আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্যক্তিগত প‌্যাচাল

"ব্লগকে সিরিয়াসলি নেবার কিছু নেই"...গরীব স্ক্রীপ্ট রাইটার আজকে ভেবেছি ব্যক্তিগত প্যাচাল পাড়বো। প্রতিদিন আর তেলানী পোস্ট দিতে ভাল লাগে না। ফেইসবুকে আজকাল চরম যন্ত্রণা শুরু করেছে কিছুলোক, একটি অনুরোধ... আসুন ভাই আমরা ১৬তারিখ সবাই প্রোফাইলে দেশের পতাকা লাগিয়ে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেই! দেখি দেই আমরা কিভাবে আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছিলাম। এইটা নিয়ে এক ছোটভাইয়ের সাথে ক্যাচালও করে ফেললাম হালকা। আমি বললাম যে দেশপ্রেম দেখানোর কিছু নেই।

সে বলল, আমি নাকি নীতিকথা বলছি। এরপর আমি তাকে বললাম, যে নীতিকথার কি আছে? কাউকে হাতে পায়ে ধরে দেশপ্রেম শেখানোর কি আছে?! যার ইচ্ছা হবে সে নিজের শখে প্রোফাইল পিক লাগাক। কিন্তু অনুরোধ কিসের! এরপর ছোটভাই আমাকে সেল্যুট মেরে ভাগলো। আমাদের আগের ডিরেক্টর স্যার ছিলেন কঠিন মানুষ। উনার খালি পড়ালেখা আর পড়ালেখা পছন্দ ছিল।

ঠিক যেমন নাটক সিনেমাতে একজন নায়ক টিচার এসে বাচ্চাদের খেলাধুলা, নাচগানে মাতিয়ে রাখে। আমাদের বর্তমান ডিরেক্টর স্যারও এমন। মাঝে মাঝে উনাকে দেখে আমার তারে জামিন পার সিনেমার আমির খানের কথা মনে পড়ে! তো স্যারের হঠাৎ মনে হল আমাদের এইবার বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে। তো এ উপলক্ষ্যে প্রোগ্রাম অফিসার স্যার আমাকে ডেকে পাঠালো একখানা নাটকের স্ক্রিপ্ট লিখে দিতে হবে। আমার ক্লাসমেটদের উপর চরম মেজাজ খারাপ হল।

একথা সত্য আমি ব্লগে সিনেমার স্ক্রিপ্ট লেখার চেষ্টা করি তবে সেটা আমার ব্যক্তিগত বিনোদনের জন্য। কিন্তু কি দরকার ছিল স্যারকে যেয়ে আমার নাম বলার! আমি স্যারের কাছে গেলাম, স্যার আমাকে বললেন কি কি থাকবে ওই নাটকে। এই ধরো একজন গোফওয়ালা পাকিস্তানি আর্মি অফিসার সাথে ৩/৪টা চামচা। হাট্টাগোট্টা একজন রাজাকার পান খাওয়া একটা ছেলে যুদ্ধে যাবে ঘরে তার মা বোন থাকবে, এই ছেলেটা যুদ্ধে যাবার সময় মা বোনকে বলে যাবে, তোমাদের সাথে হয়তো আমার আর দেখা হবে না। এই ছেলেটা ফিরে এসে দেখবে মা বোন নেই।

মাঠে কিষাণ কিষাণী কাজ করছে। কিছু গোলাগুলীর দৃশ্য.... কালকেই স্ক্রিপ্ট লিখে এনে আমাকে দেখাবা। আমি কিছুক্ষণ হতবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলাম। এইটা কি কোন বাচ্চাদের স্কুলের প্রোগ্রাম যে এমন যুদ্ধ দেখাতে হবে। আর স্যার যদি কাহিনীই বলে দেন তবে আর আমাকে দিয়ে লেখানো কেন নিজে লিখলেই পারেন।

একথা পারলাম না বলতে। বন্ধু রমজানকে পুরো কাহিনী বললাম। বললাম একটু হেল্পা। খুবই দাম দেখালো কিন্তু তারপর সে একটা নাটক লিখে দিল। কিন্তু পাকি অফিসারের রোল করতে চাওয়া ক্লাসমেট খুবই কষ্ট পেল কাহিনী পড়ে।

তার রোল খুবই সামান্য। সে ভেবেছিল ওখানে সে কোন অশ্লীল দৃশ্য থাকবে যেটাতে সে অভিনয় করবে! আর একারণেই তার এত আগ্রহ ছিল নাটকটা করার ব্যাপারে! হতাশ লাগে যখন দেখি মানুষ দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেও নির্বোধ ই থেকে যায়। '৭১ সালে নারীদের উপর যে অত্যাচার হয়েছে সেটা অনুধাবন করতে পারা তো দূরের কথা তারা সেটা নিয়ে মজা করছে! ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।