আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রকৃত আহলে সুন্নাত কারা?

আসুন আমরা ২টি ভারী বস্তু আল্লাহর কুরান ও রাসুলের(সাঃ) পরিবারকে(আঃ) অনুসরন করি। View this link আহলে সুন্নাতের ইমামগণকে জালিম শাসকরা নিযুক্ত করে আহলে সুন্নাতের চার মাযহাবের ইমামগণও আল্লাহর কিতাব আর রাসুল (সা.)-এর সুন্নাতের বিরোধিতা করতেন। কারণ রাসুল (সা.) পবিত্র বংশধরগণের আনুগত্য করার হুকুম দিয়েছেন অথচ আহলে সুন্নাতের মাঝে আমরা এমন একজনকেও দেখতে পাই না যে নিজের যুগের ইমামকে চিনেছেন এবং তাঁর তরীতে আরোহণ করেছেন এবং তাঁর সম্মুখে মাথা নত করেছেন। ইনি হলেন আবু হানিফা, যিনি ইমাম জাফর সাদিকের সম্মুখে নতজানু হয়েছেন এবং তাঁর সম্পর্কে আবু হানিফার এই কথাটি খুবই বিখ্যাত যে, “যদি এই দু’টি বছর, যার মধ্যে ইমাম জাফর সাদিক থেকে জ্ঞান অর্জন করেছি, না থাকতো তাহলে নোমান (তথা আবু হানিফা) ধ্বংস হয়ে যেত”। এতদসত্বেও তিনি নিজের একটি নুতন মাযহাব বানিয়ে নিলেন, যার ভিত্তিই ছিল স্পষ্ট নস (তথা আল্লাহ ও রাসুলের সিদ্ধান্ত)-এর বিরুদ্ধে ইজতিহাদ।

মালিককে দেখুন যে, তিনি ইমাম জাফর সাদিক থেকে জ্ঞান অর্জন করেছেন এবং তাঁর সম্পর্কে বলেছেন যে, “ইমাম জাফর সাদিকের মত ব্যক্তিত্বকে না কোন চোখ দেখেছে আর না কোন কর্ণ শ্রবণ করেছে। আর না কোন অন্তরে এমন অনুভুতি হয়েছে যে জ্ঞান ও ফিক্হ শাস্ত্রে ইমাম জাফর সাদিকের চাইতেও কেউ উত্তম হতে পারে”। অথচ মালিকও নিজের যুগের ইমামকে ত্যাগ করে আলাদা দেড় ইঁটের একটি মসজিদ বানিয়ে নিলেন এবং একটি মাযহাব আবিস্কার করে নিলেন। অথচ মালিক এই কথা স্বীকার করেছেন যে, তার যুগে জ্ঞান ও ফিক্হ শাস্ত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে ইমাম জাফর সাদিকের চেয়ে উত্তম কেউ ছিল না। তথাপিও তাকে আব্বাসীয়রা এই কথা বলে আস্বস্থ করল যে, “তুমি হলে বিরাট আলেম” এবং তাকে ‘দারুল হুজরাতের’ ইমাম বলা শুরু করল, বিধায় মালিকের অবস্থাই পাল্টে গেল এবং প্রভাব ও ঐশ্বর্যও বৃদ্ধি পেল।

শাফেয়ীর প্রতি লক্ষ্য করুন যে, যার প্রতি ‘রাফেজী’ হবার আরোপ আছে এবং মহান আহলে বাইত সম্পর্কে যার কবিতাও আছে : “হে রাসুলের আহলে বাইত! আপনাদের ভালবাসা আল্লাহর পক্ষ থেকে কোরআন মজিদে ওয়াজিব করা হয়েছে। আপনাদের জন্য তো ইহাই যথেষ্ট যে, কেউ যদি নামাযের মধ্যে আপনাদের প্রতি দরূদ না পাঠায় তাহলে তার নামাযই হবে না”। অনুরূপভাবে নিন্মোক্ত কবিতাটিও জনাব শাফেয়ী মহান আহলে বাইতগণের শানে বলেছেন : “আর যখন আমি লোকজনকে দেখলাম যে তাদের মাযহাবসমূহ তাদেরকে মূর্খতা ও পথভ্রষ্টতার দরিয়াতে নিয়েগেছে। তখন আমি আল্লাহর নাম নিয়ে ‘নাজাতের তরীতে’ সোয়ার হয়েগেলাম অর্থাৎ খাতেমুল মুরসালীন-এর আহলে বাইতের দামন ধারণ করলাম এবং আমি হাবলুল্লাহ’র সাথে সম্পৃক্ত হয়ে গেলাম যা হল আহলে বাইতগণের ভালবাসা, যেমনটি রাসুল (সা.) উহার সাথে সম্পৃক্ত থাকার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন”। অনুরূপভাবে শাফেয়ী কর্তৃক নিন্মোক্ত কবিতাটিও আবৃতি হয়েছে : “আলে মুহাম্মাদের মুহাব্বাত যদি রাফেজী হয়ে থাকে তাহলে সাকালাইন (তথা কোরআন ও আহলে বাইত) স্বাক্ষী থাকো আমি হলাম রাফেজী”।

