আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রকৃত আহলে সুন্নাত কারা?

আসুন আমরা ২টি ভারী বস্তু আল্লাহর কুরান ও রাসুলের(সাঃ) পরিবারকে(আঃ) অনুসরন করি। View this link আহলে বাইতের অনুসারীদের দৃষ্টিতে হাদীসে সাক্বালাইন যে বিষয়টি এই কথার প্রতি দলিল বহন করে যে, আহলে বাইতের অনুসারীরাই নবী (সা.)-এর সঠিক সুন্নাতের আনুগত্য করেন, তা হচ্ছে রাসুল (সা.)-এর সেই হাদীস যেটাকে ‘হাদীস-এ-সাক্বালাইন’ বলা হয়। হাদীসটি হচ্ছে: “আমি তোমাদের মাঝে দুটি মূল্যবান জিনিষ রেখে যাচ্ছি, আল্লাহর কিতাব এবং আমার আহলে বাইতে ইতরাত। তোমরা যদি উহার সাথে সম্পৃক্ত থাক তাহল আমার পরে কখনোই পথভ্রষ্ট হবে না। তাঁদের উপরে প্রাধান্য বিস্তার করার চেষ্টা করবে না অন্যথায় হালাক হয়ে যাবে এবং তাঁদের থেকে দূরে সরে থেক না অন্যথায় বরবাদ হয়ে যাবে।

আর (দেখ) তাঁদেরকে শিক্ষা দানের চেষ্টা করবে না কেননা তাঁরা তোমাদের চেয়ে অধিক জ্ঞানী” [সূত্র: সহীহ তিরমিযি, সহীহ মুসলিম, মুস্তাদরাকে হাকিম, মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, কানযুল উম্মাল, খাসায়েসে নাসায়ী, তাবাক্বাতে ইবনে সা’দ, তিবরানী, সুয়ুতী, ইবনে হাজর, ইবনে আসীর। বিস্তারিত জানার জন্য আল-মোরাজায়াত নামক কিতাবের ৮৩০ পৃষ্ঠা অধ্যয়ন করুন] কিছু কিছু রেওয়ায়েতসমূহে আছে যে, “আমাকে লতীফ ও খবীর খবর দিয়েছেন যে, এরা উভয়েই ততক্ষণ পর্যন্ত পরস্পর বিচ্ছিন্ন হবে না যতক্ষণ না তারা হাউজে কাউসারে আমার সাথে মিলিত হচ্ছে”। হাদীসে সাক্বালাইনকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতগণ নিজেদের ২০টিরও অধিক সহীহ্ হাদীস গ্রন্থে এবং মুসনাদগুলিতে বর্ণনা করেছেন, আর আহলে বাইতের অনুসারীগণ তাঁদের সকল হাদীস গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। এ কথাটি স্পষ্ট যে, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতগণ গোমরাহ হয়ে গেছেন। কেননা তারা উভয়ের সাথে (তথা কোরআন ও ইতরাত) একত্রে সম্পর্ক রাখেন নি বিধায় হালাক হয়ে গেছেন।

কারণ তারা মহান আহলে বাইতগণের উপর আবু হানিফা, মালিক, শাফেয়ী ও হাম্বলকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের তাকলীদ করেন এবং ‘পবিত্র ইতরাত’-কে ত্যাগ করেছেন। তাদের মধ্যেকার কিছু কিছু লোক বলে থাকেন যে, “আমরা তো কোরআনের সাথে সম্পর্ক রেখেছি”, তাহলে এ কথার প্রতিও তাদের কোন দলিল নাই। কেননা কোরআনের মধ্যে সকল বিষয় কুল্লি (সম্পূর্ণ বা সামগ্রিক) ভাবে বর্ণিত হয়েছে। এতে আহ্কামের বিস্তারিত আলোচনা নাই, এতে অনেক কিছু অনুমান ভিত্তিক আছে। উহার জন্য মুফাসসির ও বয়ানকারী থাকাটা আবশ্যিক এবং ঠিক একই অবস্থা হচ্ছে রাসুল (সা.)-এর সুন্নাতের ক্ষেত্রও।

উহার জন্যও বিশ্বস্ত রাবী, মুফাসসির ও আলিমগণের আবশ্যকতা আছে। উক্ত সমস্যার কোন সমাধান নেই। কিন্তু একটি মাত্র উপায় আছে যেন পবিত্র ইমামগণের দিকে রুজু করা হয়, যাঁদের সম্পর্কে রাসুল (সা.) ওসিয়াত করেছেন। আবার হাদীসে সাক্বালাইনের সাথে যখন ঐসমস্ত হাদীসগুলি যুক্ত করা হয় যেগুলি সেই অর্থই বহন করে যে, অর্থটি হাদীসে সাক্বালাইন বহন করে। উদাহরণ স্বরূপ: “আলী কোরআনের সাথে আর কোরআন হচ্ছে আলীর সাথে।

