আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মেটাল গান। । মেটাল গানের ধারা,উপ-ধারা।

জীবনকে এমন ভাবে সাজান যেন আপনার ব্যক্তিগত ডায়েরীটা কখনো লুকাতে না হয়। অনেকদিন থেকে মেটাল গান নিয়ে একটু লিখব ভাবছিলাম। কি লিখব বা কিভাবে লিখব ভেবে সাহস পাচ্ছিলাম না। মেটাল গানের মত জিনিস নিয়ে লেখার সাহস পেটে হলেও বুকে হচ্ছিলও না। আজ অল্প কিছু জানাতে চাচ্ছি যেটা হয়ত অনেকে জানেন না।

সেটা হচ্ছে মেটালের বিভিন্ন ধারা উপধারা সাথে কিছু গান। (মেটালিকা'র ভোকাল এবং গিটারিস্ট জেমস হেটফিল্ড) মেটালকে বলা হয় ধাতুমাথারওয়ালা দের গান। আসলেই তাই। এই গানের বাজনা বা গর্জন হজম করার জন্য ক্ষমতার দরকার। মেটাল ধারাটি সারা পৃথিবীতে দিন দিন জনপ্রিয়তা ছাড়িয়ে যাচ্ছে অন্যসব গানের ধারাকে।

বিশ্বব্যাপী গানের জগতের অন্যতম একটি ধারা হচ্ছে মেটাল,যেটি গত ৫০ বছর থেকে শ্রোতাদের মাতিয়ে রেখেছে। মেটাল গান মূলত রক গানের একটা ধারা হিসেবে অনেকে বর্ণনা করে। যেটি ১৯৬০-১৯৭০ সালে উন্নতি ঘটে। তেজস্বী ও কর্কশ কন্ঠ,উন্মত্ত গর্জনধ্বনি,উদ্ব্যক্ত তাল,অট্ট বিকৃত গীটার ধবনি,ঘন গুরুগম্ভীর ড্রামের শব্দ হলো মেটাল গানের চরিত্র। জোরালো ভাব পরিবর্তন বা এইসব গুণাবলীর এক একাধিক পরিবর্তন দ্বারা মেটাল গানের বিভিন্ন ধারা উপধারা সৃষ্টি হয়েছে।

প্রথম হেভি মেটাল ব্যান্ড হচ্ছে Led Zeppelin, Black Sabbath এবং Deep Purple যারা সল্প সময়ে শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নেয়। হেভি মেটালের ধারা গুলো পৃথক করা অনেক কঠিন একটা কাজ। কিছু বিশেষ লক্ষন বা বৈশিষ্ট্য দিয়ে এদের পৃথক করা যায়। যেমনঃ বাদ্যযন্ত্র, টেম্পু, গানের গঠন,গানের কথা,গায়কীর ধরন,গীটার বাজনা,ড্রামস বাজনা ইত্যাদি। হেভি মেটালের ধারা গুলো হলঃ ১।

আল্টারনেটিভ মেটাল ২। অ্যাভান্ট-গ্রেড মেটাল ৩। ব্ল্যাক মেটাল ৪। ডেথ মেটাল ৫। থ্র্যাশ মেটাল ৬।

ফোক মেটাল ৭। ধুম মেটাল ৮। গোথিক মেটাল ৯। গ্রোভ মেটাল ১০। মেটালকোর ১১।

ন্যু মেটাল ১২। স্পিড মেটাল ১৩। পোষ্ট-মেটাল ১৪। সিম্পনিক মেটাল ১৫। প্রোগ্রেসিভ মেটাল ১৬।

স্টোনার মেটাল ১৭। র্যা প মেটাল ১৮। ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেটাল ১৯। ফাংক মেটাল ২০। নিও-ক্ল্যাসিকাল মেটাল ২১।

পাওয়ার মেটাল ২২। গ্রিন্ডকোর ২৩। সেলো মেটাল ২৪। গ্ল্যাম মেটাল ২৫। এক্সট্রীম মেটাল ২৬।

ক্রাস্ট পাংক ২৭। খ্রিস্টান মেটাল মেটালের উপরের ধারাগুলোর মধ্যে কয়েকটির উপ-ধারা আছে। ক। থ্র্যাশ মেটালঃ ১। ক্রসওভার থ্র্যাশ খ।

