আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের ছাত্র সমাজের ভবিষ্যৎ কোন পথে ?

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার। লেখার বিষয়বস্তু নিয়ে নতুন করে ভাবার বোধহয় আমাদের তেমন কিছু নেই। তবু আজ হঠাৎ এ নিয়ে কিছু লিখতে ইচ্ছে হলো। এর পেছনে একটি কারণ আছে বৈকি। কারণটিকে আমি যথার্ত বলে মনে করছি।

সকালে টেলিভিশনে খবর দেখছিলাম। বরাবরের মতই গতানুগতিক খবর। কিন্তু একটি খবরে দৃষ্টি আটকে গেল। তিতুমীর কলেজের ছাত্রদের সাথে স্থানীয় দোকানদারদের সংঘর্ষে অনেকে আহত হয়েছে। পুলিশ হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং গ্রেফতার হয় বেশ ক'জন ছাত্র।

এখান পর্যন্ত খবরের গতানুগতিকতায় কোন ব্যতিক্রম নেই। কিন্তু ব্যতিক্রমটা চোখে পড়ল তখনই যখন দেখলাম ঘটনাটা ঘটে রাত ১১ টায় একটি বারের মালিকের সাথে ছাত্রদের কথা কাটাকাটির জের ধরে। প্রশ্নটা আমার সেখানেই। রাত ১১টায় তিতুমীর কলেজের ছাত্ররা বারে গিয়েছিল কেন ? আমার মনে হয় বারে মানুষ কখন, কি কারণে যায় তা কাউকে বলে বুঝাতে হবে না। আর এও বলতে হবেনা কেন বারের মালিক-কর্মচারীদের সাথে সংঘর্ষ বেধেছিল ছাত্রদের ? আজকাল তো এমন উদাহরণ প্রায়ই দেখা যায় যে, হোটেল-রেষ্টুরেন্টে খেয়ে দাম না দিয়ে চলে যায় ছাত্ররা।

এ নিয়ে কথা কাটাকাটি, হাতাহাতি, শেষে দেখা যায় রাস্তায় গাড়ি ভাংচুড়ের ঘটনা পর্যন্ত ঘটে। আমি সব ছাত্রদের নিয়ে কথাটা বলছি না। যারা এই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে তারাই এখানে আমার লেখার কেন্দ্রবিন্দু। যা বলছিলাম। এই যখন ছাত্রদের ছাত্রত্বের নমুনা তখন বারের মালিক-কর্মচারীদের সাথে তিতুমীর কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের কারণটা আমরা সকলেই ধারণা করতে পারি।

সত্যি, আমার ভাবতে খুব কষ্ট হয় যে আমাদের এই ছাত্র সমাজই আমাদের জাতীয় গৌরবের প্রতীক। এদেশের অনেক গৌরবোজ্জল ইতিহাসের জ্বলজ্বলে সাক্ষী আমাদের এই ছাত্র সমাজ। আমাদের জাতীয় পরিচয় ও ঐতিহ্য বিনির্মাণে এই ছাত্র সমাজের অগ্রণী ভূমিকার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ না করলেই নয়। সেই ইতিহাসের পথ বেয়ে ছাত্র সমাজ আজ কোন পঙ্কিলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ভাবতে গিয়ে শিহরিত হতে হয় ? ছাত্র সমাজের একটা অংশের জন্য গোটা ছাত্র সমাজ পঙ্কিলতায় ডুবে যাবে এমনটা মেনে নেয়া যায়না। জাতীয় রাজনীতিবিদ, নীতি নির্ধারক, সমাজ সেবক ও দেশের সুশীল সমাজের কি এর পেছনে কোন দায়বদ্ধতা নেই ? তাদের কি কিছুই করণীয় নেই আমাদের ছাত্র সমাজের গৌরবোজ্জল ইতিহাস পুণরুদ্ধারের ব্যাপারে ? যে বাবা-মা তার সন্তানকে সুসন্তান হিসেবে গড়ে তোলার আশায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছেন, সেখানে তার সন্তানের এমন অধপতিত জীবনাচার এর জন্য তারা যদি শিক্ষক সমাজকেও খানিকটা দায়ী করেন তাহলে সেটা কি খুব অন্যায় কিছু হবে ? আমি জানি সময়ের গতানুগতিক তার পথ বেয়ে শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্ক আজ আর আগের মতো নেই, যেখানে একজন শিক্ষকের আদেশ-নিষেধের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে একজন ছাত্র তা ভবিষ্যত এর জন্য আদর্শিক পথ বেছে নিবে।

তবু আমরা আশা করি একটা শিক্ষার পরিবেশকে ঘিরে একজন ছাত্রের যে জীবনাচার সেখানে শিক্ষকের করণীয় অনেক কিছু থাকে। সেখানেই হালটা শক্ত করে ধরার দিন এখনও শেষ হয়ে যায়নি বলে আমার বিশ্বাস। কারণ, আমরা আশা ধরে রাখতে ভালোবাসি, সম্ভাবনাকে জাগিয়ে রাখতে ভালোবাসি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.