আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পেয়ারা বেগম , সখিনা আর ভয়াল PPH

যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ তাদের অভিভাবক ,তাদেরকে তিনি বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে । ২৫৭ , সুরা বাক্বারা । এই যে শহুরে মানব , কয়েকদিন আগেই খুব ঘটা করে পান্তা ইলিশ খেয়ে বাংগালিয়ানা নবায়ন করেছেন , এখন একটা প্রশ্ন করি তাহলে । অরিজিনাল বাঙ্গালী মানে ওই কিষাণ কিষাণীরা এখন খুব ব্যস্ত ,বলতে পারবেন কি নিয়ে ব্যস্ত তারা ? উমম , আমাকেই কি বলে দিতে হবে ? আচ্ছা বলেই দিই , তারা এখন বরো ধান কাটা নিয়ে দারুণ ব্যস্ত । ধানের সাথে হাসপাতালের একটা যোগ আছে ।

কিছু এলাকার কৃষকরা ধান তোলা হয়ে গেলে অবসর পায় । তাতে করে কি , মারামারি করে । হিংস্রতাই ওদের বিনোদন । হারে-রেরেরে বলে বলে এই গ্রাম ওই গ্রামের সাথে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে । কঠিন মারামারি ।

হাসপাতাল ভরে যায় দুই গ্রামের ইনজুরির রোগী দিয়ে । ডাক্তার রা এই গ্রামের লোকদের ফাটা মাথা সেলাই দিতে থাকে আবার ওই গ্রামের লোকদের ও ভাঙ্গা হাত পায়ে প্লাস্টার করতে থাকে । টগবগ করে ফুটতে থাকা রক্তের এই গ্রামের অশিক্ষিত লোকগুলোর সাথে কাজ করা এক ভয়ংকর ব্যাপার । এই একগুঁয়ে ,শুকনা পটকা লোকগুলোর ডাক্তার হলে সকাল বেলায় দোয়া দরুদ পড়ে বের হতে হয় । কারণ অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আসার পর মারা গেলে এরা ডাক্তারের অবহেলা বলে ঝাঁপিয়ে পড়ে ।

এতো গেল , ধান তোলার পর অবসরে ওরা কি করে । ঠিক ধান তোলার সময় গ্রামের কৃষক ফ্যামিলি থাকে মহা ব্যস্ত । ধান মাড়াই ,বাছাই , ধান শুকানো , ধান সিদ্ধ করা , চাল করে নিয়ে আসা , খড়ের গাদা দেয়া এসব নিয়ে এত ব্যস্ত থাকে যে কেউ মরে গেলেও ডাক্তারের কাছে আনতে চায়না । এমন মৌসুমে স্ট্রেচারে শুয়ে শুয়ে যখন অবস ইমার্জেন্সীতে প্রবেশ করেছে , তখন ধরেই নিতে হবে রোগীর ভয়াবহ কিছু হয়েছে । গুরুতর অসুস্থ রোগীর আত্মীয় স্বজন যদি বুঝদার হয় , তাদেরকে সাথে নিয়ে হিমালয়ের সমান বিপদও পাড়ি দেয়া যায় ।

আর যদি না হয় , তাহলে যে পরিস্থিতি হয় , তা দেখে বলতে ইচ্ছে করে মাইরালা আম্রে মাইরালা টাইপের অর্থহীন কথা বার্তা । মাগরিবের পর পর কোলাহল ময় হয়ে উঠল হাসপাতাল । রোগীর সাথে দুনিয়ার লোকজন । রোগীর নাম জানার আগেই আমি জানতে পারলাম , এখানে এত লোকের মধ্যে একজনের নাম সখিনা , আরেকজনের নাম বাবুল্যার বাপ । একটু দূর থেকে দেখা গেল রুগী বলছে , ও সখিনা ,আমারে পানি দে ।

সখিনা , তরে কই না আমারে পানি দিতি । ও বাবুল্যার বাপ , আলমারির মধ্যে মোয়া আছে । মোয়া আর পানি দেন । রোগী ক্রমাগত এই কথা বলে চলেছে । এত লোক ভিড় করে থাকলে রোগী দেখব কিভাবে ? রোগীর কাছ পর্যন্ত যেতে তো হবে ।

