আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফিউশন ফাইভের পোস্টের জবাবে।

Miles to go before I sleep..... এটা ফিউশন ফাইভের এই পোস্টের জবাবে তাৎক্ষনিক কমেন্ট, কোন ওয়েল-অর্গানাইজড পোস্ট না। সেইভ করার জন্যই পোস্ট আকারে রাখলাম। মৌলানা আহমেদ শফি সম্পর্কে আপনার ধারণা অজ্ঞানত প্রসুত এবং সেকেন্ড-হ্যান্ড। এটা হতে পারে তিনি বা তাঁরা ভুল করছেন বা ভুল বুঝেছেন, মানুষ ভুল করবে সেটাই স্বাভাবিক, তবে ১৯৭১-এ কিন্তু তাঁরা পাকিস্তান-বিরোধী ছিলেন, হাটহাজারী মাদ্রাসায় বোমাও মেরেছিল পাকিস্তানিরা। জামায়াতিদের সাথে তাদের সাপে-নেউলে সম্পর্ক।

এখন উনাদের আন্দোলনে জামায়াত ভিতরে ঢুকেছে হয়ত বা, ছাত্রলীগেও তো জামায়াত ঢুকেছে বলে তারা অভিযোগ করত। আপনি লিখেছেন "কোথাকার কোন্ মৌলোভী শফী, সবচেয়ে নিম্নমানের ব্লগারটিও যার চেয়ে বিদ্যাবুদ্ধিতে অগ্রসর, সেই লোক কিংবা তার সাঙ্গপাঙ্গ কিভাবে ইসলামের হেফাজতকারী হতে পারেন? এ কি ইসলামেরই অপমান নয়?" আপনি শেষে বলেছেন, "জামায়াত-শিবির তো বটেই, হেফাজতে ইসলামের নেতারাও সেই সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দেশজুড়ে ইতিহাসের ভয়াবহতম নৃশংস ঘটনাগুলোই ঘটিয়েছিল। " দুটাই নিঃসন্দেহে ফালতু একটা কথা। মৌলানা আহমেদ শফি সম্পর্কে আপনার ধারণা দুঃখজনক। উনি অসম্ভব প্রজ্ঞাসম্পন্ন একজন লোক।

আমার নিজের বাড়িও হাটহাজারী, যদিও আমি সরাসরি মৌলানার সাথে কোনদিন দেখা করিনাই। মৌলানা শফী সম্পর্কে আমি আমার এক পরিচিত শামীমভাইয়ের কাছ থেকে শুনেছি, শামীমভাই এমআইটি থেকে লেখাপড়া করা, নর্থসাউথের আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টের ফাউন্ডার। আপনার বিদ্যাবুদ্ধি মাপার নিক্তি কি সেটা জানিনা, যদি মনে করেন একাডেমিক পড়াশুনা করলেই বিদ্যাবুদ্ধিতে এগিয়ে যাওয়া যায় তাহলে আমার বলার কিছু নেই, কেননা সেক্ষেত্রে আপনার বিদ্যাবুদ্ধি নিয়েই আমার সন্দেহ আছে। তাই সবচেয়ে নিম্নমানের বুদ্ধিসম্পন্ন ব্লগারও আহমেদ শফি সাহেবের থেকে ঢের বেশি বুদ্ধিসম্পন্ন বলে নিজেকেই হালকা করেছেন। আর নেপথ্য কাহিনীর যে লিংক দিয়েছেন ওসব বিশ্বাসযোগ্য কিছু না, ফালতু গুজব এবং এসব সোর্স কোট করা আপনার পোস্টের প্রাসংগিকতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

আর পর্যাপ্ত সোর্স ছাড়া ফালতু অভিযোগ, যেমন আল্লামা শফি রাজাকার ছিলেন, এসব বলে আপনার পোস্টকে শুধু শুধুই বালখিল্য বানিয়ে ফেলেছেন। হাটহাজারীর যে কোন সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞেস করলেই বলবে হাটহাজারী মাদ্রাসা এবং আল্লামা শফি মুক্তিযুদ্ধে পজিটিভ ভূমিকা রেখেছিলেন, বিরোধিতা তো দূরের কথা। তারা ১৯৭১-এর ফেব্রুয়ারীতেই পাকিস্তানিদেরকে জালেম আর বাংলাদেশীদেরকে মজলুম হিসেবে ফতোয়া দিয়েছিলেন এবং হাটহাজারী মাদ্রাসার এক আলেমের কাছ থেকে নিজের কানে শুনা উনারা এখনও সে অবস্থানে আছেন। সে সময় কওমী মাদ্রাসাগুলো মোটাদাগে হয়ত নিরপেক্ষ অথবা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন ছিলেন। এখন চামে পেয়ে অনেকেই অভিযোগ করতে পারে, তবে সেসব ফালতু অভিযোগ, কাদের সিদ্দিকীকে রাজাকার বলে অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ, সেরকমই অভিযোগ।

