আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রোগের নাম যখন ডুলান্সার

আজ একটা গল্প শুনাব। ঠিক যেন শেষ বিকাল এর মত বাংলাদেশ এর টেকি জগতে এখন যে কোম্পানির নাম খুব শোনা যাচ্ছে তা হল ডুলান্সার। যারা কম বেশি ইন্টারনেট ঘাটতে পারেন তারা অধিকাংশই এই নামের সাথে পরিচিত। নাম মাত্র ৭০০০ টাকা বা ১০০ ডলার দিয়ে নাম নিবন্ধনের মাধ্যমে আপনি এদের কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত হতে পারবেন। এদের কর্মকাণ্ড ও খুব বেশি কঠিন কিছু না জাস্ট ওদের দেয়া লিংকে আপনাকে ক্লিক করতে হবে প্রতিদিন ১০০ টা লিংকে ক্লিক করে পাবেন ১ ডলার।

এইটা ছিল ডুলান্সারের কাজ করার পদ্ধতি এখন আসুন এরা কি ভাবে আপনাকে বাশ দেই তা জেনে নেই। প্রথমেই এদের সাথে যোগ দিতে আপনাকে দিতে হয় ১০০ ডলার বা ৭০০০ টাকা। লক্ষ্য করুন এখানে ১ডলার=৭০ টাকা। আমার জানা মতে আউটসোসিং এর ক্ষেত্রে আলাদা ভাবে কোন টাকা দিতে হয় না কিন্তু এখানে দিতে হচ্ছে কাজ করবেন আপনি কিন্তু কাজ নিতে আপনাকেই যদি টাকা দিতে হয় তাহলে কেমন হয়। ১০০ লিংকে আপনি ক্লিক করছেন ৩-৪ ঘন্টায় অতএব আপনি সময় এমন এক জিনিষ এর পেছনে খরচ করছেন যেখানে টাকা আপনার পরিশ্রম ও আপনার কিন্তু লাভ ৪-৫ মাস এ নেই বললেই চলে।

প্রতিদিন ১ ডলার করে আপনি যদি আয় করেন তাহলে মাসের ৩০ দিনে আপনি আয় করবেন ৩০ ডলার। এইটা খুব সহজ হিসাব কিন্তু আসল কথা এখানে আপনি যখন টাকা পাবেন তখন ১ ডলার=৬৫ টাকা। তাহলে দেয়ার সময় আপনি ৭০ টাকা দিছেন কিন্তু নেয়ার সময় নিচ্ছেন ৬৫ টাকা। অতএব ৬৫ টাকা হিসাবে আপনি মাসে পাচ্ছেন ১৯৫০ টাকা। এখন ও আপনি লস এর খাতায় আছেন ৭০০০ টাকা আপনি যদি বিনিয়োগ হিসাবে ধরেন এক মাসে ও আপনি সেই টাকা এখন ও তুলতে পারেননি।

অতএব আপনার বিনিয়োগ এর টাকা তুলতে আপনার কত দিন লাগতে পারে নিশ্চয় আপনি হিসাব করে বের করতে পারবেন কেননা আপনি এখন ডুলান্সার এর কর্মী। বিনিয়োগ এর টাকা তোলার পর নিশ্চয় আপনি আপনার লাভ এর হিসাব করবেন। এবার আসি জনবল সংগ্রহের ব্যাপারে। বুঝতেই পারছেন ৫-৬ মাস আগে আপনি টাকা নিজের পকেটে নিয়ে আস্তে পাড়বেন না। কিন্তু হাজার হোক আপনি নিশ্চয় বোকা নন তাই আপনি আপনার বন্ধুদের ডাক দেবেন শুরু করবেন ব্রেইন ওয়াশ করা যা এক সময় আপনার রোগ পর্যায় এ পৌঁছাবে এবং বন্ধু মহলে আপনি জোকার হিসাবে পরিচিত হবেন।

সহজ একটা অঙ্ক করি আপনার কাছে আছে ৭০০০ টাকা আপনার সাথে আছে আরও ২৯ জন লোক সবার কাছেই আছে ৭০০০ টাকা সব মিলে হল ২১০০০০ টাকা। টাকা গুলো আপনি কাউকে দিলেন সে ২১০০০০ টাকা নিজের ব্যাবসার কাজে অথবা ব্যাংক এ জমা রাখল। আপনারা টাকাটা পেলেন ৪-৫ মাস পর কোন লাভ ছাড়ায় কিন্তু যাকে টাকাটা দিয়েছিলেন সে নিশ্চয় টাকাটা ফেলে রাখেনি অতএব ২১০০০০ টাকা থেকে প্রাপ্ত লাভ তার কিন্তু টাকা আপনার। এখন আপন ভালো পাগলে ও বোঝে কিন্তু আপনি না বুঝলে পাগলের কোন খেয়ে দেয়ে কাজ নাই যে আপনাকে বুঝাতে আসবে। যদি কোন কারনে ডুলান্সার বন্ধ হয়ে যায় এবং আপনি আপনার বিনিয়োগ এর টাকা তুলতে সক্ষম হন তার পরেও খুশি হবার কারন নেই কারন আপনার নীচে কাজ করা অধিকাংশ কর্মীর ভাগ্য নিশ্চয় আপনার মত ভাল হবে না যে তারাও আপনার মত টাকা তুলতে পাড়বে।

অতএব ডুলান্সার এর সমস্ত রাগ ঝারবে আপনার উপর বলা যায় না আপনাকে হয়ত বাসা থেকে পালিয়ে ও থাকতে হতে পারে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.