আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মোঘল হেরেমের দুনিয়া কাঁপানো প্রেম (গোলাম মাওলা রনি, এমপি)

দিনটি ছিল ২৫ মে, ১৬১১ সাল। সালতানাতে মোগলের রাজধানী ফতেপুর সিক্রির শাহী প্রাসাদের মূল ফটক থেকে শুরু করে দেওয়ানি খাসের পুরো চত্বরটিই মনে হচ্ছিল দুলহান-দুলহানিয়ার মতো। আরবীয় তেজি ঘোড়া, সাদা রংয়ের উট এবং শাহী হাতিগুলোকে সাজানো হয়েছিল বিশেষ সাজে। নহবত, শানাই, যুদ্ধ কড়াইগুলোর ছন্দ মেলানো সুর এবং ৩০ মিনিট পর পর ১০০টি কামানের গগনবিদারী আওয়াজে রাজধানীসহ আশপাশের ২০০ মাইলের মধ্যে বসবাসকারী প্রজারা টের পাচ্ছিল যে, তাদের সম্রাট নূর উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর তৎকালীন পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী, মেধাবী এবং চৌকস রমণী মেহেরুন নিসা ওরফে নূরজাহানকে ২০তম স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করছেন। দেওয়ানি খাসের ঠিক মাঝামাঝি, দক্ষিণ দিকের ঘরটিতে সাজানো হয়েছিল বাসর।

আজ থেকে প্রায় সোয়া চারশ বছর আগে কামরাটিকে প্রাকৃতিকভাবে প্রায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছিল। মোগল ঐতিহ্য অনুযায়ী কামরায় কোনো দরজা না থাকলেও ২৩ রকমের বাহারি পর্দা, ইরানি গালিচা এবং হিন্দুস্তানি ফুলের সাহায্যে এক স্বপ্নপুরী তৈরি করা হয়েছিল। রঙিন ঝাড়বাতিতে এক হাজার মোমের আলো, কস্তূরী ও মৃগনাভীর সুভাসের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্বে থেকে মৃদু স্বরে শানাইয়ের সুর নারী-পুরুষের হৃদয়কে মিলনের জন্য পাগল করে দিচ্ছিল। নির্জন বাসর ঘরে সম্রাট জাহাঙ্গীর প্রবেশ করা মাত্র বধূবেশে সম্রাজ্ঞী মেহেরুন নিসা উঠে কুর্নিশ করলেন। সম্রাট এবং সম্রাজ্ঞী চার বছর ধরে অধীর আগ্রহে আজ রাতের মধুময় বাসরের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

আবেগের আতিশয্যে উভয়ে কিছুক্ষণ নির্বাক হয়ে রইলেন। সম্রাজ্ঞীর জন্য এটি দ্বিতীয় বাসর আর সম্রাটের জন্য ২০তম। সম্রাটের অন্য কোনো বাসরের সঙ্গে প্রেম বা প্রণয়ের প্রণতি ছিল না। কেবল রাজনীতি এবং ক্ষেত্রবিশেষে দুর্বার যৌনাকাঙ্ক্ষা থেকে তিনি পর পর ১৯টি বিয়ে করেছিলেন। প্রায় সবাই ছিলেন রাজদুহিতা।

বাসর ঘরে ঢুকে প্রথমেই আলিঙ্গন এবং দৈহিক প্রশান্তি লাভের চেষ্টা। প্রায় সর্বক্ষেত্রেই তিনি অর্ধ মাতাল হয়ে বাসর ঘরে ঢুকতেন এবং নব পরিণীতার সামনে বসে মদ খেয়ে আরও মাতাল হওয়ার চেষ্টা করতেন। এর পর ফার্সি কবিতা আওড়াতে আওড়াতে বাসর ঘর গুলজারের চেষ্টা চালাতেন। কিন্তু ১৬১১ সালের ২৫ মে তারিখের বাসরটি ছিল সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। বাসর ঘরে প্রবেশের আগে সম্রাট তার হাম্মাম খানায় টানা দুই ঘণ্টা ধরে মেশক ও আম্বর মিশ্রিত পানিতে গোসল সারেন।

এর আগে শাহী ক্ষৌরকার উত্তমভাবে তার ক্ষৌরকার্য সম্পন্ন করান। শাহী কবিরাজকে আগেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সর্বোৎকৃষ্ট উত্তেজক ওষুধ বানানোর জন্য। বলা হয়েছিল, সম্রাট সারা রাত জেগে থাকতে চান এবং অনেক বাসর রাতকে উপভোগ করতে চান হেকিম তার সারা জীবনের মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে সম্রাটের জন্য ওষুধ প্রস্তুত করেছিলেন। সেবনের সঙ্গে সঙ্গে সম্রাট তার দেহে প্রচণ্ড উত্তেজনা অনুভব করেন। হেকিমের পরামর্শ মতো তিনি গত ২৪ ঘণ্টায় কোনো মদ্যপান করেননি।

ফলে তার দেহ-মন একই সঙ্গে মেহেরুন নিসাকে পাওয়ার জন্য পাগল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এ কী! সম্রাজ্ঞীর সামনে দাঁড়িয়ে তিনি যখন তার মুখের দিকে তাকালেন_ শারীরিক উত্তেজনা মুহূর্তের মধ্যে হিমশীতল হয়ে গেল। বাকিটুকু পড়ুন এখানে  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।