অথচ তিনি যখন নিজের রাফেজী হওয়ার ব্যাপারে ‘সাকালাইন’-কে স্বাক্ষী বানাচ্ছেন তাহলে সেই সকল মাযহাবের বিরোধিতা কেন করছেন না যা আহলে বাইতের বিপক্ষে সৃষ্টি করা হয়েছিল। শুধু ইহাই নয় যে, তিনি সেগুলির বিরোধিতা করেন নি বরং নিজেও একটি নতুন মাযহাব তৈরী করে নিলেন এবং নিজের যুগের মহান আহলে বাইতের ইমামকে ত্যাগ করেছিলেন। আহমদ বিন হাম্বলকে নিয়ে নিন, যিনি হযরত আলীকে চতুর্থ খলিফা ঘোষণা দিয়েছিলেন আর তাঁকে খোলাফায়ে রাশেদীনের অন্তর্ভূক্ত করেছিলেন এবং এ বিষয়ে “কিতাবুল ফাযায়েল” নামক একটি কিতাব লিখেছেন এবং তাঁর এই কথাটিও খুবই বিখ্যাত যে, “সহীহ সনদসমূহের ভিত্তিতে সকল সাহাবাদের তুলনায় হযরত আলীর অধিক ফাযায়েল বর্ণিত হয়েছে”। অথচ তিনিও নিজের নামে একটি মাযহাবের ভিত্তি স্থাপন করলেন, যেটিকে বর্তমানে ‘হাম্বালী’ মাযহাব বলা হয়ে থাকে। অথচ তার যুগের ওলামারা বলতেন যে, আহমদ বিন হাম্বল কোন ‘ফকীহ্’ নন।

শেখ আবু যাহরা বলেন যে, মো’তাকেদীনের মধ্যেকার অধিকাংশ ওলামা আহমদ বিন হাম্বলকে ‘ফকীহ্’ বলে স্বীকার করতেন না। যেমন ইবনে কোতায়বাহ্, ইবনে জারীর তাবারী, যারা তার যুগের নিকটবর্তী ছিলেন। [দ্রষ্টব্য: আবু যাহরার কিতাব ‘আহমদ বিন হাম্বল’, পৃ-১৭০] তারপর ইবনে তাইমিয়াহ্ আবির্ভূত হোন আর হাম্বলী মাযহাবের পতাকা উত্তোলন করেন এবং উহাতে কিছু নতুন দৃষ্টিভঙ্গীর অনুপ্রবেশ ঘটান। উদাহরণ স্বরূপ: কবর জিয়ারত করা আর উহার উপর ঘর নির্মাণ করাকে হারাম ঘোষণা দেন এবং নবী (সা.)-এর আহলে বাইতের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করাকে ‘শিরক’ বলে আখ্যায়িত করেন। ইহাই হল চার মাযহাব, আর ইনারাই হলেন তাদের ইমাম, আর এগুলোই হচ্ছে তাদের সেই সমস্ত কথা-বার্তা যা পবিত্র আহলে বাইতগণের সাথে সম্পর্কযুক্ত।

