আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাদা ফুল

শাকিলা তুবা সকাল থেকেই একটানা বৃষ্টি। মনখারাপের এমন দিনে ক্লাসে যাব কি যাব না মনস্থির করতে পারছিলাম না। রাহাতের ফোন পেয়েই আর তর সইলো না। যত দ্রুত রেডি হওয়া যায় হয়েই বেরিয়ে পরলাম। ইউনিভার্সিটিতে যখন পৌঁছুলাম তখন অলরেডি ক্লাসটা শেষ।

তা হোক, বন্ধুদের সাথে দেখা হওয়াটা তো আর মিস হলো না! আমাকে দেখেই রিভা ছুটে এলো। ---শোন শোন কি হয়েছে জানিস? কি হয়েছে এ প্রশ্নটাও জিজ্ঞ্যেস করতে দিল না, হড়বড় করে নিজেই বলে যাচ্ছে। ---কাল রাতে রবিন আর শৈলীর ব্রেক হয়ে গেছে এবার আমি সত্যি চমকালাম, খুশীতে ফেটে পড়ে প্রায় চীৎকার করে বললাম ---বলো কি সুন্দরী! ওয়াও---বলেই আমি একটা ছোট লাফ দিলাম। রিভা মোটেও অবাক না হয়ে ফিক করে হেসে ফেলে বললো, ---তোরা সব শালাই এক টাইপের! ---না হয়ে উপায় কি? রবিন শৈলীর যোগ্য নয় ---তাহলে কি তুই যোগ্য? ---নো, নট এট অল। উই আর ফ্রেন্ডজ ওনলি---- দূর থেকে দেখি রাহাত, নাবিল, স্বপ্নিলা আর শৈলী আসছে।

শৈলীর কানে মোবাইল ফোন ঠেসে ধরা। খুবই উত্তেজিত ভঙ্গিতে কথা বলে যাচ্ছে ফোনে। সামনে আসতেই কথাগুলো কানে এলো, ---আই ওয়ার্নড ইউ সেভারেল টাইমস, তুমি কি খেয়াল করেছ? ইউ নেভার টুক কেয়ার—নো তুমি আর কিচ্ছু বলবে না। আমি কি বলিনি তোমার যা খুশী করতে পারো জাস্ট আমাকে একটু ইনফর্ম করবে। আমি অনেস্টি চেয়েছিলাম---কি? তুমি ফোন রাখো।

স্টুপিড। ফোন কেটে দিয়ে শৈলী ঘুরে দাঁড়ালো। কোমরে হাত রেখে এমন এক ভঙ্গিতে দাঁড়ালো যে অন্য ছেলেদের মাথা খারাপ হবার যোগাড় হবে। ওর জিন্স আর গেঞ্জি’র মাঝামাঝি জায়গাটা বিলকুল খোলা। বাদামের মতো মিষ্টি একটা রঙ আর ছিপছিপে কোমরটা দেখেই ফাজিল ছোকরারা হাত ছোঁয়াতে চাইবে।

আমার দেখা সব চাইতে সুন্দরী মেয়ে শৈলী। পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি লম্বা। ধারালো চাকুর মত শরীর। গায়ের রঙ ফর্সা না অথচ শ্যামলাও নয়। স্রেফ সোনালী একটা কালার।

ইউনিভার্সিটির ছেলেগুলো ওর জন্যে পাগল। কিনতু কি করা! রবিনটা আগেই দান মেরে রেখেছিল। আজকের পরে বুঝি আবার শুরু হবে ওর পেছনের লম্বা লাইন। যাহ বাবা---কি না কি করে রবিন এমন একটা জেমস হারালো! আমি গিয়ে ওর কাঁধে হাত রাখলাম, ---কি হয়েছে সুইটি! হেভি মুডে আছিস মনে হয়? ওর কালার করা চুল বাতাসে উড়ছে। সে একহাতে চুলগুলোকে বশ মানানোর চেষ্টা করতে করতে যা বললো তার সারমর্ম হলো এই যে, ক’দিন থেকেই সে লক্ষ্য করছিল রবিন একটু আনমনা থাকছে।

