আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যাযাবর, সময়

মানুষ তার আশার সমান বড়... সকালটা খুব মন খারাপ করে দিলো। বাস স্টপেজের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে প্রতিদিন একটি দৃশ্য দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে চোখ। রাস্তার পাশে এক পাগল তার ছোট সংসার নিয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। ময়লা কাঁথা, ছেঁড়া বালিশে শুয়ে কি এক কঠিন চিন্তায় মশগুল হয়ে বিড়ি ফুঁকছে। তার পায়ের সাথে বাঁধা ছোট্ট বিড়াল ছানা, আর বয়সী বিড়ালটা বুড়ো পাগলের মতোই ধ্যান করে শুয়ে আছে... আজ কয়দিন হলো পাগলটাকে দেখছিনা।

তার ছোট্ট সংসারে চোখ রেখে ভেতর থেকে অচেনা মায়ার টান অনুভব করতে পারছিনা... মনটা হু হু করে উঠলো পাগলটার জন্য, কিংবা তার ছোট্ট সংসারটার জন্য, অযথাই... অনেকদিন আগে, এরকম অনুভবের একটা টান জন্মেছিলো ভেতরে... একবার চট্টগ্রাম যাবার পথে কুমিল্লা পেরিয়ে বাসটা যখন অচেনা লোকালয় ধরে ছুটে চলছিলো তখন খালের পাশে একটা গাছের নিচে ভবঘুরে এক মানুষকে দেখেছিলাম। সাথে তার ছোট্ট সংসার। সেদিন বর্ষার বৃষ্টি ছিলো। মানুষটা খুব জড়োসড়ো হয়ে গাছতলায় বসে বিড়ি ফুঁকছিলো... তারপর বেশ কয়েকবার চট্টগ্রামে গিয়েছি, ঐ অচেনা জায়গায় প্রতিবার পাগলটাকে দেখেছি... অবাক করার মতো ব্যাপার, দিন, মাস, বছর ধরে ভবঘুরে পাগলটা একটা ছোট্ট একা সংসারের আশায় গাছতলায় বসতি গেড়েছে! তারপর, একদিন যখন সেই বসতির দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকাতে গেলাম তখন মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। পাগলটা নেই।

নেই তার সেই ছোট্ট সংসার। পাগলের সংসারের স্বাদ হয়তো ফুরিয়ে গেছে। হয়তো, পাগল নিজেই ফুরিয়ে গেছে... হয়তো পাগল অন্য কোথাও তার বসতি বদলে ফেলেছে... সাংসারিক টানাপোড়ন হয়তো পাগলদের সংসারে নেই। একা মানুষ। একা বালিশ।

একা কাঁথা। একা ভাবনা। একা স্বপ্ন দেখা। পাগলদের দিকে তাকিয়ে ভিষন ঈর্ষান্বিত হই... ওরা কতো সুখে আছে। কতো শান্তিতে আছে।

বৃষ্টিদিনে ভেজা কাঁথার বাইরে মাথা বের করে কঠিন কোন এক চিন্তায় মগ্ন হতে আমারও ভিষন ইচ্ছা করে...  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।