আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টাইটানিকের ক্যাপ্টেন মদ্যপ ছিলেন : বেঁচে যাওয়া যাত্রীর চাঞ্চল্যকর তথ্য

বিগত ১০০ বছর ধরে তিনি ছিলেন মহান। কিন্তু সেই ধারণা ভেঙে দিয়ে এই প্রথম তার দিকে আঙুল ওঠালেন কেউ। কালি লাগল তার ‘মহান মুখে’। তার নামের সঙ্গে জুড়ল মদ্যপের তকমা। তিনি হলেন প্রমোদতরী টাইটানিকের ক্যাপ্টেন এডওয়ার্ড স্মিথ।

১৯১২-র ১৪ এপ্রিল, অভিশপ্ত সেই রাতে অসহায় অসংখ্য যাত্রীর যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে যিনি ঝাঁপ দিয়েছিলেন আটলান্টিকের পানিতে। এই গল্পটা সবার জানা। কিন্তু গল্পটা কি আদৌ সত্যি ছিল? টাইটানিক ডুবে যাওয়ার ঠিক ১০০ বছরের মাথায় সেই প্রশ্নটা তুলে দিয়েছে প্রমোদতরীর বেঁচে যাওয়া যাত্রী এমিলি রিচার্ডসের লেখা একটি চিঠি। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনার জন্য সরাসরি ক্যাপ্টেন এডওয়ার্ড স্মিথকেই দায়ী করেছেন ওই মহিলা। এমিলির অভিযোগ, ‘হিমবাহে ধাক্কা লাগার কয়েক ঘণ্টা আগে টাইটানিকের বার-এ মদ খেতে দেখা গিয়েছিল ক্যাপ্টেন এডওয়ার্ড স্মিথকে।

’ একটি ব্রিটিশ দৈনিক এই খবর জানিয়ে বলেছে, সম্প্রতি টাইটানিকের দ্বিতীয় শ্রেণীর যাত্রী এমিলি রিচার্ডসের লেখা একটি চিঠির খোঁজ পাওয়া গেছে। যা থেকেই জানা গেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। এমিলির তখন বয়স ছিল ২৪। সাউদাম্পটন থেকে আমেরিকার ওহিও'য় স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন তিনি। লাইফবোটের সাহায্যে তিনি, তার দুই ছেলে উইলিয়াম আর সিবলি, মা এলিজাবেথ এবং বোন নেলি বেঁচে যান।

কিন্তু আটলান্টিকের কনকনে ঠান্ডা পানিতে আরও ১৫২১ জন যাত্রীর সঙ্গে নিথর হয়ে যান এমিলির ভাই জর্জ। টাইটানিক ডুবে যাওয়ার প্রায় দু’দিন পরে উদ্ধারকারী জাহাজ কার্পেথিয়ায় নিউ ইয়র্ক ফেরার সময় শাশুড়িকে ওই চিঠিটা লিখেছিলেন এমিলি। তার ভাষায়, “রোববার রাত ১১টায় বিশাল হিমবাহের সঙ্গে ধাক্কা লাগল আমাদের জাহাজের। অন্য এক জনকে দায়িত্বে বসিয়ে ক্যাপ্টেন বার-এ মদ খেয়ে পড়ে ছিলেন। ক্যাপ্টেনই দায়ী এই দুর্ঘটনার জন্য।

আমরা শেষ বোটে জায়গা পেয়েছিলাম। কিন্তু আমার ভাইটা উঠতে না পেরে মরে গেল.” এতদিনের জানা ইতিহাস অবশ্য অন্য কথা বলে। দুর্ঘটনা ঘটার আগে সন্ধ্যাবেলা টাইটানিকের প্রথম শ্রেণীর একটি রেস্তোরাঁয় ডিনার পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন ৬২ বছর বয়সী ক্যাপ্টেন। রাতে নিজের কেবিনে ফিরে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু হিমবাহে ধাক্কা লাগার সঙ্গে সঙ্গে তিনি জেগে যান।

শেষ পর্যন্ত যাত্রীদের অসহায়তা সহ্য করতে না পেরে আটলান্টিকে ঝাঁপ দিয়ে তলিয়ে যান ক্যাপ্টেন এডওয়ার্ড স্মিথ। ক্যাপ্টেন স্মিথকে নিয়ে লেখা এমিলির ওই চিঠির সঙ্গে পাওয়া গেছে আরও একটি চিঠি। কার্পেথিয়ায় নিউ ইয়র্ক পৌঁছে যেটা লিখেছিলেন এমিলি। টাইটানিকের সব জিনিস দীর্ঘদিন ধরে নিলাম করছে যারা, ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ারের সেই ‘হেনরি অলরিজ অ্যান্ড সন’ দু’টি চিঠিই নিলামে তুলতে যাচ্ছে আগামী ৩১ মার্চ। ২০ হাজার পাউন্ডে চিঠি দু’টি বিক্রি হতে পারে বলে তারা মনে করছেন।

এমিলির চিঠি সম্পর্কে নিলাম সংস্থার কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু অলরিজ বলছেন, “হয়তো নিজের ভাইকে হারিয়ে অসম্ভব মনোকষ্টে ভুগছিলেন ওই মহিলা। তাই ক্ষুব্ধ হয়ে যাকে সামনে পেয়েছেন, তাকেই দোষারোপ করতে চেয়েছিলেন। এক্ষেত্রে ক্যাপ্টেন স্মিথ বোধহয় তার ক্ষোভের শিকার হয়েছেন। কারণ আমরা যত দূর জানি, ওই সন্ধ্যায় ক্যাপ্টেন মদ খাচ্ছিলেন এমন সাক্ষ্য কোনও রিপোর্ট থেকে পাওয়া যায়নি। তাই এমিলির দেয়া তথ্য সত্যি বলেই মানতেই হবে, এমন নয়।

বিষয়টা অবশ্য খুবই বিতর্কিত. তবে হ্যা, উনি সেই রাতে জাহাজে ছিলেন এবং তার দেয়া বিবরণে নতুন কিছু জানা গেল, এটুকুই বলা যেতে পারে। তা ছাড়া, কার্পেথিয়া থেকে পাওয়া প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ যথেষ্ট দুষ্প্রাপ্য। " তার এ বক্তব্যে উচ্চমূল্যে চিঠি দু'টি বিক্রির আকুতিই ফুটে উঠেছে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.