কাইন্ড অফ এভোয়েডিং এটিটিউড। বারবার জিজ্ঞেস করেও তেমন উত্তর পায়নি। তা’ছাড়া শৈলী এ ক’দিন নিজেও একটু ব্যাস্ত ছিল। ওর কাজিনরা এসেছে বিভিন্ন দেশ থেকে। গতকাল সন্ধ্যায় শৈলী কাজিনদের সাথে গেট টুগেদার পার্টি করতে বনানীর একটা কফি পার্লারে ঢুকেছিল।

গিয়ে দেখে ওখানে রবিন আর ওর ফেসবুক ফ্রেন্ড লিন্ডা প্রায় জড়াজড়ি করে বসে গল্পে মগ্ন। দেখেই ওর মাথায় রক্ত চড়ে গেছে। ছুটে গিয়ে রবিনকে কষে এক চড় বসিয়ে দিয়ে বের হয়ে এসেছে। এখন নিজের ইমোশনকে কন্টোল করতে না পেরে কাজিনদের সামনে যে সিন ক্রিয়েট করে বের হয়ে এসেছে এটা নিয়েও সে বিব্রত। আর ওদিকে রবিনের কান্নাকাটি করে ফোন কল।

সব মিলিয়ে ওর মেজাজ এখন সপ্তমে। আমি হেসে বললাম---আমার পেরেন্টস গেছে ব্যাংকক। বাড়ী একদম খালি। বেটার সবাই চল আমার বাসায়। লেটস হ্যাভ আ পার্টি টুডে টু মেক আ বিউটিফুল লেডি টুইসড আপ।

বাইরে এখনো ঝরঝর বৃষ্টি। তা বলে ঘরের ভেতর আমরা কিনতু বোরড নই মোটেও। আমার স্কুল ফ্রেন্ড জিসান আর তৌফিক এসেছে। নাবিল আর স্বপ্নিলা তো সব সময় নিজেদের নিয়েই মগ্ন। রিভাও বেশ খিল্লি খাচ্ছে তৌফিকের সাথে।

আমি, শৈলী, রাহাত আর জিসান কখনো রাজনীতি, কখনো শেয়ার মার্কেট আবার কখনো বা ফিল্ম স্টারদের নিয়ে বিচ্ছিন্ন আলোচনা করছিলাম। হঠাৎ করেই আমাদের আড্ডায় ঢুকে গেল জেমস জয়েস আর রেনর। সঙ্গে সঙ্গে চলে এলো আমার ল্যাপটপ। ইন্টারনেট ওপেন করে ঢুকে গেছি ফটো গ্যালারীতে, রেনরের ছবির খোঁজে। জেমস জয়েসের কবিতাও পড়া হলো ক’য়েকটা।

হঠাৎ করেই শৈলী কেঁদে ফেললো, ওহ আই এম মিসিং রবিন! কি যে হলো আমাদের সবাইকে বিষাদে পেয়ে বসলো। অনেকক্ষন কেউ কোনো কথা বললাম না। ---শালা আমারো বাসায় থাকতেই ইচ্ছে করে না আজকাল। মম ড্যাডের ঝগড়া দেখে দেখে বোরড হয়ে গেছি, বললো তৌফিক ওর কথা শেষ হওয়া মাত্রই রাহাত বললো, ---তবু তো উনারা একসাথে থাকেন। আমার তো একবার বাপের কাছে ঢাকা, একবার মায়ের কাছে লন্ডন করে করেই জান খতম।

---আমারও মম ড্যাড ডিভোর্সড, প্রায় ফিসফিস করে বললো রিভা ---এমন তো আমাদের সবারই। বাবা মা নিয়ে সমস্যা ফেস করছি, বললাম আমি, তবে শৈলী তুই বরং রবিনের কথা বল। ও কি বলেছে পুরো ব্যাপারটা নিয়ে? ---বলেছে ও হঠাৎ করেই ইনভলভড হয়ে গিয়েছিল লিন্ডার সাথে। যেহেতু সে আমাকেই ভালবাসে তাই গতকাল ও লিন্ডার সাথে প্যাক অফ করতে গিয়েছিল। ইন বিটুইন আমি দেখে ফেলাতেই সমস্যা হয়ে গেছে।

