আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চলমান বক্তৃতা...

সেদিন টিএসসিতে গেছি ভাপা পিঠা খাইতে, পোলাপান গোলাম আযমের গ্রেফতার উপলক্ষে বাতাসা বিলাইতেছিল। দুইদিন পরে, মতিঝিলের ঐদিকে জামাত-শিবির বাস ভাঙছে, পুলিশরে মাইরা পিস্তল কাইড়া নিছে তাগো প্রাণপ্রিয় গোআর বিচারের দাবীতে। তাই সন্ধ্যায় রাস্তায় গাড়ী অনেক কম। শাহবাগ/আজিজ মার্কেটে অনেকক্ষণ দাঁড়ায়া থেইকা ঠ্যাং ব্যাকা হয়া গেল। তখন কেবলামুখী হাঁটা ধরলাম।

বাটার মোড়ে এক বড়ভাই পিছন থেকে ডাক দিলেন। উনি ছাত্রমৈত্রীর বড় নেতা ছিলেন। কইলাম, গাড়ী পাইবেন না, আমার লগে হাঁটা ধরেন। এই চান্সে স্বাস্থ্য ঠিক করেন। জামাত, ভাঙচুর, বাম রাজনীতি, পুঁজিবাদী শোষণ, উন্নয়ন ইত্যাদি নিয়া উনি বক্তৃতা শুরু করলেন।

মাঝে মধ্যে দুই একখান প্রশ্ন কইরা উৎসাহ দিলাম। উনি সবেমাত্র চীন থেইকা ঘুইরা আইছেন। কইলাম ঐটা কি কম্যুনিস্ট রাস্ট্র? উনি কইলেন, তুমি খুব জটিল প্রশ্ন করছ, এককথায় এর উত্তর দেওয়া অসম্ভব। এর মধ্যে আমি দুনিয়া ও আখেরাতের কথা ভাবতে ভাবতে পিছনে পইড়া গেলাম। উনি খেয়াল করেন নাই যে শ্রোতার সাথে তার প্রলেতারিয়েত-গ্লাস্তনস্ত-পেরেস্ত্রইকা-মাওসেতুং-চার কুচক্রি লেকচারের দূরত্ব বাইরা গেছে।

উনি বক্তৃতা চালায়া যাইতে যাইতে এলিফ্যান্ট রোড দিয়া হাঁইটা যাইতেছিলেন। লোকজন অবাক হয়া তারে দেখতেছিল। একটু পরে আমি আধ্যাত্বিক চিন্তা বাদ দিয়া আইসা তার নাগাল ধরলাম। জিগাতলা আইসা কইলাম এই রিক্সা আদাবর যাইবা? কয় ১০০ ট্যাকা। কিন্তু শাহবাগ থেইকা ৮০ টেকা চাইছিল।

চিন্তা কইরা দেখলাম, এর মানে হইল রিক্সা ভাড়া দূরত্বের ব্যস্তানুপাতিক। বড়ভাইরে কইলাম চলেন হাইটাই যাই, গরীব রিক্সাওয়ালা গরীবই থাক। এদিকে আমার পাশ থেইকা এক মাইয়া ঐ গরীব রিক্সাওয়ালারেই কয়- এই, আদাবর যাইবা? হের বয়ফ্রেন্ড আশ্চর্য্য হইয়া তারে জিগায়, আদাবর যাইবা ক্যান? মাইয়াডা লজ্জ্বা পা্যা কয়, উনি কইলো তো, তাই আমিও কইয়া ফালাইছি। তারপরে হোয়াই দিস দিনমজুর শ্রমিক শ্রেণী আমাগো মত সুবিধাভোগী সুশীল সমাজের মাসমজুরগো শোষণ করতাছে, তাই ভাবতে ভাবতে ধপাস কইরা বাসায় আইসা পড়লাম।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।