ব্ল্যাক মেটালঃ ১। সিম্পনিক ব্ল্যাক মেটাল ২। ভাইকিং মেটাল গ। খ্রিস্টান মেটালঃ ১। আনব্ল্যাক মেটাল ঘ।

ডেথ মেটালঃ ১। ডেথ এন রোল ২। মেলোডিক ডেথ মেটাল ৩। টেকনিক্যাল ডেথ মেটাল ঙ। ফোক মেটালঃ ১।

মেডিভাল মেটাল ২। চেল্টিক মেটাল ৩। প্যাগান মেটাল চ। ধুম মেটালঃ ১। ডেথ/ধুম ২।

ফিঊরান্যাল মেটাল ৩। দ্রোন মেটাল ৪। স্ল্যাজ মেটাল ছ। মেটালকোরঃ ১। ডেথ কোর ২।

ম্যাথকোর ৩। নাইনটেন্দোকোর এইগুলো হলো মেটালের ধারা এবং উপ-ধারা। সবগুলোর বিবরণ অন্য একটি পোষ্টে দিব। তবে আজ কয়েকটি ধারা সম্পর্কে সামান্য তথ্য দিব। • আল্টারনেতিভ মেটালঃ যন্ত্রপাতিঃ ভোকাল, গীটার,বেজ,ড্রামস।

হেভী মেটাল যন্ত্রপাতির ব্যবহার হয় সাধারণত। রীতিবর্জিত গানের কথা ও অস্বাভাবিক টেকনিক ব্যবহৃত হয়। অনেক ক্ষেত্রে এটিকে মেটাল ও আল্টারনেটিভ রকের একটি ফিউশন হিসেবে বর্ণণা করা হয়। “TOOL” ও “System Of A Down” এই ধারার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যান্ড। • ব্ল্যাক মেটালঃ ব্ল্যাক মেটাল হল হেভী মেটালের খুব প্রান্তবর্তী উপ-ধারা।

খুব দ্রুত টেম্পু, তীক্ষ্ণ চিৎকারে গাওয়া, অত্যন্ত কম্পমান বিকৃত ধ্বনির গীটার চালনা,রীতিবর্জিত গানের গঠন সাধারণত ব্লাক মেটাল গানের বৈশিষ্ট্য। ডেথ বা থ্র্যাশ মেটালের চেয়ে ব্ল্যাক মেটাল হতোদ্যম বা ভীত বা সাংঘাতিক একটা পরিবেশ সৃষ্টি করে বেশী জোর দেয়। এটি কিছুটা ধুম মেটালের সাথে শেয়ারিং। মার্চিফুল ফেট,হেলহ্যামার,এমপেরর ও চেল্টিক ফ্রস্ট উল্লেখযোগ্য ব্যান্ড। • গথিক মেটালঃ ইন্সট্রুমেন্টঃ ইলেকট্রিক গীটার,অ্যাকুষ্টিক গীটার,বেজ গীটার,ড্রামস,কী-বোর্ড,বেহালা,সেলো।

১৯৯১ সালে Paradise lost’এর Gothic অ্যালবামের মধ্য দিয়ে গোথিক মেটাল হেভী মেটালে প্রবেশ করে। ১৯৯০ সালে উত্তর ইংল্যান্ডের ৩টি ব্যান্ড গোথিক মেটাল শুরু হয়। ব্যান্ড গুলো হল – Paradise lost,My Dying Bridge এবং Anathema। গানের কথাগুলো সাধারণত এপিক ও মেলোড্রামাটিক হয়। বেশির ভাগ গোথিক মেটাল ব্যান্ডের ভোকাল মহিলা।

যেমনঃ Evanescene, Cradle of filth, within temptation, nightwish ইত্যাদি। দুটি ব্যান্ড সম্পর্কে অল্প কিছু তথ্যঃ ১। মেটালিকাঃ ১৯৮১ সালে লস অ্যাঞ্জেলস এ প্রতিষ্টিত হয় মেটালিকা। হেভি মেটাল গানের ভক্ত অথচ মেটালিকা’র গান শোনেননি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন! নব্বই দশক থেকে শুরু করে আজ অবধি মেটালিকার বিচরণ চলছে সফলভাবেই। হেভি মেটাল, থ্র্যাশ মেটাল এবং হার্ড রক গান গেয়ে ব্যান্ড সংগীতকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে মার্কিন হেভি মেটাল ব্যান্ড মেটালিকা।