এরা উভয়ে কখনোই পৃথক হবে না যতক্ষণ না হাউজে কাউসারে আমার নিকট পৌছে যাচ্ছে”। [সূত্র: মুস্তাদরাকে হাকিম, খন্ড-৩, পৃ-১২৪] “আলী হকের সাথে আর হক হচ্ছে আলীর সাথে আর এরা কখনোই পৃথক হবে না যতক্ষণ না কিয়ামত দিবসে হাউজে কাউসারের উপর আমার নিকট পৌছে যাচ্ছে”। [সূত্র: কানযুল উম্মাল, খন্ড-৫, পৃ-৩০; তারিখে ইবনে আসাকির, খন্ড-৩, পৃ-১১৯; তারিখে বাগদাদ, খন্ড-১৪, পৃ-১২১ এবং তারিখুল খোলাফা, -ইবনে কোতায়বা, খন্ড-১, পৃ-৭৩] তখন এসকল বিষয়াবলী দ্বারা আমার ও সকল সত্য সন্ধানীদের এই কথা বুঝে আসে যে, যে ব্যক্তি হযরত আলীকে ত্যাগ করল সে কোরআনে করীমের সঠিক তাফসীরকে ত্যাগ করল। আর যে তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল সে হক থেকেই মুখ ফিরিয়ে বাতিলকে গ্রহণ করে নিল। কেননা হকের পরে কেবল বাতিলই অবশিষ্ট থাকে।

আমাদের নিকট এ কথাটিও প্রমানিত যে, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত কোরআন ও নবী (সা.)-এর সুন্নাত উভয়কে ত্যাগ করেছেন, কেননা তারা হক তথা হযরত আলী ইবনে আবি তালিবকে ত্যাগ করেছেন। সুতরাং নবী (সা.)-এর হাদীস আছে যে, “আমার উম্মত ৭৩টি ফেরকাতে বিভক্ত হয়ে যাবে এবং তাদের মধ্যেকার কেবল একটি ফেরকাই হবে নাজি (নাজাত প্রাপ্ত)”। আর এই ফেরকাটি হল সেই ফেরকা যারা হযরত আলীর আনুগত্য করে হক ও হিদায়েতের পথে চলে। হযরত আলীর শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করে এবং তাঁর সন্ধি অনুসারে সন্ধি করে। জ্ঞানের ক্ষেত্রে তাঁর জ্ঞানেরই আনুগত্য করে এবং তাঁরই সন্তানদের মধ্যেকার পবিত্র ইমামগণের উপর ঈমান রাখে।

“সকল সৃষ্টির মধ্যে এরাই হল শ্রেষ্ঠ। তাঁদের পুরস্কারস্বরূপ তাঁদের প্রতিপালকের নিকট চিরকাল থাকার জন্য বেহেশ্ত আছে, যার নিচ দিয়ে ঝরনা প্রবাহিত এবং তাঁরা চিরকাল সেখানেই থাকবে। আল্লাহ তাঁদের প্রতি রাজি এবং তাঁরা তাঁর প্রতি রাজি ও খুশি”। আহলে সুন্নাতের দৃষ্টিতে হাদীসে সাক্বালাইন আমি পূর্বের অধ্যায়ে এই হাদীসটি বয়ান করেছি যেটাকে ২০-এরও অধিক বিখ্যাত/বিসস্ত উৎস থেকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত হযরত আলী হতে বর্ণনা করেছেন এবং এটি সহীহ্ শুদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে তারা স্বীকারও করেছেন। তারা যখন উক্ত হাদীসকে সহীহ্ শুদ্ধ বলে স্বীকার করে নিয়েছেন তখন পরিপক্ক ভাবে নিজেদের গোমরাহ হওয়ারও ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন।

কেননা তারা আহলে বাইতের ইমামগণের সাথে কোন সম্পর্কই রাখেন নি আর নিজেদের অনর্থক মাযহাবসমূহের শেকল নিজেদের গর্দানে পরে নিয়েছেন, যার পক্ষ্যে না আল্লাহ কোন দলিল নাযিল করেছেন আর না নবী (সা.)-এর হাদীসে উহার কোন অস্তিত্ব আছে। আহলে সুন্নাতের অদ্যকার ওলামাদের প্রতি তাজ্জব হয়। বর্তমান যুগেও যেখানে জ্ঞানগর্ভ বিতর্ক ও অনুসন্ধানের অসংখ্য ব্যবস্থা মওজুদ আছে এবং বনী উমাইয়ারাও বহু আগে ধ্বংস হয়েগেছে, কিন্তু তারা এখনও তাওবাহ্ করেন না এবং আল্লাহর দিকে রুজু করেন না যাতে আল্লাহ তাদের অবস্থার পরিবর্তন করে। “আর অবশ্যই আমি তার প্রতি ক্ষমাশীল, যে তাওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে অতঃপর সৎ পথে চলতে থাকে”। [সূরা ত্বাহা, আয়াত-৮২] আবার আজকে মানুষ যখন এমন যুগে বসবাস করছে যেখানে সেই খেলাফতটি উপস্থিত নাই যা জোর জবরদস্তীমূলকভাবে মানুষকে বাদশাহ’র আনুগত্য করায়।