অতএব, এ লোকগুলি যা বলেন সেটির উপর আমল করেন না, আর এ কথা আল্লাহর কাছে খুবই অপছন্দনীয়। তারা উক্ত মাযহাবগুলি বানান নি বরং উমাইয়া ও আব্বাসীয়গণের লেজুড়ধারীরা জালিম শাসকদের সাহায্যে উক্ত মাযহাবগুলির ভিত্তি স্থাপন করেছিল। আর উক্ত চারজন ইমামের মৃত্যুর পর তাদের নামের সাথে সম্পৃক্ত করে দিয়েছিল। এই বাস্তবতাকে ইনশা আল্লাহ্ পরবর্তী আলোচনাগুলিতে স্পষ্ট করব। উক্ত ইমামগণের প্রতি আপনাদের কি তাজ্জব হন না, যারা আহলে বাইতগণের মধ্যেকার ‘আইম্মায়-এ-হুদা’র সম-সাময়িকী ছিলেন, তা সত্বেও সিরাত-এ-মুস্তাকীম থেকে দূরে সরে ছিলেন এবং তাঁদের কাছ থেকে হিদায়েত গ্রহণ করেন নি আর না তাঁদের নূর থেকে কোন ফায়েজ হাসিল করেছেন।

তাঁদের কাছ থেকে তাঁদের নানা রাসুল (সা.)-এর হাদীসগুলোও বর্ণনা করেন নি। বরং উহার বিপরীত ‘কাবুল আখবার’ নামক ইয়াহুদী এবং আবু হুরায়রা হতে রাসুল (সা.)-এর হাদীস গ্রহণ করেছে। এই আবু হুরায়রা সম্পর্কে আমীরুল মুমেনীন হযরত আলী বলেছেন : “আবু হুরায়রা সবার চেয়ে অধিক রাসুল (সা.)-এর প্রতি মিথ্যারোপ করেছে এবং কথিত কথাই আয়শা বিনতে আবু বকরও বলেছেন”। আহলে সুন্নাতগণ নবী (সা.)-এর আহলে বাইতের চেয়েও অধিক সেই আব্দুল্লাহ বিন উমরের মত নাসেবী এবং হযরত আলীর দুশমনকে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন, যে হযরত আলীর বায়াতকে অস্বীকার করেছিল এবং হাজ্জাজ বিন ইউসুফের মত পথভ্রষ্ট মানুষের বায়াত করেছিল। আর অনুরূপভাবে মোয়াবিয়ার উজির আমরু ইবনুল আ’স-এর মত ধোকাবাজকে পবিত্র আহলে বাইতের উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করে থাকেন।

সেই সমস্ত ইমামের উপর আপনাদের কি কোন তাজ্জব হন না, যারা আল্লাহর দ্বীনের মধ্যে নিজেদের নফসের জন্য সত্য শরীয়াতের বিপরীত ইজতিহাদকে ‘মোবাহ’ করে নিয়েছিল এমনকি তারা নবী (সা.)-এর সুন্নাতকে ত্যাগ করেছিল আর নিজস্ব ‘কিয়াস’ ও ‘ইস্তিসহাবে সিদ্দেবাবুয যারায়ে’ ও ‘মাসালেহুল মুরসালাহ্’র মত পদ্ধতি আবিস্কার করে নিয়েছিল। আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.) কি দ্বীনের পূর্ণতার বিষয়ে গাফেল ছিলেন এবং তাদের জন্য ইহা কি মোবাহ করে দিয়েছিলেন যেন তারা তাদের ইজতিহাদকে কার্যকরি করে এবং যে যিনিসকে ইচ্ছা হারাম করুক আর যেটাকে ইচ্ছা হালাল ঘোষণা দিক। উক্ত মুসলমানদের প্রতি তাজ্জব কি হয় না, যারা দাবী করে যে, “আমরা সুন্নাতের অনুসরণ করি”। তারপর এমন সব ইমামের তাকলীদ করে থাকেন যারা নবী (সা.)-কে জানতোই না আর না নবী (সা.) তাদেরকে জানতেন? এ বিষয়ে তাদের কাছে কি আল্লাহর কিতাব হতে কোন দলিল মওজুদ আছে? অথবা চার ইমামের আবিস্কৃত মাযহাবের তাকলীদের বিষয়ে রাসুল (সা.)-এর সুন্নাতের মধ্যে কি কোন দলিল আছে?! আমি মানুষ ও জিন উভয় জাতিকে চ্যালেঞ্জ করে বলছি যে, এ বিষয়ে আল্লাহর কিতাব অথবা রাসুল (সা.)-এর সুন্নাত হতে একটি দলিলও যদি উপস্থাপন করতে পারে। আল্লাহর কসম এমনটি কষ্মিনকালেও করতে পারবে না এবং কিছুতেই দলিল উপস্থাপন করতে পারবে না, যদিও তারা একে অপরের সহযোগী হয়ে যাক না কেন।

