আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শুভ সূচনা ভারতের

হেরে গেছে শ্রীলঙ্কা। অস্ট্রেলিয়াতে সিবি সিরিজের মতো এবার জয়ের দেখা পায়নি ভারতের বিপক্ষে। যদিও ঐ সিরিজের শেষ মুখোমুখি হওয়া ম্যাচে ভারতই জয়ী হয়েছিল। যদিও আজ ভারতের ৩ উইকেটে করা ৩০৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কান দলের শুরুটা খারাপ ছিল না। তাই বলে ৪৫.১ ওভারে শ্রীলঙ্কা অলআউট হবে এটা কেউ ভাবেনি।

ফলে ৫০ রানে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে এশিয়া কাপে শুভ সূচনা করেছে ভারত। ৩ উইকেটে ১৫২ রান এক সময় তো ম্যাচ লঙ্কানদের হাতেই ছিল। কিন্তু ৮ উইকেটে ২৪১ রানই বলে দেয় ভারতের বোলিংয়ের সামনে লঙ্কান মিডল অর্ডার কতটা অসহায়। মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় শ্রীলঙ্কা এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হারের স্বাদ নিতে বাধ্য হল। পরিস্থিতি এমন যে এশিয়া কাপের শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে লঙ্কাকে পরশু পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় পেতেই হবে।

এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে টস হেরে মূলত ভারত শুরুতেই একটা মানসিক ধাক্কা খেয়েছে। ওপেন করতে নামা শচিন আর গম্ভিরের জুটি বেশি সময় স্থায়ী না হতে পারায় মনে হয়েছিল আজ ভারত মিরপুরের উইকেট বড় স্কোর গড়তে পারবে না। শততম সেঞ্চুরির দৌড়ে টেনশনে থাকা শচিন মাত্র ৬ রানেই ফেরত যান সাজঘরে। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ভারতের গৌতম গম্ভীর ও বিরাট কোহলি যা করলেন, তা ছিল রীতিমত অবিশ্বাস্য। এই দুই ব্যাটসম্যানের জোড়া সেঞ্চুরিতেই ৩০০ রান পার করতে সক্ষম হয় ভারত।

গম্ভীর-কোহলি জুটিতে রান আসে ২০৫। এদিন দুই জনেই ক্যারিয়ারের ১০ম সেঞ্চুরির দেখা পান। ভারতের ইনিংসের ৪১তম ওভারে দুই জনেই ছিলেন ৯৯ রানে। গম্ভির যখন ৪১তম ওভারে ১১৪ বলে ৯৯ রানে সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষায় তখন বিরাট কোহলিও ১১৩ বলে ৯৯ রানে সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে। ৪২তম ওভারে গম্ভির সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর পরের বলেই কোহলিও করেন শত রান।

সবচেয়ে মজার বিষয় এক ওভার পরই দুই ব্যাটসম্যান ৪৩তম ওভারে এক বলের বিরতিতে সাজঘরে ফেরত যান মাহরুফের বলে। গম্ভীর ১১৮ বলে ১৭১ মিনিটে ৭টি চার দিয়ে সাঁজান ১০০ রানের ইনিংস। আর কোহলির ইনিংসটি সাজানো ছিল ১২০ বলে ৭টি বাউন্ডারির সাহায্যে। ভারতের পার্টনারশীপের রেকর্ডের খাতায় গম্ভির-কোহলি জুটির করা ২০৫ রান এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গম্ভীর-কোহলি যখন সাজঘরে ফেরত যান দলের স্কোর ছিল তখন ৩ উইকেট ২২৬ রান।

ক্রিজে আসেন অধিনায়ক ধোনি ও সুরেশ রায়না। শেষ ৪৩ বলে এই জুটি স্কোর বোর্ডে জমা করে ৭৮ রান। এতেই ভারত প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লড়াই করার পুঁজি পেয়ে যায়। ধোনি ২৬ বলে ৪৬ আর রায়না ১৭ বলে ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৩০৫ রানের টার্গেট একেবারে কম নয়।

শ্রীলঙ্কা সেই টার্গেটে অংক কষেই এগিয়েছে। দুই ওপেনারের মধ্যে দিলশান (৭) দলের ৩১ রানে পাঠানের বলে কোহলির তালুবন্দী হন। অপর ওপেনার জয়াবর্ধনে টিকে থাকলেন সাঙ্গাকারাকে সঙ্গে নিয়ে। এই জুটি ধীরে ধীরে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। এই জুটিকে ভাঙ্গতে ভারত আপ্রাণ চেষ্টা চালায়।

১৮.৩ ওভারে সেই পাঠানই সফল হলেন। পাঠান ৭৮ রান করা জয়াবর্ধনেকে ধোনির ক্যাচে পরিণত করেন। ৫৯ বলে ১০টি চার ও ২টি বিশাল ছক্কা হাঁকান জয়াবর্ধনে। মিডল অর্ডারে তৃতীয় উইকেট জুটিতে সাঙ্গাকারার সঙ্গে চান্দিমাল যখন সেট হবার পথে তখনই আঘাত হানেন অশ্বিন। ১২৪ থেকে ১৫২ রান করতেই শ্রীলঙ্কা ৩ উইকেটের পতন ঘটে।

২ রান করা চান্দিমাল বোল্ড হন। চতুর্থ উইকেটে ১৯৬ রানে পানি বিরতিতে যায় লঙ্কান দল। সাঙ্গাকারা ৬৫ রানে আর থিরিমানি ২৯ রানে জয়ের জন্য লড়াই করছেন। ১৫ ওভার হাতে থাকা লঙ্কানদের ওভার প্রতি রান দরকার ৭.২৬। এরপর এক ওভারে সেট জুটিকে ফেরত পাঠান অশ্বিন।

৬৫ রান করা সাঙ্গাকারা অশ্বিনের বলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নিলে বেশ চাপে পড়ে লঙ্কানরা। আর সেই চাপকে আরও বাড়িয়ে দেন অশ্বিন। ২৯ রান করা চান্দিমালকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন অশ্বিন। সপ্তম উইকেট জুটিতে থারাঙ্গা ও কাপুগেদারা টিকতে পারলেন না। কাপুগেদারা রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরের পথ দেখান বিনয় কুমার।

সাত উইকেট হারিয়ে লঙ্কার এশিয়া কাপের মিশনে প্রথম ম্যাচে জয়টা কঠিন হয়ে যায়। জয়ের জন্য ৬০ বলে প্রয়োজন ৭৮ রানের। হাতে ছিল তিন উইকেট। অষ্টম উইকেট জুটিতে থারাঙ্গা আর মাহরুফ মারমুখী হয়ে উঠেন। সে জুটিও বেশিক্ষণ টেকেনি।

২৫৪ রানের মাথায় ফারভেজ মাহরুফকে বিনয় কুমার এবং একই রানে প্রসন্নকে ইরফান পাঠান সাজঘরে ফেরত পাঠালে ৪৫.১ ওভারে ২৫৪ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কার ইনিংস। ফলে ৫০ রানের সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ধোনির ভারত। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।