সম্মিলিত ইসলামী জোট কওমী মাদ্রাসার বিরোধী হবে, সেজন্য বালছাল অনির্ভরযোগ্য অভিযোগ করেছেন। হেফাজতে ইসলামের দাবির সাথে আমি একমত নয়, ব্লগার ডটু রাসেল, শয়তান এদের গ্রেফতারের প্রতিবাদ করি এবং তাদের শীঘ্রই মুক্তি চাই, যদিও আসিফ মহিউদ্দীন সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়েছেন মনে করি, তবু তারও গ্রেফতার আমি চাই না। কওমী মাদ্রাসার অনেক কার্যকলাপ, তাদের শিক্ষাপদ্ধতি এসব বিষয়েও আমার দ্বিমত আছে, এবং আমি তাদের ব্যাপক সংস্কারের পক্ষপাতি, কয়েকমাস আগেই ফেইসবুকে এক কওমীপন্থী বন্ধুর সাথে আমার এ বিষয়ে ব্যাপক বাকবিতন্ডা হয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭১-এ রাজাকারীর অভিযোগ চরম অন্যায় অভিযোগ এবং এ ধরনের যাকেই অপছন্দ তাকেই চামে রাজাকার বানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা প্রকারান্তরে রাজাকারদেরকে গ্রহনযোগ্যতা দেওয়ারই নামান্তর, সেজন্যই চরম ঘৃণ্য একটা অপরাধ। ধর্মব্যবসায়ী বলতে আপনারা মাজার-পীরব্যবসায়ী, আপনাদের প্রথম আলোর নাকের ডগার উপর সাঈদাবাদী, দেওয়ানবাগী বা ইত্যাকার ভন্ড পীররা, চট্টগ্রাম সিলেটে মাজারব্যবসায়ী এসবকে বুঝেন না, বুঝেন খালি কেউ রাজনীতিতে নাক গলালে তখনই সে ধর্মব্যবসায়ী।

কওমী মাদ্রাসার লোকজন আপনাদের কাছে আগে ধর্মব্যবসায়ী ছিল না কেননা তারা রাজনীতি থেকে দূরে থাকত, কিন্তু এখন যেহেতু রাজনীতিতে নাক গলাচ্ছে তখনই ধর্মব্যবসায়ী বানিয়ে দিয়েছেন। ধর্মব্যবসায়ীর ডেফিনিশান নিজের সুবিধামত করলে ধর্মব্যবসায়ীদেরকে হারাতে পারবেন না কোনদিনই। আর ধর্মব্যবসা সবচেয়ে বেশি করেছে, করে ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা, রাজীবের জানাজা পড়িয়ে শাহবাগ আন্দোলনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ দিয়েছিল নিধার্মিকরাই, তারাই ধর্মব্যবসা করেছে। ধর্মকে নিধার্মিকরাও ব্যবসার কাজে ব্যবহার করতে পারলে ধর্মব্যবসা কমবে কিভাবে? নিজেদের যখণ কাজে লাগবে তখন ধর্মব্যবসা করতে আপনাদের আপত্তি নেই, ভোটের জন্য ধর্মকে ব্যবহার করবেন সজ্ঞানে কিন্তু যখনই হুজুররা ব্যবহার করবে তখনই আপনাদের চেঁচামেচি শুরু হয়ে যায় ধর্মব্যবসা, ধর্মব্যবসা বলে! আবারও বলছি হেফাজতে ইসলামের দাবির সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করছি কিন্তু তার মানে এই না যে তাদের নামে ফালতু, বেইসলেস, সত্যমিথ্যা অভিযোগ করবেন। এসব করে দেশকে আরো সাংঘর্ষিক অবস্থানের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন, সমাধান কিছুই করছেন না।

আপনার এই পোস্টের সারাংশ খুবই নাজুক, উপসংহার বেইসলেস, সূত্রগুলো গুজবনির্ভর, সম্পূর্ণ পোস্ট বিষয়বস্তুহীন এবং দেশকে আরো সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিতে ঠেলে দেওয়ার আহ্বান চরম অবিবেচনাপ্রসূত। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.