ছন্দহীন জীবন বড়ই নীরস এই সমস্যাটা আমাদের দেশে চলে আসছে বহুদিন ধরে; আশা করা যায় আরো চলবে দীর্ঘদিন। ইংরেজরা সব অক্ষর উচ্চারণ করতে পারে না—ভালো কথা। এজন্য তারা আমাদের নামগুলোকে বিকৃতভাবে লিখে গেছে; আর আমাদেরকেও সেগুলো নিয়েই থাকতে হবে? আমার নিজের জেলা বরিশালের কথাই ধরা যাক। ইংরেজিতে লেখা হচ্ছে Barisal। এটা কী করে বরিশাল হয়, তা আমার মাথায় ঢোকে না।
বুঝলাম a’র উচ্চারণ ও হতে পারে। কিন্তু s-এর উচ্চারণ কী করে শ হয়, তা আমার মাথায় আজো পর্যন্ত ঢোকেনি। এজন্য আমি Barishal ছাড়া কখনোই Barisal লিখি না। এক সহকর্মী এই কাজ করতে গিয়ে ডিএমডি সাহেবের ঝাড়ি খেয়েছেন। আমাদের ডিএমডি স্যার আবার ইংরেজি ছাড়া বলতে গেলে কথাই বলেন না।
তার কাছে চট্রগ্রাম* অশুদ্ধ না হলেও Chittagong ছাড়া অন্য কোনো বানান কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়।
শুধু যে স্থানের নামে এই সমস্যা—তা তো নয়। মানুষের নামও ইংরেজিতে লেখা নিয়ে আমাদের দেশে ব্যাপক ফ্যাসাদ। আমাদের এবং আমাদের পূর্বপ্রজন্মের মেয়েদের নামের আগে মোসাম্মৎ লাগানোর একটা রেওয়াজ ছিলো। বাংলায় সেটা সংক্ষিপ্ত রূপ ধারণ করে মোসাঃ হয়ে গেলো।
ইংরেজিতেও সংক্ষিপ্ত রূপ হওয়া দরকার এর। মোহাম্মদ-এর সংক্ষিপ্ত রূপ আমরা Md বানিয়ে নিলেও মোসাম্মৎ-এর জন্য সর্বজনগ্রাহ্য সেরকম কোনো রূপ তৈরি হয়নি। অনেক জায়গাতেই দেখেছি বাংলায় নাম লেখা মোছাঃ রাবেয়া বেগম। কিন্তু ইংরেজিতে লেখা Mrs Rabeya Begum। আমাদের এক গ্রাহকের নামেও এরকম মোসাম্মৎ ছিলো।
এক সহকর্মী ফর্মে সেটাকে লিখলেন Mosa। এমডি সাহেব সেটা কেটে দিয়ে বললেন নতুন করে আরেকটা ফর্মে Mst লিখতে।
আবার স্থানের নামে আসি। সহপাঠী জুয়েলের বাড়ি ছিলো নারায়ণগঞ্জের বন্দরে। ফরম ফিলাপের সময় ও লিখলো Bandar।
আমি জানতে চাইলাম, Bandar-এর উচ্চারণ নিশ্চয়ই বান্দর। বন্দর হয় কী করে?
ও বন্দরের ওপরই অটল রইলো।
আমি বললাম, তাহলে Bandarban-এর উচ্চারণ কী হবে?
জুয়েল কোনো জবাব দিলো না।
আরেক সহকর্মী মোহাম্মদ উল্লাহ থাকতেন বাড্ডায়; বোনের বাড়িতে। ভাগ্নে তার ক্লাশ থ্রিতে পড়ে।
ভাগ্নেকে নিয়ে তিনি বেরিয়েছেন বাজারে যাওয়ার জন্য। একটা দোকানের সাইনবোর্ডে লেখা Maddhya Badda।
ভাগ্নে পড়লো, মাড্ঢা বাড্ডা।
মামা বললেন, মধ্য বাড্ডা।
ভাগ্নের সহজ যুক্তি : যদি Maddhya’র উচ্চারণ মধ্য হয় তাহলে হবে মধ্য বদ্দ।
আর যদি Badda’র উচ্চারণ বাড্ডা হয়, তাহলে মাড্ঢা বাড্ডাই হবে।
*এখানে ট-এর সাথে র-ফলা দিয়ে লেখা; শুদ্ধভাবে ট-ফলা দিয়ে লেখা নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।