সখিনা কিছুতেই রোগীর কাছ কাছ ছাড়া হতে চাচ্ছেনা । তারা বুঝে গেছে রোগীর এখন শেষ অবস্থা । সে পানি ও পানি পানি করছে । মোটামুটি কারবালার মত পরিস্থিতি । হাসপাতালে পানির অভাব নাই ।

কিন্তু সে রোগীকে গরম পানি দিতে চাচ্ছে । এক্কানা গরম পানির ব্যবস্থা করি দেন না । ইগো এক্কানা গরম পানির ব্যবস্থা করেন । বাবুল্যার বাপ ও ভিড় বাড়িয়ে রেখেছে । সেও রোগী মরার সময় পাশে থাকতে চায় ।

কোন ভাবেই রোগীর লোকজনকে সরানো যাচ্ছে না । ডাক্তারের কাছে তারা এসেছে বটে তার আসরে গিয়ে ডাক্তার কে রোগী দেখার সুযোগ করে দিতে তারা মোটেই আগ্রহী নয় । এই রোগীর নাম পেয়ারা বেগম । বয়স ৩০ । রোগীর ফজরের সময় ডেলিভারি হয়েছে ।

এটা ছিল তার পাঁচ নম্বর বাচ্চা । তার পর এই যায় যায় অবস্থা । রোগীর গায়ের বর্ণ কাগজের মত সাদা । পেপার হোয়াইট । অত্যন্ত দ্রুত গতির পালস হালকা ভাবে বুঝা যাচ্ছে ।

ব্লাড প্রেশার এত ফল করেছে যে রেকর্ড করা যাচ্ছেনা । পুরো শরীর ঠাণ্ডা শীতল একটু ঘর্মাক্ত । ১৩ -১৪ ঘণ্টা আগে ডেলিভারি হয়েছে তাহলে নিশ্চিত ভাবে তার রক্তক্ষরণ হচ্ছে , বা যতটুকুই হয়েছে রোগীর শরীর তা নিতে পারছেনা । রোগী শকে আছে । আর ভাবা লাগেনা , এই রোগী ডেলিভারির পরের এক জীবন সংহারক সমস্যায় পড়েছে এটা হল P.P. H ( post partum haemorrhage ) . বাংলাদেশের মায়েরা সন্তান জন্মদিতে গিয়ে এই সমস্যাতে ই বেশীর ভাগ মারা যায় ।

মাতৃমৃত্যুর বিশাল অংশ দখল করে আছে প্রসব পরবর্তী রক্ত ক্ষরণ । অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ অনেক কারণেই হতে পারে । যেমন ফুল না পড়া , বা ফুলের অংশ জরায়ুতে থেকে যাওয়া , অথবা জরায়ু মুখ ছিঁড়ে যাওয়া । সবচেয়ে কমন সমস্যা যেটা হয় , সেটা হল ইউটেরাইন এটোনিসিটি । ক্লিনিক্যাল একজামিনেশন করে যেটা বুঝা গেল , এই জরায়ু ডেলিভারির পরে ভাল মত কন্ট্রাক্ট করেনি ।

ঢিলেঢালা হয়ে ছিল । আর সেখান ঠেকে প্রচুর পরিমাণে রক্ত ক্ষরণ হয়ে জরায়ুতে জমা হয়ে যাচ্ছে । ফুলের কিছুটা অংশ থেকে যেতে পারে জরায়ুতে । যেটা তখন জরায়ুকে পুরপুরি ভাবে কন্ট্রাক্ট করতে দেয়নি । আরও রক্ত ক্ষরণ হয়েছে ।

ভিতরে রক্ত জমে জমে ইউটেরাস এখন পাথরের মত শক্ত হয়ে আছে । এত রক্ত ক্ষরণ পেয়ারা বেগম নিতে পারেনি । তার পালস , ব্লাডপ্রেসার চেঞ্জ হয়ে সে শকে চলে গেছে । খুব খারাপ রোগী , সবাই মিলে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয় , এ রোগীকে আজরাইলের কাছ থেকে ফিরিয়ে আনতে । তাড়াতাড়ি লার্জ বোর ক্যানুলা ২ টি চালু করতে হবে , দুই লিটার আইভি ফ্লুইড চালু করতে হবে ।