রবিন চাইছে আমার সাথে হুকড আপ থাকতে। ---তুমি কি করতে চাইছ শৈলী? জানতে চাইলো জিসান ---ও ইয়া আই লাভ হিম আ লট, বাট আই কান্ট কনটিনিউ আফটার হ্যাপেনিং অল দিস বুলশিটস ---দেন ডোন্ট হ্যাংগ উইথ হিম ওভার ফোন ---ইয়া আই’ল ট্রাই ঘরের ভেতর উডি এলেনের ড্রিমস আপ গানটা বাজছে, পুট দেম ড্রিমস আন্ডার মাই পিলো, পিলো---শুনতে শুনতেই আমাদের সবার বুকের ভেতরটা হু হু করে উঠলো। জিসানের পকেট থেকে গুটি গুটি পায়ে নেমে এলো কয়েকটা পুরিয়া। তৌফিকের অভিজ্ঞ হাত পুরিয়া খুলে কয়েকটা সিগারেটের তামাক বের করে ওগুলো তামাকে মিক্সড করা শেষ করতেই আমি আর রাহাত সেই মিক্সচার তামাক দিয়ে আবার সিগারেট তৈরী করে ফেললাম। বেশ কয়েকটা সিগারেট স্টিক আমাদের হাতে হাতে ঘুরছে।

সারা ঘর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। শৈলী এখন হাসছে হা হা করে। রিভা চুপ করে শুয়ে আছে ডিভানে আর স্বপ্নিলা অকারনেই পা নাচাচ্ছে। মেয়েদের এই হাল হকিকত দেখে আমরা ছেলেরাও দারুন মজা পাচ্ছি। উচ্ছনে যাক আমাদের বাপ মায়েরা।

হু সেইড উই আরেন্ট হ্যাপী? উই আর কোয়ায়েট হ্যাপী--- রাত দশটার দিকে আমাদের পেটে ক্ষুধার প্রতিবাদ-যুদ্ধ সরবে শুরু হয়ে গেল। আজ আমরা দারুন স্বাধীন। বাসার খাবার খাব না। শৈলী অফার করল, চল ডিশ এন্ড ডেজার্টে আজকের ডিনার সারি---যেই কথা সেই কাজ। ডিনার শেষ করে বেরুতে রাত ১২টা বেজে গেল।

খেতে খেতেই প্ল্যান করেছিলাম আশুলিয়া যাব লং ড্রাইভে। বাইরে বেরিয়ে সবাই যে যার গাড়ী ছেড়ে দিল। শুধু আমার আর তৌফিকেরটা থাকল। কারন আমরা নিজেরাই ড্রাইভ করছি, ড্রাইভারের প্যাঁচ নেই। তৌফিকের গাড়ীর পেছনে নাবিল আর স্বপ্নিলা বসল।

তৌফিক নিজেই রিভাকে হাত ধরে তার পাশের সিটে বসাল। কি প্রেম প্রেম ভাব! শালা এদের কপালে কত দ্রুতই না শিকে ছেঁড়ে! আমার অবিশ্যি এসবে খুব একটা রুচিও নেই। আমার গাড়ীতে আমি আর রাহাত সামনে, পেছনে শৈলী আর জিসান। গাড়ীতে বসেই জিসান কেবল বলল, ---ইস কবে যে আমারো একটা নিজের গাড়ী হবে! আর আমি নিজেই ড্রাইভ করব!! ---তোমার গাড়ী নেই? শৈলীর চোখে সহানুভুতি ---নাহ নেই ---তাহলে তোমরা চলাফেরা করো কি ভাবে? ---একটাই গাড়ী আমাদের। ওটা আব্বু, আমি আর আমার ভাই প্ল্যানড ওয়েতে ইউজ করি ---ওহ ভেরী স্যাড আমার হাসি পেল ভেবে, গাড়ী না থাকাটা স্যাড! আমাদের মধ্যে জিসানের ফ্যামিলি সবচেয়ে হ্যাপী।