আল্লাহর কসম! আল্লাহর কিতাব এবং রাসুল (সা.)-এর সুন্নাতে এমন কোন দলিল নাই। তবে হ্যাঁ, পবিত্র ইমামগণের তাকলীদের বিষয়ে অনেক শক্তিশালী দলিল আর স্পষ্ট সত্যতা স্বাক্ষ্য বহন করছে এবং মওজুদও আছে। “চোখের অধিকারীরা, শিক্ষা গ্রহণ কর”। [সূরা হাশর, আয়াত-২] “কেননা চোখ অন্ধ হয় না বরং বুকের মধ্যে যে অন্তর আছে উহা অন্ধ হয়ে যায়”। [সূরা হজ্জ, আয়াত-৪৬] সুন্নি মাযহাবসমূহের উত্থানের রহস্য ইতিহাসের কিতাবাদী এবং পূর্বপুরুষগণের জমাকৃত বিষয়াবলীর প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধকারী বিনা কোন সন্দেহে এই কথা অনুভব করে নেয় যে, উক্ত জামানায় সুন্নিদের চারি মাযহাবের উন্নতি কল্পে ক্ষমতাসীন দলের হাত ছিল।

বিধায় অধিকাংশ মানুষ সেটিকে কবুল করেছে কেননা মানুষ নিজেদের রাজা-বাদশাহর দ্বীনকেই গ্রহণ করে থাকে। অনুরূপভাবে একজন সত্য সন্ধানী এ কথাটিও জানে যে, সেই যুগে এমন আরো অনেক মাযহাব ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল কারণ তখনকার শাসক সেগুলির প্রতি রাজি ছিল না। উদাহরণ স্বরূপ: মাযহাবে আওযায়ী, মাযহাবে হাসান বাসরী, মাযহাবে আবু গায়ীনিয়াহ্, মাযহাবে ইবনে আবি যুওয়ায়েব, মাযহাবে সুফিয়ান সাওরী, মাযহাবে ইবনে আবি দাউদ এবং মাযহাবে লায়স বিন সা’দ ইত্যাদী। উদাহরণ স্বরূপ লাইস বিন সা’দ, মালিক ইবনে আনাসের বন্ধু ছিল এবং ফিকহ্ শাস্ত্রের জ্ঞানে ছিল তার থেকেও অগ্রবর্তী। কিন্তু তার মাযহাবটি এ জন্য বরবাদ হয়ে গেল যে, তার প্রতি হুকুমাত রাজি ছিল না।

যেমনটি শাফেয়ী এই কথাটি স্বীকার করেছেন। [দ্র: মানাকিবে শাফেয়ী, পৃ-৫২৪] আহমদ বিন হাম্বল বলেন: ইবনে আবি যুওয়ায়েব, মালিক বিন আনাস থেকে উত্তম ছিল। কিন্তু মালিক রিজাল শাস্ত্রে পন্ডিত ছিল। [দ্র: তাজকিরাতুল হুফ্ফাজ, খন্ড-১, পৃ-১৭৬] কিন্তু আমরা যখন ইতিহাস অধ্যয়ন করি তখন মালিককে মাযহাবের অধিকারী হিসাবে দেখতে পাই, কেননা তিনি হুকুমাতের নৈকট্য অর্জন করেছিলেন। শাসকদের কথা মত চলতেন বিধায় তিনি বিখ্যাত আলিম হয়ে গেলেন আর ভয়-ভীতি ও লোভ-লালসা প্রদর্শনের মাধ্যমে তার মাযহাব প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে।