এমতাবস্থায় হক তথা সত্যকে গ্রহণ করে নেয়ার ক্ষেত্রে কোন্ জিনিস বাধাগ্রস্থ হচ্ছে? আবার কোন দেশের বাদশাহ দ্বীনি বিষয়াবলীতে ততক্ষণ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করে না যতক্ষণ পর্যন্ত তার গদী সংরক্ষিত থাকে। সে গণতন্ত্র আর উহার অধিকারসমূহ ভাল করেই বুঝে, যেখানে ব্যক্তিগত এবং আকীদাগত বিশ্বাস ও চিন্তা-চেতনার স্বাধীনতা আছে। কিতাবুল্লাহ ওয়া ইতরাতি অথবা কিতাবুল্লাহ ওয়া সুন্নতী? এ বিষয়বস্তুর উপর আমি আমার কিতাব “কুনু মায়াস্ সাদেকীন”-এ আলোচনা করেছি। সংক্ষিপ্তাকারে এখানে এতটুকু আরজ করে দিতে চাই যে, উক্ত দুই হাদীসটি একে অপরের প্রতিপক্ষ নয়। কেননা নবী (সা.)-এর সঠিক সুন্নাত পবিত্র ইতরাতগণের নিকট সংরক্ষিত আছে এবং ঘরের কথা ঘরের লোকই উত্তমরূপে জানেন।

আবার আলী ইবনে আবি তালিব হলেন নবী (সা.)-এর দরজা। তিনিই ইসলামের রাবী হবার অধিক অধিকার রাখেন নাকি আবু হুরায়রা, কা’বুল আহবার ও ওয়াহব বিন মুম্বাহ্? কিন্তু আরো ব্যাখ্যার খাতিরে কিছু কথা লিপিবদ্ধ করা জরুরী। যদিও ইহার পুনরাবৃত্তি হতে থাকবে। কিন্তু বারংবার হওয়াতে লাভই হবে। আবার সম্ভবতঃ কিছু ব্যক্তি “কুনু মায়াস সাদেকীন” গ্রন্থে উক্ত আলোচনাটি পাঠ নাও করে থাকবেন।

সুতরাং তারা এই কিতাবের মাধ্যমে ইহাও জেনে জাবেন যে অন্য কিতাবে এই আলোচনাটি বিস্তারিত মওজুদ আছে। সুধী পাঠক মন্ডলী! সম্ভবতঃ এই আলোচনার মধ্যে এমন মনি-মুক্তা পেয়ে যান যা তাদেরকে সন্তুষ্ট করে দেয় যে “কিতাবাল্লাহ ওয়া ইতরাতী”-ই হচ্ছে আসল হাদীস। যেটাকে খলিফাগণ জেনে শুনে “কিতাবুল্লাহ ওয়া সুন্নাতী” দ্বারা বদলে দিয়েছেন যাতে তারা আহলে বাইতকে মানুষের মন-মানসিকতা থেকে দূর করে দিতে পারেন। এই কথা স্মরণে থাকে যে, “কিতাবুল্লাহ ওয়া সুন্নাতী” হাদীসটি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের দৃষ্টিকোণ থেকেও সঠিক নয়। কেননা তাদের সহীহ্ গ্রন্থাদিতে এমন রেওয়ায়েত মওজুদ আছে যে, নবী (সা.) নিজের হাদীস লিখতে নিষেধ করেছিলেন।