অক্সিজেন চালু করতে হবে । ক্যাথেটার করতে হবে । একই গ্রুপের ব্লাড চালু করতে হবে । সেইসাথে তার রক্তক্ষরণের কারণ দূর করবেন । ।

পেয়ারা বেগমের শরীরে রক্তশুন্যতা সামাল দেয়ার কম্পেন্সেটরি মেকানিজম গুলো শুরু হয়ে গেছে । তার ই ফলশ্রুতিতে শরীরের পেরিফেরাল রক্তনালীগুলো এমন সংকুচিত হয়েছে যে শিরা গুলো দেখা যাচ্ছে না । তাড়াতাড়ি আই ভি চ্যানেল ওপেন করে ভলিউম রিপ্লেস করে ভাসকুলার বেড কে ঠিক রাখাই সবচেয়ে জরুরী । কিন্তু চ্যানেল করার জন্য ভেইন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা । তখন আপনার মনে হবে দিয়ে চামড়া কেটে ভেইন খুঁজে বের করতে জানাটা কতটা জরুরী ।

সব ভেইন ডুবে গেলেও গলার কাছে জুগুলার ভেইন তা ডুববেনা । গলার মধ্যে সুঁই ঢুকিয়ে সেন্ট্রাল ভেনাস লাইন করতে পারা নেক সময় জীবন রক্ষা কারি । অতি কষ্টে একটা চ্যানেল করা গেল । রোগী বলল , বাবুল্ল্যার বাপ মোয়া খাব । সমস্যা কি , এত কিছু থাকতে রোগী মোয়া খেতে চাইছে কেন ।

এরকম শকে থাকা রোগী সাধারণত নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকে । তাদের কথা বলার শক্তিও থাকেনা । শরীর সব কাজ চালানোর মত প্রয়োজনীয় রক্ত নাই । ভাইটাল অর্গানে ব্রেইন , কিডনিতে রক্ত সরবরাহ করছে হার্ট । সেটা পর্যাপ্ত হচ্ছে না ।

ব্রেইনে রক্ত প্রবাহ কিছুটা কম বলেই রোগী মেন্টাল কনফিউশনে আছে । সুতরাং সে যেঁ এখনো কথা বলছে ব্যাপার তা ভাল কিছু না । এই বিপদে সে মোয়া খাব , মোয়া খাব বলে প্রলাপ বকছে । আমাকে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা অতীব জরুরী । যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একই গ্রুপের রক্ত দিতে হবে ।

কমপক্ষে ২ ব্যাগ এখুনি চাই । কয়েক সিসি রক্ত নেয়ার সময় সখিনা আগলে ধরল , আমাগো রুগীর রক্ত কিয়ের লাই নেন । হাসপাতাল সম্পর্কে মানুষের ধারণা হল এখানে রোগীর রক্ত বিক্রি করে দেয়া হয় । গ্রুপ জানা হয়ে গেলে বুঝদার রোগী হলে নিমিষেই রক্ত জোগাড় হয়ে যায় । অবশ্য হাসপাতালে সবসময় রেগুলার ডোনারদের ফোন নম্বর থাকে ।

কিন্তু আজ কপাল খারাপ । রক্ত দেয়ার মত কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না । বি পজিটিভ । কমন রক্ত । কিন্তু এই কমন গ্রুপেরও আকাল পড়ে গেল ।

সখিনা ঘোষণা দিল , তারা কেউ রক্ত দিবেনা । না আমরা রক্ত দিমু না । সে গেলে মারা যাক । একজনের জন্য আমরা সবাই মরতে পারবনা । আমরা গরীব , আমাদের কারো গায়েই রক্ত নাই ।

আপনারা রক্ত কিনেন । আপনারাই রক্ত দিয়ে দেন আমরা টাকা দিয়ে দিমু । >> আগে তো তোমরা এত জন আছ , তোমরা গ্রুপ পরীক্ষা কর । তোমরা ব্লাড দাও । এরাও রক্ত দিবে না ।

