আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জন্মদিন ও অঃতপর......

You can't buy love on eBay. আজ (০১মার্চ) আমার জন্মদিন। আগেই জানতাম আজকের দিনটা অনেক ব্যস্ত যাবে, এত কাজের চাপ তাই চেয়ে ছিলাম দিনটি ভুলে থাকতে। কিন্তু পারলাম কই!! আমার প্রিয় মানুষটি (বউ) কিছুতেই ভুলে থাকতে দিল না। মনে করেছিলাম নতুন ল্যাব (কিছুদিন আগেই এই ইউনিভার্সিটিতে আসলাম) কেউ টের পাবেনা, আর সবাই যেভাবে ব্যাস্ত থাকে তাই কেউ এসব মনে করার সময়ই পাবেনা!! বউকে নিয়ে চুপি চুপি দিনটা কাটিয়ে দিব এবং পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সন্ধ্যায় এক জাপানী রেস্টুরেন্টে সুশি(Sushi) খেতে যাব। সকালে ইনষ্টিটিউটে ঢুকেই টের পেলাম যা ভেবেছিলাম তা নয়!! যার সাথেই দেখা হয় সেই আমাকে উইশ করে, কিছুতেই মাথায় ডুকলো না, সবাই জানলো কিভাবে? ব্যাপারটা জানতে চাইলাম আমার সহকর্মী মেয়ের (থাই) কাছে।

উত্তর শুনে তো আমি আকাশ থেকে পড়লাম। ইনষ্টিটিউটের সেক্রেটারী নাকি আমার নামটি নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দিয়েছে আর এখানে এমনি নিয়ম! ব্যাপারটা খারাপ লাগেনি, মনে মনে খুশিও হয়েছি কিন্তু পরে কিছু ট্রাডিশন জেনে খুশি ধরে রাখতে পারিনি!! ট্রাডিশনটা হলো সবাই নাকি জন্মদিনে ইনষ্টিটিউটে একটা পার্টি আর সেটা জন্মদিনেই দিতে হবে এমন না, পরে দিলেও চলে! বুঝেন কি ধরাটা খেলাম!! ধরা খাই আর যাই খাই বউকে তো নিয়ে যেতেই হবে, তাই সন্ধ্যায় গেলাম সুশি খেতে। অনেকে হয়তো মনে করছেন যে ইউরোপের সুশি খেতে যায়...জাপান হলে মানা যেত! আসলে হইছে কি আমাদের কিছু বন্ধু বান্ধব আছে জাপানে, ওদের কাছে শুনে শুনে আমার গিন্নির এই আবদার.........এই খাবার টেস্ট করতেই হবে। (টেস্ট করবি কর, সেটা এই দিনেই কেন করতে হবে!) যদিও আমি আগেই জানতাম যে উনি সেটা পছন্দ করবেন না! কাঁচা মাছ কিভাবে পছন্দ করবে, যে কিনা সিদ্ধ করা টুনা ফিস যা ক্যানের ভিতর থাকে সেটাই আবার ভেজে খায়!! আবার নাও করা যাবে না, কারন আজকের বিলটা যে গিন্নি দিবে বলে আগে থেকেই বুক করে রেখেছে। আর এও বলে রেখেছে যে আজ উনার ইচ্ছা অনুযায়ী সব হবে!(সবসময় আমার ইচ্ছায় চলে কিনা!!) যথারীতি যা হবার তাই হলো, শুধু বমি করাটাই বাকি।

আর সাথে কিছুক্ষণ বন্ধু-বান্ধবদের গোষ্ঠি উদ্ধার হলো। যদিও উনারা সাবধান করছিলেন যে প্রথম প্রথম ভালো নাও লাগতে পারে!! এখানে কিঞ্চিত ধরা খাব এটাই আগেই জানতাম আর শেষে আবারো আমার বাহাদুরি দেখাবো বলে মনে মনে একটা প্রিপারেশন ছিল। এর পর আমার অনেক গুলো বিকল্প প্রস্তাব থেকে শেষ পর্যন্ত ইতালীয়ান এক পিজ্জা রেস্টুরেন্ট থেকে ক্ষিধাটা মিটানো হলো। বাসায় ফিরেই ল্যাপিটা অন করে সরাসরি সামুর পাতায়...সামুর উড়ন্ত বেলুন আবার সেটা মনে করিয়ে দিল- “আজ জন্ম দিন”। তবে গল্পটা এখানেই শেষ হলো না!! বাসায় ফিরে কিছু না বলেই আমার লক্ষীটি রান্না করা শুরু করে দিল।

আমাকে নিষেধ করা হলো যেন ওদিকে ভুলেও পা না বাড়াই। সময় মতো উনি আমাকে বুলাবেন। (এখন বুঝলাম কেন উনি বাইরে থেকে তাড়াতাড়ি বাসায় চলে এলেন!!) তারপরও এই লেখাটা লিখতে লিখতে একবার গিয়ে দেখে আসলাম ... ফ্রাইড রাইচের আয়োজন চলছে। বাইরে থেকে খেয়ে এসে এখন কি খাওয়া সম্ভব!! কি আর করা ভালবেসে এত কষ্ট করে করছে আমার জন্য.........তাই আবারো প্রস্তুতি নিচ্ছি!! এর কষ্টের পরেও আমি যখন তৃপ্তি নিয়ে খাব তখন তার মনের ভেতর যে খুশির আলোড়নটা বয়ে যাবে সেটা দেখার অপেক্ষায় লেখাটা এখানেই শেষ করলাম।  ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.