আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একহালি মুভির শর্টকাট রিভিউ (ডাউনলোড লিংক সহ)[ফাঁকিবাজী পোস্ট নয় মোটেও] পার্ট-১

© এই ব্লগের কোন লেখা আংশিক বা সম্পূর্ণ আকারে লেখকের অনুমতি ব্যতীত অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবে না। নরম্যালি আমি সামুতে সিংগেল মুভির রিভিউ লিখি, সবসময় একটু অন্যটাইপের আনকমন কিন্তু সবার দেখা উচিৎ এরকম মুভি নিয়ে লিখতে চেষ্টা করি, যদিও হালের হলিউড থেকে শুরু করে সবটাইপের মুভিই কমবেশি দেখা হয়, তবে সেগুলো নিয়ে কেন জানি লিখতে খুব একটা ইচ্ছে করে না। মনে হয়, ঐ মুভিগুলোতো সবাই দেখবে, তার চেয়ে বরং কিছু আনকমন মুভি শেয়ার করাটাই ভালো হবে। গত সপ্তাহে বেশ কিছু সিরিয়াস এবং হালকা টাইপ মুভি দেখেছি। পাপরিকা আর দ্যা কিড উইথ এ বাইক নিয়েতো আলাদা পোস্ট দিয়েছিই, ভাবলাম বাকি মুভিগুলো নিয়েও একটা ছোটোখাটো ফাঁকিবাজী পোস্ট দিলে কেমন হয় !!! গত কয়েকদিন ধরে সামুতে লেখার বেশ নেশা ধরেছে, আর যেহেতু মুভি ছাড়া আর তেমন কোনো কিছু নিয়ে লেখবার তেমন একটা বিশেষ ক্ষমতা আমার নাই, সুতরাং কি আর করা !!! এই পোস্টে মোট ৪ টি মুভির কথা বলবো।

এরমধ্যে তিনটিই ২০১১ সালের, আরেকটি ১৯৩৮ সালের, প্রথমে নাহয় ক্ল্যাসিক মুভিটি দিয়েই পোস্ট শুরু করি, ১। The Lady Vanishes (1938): এটি আমার সিনেগুরু আলফ্রেড হিচককের মুভি। জেনার অভিয়াসলি মিস্ট্রি, সাথে রোমান্সের বেশ একটা ফ্লেভার রয়েছে। হিচককের মুভিগুলোই এমন, গোটা সিনেমা জুড়ে রহস্য কিংবা সাসপেন্সতো আছেই, সাথে রোমান্সটাও তিনি এতো সুনিপুনভাবে জুড়ে দেন---কি বলবো!!! মুভির টাইটেলটি দেখলেই কাহিনী পরিষ্কার বুঝা যাবে, এইখানে দেখানো হবে একটি ট্রেন জার্নির কথা যেখানে একজন ইয়ং মেয়ে হঠাৎ আবিষ্কার করবে যে তার সহযাত্রী এক বুড়ি মহিলা হাওয়া হয়ে গেছে, অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না, মজার জিনিস হলো, আশেপাশের কেউই সেই বুড়ির অস্তিত্ব খেয়াল করে নি, সবাই মনে করে সবই ঐ মেয়েটার কল্পনা, কারন ট্রেনে উঠবার আগে ঐ ইয়ং মেয়েটি অ্যাক্সিডেন্টলি মাথায় বেশ আঘাতপ্রাপ্ত হয়। আসলেই কি সবই কল্পনা নাকি এর মধ্যে গভীর কোনো রহস্য রয়েছে জানতে হলে দেখে ফেলুন মুভিটি।