ডোনার দের ও পাওয়া যাচ্ছে না । আহারে , বেশ হতাশাজনক পরিস্থিতি । ডাঃ পারভীন , আপনি অনেকটা সময় সেইফ ব্লাড ডোনেশনের পথিকৃৎ ভলান্টেরী অর্গানাইজেশন সন্ধানী করেছেন , অনেক মানুষকে রক্তদানে মোটিভেট করে অনেক ব্যাগ রক্ত কালেক সন করেছেন । অনেক রোগী বেঁচে গেছে তাতে । আজ এই অশিক্ষিত এই কয়েকটি মানুষের কাছে আপনার মোটিভেশনের যাবতীয় সূত্র ব্যর্থ হয়ে গেছে ।

আপনি রক্তের অভাবে রোগীটাকে মরতে দেখবেন । হুম , ব্যাপারটা যথেষ্ট হতাশার আর বেদনার । তার হিমোগ্লোবিন ৩ । হিমোগ্লোবিন ৩ নিয়ে রোগী কতক্ষণ বেঁচে থাকবে । কিছুপরেই রক্তের অভাবে রোগী ইরিভার্সিবল শকে চলে যাবে ।

রক্তের অভাবে শরীরের সব অর্গান কাজ করা বন্ধ করে দিবে । কোন চিকিৎসাই তখন কাজে আসবেনা । সখিনা হল পেয়ারার বোন , তার ভাই ও আছে উপস্থিত । ভাইবোনের সাথে গ্রুপ অবশ্যই মিলত । আর বি পজিটিভ তো খুবই কমন একটা ব্লাড গ্রুপ ।

রোগীর লোকজন চোখের সামনে রুগীর প্রতি মায়া তুলে নিচ্ছে । তারা তার মরে যাওয়াটা মেনে নিয়েছে । এই দীর্ঘ জীবনে ভালবাসার পরাজয় অনেকবার দেখা হয়েছে । সত্যি কথা যেটা , এসব দেখা খুব ক্লান্তিকর । রোগী এখনো প্রাণের অস্তিত্ব ঘোষণা করল ওরে বাবুল্যার বাপ , পানি দেন ।

রোগীর শেষ দশা । মোয়া আর পানি খাওয়ার হাহাকার নিয়ে মরে যেতে দেয়া যায় না । দাও সখিনা , পানি দাও । সখিনা আবার ও গরম পানি , ঠাণ্ডা পানির ক্যাচালটা লাগিয়ে দিল । সদ্য ডেলিভারি হওয়া রোগীকে নাকি গরম পানি খেতে দিতে হয় ।

গরম পানি ম্যানেজ হয়েছে । আমাদের তো বিভিন্ন ডোনার কে ফোন দেয়া হয়ে গেছে । কিন্তু তারা আসার আগেই ইমার্গেন্সি ভাবে রক্ত চালু করতে হবে । তোমাদের কাছ থেকে রক্ত উদ্ধারের শেষ চেষ্টা কাজে লাগাতে হবে । সুশীল ভদ্দরনোক রক্তচোষা ট্যাগ যেহেতু দিয়েই দিয়েছে , দেখি এই নামের বরকতে কিছু করা যায় কিনা ।

না , সেটা লিখব না । কারণ সেটা কি উপায় জানলে আপনার ভাল লাগবেনা । কিন্তু অমানুষীয় পদ্ধতি ও মাঝে মাঝে কাজ দেয় । আরও কিছুক্ষণ পরে ড্রপ বাই ড্রপ রক্ত পেয়ারার হৃদপিণ্ডে পৌঁছে যেতে লাগল । কে রক্ত দিল ? হিহিহি , সখিনা ।

পড়বি তো পড় মালীর ঘাড়েই । এত মানুষের মধ্যে সখিনার রক্তই একমাত্র গ্রুপের সাথে মিলল । বেচারা সখিনা রক্ত দেয়ার পর ভয়ে মাথা ঘুরে পড়ে গেল । কিন্তু সখিনার রক্তই আবার প্রাণের জোয়ার আনল । আমরা ইঊটেরাস থেকে কেজি দেড়েক ক্লট ( জমাট বেঁধে যাওয়া রক্ত) রিমোভ করলাম ।