ওর আব্বু আর আম্মু খুব রোমান্টিক একটা কাপল। আসলে এই মিডলক্লাস মানুষগুলোর ভেতরেই সত্যিকার ভ্যালুজ লুকিয়ে আছে। প্রেমের মূল্য বোঝে। একটা গাড়ী আর ছোট একটা ফ্ল্যাট নিয়ে কি সুখেই না কেটে যায় ওদের দিন। সেই ছেলেবেলা থেকে দেখছি, জিসানের টিফিন বক্সে যত্নের ছোঁয়া।

এখনো জিসান ভাল রেজাল্ট করলে ওর আম্মু আব্বু কাঁদতে কাঁদতে ওকে জড়িয়ে ধরে। শুধু ওদের এই ভালবাসাটুকু দেখতেই আমি যে কত্তোবার গেছি ওদের বাসায়। এমন কি জিসানের আলাদা রুমও নেই, ভাইয়ের সাথে শেয়ার করে। কিনতু এতে যেন সুবিধাই হয়েছে ওদের দু’জনের। সারাক্ষন হাসাহাসি করে, আড্ডাবাজী ওদের নিত্যসঙ্গি।

আর আমরা? আমার নিজের আলাদা বাড়ীও আছে। ড্যাড দিয়েছে। যদিও আমি মমের সাথেই থাকি। সেটা একসাথে না থাকলেও চলে। আমার কাহিনী আবার আরো হাস্যকর।

আমার ড্যাড আলাদা থাকে, কিনতু ওরা ডিভোর্সড নয়। মাসে একবার ড্যাডকে বাসায় দেখি। আর মমকে দেখতে চাইলে ক’য়েক মাস অপেক্ষা করতে হয়। প্রায় প্রতিদিনই আমি বোরড থাকি। অনেক আগেই জার্মানী চলে যাওয়ার কথা ছিল আমার।

বাট ট্রুলি, আই লাভ মাই কান্ট্রি ফ্রম বটম অফ মাই হার্ট! তৌফিকের গাড়ী অনেক সামনে এগিয়ে গেছে। আমি সেলফোনে সাবধান করি ওকে ---হ্যালো টি, দেখিস কেউ যেন নামিস না এখানে। রাত প্রায় ২টা বাজে। নামার জন্যে জায়গাটা সেইফ না শৈলী হা হা করে উঠল, ---নো আমরা নামব এখানে স্যাম ---স্যাম কিনতু ঠিকই বলেছে শৈলী এখানে নামাটা ঠিক হবে না, বলে জিসান ---তুমি বলছ! দেন, ওকে আমরা গাড়ীর উইন্ডো নামিয়ে দিয়েছি। বাইরে অন্ধকার।

ঝিরঝির করে ঠান্ডা বাতাস বইছে নদীটা ছুঁয়ে। কোন শব্দ নেই চরাচরে। মাঝেমাঝে শুধু দু’একটা গাড়ী কানের পাশ দিয়ে হুঁশাহাশ শব্দ তুলে ছুটে যাচ্ছে দুই প্রান্তে। আমরা দুই গাড়ী থেকে ফোনে আড্ডা দিচ্ছি। আমার গাড়ীর স্পিকারে ওদের কথোপকথান ভেসে আসছে, আমরাও বলছি।

হাসাহাসি হচ্ছে বিস্তর। পেছনে তাকিয়ে দেখি শৈলী জিসানের কাঁধে মাথা রেখে বসে আছে। বেশ মজা পেলাম দৃশ্যটা দেখে। আজ দিনের বেলায়ই যে মেয়ে রবিন, রবিন করে কাঁদল সে-ই কিনা এই মাঝ রাত্তিরে খুশী মনে জিসানের কাঁধে মাথা রেখে ফিসফিস করে গল্প করছে! যদিও জানি ওদের এ সম্পর্কটা টিকবে না। শৈলী আর ওর মম এখনো চুল কাটাতে ব্যাংকক ছুটে যায়।

জিসানের সাথে সম্পর্কটাতে শৈলী বেশ ক’য়েকদিন ডুবে থাকবে। তারপরই পাড়ি জমাবে অন্য দেশে। জিসানের জন্যে বিষয়টা পেইনফুল হবে। দুঃখ ওকে পেতেই হবে। তা পাক, কিছুটা দুঃখ না থাকলে জীবনের পথগুলো খুব একটা মসৃন হয় না।

