আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তত্ত্বাবধায়ক দাবি অযৌক্তিক প্রমাণিত ॥ তোফায়েল

বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল দাবি যে অযৌক্তিক তা গাজীপুর সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার মধ্য দিয়ে তা আবারও প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও প্রবীণ জননেতা তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, অযৌক্তিক তত্ত্বাবধায়ক দাবি প্রতিষ্ঠিত করতেই তারা গাজীপুর সিটি নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য মিথ্যাচার ও আষাঢ়ে গল্প বলে যাচ্ছে। অসত্য কথা বলতে তাদের কোন ক্লান্তি নেই। গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির বক্তব্যই প্রমাণ করে তাদের প্রার্থী হেরে যাবে। তবে বিএনপিযত পরিকল্পনাই করুক এ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারবে না।

বিএনপি সরকারের ‘মৃত্যু ঘণ্টা বাজানোর হুমকি দিলেও তা কখনই বাজবে না। সদ্য সমাপ্ত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে বিএনপি যে অভিযোগ করছে তার কোন ভিত্তি নেই। তাদের কথার সঙ্গে বাস্তবতার কোন মিল নেই। বিগত নির্বাচনগুলোতেও তারা একই ধরনের অভিযোগ করেছিল। কিন্তু বিজয়ী হওয়ার পর তাদের সুর পাল্টে গিয়েছিল।

মূলত বিএনপি একটি সুবিধাবাদি দল। শনিবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে তিনি এ সব কথা বলেন। ঢাকায় বসে উত্তাপ না ছড়াতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে প্রায় ৬ হাজারের মত নির্বাচন হয়েছে। যার সবগুলো নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়। আগামী জাতীয় নির্বাচনও গণতান্ত্রিক সরকারের অধীনেই হবে।

বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচনে হয় বাংলাদেশেও সেই নিয়মে নির্বাচন হবে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিএনপি জানে নির্বাচন সুষ্ঠু হলে তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি ম্লান হয়ে যাবে। তাই তারা এ নির্বাচনকে বির্তকিত করতে ষড়যন্ত্র করছে। গাজীপুর নির্বাচন নিয়ে বিএনপি নেতাদের কয়েক দিন ধরে কথাবার্তা শুনে ভেবেছিলাম যে, বিএনপি হয়ত নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের মত গাজীপুর নির্বাচনও বয়কট করবে। সম্প্রতি বিএনপির বক্তব্যই প্রমাণ করে যে তাদের প্রার্থী হেরে যাবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে হেরে গেলে বলা হয় জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে। আর জিতলে বলা হয় কারচুপি হয়েছে। তাহলে আমরা করবটা কি? ‘নির্বাচনে কারচুপি হলে সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজবে মর্মে বিএনপি নেতাদের হুমকির জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, তারা এর আগেও অনেকবার সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজাতে চেয়েছিল। তারা বলেছিল, রোজার পরে, ঈদের পরে, পুজোর পরে সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজবে। এভাবে তারা ৪৮ ঘণ্টার সময়ও বেঁধে দিয়েছিল।

কিন্তু সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজেনি, বাজবেও না। সরকারের ‘মৃত্যু ঘণ্টা বাজানোর হুমকি দিলেও তা কখনই বাজবে না। বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের মেয়াদের এক মিনিট থাকা পর্যন্ত কেউ ক্ষমতা থেকে নামাতে পারবে না। প্রবীণ এই নেতা আরও বলেন, বিএনপি কথায় কথায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানায়। অথচ বিএনপিই বারবার সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করে।

২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পরে তারা বলেছিল, আওয়ামী লীগ সেনাবাহিনীর সহায়তায় ক্ষমতায় এসেছে। আবার সম্প্রতি রানা প্লাজার ধ্বংসস্তুপ থেকে রেশমাকে জীবিত উদ্ধারের ঘটনাকে নাটক বলে তারা সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করেছে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ নিরপেক্ষভাবেই দায়িত্ব পালন করছেন। উনি বিএনপি-আওয়ামী লীগ দুই আমলেই সরকারের উচ্চ পদে আসীন ছিলেন। এই নির্বাচন কমিশন আজিজ মার্কা কমিশন নয়।

‘গাজীপুরে অধিকাংশ পোলিং অফিসার ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মর্মে বিএনপির অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, গণমাধ্যমসহ দেশবাসীই এ অভিযোগের সত্যতা যাচাই করুক। আসলে সেখানে ছাত্রদল এমনকি ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তারাও পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, অসত্য কথা বলতে বলতে বিএনপি ক্লান্ত হয় না। কারণ এটা তাদের জন্মগত অভ্যাস। সত্য আড়াল করতে বিএনপি সিদ্ধহস্ত।

সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ওয়াশিংটন টাইমসে খালেদা জিয়ার নিবন্ধ লেখার পরে তাদের দলের নেতারা বাহ বাহ দিয়েছিল। এখন জিএসপি সুবিধা বাতিল হওয়ার পরে তারা তা অস্বীকার করছে। ‘নির্বাচনে সরকার প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছে’ মর্মে বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ৩৯২টা কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হয়েছে। এক্ষেত্রে বিএনপির মহাসচিবের বক্তব্যের সঙ্গে তাদের দল সমর্থিত প্রার্থীর কথার মিল নেই। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী এমপি, উপপ্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপদফতর সম্পাদক এ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।