মুভিটির প্রথমার্ধ সিম্পলি দুর্দান্ত। দ্বিতীয়ভাগ আমার কাছে একটু কমজোরি লেগেছে,মুভিটির কিছু জায়গায় অসামজ্ঞস্যতা রয়েছে, আসলে সময়কালটাও বিবেচনা করতে হবে, ১৯৩৮ এ বসে এইরকম গানফাইট দেখানোটা রীতিমতো দুঃসাহসিক। শুধু এইটুকুই বলতে পারি, কারিগরী সুযোগ সুবিধা কিংবা প্রযুক্তিগত অসামর্থ্যতা কোনোকিছুই এখানে বাধা হতে পারে নি, সময়ের তুলনায় একটা অদম্য সাহসী মুভি---যা শুধুমাত্র হিচককই পারে,মুভিটির আইএমডিবি রেটিং ৮.১, আমার পার্সোনাল রেটিং ৭.৫/১০, এই মুভিটির জন্য হিচকক জিতেছিলেন New York Film Critics Circle Awards এর সেরা পরিচালকের পুরষ্কার। ডাউনলোড লিংক: Click This Link ২। Drive (2011): এই মুভিটি যখন থিয়েটারে রিলিজ পায় শুরু থেকেই এইটার গায়ে বেশ ভালো রেটিংয়ের লেভেল লাগানো ছিলো, তাই ঐরকম হাই এক্সপেক্ট্যাশানের দরুন কিনা জানি না,দেখার পর বেশ কিছুটা হতাশ হয়েছি।

তবে এইটার কারন বলতে গেলে আমি বলবো, এই মুভির প্লট খুবই দূর্বল আর বেশ প্রেডিক্ট্যাবল ছিলো। মুভির শুরুটা ছিলো আউটস্ট্যান্ডিং লেভেলের, খুবই ইনটেনসড আর এনগেজিং,বিশেষ করে ফার্স্ট ১০ মিনিটের কথা আলাদা করে বলতেই হয়। এবারে প্লটটা হালকা বলে নেই, এইখানে দেখা যাবে একজন মুভির স্ট্যান্ট পারফর্মারকে যে খুবই ভালো গাড়ি ড্রাইভ করতে পারে, মাঝেমাঝে সে কিছু স্মাগলার কিংবা অপরাধীকে গাড়ি চালিয়ে সেই কাজে সাহায্য করে থাকে,কিন্তু হঠাৎ একদিন সব পাল্টে যায়,সেই স্ট্যান্ট পারফর্মারের একটি প্ল্যান ভেস্তে যায়, আর এভাবেই গোটা মুভিটি চরম নাটকীয়তায় রূপ নেয়। মুভিটার পজিটিভ দিক বলতে গেলে একটাই, আর তা হলো সেই স্ট্যান্টম্যানের চরিত্রে রায়ান গসলিংয়ের অনবদ্য পারফরম্যান্স। সিনেমাটা পুরাই ওয়ান ম্যান শো, রায়ান গসলিং একাই টেনে গেছেন মুভিটিকে।

সিনেমাটার গতি বেশ শ্লো, কোন কোন জায়গায় তা মানানসই হলেও কিছু জায়গায় তা অতিরিক্ত লেগেছে,বিশেষ করে রায়ান গসলিং আর ক্যারি মালিগানের মধ্যে জোর করে কেমিস্ট্রী ফুটানোর প্রচেষ্টা বেশ বিরক্তির উদ্রেক করেছে। মুভিটির আইএমডিবি রেটিং ৮.১ এবং এটি টপ ২৫০ তালিকায় ১৮৮ নাম্বারে রয়েছে। মুভিটিতে রায়ান গসলিং অসাধারন অভিনয়ের জন্য গো্ল্ডেন গ্লোবের নমিনেশান পেয়েছেন। তবে সবমিলিয়ে মুভিটি আমার কাছে বেশ ওভাররেটেড লেগেছে। আমার পার্সোনাল রেটিং ৬.৫/১০।

ডাউনলোড লিংক: Click This Link অথবা, Click This Link ৩। 30 Minutes or Less (2011): এই মুভিটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। একটি নিখাদ কমেডি মুভি, বেশ ভালো টাইম পাস। রানিংটাইমও বেশ ছোটো, ১ ঘন্টা ২০ মিনিটের মতো, এইখানে দেখা যাবে, দুইজন ক্রিমিনাল মাইন্ডেড লোক একজন পিজা ডেলিভারী বয়কে কিডন্যাপ করে এবং তার গায়ে বোমা বেঁধে রাখে, শর্ত দেয় ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাকে ১ মিলিয়ন ডলার যোগাড় করতে হবে নাহলে তারা বোমাটি এক্টিভেট করে দিবে। ঐ পিজা ডেলিভারী বয় কি আর করবে, সে সি্দ্ধান্ত নেয় ব্যাংক ডাকাতি করার, আর এভাবেই নানান হাস্যকর ঘটনার মাধ্যমে এগিয়ে যায় সিনেমাটি।

