আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কি হতে যাচ্ছে কলকাতায়?

ইন্ডিয়ান হাই কমিশনার গত ২৬ মার্চ রাঙ্গামাটি সফর করেন। তার এই সফর এবং সেই সফরে অস্বাভাবিক কিছু আচরণ ও আনুষাঙ্ঘিক ঘটনা প্রবাহ পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্রের আবহের আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্টদের কাছে এখন একটাই জিজ্ঞাসা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কি হতে যাচ্ছে কলকাতায়? গরীবের ঘরে সুন্দরী বউ-এর মত অপূর্ব, রূপসী আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম। তাই এই অঞ্চল নিয়ে পাড়ার মাস্তান এবং বখাটেদের মত লুলোপ দৃষ্টিতে অনেকেই জিহ্বা বের করে জল আগেও ফেলেছে এখনো ফেলছে। যার কারণে স্বাধীনতার পর থেকেই এই অঞ্চলে সবুজ পাহাড়ের বুকে রক্ত আর আগুনের লেলিহান শিখায় পোড়েছে মানবতা, পোড়েছে মনুষত্ব।

আজও এই অঞ্চল নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে বিরামহীন। আমাদের জানা আছে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কাদের ষড়যন্ত্র আর অর্থ-অস্ত্র-ট্রেনিং নিয়ে পাহাড়ে সশস্ত্র তৎপড়তা শুরু হয়েছিল, কিংবা কাদের সাথে সমন্বয় করে আমাদের পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করতে হয়েছিল। চুক্তি স্বাক্ষরের পর কোথা থেকে এসে শান্তি বাহিনী তাদের অস্ত্র জমা দিয়েছিল। যাহোক, সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহের আলোচনায় আসা যাক, গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্ডিয়ান হাই কমিশনার রাঙ্গামাটি সফরে আসেন। কিন্তু তিনি একজন রাষ্ট্রীয় অথিতি এবং তার জন্য নির্দিষ্ট প্রটোকল ও নিরাপত্তার বিষয় দেখার জন্য নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ থাকা সত্তেও তিনি এসব কিছুর তোয়াক্কা না করেই একটি বেসরকারি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেন।

তিনি রাঙ্গামাটির কিছু চিহ্বিত মানুষের সঙ্গে একান্ত আলোচনায় মিলিত হন। তারপরই দেখা যায় রাঙ্গামাটির ৬ জন সাংবাদিক দশ/বার দিনের জন্য ইন্ডিয়া সফরে যাচ্ছেন। সাংবাদিকরা দার্জিলিং সফরে যাওয়ার কথা প্রচার করলেও পরে জানা যায় তারা কলকাতায় বেশ কয়েক দিন থাকবেন। কিন্তু দার্জিলিং যাওয়ার কথা বলে কলকাতায় কেন? তারপরেও খোঁজ নিয়ে জানা গেল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)-এর সভাপতি সন্তু লারমা ইতোমধ্যেই কলকাতায় অবস্থান করছেন। সন্তু লারমা সেখানে আছেন, চিকিৎসার নাম করে।

এখানে আরো একটা লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো, সন্তু লারমা গত কিছু দিন থেকেই নতুন করে তীব্র আন্দোলন করার হুমকী দিয়ে আসছিলেন। ইতিপূর্বেও দেখা গেছে, যখনই তিনি আন্দোলন-সংগ্রামের ঘোষণা দিয়েছেন তখনই চিকিৎসার কথা বলে কলকাতা সফর করেছেন। কলকাতা সফরের ক্ষেত্রে চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়কেও একই নীতি অবলম্বন করতে দেখা যায়। তবে তারা বিভিন্ন সময় কলকাতা সফরের নামে ইন্ডিয়া গিয়ে সেভেন সিস্টার হিসাবে পরিচিত রাজ্যগুলোর চাকমা অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোও সফর করেছেন। বিশেষ করে যেসব রাজ্যগুলোতে সাবেক শান্তিবাহিনীর ঘাঁটি ছিল।

ইন্ডিয়া সফরে যাওয়ার জন্য রাঙ্গামাটির ৬ জন সাংবাদিক এই মুহুর্তে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তবে তারা একই সঙ্গে ইন্ডিয়া সফরে যাওয়ার কথা থাকলেও রাঙ্গামাটি হতে তারা ঢাকা গেছেন আলাদা আলাদা ভাবে। আগামীকাল ট্রেন যোগে তাদের ইন্ডিয়া যাওয়ার কথা রয়েছে। তা ছাড়া দেশের সাধারণ মানুষ যখন চিকিৎসার জন্য ভিসার জন্য দিনের পর দিন ইন্ডিয়ান হাই কমিশনের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে হয়রানির শিকার হয়েও অনেক সময় খালি হাতে ফিরতে হয় তখন এই ছয় সাংবাদিক একই সাথে এবং একদিনে ইন্ডিয়া ভ্রমণের ভিসা পেয়েছেন। এটাও একটা ঘটনা বটে।

৬ জন সাংবাদিক এক সঙ্গে দশ/বার দিন সফরের জন্যও যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা নেহায়েত কম নয়। তা ছাড়া পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন, এটা ঠিক; কিন্তু তারা গেছেন বিভিন্ন দেশ, সংস্থার অর্থানুকূল্যে। নিজেদের অর্থ খরচ করে এক সঙ্গে ৬ জনের একই দেশ এবং একই রুটিন অনুসরণের দৃষ্টান্ত এটাই প্রথম। তাই স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ব্যক্তিদের ভাবিয়ে তুলছে।

তাদের মনে প্রশ্ন উঠছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আসলে কি হতে যাচ্ছে কলকাতায়? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.