আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্যক্তিগত ক্যাচাল

"ব্লগকে সিরিয়াসলি নেবার কিছু নেই"...গরীব স্ক্রীপ্ট রাইটার

বহুত নাটক সিনেমা করার পর অবশেষে আমি ইন্টার্নশীপ শুরু করলাম গতকাল। এর আগে কয়েকটা জায়গা থেকে বেশ দৌড়ানি খাবার পর অবশেষে এই ডিসিশনে পৌছেছিলাম যে আমাকে যশোর যেতে হবে। ওখানে আমার এক ফুপাতো দুলাভাই যে ব্যাংকে আছেন ওখানে করার ব্যাপারটা মোটামুটি ফাইন্যাল হল। ঈদের পরই যশোর চলে যাবো। আমিও সবার কাছে বিদায় নেয়া শুরু করলাম।

মাফ টাফও চাইলাম কালকে সকাল সাড়ে দশটায় ঘুমাচ্ছিলাম আব্বু ফোন করে বলল আমার আরেক কাজিনের কথা সে বলেছে তাদের ব্যাংকে আমার ইন্টার্নশীপ এর জন্য কালকেই জয়েন করতে বলেছে। আমি ঘুম থেকে উঠেই দিলাম দৌড় যশোর তো আর যাওয়া লাগছে না । তারপর ব্যাংকে পৌছে ভাইয়া (কাজিন)কে দৃষ্টি আকর্ষন করলাম। ও আমাকে ফ্রন্ট ডেস্কে বসায় দিয়ে ফুটলো। আমি বসে বসে দেখতে থাকলাম কে কি করছে।

এখানেই আমার আরেক ক্লাসমেট কিছুদিন আগের থেকে শুরু করেছে। তাকে দেখলাম সে অনেক বিজি। প্রায় আড়াই ঘন্টা পর সে মুখ তুলে আমার দিকে চেয়ে বলে, আউলা প্রথম দিন সবাইকেই বসায় রাখে। আমিও ছিলাম। আমি যখন বুঝলাম আমার কিছু করা লাগবে না আমি নিশ্চিন্ত মনে কাস্টমারদের অবলোকন করতে থাকলাম।

একজন পিওন এসে আমাকে দৈনিক শক্তি হাতে ধরায় দিয়ে বলল, পড়েন। আমি এমনিতেই খবরের কাগজ পড়ি না কিন্তু কাজকাম নাই নাই পড়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু ১ লাইনও পড়া উপযোগী মনে হল না। আমি খবরের কাগজ সামনে নিয়ে পড়ছি ভাব নিয়ে সামনে তাকিয়ে থাকলাম। কালকে ব্যাংকে ছিল অনেক ভিড়, আমার আশপাশের সবাই খুবই ব্যস্ত।

তারা মুখ তুলে কথা বলছেন না। এই অবস্থা দেখে কাস্টমাররা রিলাক্সড পেপার পাঠিকা আমার কাছে এসে রাজ্যের প্রশ্ন শুরু করলো। আমি প্রথমে খুবই লজ্জিত এবং বিব্রত হয়ে উত্তর দিচ্ছিলাম, আমি আজকে জয়েন করলাম, আমি কিছু জানি না। একসময় এই কথাটা কয়েকবার বলার পর দেখি বলতে মজা লাগছে। এর মধ্যে এক মহিলা আসলেন বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়েছে সেটা তুলতে।

এখন ফরম সে পূরণ করতে পারে না। আমাকে জিজ্ঞেস করলো আমি দেখে যেটুকু পারলাম বললাম। এইবার এই মহিলা আমি পুরোটা ক্যানো পারি না তাই জিজ্ঞেস করলো। আমি আবারও হেসে জবাব দিলাম আমি নতুন। এইবার সে একজন পিওনের হাতে ব্যান্ডেজ দেখে আমাকে জিজ্ঞেস করলো, তার হাতে কি হয়েছে, কিভাবে হয়েছে....রাজ্যের প্রশ্ন আমি বললাম, জানি না ২ ভাবী (মহিলা কাস্টমার) গল্প করছেন।

