আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মধ্যযুগের দিকে যাচ্ছে দেশ (বাংলাস্তান অথবা পূর্ব পাকিস্তান) : হেফাজতিদের ১৩ দফা দাবি এবং আমার চিন্তা

আমি একজন কল্পবিলাসী মানুষ । জীবনের বন্ধুর পথে হেটে চলেছি লক্ষ্যে পৌঁছাবো বলে । এ পথচলায় আমার স্বপ্নগুলোই আমার প্রেরণা । পথের সঙ্গী হিসেবে আছে আমার গিটার । স্বপ্নগুলোকে গিটারের ছয়টি তারে বাঁধার চেষ্টার জীবন কেটে যাচ্ছে............ (নারী অধিকার আর ধর্মীয় সহনশীলতার কথা শুনলে যাদের নুনুনুভুতিতে আঘাত লাগে তারা এই পোস্ট থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকেন) আজকে হেফাজতে (জামাত) ইসলাম তাদের ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে ।

দাবিগুলো পইড়া যারপরনাই বিনুদিত হইছি । কিন্তু এই সাথে কিছুটা শংকিত ও চিন্তিত । এর মধ্যে তিনটি বিষয় নিয়ে আমায় সবচেয়ে বেশি ভাবিয়ে তুলছে । প্রথম বিষয়টা হইল বাকস্বাধীনতা । আমরা এমন একটা বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম যেখানে আমরা হব স্বাধীন নাগরিক ।

স্বাধীন নাগরিক বলতে গেলে প্রথমেই আসে বাকস্বাধীনতার বিষয়টা । আমি এতদিন মনে করতাম, ১৯৫২ সালে আমরা কথা বলার অধিকার আদায় করে নিয়েছি । কিন্তু, সেই অধিকার কখন হারিয়ে গেছে টের পাই নাই । এখন কোন কিছু বলতে গেলেই চোখের সামনে ভাসে জামাতের কোপ আর ডিবির রিমান্ড । এই অবস্থায় বলতেই হয়ঃ "ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়ানিতে চায়, ওরা কথায় কথায় শিকল পড়ায় আমার হাতে পায়" ।

এরপর যদি বাকস্বাধীনতার উপরে আরো শর্তারোপ করাহয় তাহলে তো বাসায় ভাত চাওয়ার ক্ষেত্রেও চিন্তা করতে হবে যে সীমালঙ্ঘন করতেছিনা তো । কারণ, 'মা, আমার খিদা লাগছে' - এইটাবললে সরকার যদি মনে করে যে দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির ফলে খাদ্যাভাবের প্রতিবাদ করছি । তখন, ভাতের বদলে ডিম খেতে হবে (কোনদিক দিয়ে তা আর না বলি) # দ্বিতীয় বিষয়টা হলো ভাস্কর্য ভাঙ্গার দাবী । আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক অপরাজেয় বাংলাসহ সকল ভাস্কর্য তারা ভাঙ্গতে চায় । কিন্তু তারা হয় 'অপরাজেয় বাংলা'র তাত্‍পর্য জানে না অথবা 'অপরাজেয়' শব্দটার অর্থই জানে না ।

হিন্দুদের মন্দির তারা ভাঙ্গতে চায় । কোন মূর্তি তাদের পুটুতে আঙ্গুল দিয়েছে তা বুঝলাম না । নাকি মুসলমানেরা সংখ্যাগুরু আর হিন্দুরা সংখ্যালঘু বলে ? কিন্তু পার্শ্ববর্তী ভারতে তো হিন্দুরা সংখ্যাগুরু । সেখানে তারা যদি আমাদের মসজিদ ভাঙ্গতে চায় তখন? # আর তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে নারীর সাথে সহাবস্থান । ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মত জায়গায় (যেখানে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বই নারী) নারীদেরঘরের চারদেয়ালে বন্দী করার চিন্তা করা হচ্ছে ।

পুরুষের সাথে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহন নিষিদ্ধ এবং রাস্তাঘাটে পুরুষের সাথে নারীদের চলাচল নিষিদ্ধ করার দাবী মধ্যযুগীয় চিন্তাধারাই প্রতিফলন । রাস্তায় কর্মজীবী নারী দেখলে আমার মনে তাদের প্রতি সম্মানই জাগে, কিন্তু তাদের দেখে যদি হেফাজতিদের যৌনকামনা জাগে তাহলে তারানারীদের আবদ্ধ করার দাবি তুলতেই পারে । পার্কে বসে প্রেমিকার সাথে বাদাম শেয়ার করতে আমার মনে শুধুই রোমান্টিকতা আসে । কিন্তু এটা দেখে যাদের মনে ধষর্ণের ইচ্ছা জাগে তারাই নারীদের স্বাধীনতা কাড়তে চায় । নারীনীতি বাতিল করে তারা নারীদের সেবাদাসী বানাতে চায় ।

এখন জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন, আমার হাসিনা - খালেদা - পাপিয়া আপুদের কি হপে? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.