অতএব হাদীস লিখতে নিষেধ করার হাদীসটি যদি সঠিক হয়, তাহলে নবী (সা.)-এর এমন হুকুম দেয়ার অধিকার নাই যে, আমি তোমাদের মাঝে আমার সুন্নাত রেখে যাচ্ছি, যেহেতু উহা লিখিত আকারে ছিল না!? আবার “কিতাবুল্লাহ ওয়া সুন্নাতী” হাদীসটি যদি সঠিক হয় তাহলে উমর বিন খাত্তাবকে রাসুল (সা.)-এর প্রতি আপত্তি করা এবং এই কথা বলার অধিকার ছিল না যে, ‘আমাদের জন্য আল্লাহর কিতাবই যথেষ্ট’? আবার রাসুল (সা.) যদি লিখিত আকারে রেখে গিয়ে থাকেন তাহলে হযরত আবু বকর ও উমর কর্তৃক রাসুল (সা.)-এর সুন্নাতকে পুড়িয়ে ফেলাটা জায়েজ হয়নি! আবার “কিতাবুল্লাহ ওয়া সুন্নাতী” হাদীসটি যখন সঠিক তখন নবী (সা.)-এর ওফাতের পর হযরত আবু বকর এমন খোৎবা কেন দিয়েছিলেন যে: “হে লোকসকল! রাসুলের কোন হাদীস বয়ান করবে না, আর যদি কেউ তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করে তাহলে বলে দিও যে, আমার ও তোমার মাঝে আল্লাহর কিতাব মওজুদ আছে, উহার হালালকে হালাল এবং উহার হারামকে হারাম গণ্য কর!” [সূত্র: তাজকিরাতুল হুফ্ফাজ, যাহবী কর্তৃক রচিত খন্ড-১, পৃ-৩] আবার “কিতাবুল্লাহ ওয়া সুন্নাতী” হাদীসটি যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে হযরত আবু বকর যাকাত প্রদানে অস্বীকারীকে হত্যা করে উহার বিরোধিতা কেন করলেন? কেননা রাসুল (সা.) তো বলেই ছিলেন যে, “যে ব্যক্তি কলেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ পড়ে নিবে তার জান ও মাল আমার কাছ থেকে সংরক্ষিত থাকবে, তার (অবশিষ্ট) হিসাব আল্লাহর উপর ন্যস্ত”? আবার “কিতাবুল্লাহ ওয়া সুন্নাতি” হাদীসটি যখন সঠিক, তখন হযরত আবু বকর এবং তার সঙ্গী সাহাবাগণ কর্তৃক ফাতেমা যাহরাকে অপমান করার অধিকার কোথা থেকে পাওয়া গেল আর তাঁর গৃহে আগুন ও কাঠ নিয়ে জড় হওয়া এবং এই কথা বলে ধমক দেয়ার অধিকার কোথা থেকে পাওযা গেল যে, “আমরা গৃহটিকে গৃহবাসী শুদ্ধ পুড়িয়ে ফেলব”? সৈয়্যেদা ফাতেমা যাহরা সম্পর্কে তারা রাসুল (সা)-এর এই হাদীস কি শ্রবণ করেন নাই যে, “ফাতেমা হল আমার অংশ, যে তাঁকে রাগান্বিত করল সে আমাকে রাগান্বিত করল, আর যে তাঁকে কষ্ট দিল সে আমাকে কষ্ট দিল”? [সূত্র দিতে হবে] আল্লাহর কসম! তারা অবশ্যই রাসুল (সা.)-এর হাদীস শ্রবণ করেছিল এবং তাদের স্মরণও ছিল। তারা কি আল্লাহর এই কথা সম্পর্কে জানতো না যে, “(হে রাসুল) আপনি বলে দিন যে, আমি তোমাদের কাছে আমার নিকট আত্মীয়দের ভালবাসা ব্যতীত কোন পারিশ্রমিক চাই না”। [সূরা শোরা, আয়াত-২৩] উক্ত আয়াতটি সৈয়্যেদা ফাতেমা যাহরা, তাঁর স্বামী এবং তাঁর সন্তানদের শানে নাযিল হয়েছে। এটাই কি আহলে বাইতের ভালবাসা যে তাঁদেরকে পুড়িয়ে মারার হুমকী দেয়া হবে এবং সৈয়্যেদা ফাতেমা যাহরার দেহের উপর দরজা ভেঙে ফেলা হবে যার কারণে তাঁর পেটের সন্তান নষ্ট হয়ে যায় পরবর্তিতে তিনি ধিওে ধিরে??! আবার “কিতাবুল্লাহ ওয়া সুন্নাতি” হাদীসটি যখন সঠিক, তখন মোয়াবিয়া এবং তার বায়াত গ্রহণকারী সাহাবারা হযরত আলীর উপর লা’নত করা আর মিম্বরের উপর থেকে তাঁকে গালি-গালাজ করাকে কেমন করে হালাল গণ্য করল। তারা কি আল্লাহর এই কথা শুনে নি যে, “তাঁর প্রতি ঠিক সেভাবেই দরূদ পাঠাও যেভাবে রাসুল (সা.)-এর প্রতি পাঠাও? তারা কি রাসুল (সা.)-এর এই হাদীসটি শ্রবণ করে নি যে, “যে ব্যক্তি আলীকে গালি-গালাজ করল, সে আমাকে গালিগালাজ করল, আর যে আমাকে গাল-মন্দ করল, সে আল্লাহকে গাল-মন্দ করল”? [সূত্র: মুস্তাদরাকে হাকিম, খন্ড-৩, পৃ-১২১; শায়খায়ন (তথা বুখারী ও মুসলিম)-এর শর্তসাপেক্ষে এই হাদীসটি সহীহ্।