দেখছি তো নিজেদেরকে! আমাদের তো দুঃখ তৈরীই হয় না। “আমাদের তো দুঃখ তৈরীই হয় না!” বাহ কি ফিলোসফি!! আশুলিয়ার নদীছোঁয়া এই শুনশান রাস্তাটুকু তো আমার ভেতরে বেশ একটা জীবনবোধ তৈরী করে দিল!!! নিজের মনেই হেসে উঠলাম। রাহাতের অবস্থাও বোধকরি আমারই মতো, আমার দিকে তাকিয়ে কেমন একটা অর্থপূর্ণ হাসি ছুঁড়ে দিল। আমার গাড়ীটা দাঁড়িয়ে আছে বাঁদিকে ঢালু পাড়ের কাছাকাছি। তৌফিকেরটা আবার ডানদিকে।

আমি ডানদিকে ঝুঁকে তাকাতেই গাড়ীর ভেতর থেকে শৈলী চীৎকার করে উঠল। সাথে আরেকটা অচেনা কণ্ঠস্বরের দাপুটে নির্দেশ, ---ঐ ছেড়ি নাম, আয়—আয় আমি চমকে পেছনের সিটে তাকিয়েই জমে যাবার উপক্রম হলাম। বাঁদিকের ঢাল থেকে উঠে এসেছে ক’য়েকজন। ওরা প্রায় ঘিরে ফেলেছে আমাদের গাড়ী। শুধু একজন জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে শৈলীকে টেনে ধরে বলছে নামতে।

মূহুর্তেই আমার মাথা সচল হয়ে উঠল। দ্রুত অটো উইন্ডোলক বাটনে আঙ্গুল রাখলাম। সাথে সাথে স্টার্ট নিয়ে অনেকটা দূরেও চলে এলাম। পেছনে ফেলে এলাম ওদের গ্রুপটাকে। গাড়ীর ভেতর গভীর নিঃস্তব্ধতা।

গাড়ী ঘোরাতে গিয়ে টের পেলাম আমি যখন অটো উইন্ডো উঠিয়েছি তখন দুর্বৃত্তের হাতও আটকে গেছে গাড়ীতে---এখন সেও আমাদের গাড়ীর সাথে ঝুলে ঝুলে এ পর্যন্ত এসেছে। আমি আবার উইন্ডো নামিয়ে ওকে ফ্রি করে দিলাম। ধপাস করে একটা শব্দ হলো। বুঝলাম, মাটিতে পড়ে গেছে ব্যাটা। ইতিমধ্যেই তৌফিকরাও ফোনে সব জেনে পাশাপাশি এসে গেছে।

আমরা গাড়ী ঘুরিয়ে ফিরতি পথ ধরলাম। ---ইস আমার গলায় আঁচড় বসিয়েছে শয়তানটা, আহলাদি গলায় বললো শৈলী ---ডোন্ট ওর্যির হানী, আমি পাশে ছিলাম তোমার—কিচ্ছু হতো না, জিসান বলছে তারপর সব চুপচাপ। সারাদিনে আমরা একবারো এমন নীরব হইনি। সকলের মনেই বইছে ঝড়। সবাইকে যার যার বাড়ী পৌঁছে দিতে দিতেই ভোর হয়ে এলো।

আমি খুব টায়ার্ড। কোন এপার্টমেন্ট নয়। ঢাকা শহরের এই প্রাইম লোকেশনে আমাদের লন আর সুইমিং পুলসহ বিশাল এই বাড়ীটাতে ঢুকতে আমার কেমন কান্না পাচ্ছিল। গাড়ীবারান্দায় গিয়ে দাঁড়াতেই বাসার ম্যানেজার ছুটে এল। চাবিটা ওর হাতে দিয়ে বিশাল উডডোর ঠেলে ভেতরে ঢুকে যাচ্ছিলাম।

ম্যানেজার রিয়াজ আমাকে ডেকে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে বলল, ---স্যার গাড়ীতে রক্ত লেগে আছে—কোন এক্সিডেন্ট হয়েছে কি? মানে কেউ মারা টারা গেলে এখনই একশন নিয়ে রাখছি! আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখলাম গাড়ীর চাকায়, দরজায় লেগে আছে চাপ চাপ রক্ত। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।