আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের স্কুলের প্রয়োজন না কোচিং এর? না সুন্দর একটি শিক্ষা ব্যবস্থার?

অলস ছেলে আমরা সবাই স্কুল কিংবা বিদ্যালয় নামক প্রতিষ্ঠানটির সাথে পরিচিত কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছি এই প্রতিষ্ঠানটির কাজ কি? "পড়ালেখা করে যে, গাড়ি ঘোড়ায় চরে সে" এখন এটা নিতান্তই প্রবাদ মাত্র। অসংখ্য ছেলে মেয়েরা বহুবছর পড়ালেখা করে হতাণায় হাবুডুবু খাচ্ছে। বেকার সমস্যার সাথে আমরা কেউ নিশ্চয় অপরিচিত নই। আমাদের শিক্ষকমন্ডলীরা অনেক সময় নিজের অজান্তেই বেতের স্বাধীণ ব্যবহারের মাধ্যমে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠিত করেন। অতএব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সম্পর্ক অনেকটা রাজা ও প্রজার পর্যায় এসে দাঁড়ায়।

আবার বলছি না যে এর ব্যতিক্রমটি নেই। রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসি সরকারের মত দার্শনিক শিক্ষক যিনি একাত্তুরে তার প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীদের টানে বিদেশ থেকে চলে এসেছিলেন এবং তার মুখের শেষ বাক্যটি ছিল " তোমরা আমার ছেলেদের গুলি করার আগে আমাকে গুলি কর"। স্কুল এখন শিক্ষা ব্যবসায় পরিনত হয়েছে যেখানে সর্বোচ্চ মুনাফার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের কে পন্য হিসাবে ব্যবহার করা হয়। কতজন ছাত্র ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেল অথবা জিপিএ ৫ পেল কখনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একমাত্র মানদন্ড হতে পারেনা। আর আমার মনে হয় আমাদের সন্তানদের ভাল কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বা বিভিন্ন ক্যাডেট কলেজে ভর্তি করতে পারলেই সাফল্য সুনিশ্চিত এই দৃষ্টিভঙ্গির দুর্বলতার কারনে বিভিন্ন কোচিং পোস্টারে ফলাও করে প্রচার করেন তাদের ১২ শিক্ষার্থীর ১০ বিভিন্ন সনামধন্য প্রতিষ্ঠানে চান্স পাবার কথা।

হিসাবটা এমনই দাড়ায় কারন একই সফল শিক্ষার্থীকে যখন একাধিক কোচিং সেন্টার তাদের শিক্ষার্থী বলে দাবি করেন। ব্যাপারটা আমাদের কাছে ওপেন সিক্রেট কারন তাদের তথ্য যাচাইয়ের কোন সুযোগ নেই। আর সেই সুযোগে কোচিং সেন্টার গুলো এখন সাইনবোর্ড পাল্টিয়ে স্কুলের সাইনবোর্ড লাগিয়েছে। শিক্ষার সফলতা কোন বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবার মানদন্ডে বিচার করা যায না । একজন শিক্ষার্খীর সার্বিক বিকাশে প্রাইভেট কোচিং যে কত বড় অন্তরায় তা বলার অপেক্ষা রাখে না ।

আমাদের সন্তানের পড়াশুনার তিক্ততা কেড়ে নিচ্ছে তার শৈশব ও কৈশরের আনন্দ। আজকাল শিক্ষার্থীদের কোন সময় নেই খেলাধুলার, সামাজিক কাজের কিংবা সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কোন কাজের। সকাল থেকে বিকাল স্কুল আর বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত কোচিং, অতএব অন্য কোন কিছু করার সুযোগ কোথায়? কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে কর্মজীবনে আমাদের সন্তানের সফলতার সিংহভাগ নির্ভর করবে তার সামাজিক বিচক্ষনতা, নেতৃত্বের গুনাবলী, ক্রিয়েটিভিটি ও অন্যান্য অপ্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা যার কোনটাই প্রাইভেট কোচিং এ শেখানো হয় না। এই ধরুন, বিতর্ক প্রতিযোগিতার কথা। যদি কোন শিক্ষার্থী হাজার হাজার দর্শকের সামনে টিভিতে ইংরেজীতে বিতর্ক করতে পারে তাহলে কর্মজীবনে তার ঘরকুনো ফার্স্ট বয়ের চাইতে নিঃসন্দেহে বেশি সফল হবে কারণ কর্মজীবনে প্রশ্নের মুখস্ত উত্তর লিখতে হয় না বরং এখানে প্রয়োজন স্মার্টনেস, লিডারশীপ কোয়ালিটির যা আমাদের পাঠ্যক্রমে একেবারেই অনুপস্থিত।

কর্মজীবনের কোন আইডিয়া স্যারের নোটে পাওয়া যায় না। ........ এটা কি আমাদের কখনো ভাবায় যে, প্রায় ১৬ কোটি বাংলাদেশীর অর্জন মাত্র একটি নোবেল অথচ ২ কোটি ব্রিটিশের অর্জন ২২৬ টি নোবেল ২০১১ সাল পর্যন্ত। তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজস্মদের জন্য আমাদের কি করণীয় বলে মনে করেন......................... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.