কিন্তু তারা তাদের গ্রন্থে উহা লিপিবদ্ধ করেন নি। সুয়ুতির তারিখুল খোলাফা, পৃ-৭৩; খাসায়েসে নাসায়ী, পৃ-২৪ এবং মানাকিবে খোয়ারেজমী, পৃ-৮২] আবার “কিতাবুল্লাহ ওয়া সুন্নাতি” হাদীসটি যখন সঠিক, তখন অধিকাংশ সাহাবার নিকট এই সুন্নাতটি কেমন করে গোপন থাকল? তারা কেন এটিকে প্রত্যাখ্যান করলেন এবং নিজেদের রায় অনুপাতে কেন ফতোয়া দিতেন? তারপর আবার স্বাধীন পদ্ধতি গ্রহণ করলেন। সুতরাং তারা কিয়াস, ইজতিহাদ ও ইজমা, সিদ্দে বাবুজ জারায়ে, মাসালেহুল মুরসিলাহ্, ইস্তিসহাব, সাওয়াফিল আমর এবং আখ্ফুয যাররীন-এর মত স্বরচিত নিয়ম কানুন আবিস্কার করল। [সূত্র: জামে’ বয়ানুল ইল্ম, খন্ড-২, পৃ-১৭৪] আবার রাসুল (সা.) যখন “আল্লাহর কিতাব এবং নিজের সুন্নাত” রেখে গেছেন যাতে উভয়েই মানুষকে গোমরাহী থেকে রক্ষা করে, তাহলে এমনসব কায়দা-কানুন আবিস্কার করার প্রয়োজন ছিল না, যেগুলিকে আহলে সুন্নাতগণ বেছে নিয়েছেন। এসব কিছুই হচ্ছে বিদআত, আর প্রত্যেক বিদআতই হল গোমরাহী, আর প্রত্যেক গোমরাহীর পরিনাম হল জাহান্নাম, যেমনটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।

এমতাবস্থায় তো বিবেক-বুদ্ধিমান ও জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ নবী (সা.)-এর প্রতি অপবাদ দিবে যে, তিনি সুন্নাত তো রেখে গেলেন কিন্তু সেটি লিখে রাখার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন নি, আর না সেটি লিখে রাখা এবং সংরক্ষণ করার কোন ব্যবস্থা করেছেন, যার কারণে উহা তাহরীফ, মত-বিরোধ এবং জাল হাদীস হওয়া থেকে রক্ষা পেত। এতদসত্বেও লোকজনকে বলেগেছেন যে, “আমি তোমাদের মাঝে দুটি মুল্যবান বস্তু রেখে যাছি, যতক্ষণ তোমরা উহার সাথে সম্পৃক্ত থাকবে আমার পরে কখনোই গোমরাহ হবে না, আর তা হচ্ছে আল্লাহর কিতাব এবং আমার সুন্নাত”। কিন্তু উক্ত বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গকে যখন এই কথা বলা হবে যে, নবী (সা.) মানুষকে নিজের সুন্নাত লিখে রাখতে নিষেধ করেছিলেন, তখন ইহা জানার পর তো তারা নবী (সা.)-কে উপহাস ও ঠাট্টা করবে। কেননা, এমন কাজটি বিবেক-বুদ্ধি সমর্থন করে না। কারণ একদিকে তো মানুষকে নিজের সুন্নাত লিখে রাখতে নিষেধ করেন অন্য দিকে বলেন যে, আমি তোমাদের মাঝে আমার সুন্নাত রেখে যাচ্ছি।

উপরন্তু আল্লাহর কিতাবও আছে যেটিকে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মুসলমানরা লিখে যাচ্ছে। কোরআনের মধ্যে নাসেখ ও মানসুখ, খাস ও আম (বিশষ ও সাধারণ) এবং মোহকাম ও মোতাশাবেহ্ আছে। ইহা হল কোরআনের বৈশিষ্ট। যদিও সম্পূর্ণ কোরআনটি সঠিক। কেননা আল্লাহ স্বয়ং উহা হিফাজত করার দায়ীত্ব গ্রহণ করেছেন এবং সেটি লিখিতও আছে।

