আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাদা হাওয়া



রাত্রিতে কসাইখানায় শত শত গরুর প্রান সংহার হয়। পশুগুলো মানুষদের নিকট পরাধীন। মানুষগুলির মগজে আছে বনিক বুদ্ধি, হাতে আছে ছুরি, আরেক হাতে লাঠি। পশুগুলির আছে নিজ নিজ কন্‌ঠ। সেই কন্‌ঠএর জন্য আছে রজ্জুবন্ধন আর আছে খড়গ।

ভগবদদত শৃেঙ্‌গর গৌরবে যখনই সে উত্তেজিত হয়, তাকে ,শায়েস্তা করার জন্য , তাকে বলির জন্য প্রস্তুত হতে যে শান্ত ভাবের প্রয়োজন সে ভাব আনয়ন এর জন্য , মানুষের হাতে যে ষষ্‌ঠি আছে তাই যথেষ্ট। কারন দড়ির জন্য লাঠির জোর দুর্বার হওয়াটা ন্যায়শাস্ত্রের বিধান। একটা গরুর গাড়ি চলছে। ক্যাঁচ ক্যোঁচ ক্যাঁচর করে একটানা শব্দ হচ্ছে। পিছনে নিচের দিকে একটা লন্ঠন বাধা- তার আলোতে চলন্ত আবর্‌তনশীল চাকাগুলির যে ছায়া বড় হয়ে দূরে গিয়ে পড়েছে - চলন্ত গাড়ির সাথে তাও আবর্তিত হয়ে চলেছে।

অনেকগুলি গরুর মাংশ দুইটা গরুতে বয়ে চলেছে। গরুরা মানুষ নয়। কিন্তু গন্ধ নেবার শক্তি তাদের মানুশের'ই মত থাকতে আপত্তি নেই। তাদেরি মাংসের বোঝা তাদের বইতে হচ্ছে - যে মাংশের গন্ধ গিয়ে লাগছে তাদের নাকে। শরীর যখন শিউরে উঠছে , পা দুটি যখন আড়ষ্‌ট হয়ে উঠছে -তাদেরও মাংশ দুদিন পরে আর দুটো অজানা গরুতে বইবে এ সামান্য চিন্তাটুকু মনে এসে তাদের যখন নিমেষের জন্য বিমনা করছে , তখনই গাড়োয়ান এর লাঠির গুঁতো এসে সচকিত আর সচল করে দিয়েছে বোকা গরু দুটিকে।

যদি তারা থেমে যায়-যদি তারা আর এক পাও এগুতে না চায় , যদি তারা বিদ্রহ করে , হুড়মুড় করে গলার বাধন ছিড়ে কাঁধের বাঁশটা ফেলে দিয়ে একদিকে ছুটে চলে যায়, নয়ত শিং উচিয়ে গাড়োয়ানটাকে তাড়া করে আসে! পাগল - তা কি হয় ! গাড়োয়ানের হাতে অত বড় লাঠিটা আছে কিসের জন্য? হোক তা নিজেদের মাংস , তবু বইতে তাকে হবেই। দাঁড়াতেও পারবেনা, চলতে তাকে হবেই, চালক তাকে চালিয়ে নিয়ে যাবেই - শাদা হাওয়া অদ্বৈত মল্লবর্মণ

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।