পিজা ডেলিভারী বয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন Jesse Eisenberg, তাকে মনে আছে তো? ঐ যে সোশাল নেটওয়ার্কে মার্ক জুকারবার্গের চরিত্রে অসাধারন অভিনয় করেছিলো যেই ছেলেটা। মুভিটি লাইট কমেডি হিসেবে ফাটাফাটি। যাদের ভারী ভারী সিনেমা দেখে মনটা একটু বিষিয়ে গেছে তাদের জন্য পারফেক্ট একটা সিনেমা। মুভিটির আইএমডিবি রেটিং ৬.৩, আমার পার্সোনাল রেটিং ৭/১০। ডাউনলোড লিংক: Click This Link ৪।

Moneyball (2011): এই মুভিটা আমার দেখা ২০১১ এর অন্যতম সেরা। বেসবল খেলার কিছু সত্যি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই মুভিটা বানানো হয়েছে। এইটাকে স্পোর্টসের পাশাপাশি বায়োগ্রাফিক্যাল মুভিও বলা যায়। আমেরিকার ওকল্যান্ড এ বেসবল টীমের জেনারেল ম্যানেজার বিলি বিনের জীবনের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাকে আবর্তিত করে এই মুভিটির প্লট গড়ে উঠেছে। সেই বিলি বিনের চরিত্রে মাইন্ডব্লোয়িং অভিনয় করেছেন আমার খুব পছন্ডের ব্র্যাড পিট।

মুভির শুরুতে দেখা যায়, ওকল্যান্ড এ দলের অ্যানুয়াল বাজেট খুবই কম,বিশেষ করে বাঘা বাঘা দলের তুলনার নস্যি মাত্র। সেই স্বল্প বাজেটকে পুঁজি করে একজন ইয়ং ইকোনমিকস পড়ুয়া কম্পিউটার অ্যানালিস্টকে সাথে নিয়ে বিলি বিন তার গোটা দলকে ঢেলে সাজান এবং ভয়াবহ যাত্রা শুরু করেও শেষ মুহূর্তে এক সীজনে বেসবল ইতিহাসে টানা ২০ টি জয়ের রেকর্ডের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। মুভিটির রানিংটাইম বেশ লম্বা, প্রায় দুই ঘন্টা ১৫ মিনিটের মতো, তবে মুভিটির জন্য এইরকম লম্বা সময় খুবই দরকারি ছিলো। আমি বেসবল খেলার কোনো কোনো নিয়ম জানি না, আর আমার খুবই অপছন্দের একটা খেলা, কিন্তু বলতে বাধ্য হচ্ছি, সেই খেলাকে কেন্দ্র করে বানানো মুভিটা আমার কাছে অসাধারন মানের লেগেছে। না জানি যারা এই খেলার হার্ডকোর ফ্যান তাদের কাছে কেমন লাগবে? ব্র্যাড পিটের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স,সাথে সেই ইয়ং অ্যানালিস্টের চরিত্রে জোনাহ হিলের দারুন অভিনয়,আর শেষের গানটা---সবমিলিয়ে ক্ষ্যাপা একটা সিনেমা।

মুভিটির আইএমডিবি রেটিং ৭.৯, এইবারের গোল্ডেন গ্লোবে চারটি ক্যাটাগরীতে মুভিটি নমিনেশান পেয়েছে,ব্র্যাড পিট আর জোনাহ হিল তো নমিনেশান লিস্টে আছেনই, এছাড়া সেরা মুভি এবং সেরা চিত্রনাট্যতেও মুভিটি নমিনেশান পেয়েছে। আমার পার্সোনাল রেটিং ৯/১০,এইটা সবার জন্য হাইলি রেকমেন্ড করছি। ডাউনলোড লিংক: Click This Link আজকের মতো পোস্ট এখানেই শেষ। শুভকামনা সবার জন্য। ----------------------------------------------------------- ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।