জরায়ু কন্ট্রাকশনের জন্য ঔষধ পত্র এমন ভাবে এডজাস্ট করা হল , যেন একটু ও বাড়তি রক্ত বেরিয়ে না যায় । আর ব্লাড পাওয়া গেল । নতুন করে ব্লাড যাওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ হল । রোগী কি যাত্রা বেঁচে গেল . PPH , খুব বিপদজনক সমস্যা । অনেক সময় জরায়ু পর্যন্ত ফেলে দিতে হয় ।

শক ইরিভার্সিবল হয়ে গেলে কোন ট্রিটমেন্ট কাজ করে না । মাঝরাত পর্যন্ত এইসব ঝামেলা পোহানোর পর আবার সকাল বেলা সিস্টারের ফোন । পেয়ারা বেগম ব্যথার কথা বলতেছে । >আচ্ছা , শুধু ব্যথাই বলছে । আর কিছু বলছে নাতো? আচ্ছা শুন ,পেয়ারা বেগম বাবুল্যার বাপের কাছে মোয়া খেতে চাচ্ছে নাতো ? না ।

>>বাবুল্যার বাপ সারারাত রোগীর হাত ধরে বসে ছিল । তারে সরানোই গেলনা । সকালে দেখি সখিনা রোগীর পায়ের কাছে বসে আছে । আমি জানিনা কখন স্নেহের হাতটা সখিনার মাথায় চলে গেল । পরিস্থিতির চাপে পড়ে হোক না কেন সখিনার দেয়া রক্তেই পেয়ারার জীবন , >> তোমার দেয়া রক্তে তোমার বোনের জীবন বেঁচেছে ।

বাকি জীবন যদি ভাল হয়ে চল , এই রক্ত দান ই তোমাকে বেহেস্তে নিয়ে যেতে পারে । এই বিষয়ে পবিত্র কুরান শরীফে আছে , যে ব্যক্তি কারো জীবণ বাঁচাল সে যেন সমগ্র মানবজাতির জীবন বাঁচাল । >> আপা ছোট ছোট ৫ টা বাচ্চা , এরমধ্যে ১ টার বয়স ১ দিন । কি হইত আজ এগুলির মা মরে গেলে । এই রক্তই আখেরাতে দাঁড়াইবো ।

বলল আরেক আত্মীয়া সবাই মিলে সখিনার এই সাহসিকতার মূল্যায়ন এত স্নেহের কথায় সখিনার চোখ হতে একফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ে গেল । পেয়ারা বেগমের মোয়া খেতে চাওয়ার কোন কথাই এখন মনে নাই । সে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছে । বাসায় থাকলে মরেই যেত । সময় মত রক্ত না পেলেও মরে যেত ।

২১ ভাগ মা মারা যায় PPH . বাবুল্ল্যার বাপ তার বউ এর পোস্ট খালি হলে কতদিন মনে রাখত পেয়ারা বেগমকে কি জানি কিন্তু অনেকদিন আগে এক মহিলা এরকম সন্তান জন্মদিতে গিয়ে এই ভয়াল PPH এ মারা গিয়েছিলেন । তাঁর স্বামীর প্রিয় জন হারানোর অশ্রু নিয়ে যমুনা আজো বয়ে যায় । সেই সমাধি ঘিরে লাভ বার্ড আজো করুণ গান গায় । প্রিয়তমার সমাধিতে খুব সুন্দর মহল তৈরি করেন । যা পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের একটি নিদর্শন ।

তাজমহল । গাইনী এন্ড অবসের ডাক্তার রা তাজমহল কে প্রেমের না PPH এর প্রতীক বলে । । সমাপ্ত উৎসর্গ - যারা স্বেচ্ছায় রক্ত দান করেন , তারা আসলে জীবন দান করেন । অট - মন ভাল নেই ।

অতটা মানুষ নই যাতে করে খুঁজে পাব অযস্র যুক্তি নিজের দেশের মানুষের রক্তে নিজেরাই হোলি খেলার। বিষন্ন বিষন্ন আর বিষন্ন মন ,মে এর এই বৃষ্টি ভেজা দিন রাতএর মত । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।