আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাদা প্রাসাদ



ওরহান পামুকের লেখা একটা উপন্যাস পড়লামThe white Castle। খুব দ্রুত পড়েছি। হয়ত পাঠ থেকে উপলব্ধির তলানি এখনও জমেনি, সেটা জমবে কিনা আদৌ তাও জানিনা, পড়ার মজাটা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। পামুক মনে হয় দুনিয়াটা দেখেনি মানুষের সাথে মিলেমিশে- বই পড়ে দুনিয়াটা চিনেছে। জগৎের অভিজ্ঞতা তার পড়ে পাওয়া।

ইস্তাম্বুলে বসবাসকারী একজন ইটালি দেশীয় ক্রিতদাসের জবাণিতে লেখা হয়েছে উপন্যাসটি: তুর্কিদের হাতে বন্দি হওয়ার আগে সে ছিল একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানি, বর্তমানে একজন তুর্কি জ্যোতির্বিজ্ঞানি তার মনিব। মজা হচ্ছে তারা দেখতেও একইরকম, যেন জমজ ভাই। ২২ বছর তারা একসাথে ছিল - তারা একসাথে বিজ্ঞান চর্চা করে - একসাথে বসে লেখে তাদের নিষ্পাপ শৈশব আর কৃত পাপের কথা। তুরস্কের সুলতান তাদের উপর নির্ভর করে নানা সমস্যায়: দেশ থেকে প্লেগের মহামারি দূর করার পর থেকে; শেষে তাদের দায়িত্ব দিয়েছে একটা যুদ্ধাস্ত্র তৈরীর। সেই ভয়ালদর্শী অস্ত্র নিয়ে তারা পোল দেশ আক্রমন করতে যায়।

কিন্তু পাহাড়ের ওপর পোলদের শাদা প্রাসাদের কিছুই ক্ষতি করতে পারে না সেই অস্ত্র, বরং কাদায় আটকা পড়ে নট-নড়নচড়ন হয়ে বসে থাকে। সৈণ্যবাহিনী আগে থেকেই খেঁপে ছিল - এইবার সুযোগ বুঝে সব নষ্টের গোড়া ইটালীয় ক্রীতদাসটার মাথা কাটার দাবী করে তারা। ইটালীয় ক্রীতদাসটার মালিক হোজা বোকাদের রাজ্য থেকে মুক্তির একটা পথ পায়: সে ইটালীয় ক্রীতদাসটাকে তার জায়গায় বসিয়ে পালিয়ে যায় ইটালির ভেনিসের সেই গ্রামের উদ্দেশ্যে যেখান থেকে এসেছিল তার ক্রীতদাস। ইস্তাম্বুলে বসে এই কাহিণী যখন লিখছে ছদ্ম হোজা - তখন আসল হোজা ইটালিতে তার প্রেমিককে বিয়ে করেছে, নাম করেছে তুরস্কে তার ক্রীতদাস জীবনের কাহিনী লিখে - এই কথা জানা গেল একজন ইটালীয় পরিব্রাজকের কাছে। আর ছদ্ম হোজা জীবন বিনিময়ের পর তুর্কী মেয়েকে বিয়ে করে চার সন্তানের পিতা।

এই জীবন বিনিময়ের কাহিনীই শাদা প্রাসাদের বিষয়। আর পুনর্পাঠে মনে হলো ( মনে মনে পুনর্পাঠে) এইটা "আমাদের" আর "তাদের" গল্প। "আমাদের" আর "তাদের" মধ্যে পার্থক্যটা গ্রহণ আর বর্জনের পার্থক্য: একজন তুর্কি ইটালীয় আর একজন ইটালীয় তুর্কি হয়ে গেল গ্রহণ আর বর্জনের মধ্য দিয়ে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।