কিন্তু রাসুল (সা.)-এর হাদীসের মধ্যে সঠিকের তুলনায় মনগড়াই অধিক। বিধায় রাসুল (সা.)-এর হাদীসের ক্ষেত্রে একজন ‘মাসুম’ থাকাটা আবশ্যিক, যে সঠিক ও জাল হাদীসের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে। আর ইহা তো স্পষ্ট যে, এই কাজটি কোন ‘গায়ের মাসুম’ আঞ্জাম দিতে পারে না, হয় সে আল্লামাই (মহাজ্ঞানী) হোক না কেন। অনুরূপ কোরআন ও হাদীস উভয়েই এমন একজন বিশ্বস্ত আলিমের মুখাপেক্ষী, যে উহার আহ্কাম ও বিষয়াবলী সম্পর্কে জ্ঞান রাখে, যেন নবী (সা.)-এর পরবর্তীতে মানুষের মত-বিরোধ ও মূর্খতাকে দূরীভূত করতে সক্ষম হয়। আপনারা কি লক্ষ্য করেন নি যে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কোরআন মজিদে এই বিষয়ের দিকেই ইঙ্গিত করে বলেছেন যে, কোরআন একজন বয়ানকারীর মুখাপেক্ষী।

সুতরাং ইরশাদ হচ্ছে: “স্পষ্ট প্রমাণাদি ও কিতাবসমূহ এবং তোমরা প্রতি নাযিল করেছি কুরআন, যাতে তুমি মানুষের জন্য স্পষ্ট করে দিতে পার, যা তাদের প্রতি নাযিল হয়েছে। আর যাতে তারা চিন্তা করে”। [সূরা নহর, আয়াত-৪৪] অতএব নবী (সা.) যদি উক্ত বিষয়াবলীকে বয়ান না করতেন যা তাঁর প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছিল তাহলে মানুষ আল্লাহর আহ্কামসমূহ জানতেই পারতো না, যদিও কোরআন তাদেরই ভাষায় নাযিল হয়েছিল। ইহা তো স্পষ্ট যে, কোরআনের মধ্যে নামায ও যাকাত, রোজা এবং হজ্জকে ওয়াজিব করা হয়েছে। কিন্তু মুসলমানরা উহার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের জন্য নবী (সা.)-এর মুখাপেক্ষী।

তিনিই বলে দিবেন যে, নামায কেমন করে আদায় করা হবে, যাকাতের নিসাব কি, রোযার আহ্কাম কি এবং হজ্জের মানাসিক কি। নবী (সা.) যদি না থাকতেন তাহলে মানুষ কোরআন মজিদ দ্বারা সেগুলিকে বুঝতে পারতো না। আর যখন কোরআনের মত ‘মুত্তাফিক আলাইহ্ কিতাব’, যখানে কোন দিক থেকেও বাতিল অনুপ্রবেশ করতে পারে না, একজন বয়ানকারীর মুখাপেক্ষী, তখন তার চেয়েও অধিক নবী (সা.)-এর হাদীস একজন সংরক্ষক ও বয়ানকারীর মুখাপেক্ষী। কেননা হাদীসের মধ্যে অনেক মতবিরোধ, মনগড়া ও মিথ্যা আছে। প্রকৃতিগতভাবে কথাটি সত্য বরং আকলের প্রয়োজন যে, রিসালাতের ঘোষণাকারী প্রত্যেক নবীই নিজের প্রতিপালকের হুকুম অনুযায়ী নিজের ওয়াসী এবং উত্তরসূরী (স্থলাভিষিক্ত) নিযুক্ত করে থাকেন।

যাতে তাঁর মৃত্যুর পরে রিসালত যেন শেষ না হয়ে যায়। সুতরাং প্রত্যেক নবীর কোন না কোন ‘ওয়াসী’ অবশ্যই ছিল। অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) নিজের খেলাফত ও স্থলাভিষিক্তির জন্য হযরত আলীকে গড়ে তুলেছিলেন এবং শিশুকাল থেকেই তাঁকে তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্টাবলী দ্বারা সাজিয়ে ছিলেন এবং যৌবনকালে প্রথম ও শেষ জ্ঞান দান করছিলেন। আর এমন সব গোপনীয়তা ও রহস্যাবলী বলেছিলেন যা কেউ জানে না। উম্মতকেও বারংবার বলেছেন যে, “তোমাদের মাঝে এ হচ্ছে আমার ভাই, আমার ওয়াসী এবং আমার খলিফা”।

তিনি আরো বলেছেন: “আমি হলাম আম্বিয়াগণের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ আর আলী হলো ওয়াসীগণের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। আমার পরে সে হচ্ছে সবার চেয়ে উত্তম ও শ্রেষ্ঠ”। তিনি আরো বলেছেন যে, “আলী হচ্ছে হকের সাথে আর হক হচ্ছে আলীর সাথে। আলী হচ্ছে কোরআনের সাথে আর কোরআন হচ্ছে আলীর সাথে”। তিনি আরো বলেন যে, “আমি কোরআন নাযিল হওয়ার বিষয়ে যুদ্ধ-বিগ্রহ করেছি এবং আলী উহার তাবিল তথা জটীল ব্যাখ্যার জন্য জিহাদ করবে।

