জার্মানীর ছিল না কোন স্টার খেলোয়ার।

ছিল না তেমন কোন পরিণত খেলোয়ার। বিশ্বকাপ শুরুর আগে কেউ জার্মানী গোনার মধ্যেই ধরে নি! এমনকি জার্মানীর সাধারণ জনগন পর্যন্ত জার্মানীর গ্রুপ পর্ব পার করার আশা করেন নি! কিন্তু সেই জার্মানী সেমিতে উঠে গিয়েছিল। আপনি যানেন কি ছিল এই সাধারণ জার্মানীর?? ওদের ছিল কোচ জোয়াকিম লো। হয়ত আপনি নাম শুনে হাসবেন! এই সামান্য কোচ ওদের কি মন্ত্র দিয়েছেন!! হ্যাঁ, এই কোচের ছিল না হোসে মরিনহোর মত কোন গুণ, ছিল এক অদ্ভুত মন্ত্র- “শেষের আগে শেষ নয়। ” এ মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে এক ঝাক অনভিজ্ঞ খেলোয়ার নিয়ে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলা তারা! জীবনে আরেকটি অপরিহার্য অংশ হল সমালোচনা।

আপনি যখন খারাপ করবেন সমালোচনা শুনবেন। আর যদি ক্রমাগত ব্যর্থ হতে থাকেন তাহলে সমালোচনা শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু না, হাল ছাড়বেন না দয়া করে। আপনি যখন সফল হবেন এই সমালোচকেরাই কিন্তু আপনাকে আকাশে তুলবে!! আরেকটা উদাহরন দেই- শচীন টেণ্ডুলকারের যখন শততম সেঞ্চুরী করতে দেরী হচ্ছিল তখন কিন্তু হাজার হাজার সমালোচক তার সমালোচনায় দিস্তার পর দিস্তা পৃষ্টা লিখেছিলেন। অবসরের কথা বলে চিল্লাচ্ছিলেন।

অবশেষে শততম সেঞ্চুরী করার পর তিনি বললেন- “সমালোচকেরা আমাকে ক্রিকেট খেলা শেখায় নি। ” কাজেই সমালোচনাকে পাত্তা দিবেন না। আপনার জীবন আপনার কাছে। আপনার জীবনকে সাজানোর দায়িত্ব আপনার। আপনি আপনার লক্ষে অটুট থাকুন।

সফলতা আসতে বাধ্য। মানুষ আপনাকে নিয়ে হাসছে, হাসুক। উপহাস করছে, করুক। জীবনের যে কোন অবস্থা থেকেই আপনি শুরু করতে পারেন। অতীতে কিছু করতে পারেন নি বলে মন খারাপ করবেন না।

কাজের পেছনে লেগে থাকুন। সফলতা আপনাকে ডাকছে। বৃথা আর কত হতাশ হবেন। সফলতার এই অকৃত্তিম ডাকে দয়া করে একটু সাড়া দিন! শেষ করছি মার্ক টোয়েনের অমর একটি কথা দিয়েঃ Twenty years from now you will be more disappointed by the things you did not do than by the things you did. So throw off the bowlines. Sail away from the safe harbor. Catch the winds in your sails. Dream. Explore. Discover. বিঃদ্রঃ আমি কোন লেখক নই। লেখালেখির ক্ষমতাও নেই।

ছাত্র হিসেবেও চূড়ান্ত মাত্রার গর্ধব শ্রেণীর! এই অখাদ্য লিখা লেখার কারণ হল- কয়েকদিন আগে টিভিতে এক অনুষ্ঠানে কিছু মাদকাসক্তদের হতাশার কথা শুনে মনটা অনেক বেশি খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আমি জানি বাংলাদেশকে যদি কেউ বদলাতে পারত একমাত্র তারাই পারত! তারা তাদের অপরিসীম মেধা নষ্ট করেছে এবং করছে! আমি জানি এই অখাদ্য লিখা কেউ পড়বেন না তবে যারা পড়বেন তাঁদের বলছি- আপনার দিকেই তাকিয়ে আছে সমগ্র বিশ্ব। এগিয়ে যান। পথ আপনাকে ডাকছে। সে ডাকে সাড়া দিন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.