ভাবী১: আরে আপনি অমুক ভাবী না? ভাবী২: হ্যা (একটু দাম বাড়িয়ে) ভাবী১: ভাইয়া কি আসছিলো এর মধ্যে? ভাবী২: এই তো বিয়ের ১১ মাস পর। ভাবী১: আপনিও কি চলে যাবেন নাকি? ভাবী২: আরে নাহ্!! আমি আরো তাকে চলে আসতে বলেছি। ভাবী১: তা কত টাকা পাঠালো? (তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে) ভাবী২: ১৬ হাজার (দাম বাড়িয়ে) এইবার ১নং ভাবী বিজয়ীর হাসি দিল এবং আশা করছিলো ২ নং ভাবী তার কাছে কত টাকা পাঠিয়েছে জানতে চাইবে। কিন্তু না ২নং ভাবী তা না করেই চলে গেলেন। এক কাস্টমার এসে খালি আমার সামনের খবরের কাগজগুলো টানাটানি শুরু করলো।

আমার সামনে ৩টা দৈনিক ছিল তিনটাই একে একে কেড়ে নিল এইবার আরেক কাস্টমার এসে আমার পাশের ভাইয়াকে বলল, আজকে আপনার কাছে কোন টাকা পয়সার ব্যাপার না অন্য একটা ব্যাপারে কথা বলবো। একটু এদিকে আসেন। ওই ভাইয়া চলে গেলেন সেই লোকের সাথে। ঘটনা কি হইল বুঝলাম না আমি তখন। ভাইয়া ফিরে আসলেন না অনেকক্ষণ।

কিন্তু এরই মধ্যে ওই লোক ২বার এসে খোজ নিয়ে গেল। এরপর ভাইয়া আসলেন। ওইলোককে সম্ভবত ১০০০টাকা ফেরত দিয়ে বললেন নতুন নোটের বান্ডিল পান নি বাংলাদেশ ব্যাংকে। ধপাস করে লোকটা চেয়ারের উপর বসে পড়ল। তাহলে সে এখন কি করবে!! কি জবাব দিবে তার বাচ্চাকে!! তার বাবা কি এমন ব্যাংকে একাউন্ট খুলেছে যে সামান্য একটা বান্ডিল ম্যানেজ করতে পারে না!! ভাইয়া মুখ ফসকে বোকার মত বলে ফেললেন তিনি ২টাকার ২টা বান্ডিল পেয়েছিলেন কিন্তু আনেন নি।

এইবার ওই লোক বলল, সামথিং ইজ বেটার দ্যান নাথিং!! ওইটাই ক্যানো আনেন নি!! আপনি বলেছিলেন ১০টাকার বান্ডিল আমি তাই... শেষ করতে পারলেন না। আপনাদের ব্যাংকে আমার ৩টা এ্যাকাউন্ট, এফডিআর, এমটিআর আরো কতকি করতে বললেন!! করলাম। মাসে আমি এখান থেকে ২৫-৩০ লাখ টাকার ইয়ে করি!!কিন্তু একটা বান্ডিল ম্যানেজ করে দিতে পারলেন না। (চোখ ছল ছল করছিলো) আমি এখন যদি সাউথইস্ট ব্যাংকে যাই ওরা আমাকে বান্ডিল দিবে, ওখানে আমার বন্ধু আছে। কিন্তু কিছু কথা শোনাবে...বলবে যা ওইখানে...এইখানে কি চাস!! এইবার ভাইয়া যেন কুকড়ে গেলেন লজ্জায়...উঠে দাড়ালেন এবং বললেন দাড়ান দেখি বলে ভাইয়া চলে গেলেন।

পরে বান্ডিল দিতে পেরেছে কিনা তা দেখার সুযোগ পাই নি। ঠান্ডা লাগায় মেজাজ তেমন ভাল ছিল না তাই তেমন একটা মজা নিতে পারি না


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।