ড্রামার লারস উলরিস, গিটারিস্ট জেমস হেটফিল্ড, লিড গিটারিস্ট কার্ক হেমেট এবং বেজ গিটারিস্ট রবার্ট ট্রুজিলো’কে নিয়েই মেটালিকার বর্তমান লাইন আপ। ২। আইরন মেডেনঃ ১৯৭৫ সালে লন্ডনে আইরন মেডেন ব্যান্ডটি প্রতিষ্টিত হয়। অনেকের মতে আইরন মেডেন ছাড়া হেভী মেটাল কল্পনাও করা যায় না। সূচনালগ্ন থেকেই একের পর এক হিট অ্যালবাম উপহার দিচ্ছে এই ব্যান্ডটি।

মেটাল জগতে আইরন মেডেন এক উম্মাদনার নাম। বেজ গিটারিষ্ট স্টিভ হ্যারিস,লিড গিটারিস্ট ডেভ মুরে,লিড গিটারিস্ট অ্যাড্রিয়ান স্মিথ,লিড ভোকাল ব্রুস ডিকিন্সন,ড্রামার নিকো ম্যাক ব্রেইন এবং লিড গিটারিস্ট জ্যানিক জারস কে নিয়ে আইরন মেডেনের বর্তমান লাইন আপ। মেটালের প্রায় সব ধারা উপধারার কিছু গান আপনাদের সাজেস্ট করলাম। শুনে দেখতে পারেন। 1. Mastering hate (Nothing left for tomorrow) 2. Same eyes (Angel Dust) 3. Unholy Confessions (Avenged sevenfold) 4. Come death (Blood red throne) 5. Let blood rain (blood tsunami) 6. The diary of jane (breaking Benjamin) 7. Make them suffer (Cannibal corpse) 8. Poison art (Carnifex) 9. Dying will be death of me (Cephalic carnage) 10. Four walls and a feeling (circle of dead children) 11. Edge of night (Dark fortress) 12. at loss for words (dark tranquility) 13. Touched By A Scythe (death scythe) 14. Raising hell (Dimmu borgir) 15. The show must go on (Drop,Dead,Gorgeous) 16. Primordial Breath (Eluveitie) 17. Voices (Disturbed) 18. Winter madness (Wintersun) 19. Dying in your arms (Trivium) 20. deceptive mirrors (trail of tears) 21. To A Breathless Oblivion (the black dahlia murder) 22. Therapy (Smile empty soul) 23. Burning blood (Six feet under) 24. Violent Pacification (slayer) 25. Roots bloody roots (Sepultura) 26. Cowboys from hell (pantera) 27. Symphony of Destruction (Megadeth) 28. Trying to play the game (Motorhead) 29. Hades (Kalmah) 30. Human fates (kalmah) 31. Highway to hell (AC DC) 32. The other side (Sirenia) 33. Never enough (Epica) 34. Perfect love (Elis) 35. Are you dead yet? (children of bodom) 36. Everytime I die (Children of bodom) 37. Laid to rest (lamb of god) 38. Psycho social (slipknot) 39. Ravenous (Arch enemy) 40. Ten Leagues Beneath Contempt (Cradle of filth) এই গান গুলো শুনলে মজা পাবেন এবং মেটাল সম্পর্কে একটা ধারণা হবে।

বাংলাদেশে মেটাল গানের শ্রোতা দিনদিন বেড়ে চলছে। বাংলাদেশেও মেটাল ব্যান্ডের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। শ্রোতার সাথে সাথে ব্যান্ডও বেড়ে চলছে অবিরত। বাংলাদেশে মেটাল ব্যান্ডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যান্ড গুলো হচ্ছে ওয়ারফেজ,আর্টসেল,অর্থহীন,ক্রিপ্টিক ফেট,স্টেনটোরিয়ান,পাওয়ারসার্জ, ক্রিমেটিক এক্স,ডি-এ্যালুমিনেশন,রেডিও অ্যাকটিভ,মেকানিক্সসহ আর অনেক ব্যান্ড। অনেকে ব্ল্যাক-এর কথাও বলে যদিও ব্ল্যাক হল মূলত রক ব্যান্ড।

হ-য-ব-র-ল একটা পোষ্ট দিলাম। আশা করি সামনে মেটাল নিয়ে বিস্তারিত একটি পোষ্ট দিব। ভুল হলে বলবেন। কারণ মানুষ মাত্রই ভুল। আমিও ভুলের উর্ধেব নয়।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.