এই হলো সেই ব্যক্তিত্ব যে আমার পরে আমার উম্মতের মধ্যে দ্বান্দ্বিক বিষয়াবলীর সমাধান দিবে। আমার সাথে আলীর তেমনই সম্পর্ক যেমন সম্পর্ক ছিল মূসার সাথে হারুনের। আলী আমা হতে আর আমি আলী হতে। সে হচ্ছে আমার জ্ঞানের দরজা”। (আহলে সুন্নাতের নিকট এ সকল হাদীসই সহীহ্ বলে গৃহিত।

তাদের ওলামাগণ উহা লিপিবদ্ধ করেছেন এবং সহীহ্-শুদ্ধ বলেছেন। ইহার পূর্ববর্তী কিতাবগুলিতে আমি এই আলোচনা করেছি। সুধী পাঠকগণ, যদি উৎস দেখতে চান তাহলে ‘আল-মোরাজায়াত’ নামক কিতাবটি অধ্যয়ন করুন)। ইল্মি দলিল এবং ইতিহাস ও সীরাত গ্রন্থাবলী দ্বারা এই কথা প্রমাণিত যে, হযরত আলী সকল সাহাবাদের ‘মারজা’ ছিলেন। তাঁর কাছে জ্ঞানী ও মূর্খ সকল ধরণের সাহাবা অগমন করতেন।

আহলে সুন্নাতের জন্য তো এতোটুকুই যথেষ্ট হবে যে, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস যাকে আহলে সুন্নাতগণ ‘হাবরুল উম্মাত’ বলে থাকেন, তিনি হযরত আলীর শিস্য ছিলেন। অনুরূপভাবে, এ দলিলটিও খুবই শক্তিশালী যে, মুসলমানদের সকল জ্ঞানের ঝরনা ধারা হযরত আলীর সত্মা থেকে নিসৃত হয়েছে। [ইবনে আবিল হাদীদের শরহে নাহ্জুল বালাঘার মোকাদ্দেমা অধ্যয়ন করুন] উত্তম তো ইহাই যে, “কিতাবুল্লাহি ওয়া ইতরাতী”-কে “কিতাবুল্লাহি ওয়া সুন্নাতি”-এর উপর প্রাধান্য দেয়া হোক যাতে বিবেকবান মুসলমানের জন্য আহলে বাইতের প্রতি রুজু করা সহজ হয়ে যায় এবং তাঁরাও তাদের সম্মুখে কোরআন ও সুন্নাতের ব্যাখ্যা বয়ান করেন। কিন্তু “কিতাবুল্লাহি ওয়া সুন্নাতী” হাদীসটিকে যদি সহীহ্ বলে স্বীকার করে নেয়া হয় তাহলে কোরআন ও হাদীসের বিষয়ে মুসলমানগণ অবাক ও চিন্তান্বিত ও ভবঘুরে হয়ে থাকবেন এবং তারা এমন কোন পাকাপোক্ত ‘মারজা’ পাবেন না যার মাধ্যমে তারা বুঝে না আসার মত আহ্কামসমূহকে জানতে পারেন অথবা ঐ সকল আহ্কামের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন যেগুলির বিষয়ে ওলামাদের মাঝে কঠিন মতবিরোধ রয়েছে এবং উক্ত চার মাযহাবের ইমামগণ ঐ সকল আহ্কামের বিষয়ে বিভিন্ন বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন অথবা যে সকল বক্তব্যে মতবিরোধ পরিলক্ষিত হয়। একটি মাযহাবকে কবুল করা অর অপরটিকে ছেড়ে দেয়ার অর্থ হবে হিংসা ও অন্ধ তাকলীদ।

আর এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালার ইরশাদ হচ্ছে: “আর তাদের অধিকাংশ কেবল ধারণার অনুসরণ করে। নিশ্চয় সত্যের বিপরীতে ধারণা কোন কার্যকারিতা রাখে না। . . .”। [সূরা ইউনুস, আয়াত-৩৬] সুধী পাঠকমন্ডলীর জন্য আমি একটি উদাহরণ উপস্থাপন করছি যাতে সত্য স্পষ্ট হয়ে যায়। আমরা যদি কোরআন নিয়ে ওজুর আয়াতটি পাঠ করি: “ওয়ামসাহু বিরুউসিকুম ওয়া আরজুলাকুম ইলাল কা’বাইন” (সূরা মায়িদাহ্, আয়াত-৬) অর্থাৎ “নিজের মাথার মাসেহ কর এবং টাখনু পর্যন্ত পদযুগল মাসেহ কর”।

তাহলে আপাত দৃষ্টিতে আমরা ইহাই বুঝবো যে, যেভাবে ‘মাথা মাসেহ্’ করার কথা সেভাবেই ‘পদযুগলও মাসেহ্’ করা উচিৎ। কিন্তু যখন মুসলমানদের আমলের প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন তখন জানা যাবে যে, এই মাসয়ালাতে তাদের মাঝে মত-বিরোধ বিদ্যমান। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের সকলেই ‘পা ধৌত’ করে থাকেন এবং সকল আহলে বাইতের অনুসারী ‘পা মাসেহ্’ করে থাকেন। এখানে আমরা অবাক ও সন্দিহান হয়ে চিন্তা করি যে, কোন আমলটি সঠিক। যখন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের ওলামাদের স্মরণাপন্ন হই তখন তাদের মাঝেও উক্ত মাসয়ালাতে মতবিরোধ দেখতে পাই।

কেননা উক্ত আয়াতে “আরজুলাকুম” শব্দটিকে দুভাবে তথা ‘জবর’ ও ‘জের’ সহকারে পাঠ করা হয়। আবার আহলে সুন্নাতগণ উভয় পঠনকেই সহীহ শুদ্ধ ঘোষণা দিয়েছেন এবং বলেন যে, যে ব্যক্তি “আরজুলাকুম”-কে ‘জবর’ সহকারে পাঠ করবে তার জন্য পা ধৌত করা ওয়াজিব। আর যে ব্যক্তি ‘জের’ সহকারে পাঠ করবে তার জন্য পা মাসেহ করা ওয়াজিব। অতঃপর আমার সাক্ষাৎ এমন এক মহান আলিমের সাথে হয় যিনি আরবীতে খুবই পারদর্শি। তিনি বলেন যে, আয়াতটিকে হয় ‘জবর’ সহকারে পাঠ করুন অথবা ‘জের’ সহকারে পাঠ করুন, উভয় অবস্থাতেই ‘মাসেহ্’ ওয়াজিব।

কেননা ‘আরজু’ অথবা মহলের (স্থানের) কারণে ‘মনসুব’ আছে অথবা ‘জার জাওয়ারের’ কারণে ‘মাজরুর’ আছে। অতঃপর বলেন যে, কোরআনে ‘মাসেহ্’ করার হুকুম আছে আর হাদীসে ‘পা ধৌত’ করার হুকুম আছে। {অনুবাদকের মন্তব্য: পা ধৌত করা বা মাসেহ্ করার বিষয়টিকে স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীনই উক্ত আয়াতের পরবর্তী অংশে যেখানে তায়াম্মুমের কথা বলেছেন স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে পা মাসেহ্ করতে হবে। কারণ পানি প্রাপ্ত হইলে যে অঙ্গ দু’টি ধৌত করার কথা, পানি প্রাপ্ত না হইলে কেবল সেই অঙ্গ দু’টিই তায়াম্মুমের ক্ষেত্রে মাসেহ করতে হবে অর্থাৎ মুখম-ল ও দুই হাত। আর যে অঙ্গ দু’টি তথা মাথা ও পা যা পানি প্রাপ্তির সময়ও মাসেহ্ করার কথা সে দু’টি অঙ্গ তায়াম্মুমের ক্ষেত্রে কিছুই করার প্রয়োজন নেই} সুধী পাঠকমন্ডলী! আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে, আহলে সুন্নাতের আলেমগণের বক্তব্যসমূহ আমাদের সন্দেহ ও দূর্ভাবনাকে মিটাতে পারে না।

বরং তাদের সর্বশেষ বক্তব্যটি তো আমাদের সন্দেহকে আরো বৃদ্ধি করে দিয়েছে। সুন্নাত কি কোরআন বিরোধী কোন বিষয়? কষ্মিনকালেও নয়। নবী (সা.) কোরআনের বিরোধিতা করতে পারেন না এবং ওজুতে ‘পা মাসেহ্’ করার পরিবর্তে ‘পা ধৌত’ করতে পারেন না। আর নবী (সা.) যদি ‘পা ধৌত’ করতেন তাহলে সাহাবাদের জন্য নবী (সা.)-এর সুন্নাতের বিরোধিতা করা জায়েজ ছিল না, হয় তারা ইলম ও মারেফাতের যে স্তরেই উপনীত হয়ে থাকেন না কেন এবং নবী (সা.) নৈকট্যপ্রাপ্ত হোন না কেন। যেমন আলী ইবনে আবি তালিব, ইবনে আব্বাস, ইমাম হাসান ও হুসাইন, হুযায়ফা বিন ইয়ামান, আনাস বিন মালিক এবং আরো অন্যান্য সাহাবাগণ ‘আরজুল’-কে ‘জের’ সহকারে পাঠ করেছেন এবং অধিকাংশ সাহাবা ‘মাসেহ্’-কে ওয়াজিব গণ্য করেছেন এবং পবিত্র ইমামগণের আনুগত্যকারী সকল আহলে বাইতের অনুসারী ‘মাসেহ্’-কে ওয়াজিব গণ্য করে থাকেন।

চলবে.......। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।