বিশেষ করে ‘উন্দালাস’ নামক স্থানে যেখানে মালিকের ছাত্র ইয়াহিয়া উন্দালাসের হাকিমের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করে নৈকট্য অর্জন করার কারণে হাকিম তাকে কাজী বাছাই করার অধিকার দিয়ে দিল। সুতরাং ‘কাজী’ পদবী তাকেই দেয়া হত যে মালেকী মাযহাব অবলম্বী হত। অনুরূপভাবে আবু হানিফার মৃত্যুর পর তার মাযহাবের উন্নতির কারণ হয়েছিল আবু ইউসুফ ও শায়বান। এরা দুজনই আবু হানিফার অনুসারী এবং নিখাদ শাগরেদ ছিল আর আব্বাসীয় খলীফা হারুনুর রশীদের নৈকট্যপ্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত ছিল। হারুনের হুকুমাতকে শক্তিশালী করার ব্যাপারে তাদের বিরাট ভূমিকা ছিল।

নারীআসক্ত এবং মদ ও খেল-তামাশা প্রিয় হারুন তাদের সম্মতি ব্যতীরেকে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করত না। বিধায় তারা দুজনই এমন ব্যক্তিকে কাজী নিয়োগ করত যে হানাফী মাযহাব অবলম্বী হত। সুতরাং ঐ যুগে আবু হানিফা আযামুল ওলামা (সর্বশ্রেষ্ঠ আলেম) এবং তার মাযহাব আযামুল মাযাহিব (সর্বশ্রেষ্ঠ মাযহাব) হয়ে গেল। যদিও তার সময়কার আলেমগণ তার বিরুদ্ধে ‘কাফের’ এবং ‘যিন্দীক’ হবার ফতোয়া দিয়ে ছিলেন। ফতোয়া দাতাগণের মধ্যে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল এবং আবুল হাসান আশয়ারীও ছিলেন।

আবার শাফেয়ী মাযহাব তো প্রায় নিঃশ্চিহ্ন হয়ে যাবার পর জীবিত হয়েছে। আর ইহা তখন হয়েছে যখন জালিম ও জবরদখলকারী হুকুমত তাকে সমর্থন দিল। সুতরাং সেই মিশর যেখানে কেবল আহলে বাইতের অনুসারী সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল, তারা সকলেই শাফেয়ী হয়ে গেল। আর ইহা সালাহউদ্দিন আইউবীর সময় তখন হয়েছিল যখন সে আহলে বাইতের অনুসারীদের রক্ত দিয়ে হোলী খেলা শুরু করেছিল আর তাদেরকে পাষানের ন্যায় হত্যা করা আরম্ভ করেছিল। অনুরূপভাবে মো’তাসিম আব্বাসী যদি হাম্বলী মাযহাবকে সমর্থন না করত তাহলে আজ উক্ত মাযহাবের নাম উচ্চারণকারী কেউ থাকত না।

আর ইহা তখন হয়েছে যখন আহমদ বিন হাম্বল ‘খাল্কে কোরআন’ তথা কোরআন হল সৃষ্টি, এই দৃষ্টভঙ্গী থেকে দূরত্ব প্রকাশ করল। আর মোতাওয়াক্কিলের যুগে তো তার তারকা আরো উত্তম রূপে চমকাতে থাকে। বর্তমানে নিকট অতীতে বৃটিশ প্রশাসনের সাহায্যে ‘ওয়াহাবী মাযহাব’ বিস্তার লাভ করেছে। অতঃপর বৃটিশ আলে সাউদকে এই দায়ীত্ব দিল, সুতরাং সে দ্রুতগতিতে শেখ মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহাবের সাহায্যে এবং হিজায ও জাযিরাতুল আরবে তার মাযহাবের বিস্তার ও প্রচারের ক্ষেত্রে ভরপুর সহযোগীতা করে। এভাবে হাম্বলী মাযহাব তিন তিনটি ইমাম পেয়েছে।

প্রথমে ‘আহমদ বিন হাম্বল’ যিনি নিজের ফকীহ হবার বিষয়ে স্বীকৃতি দেন নি, বরং তিনি আহলে হাদীসের সাথে সম্পর্ক রাখতেন। তারপরে হলেন ‘ইবনে তাইমিয়াহ্’ যাকে আহলে সুন্নাতগণ ‘শায়খুল ইসলাম ও মুজাদ্দেদুস সুন্নাহ্’র উপাধীতে ভূষিত করেছেন। অথচ তার যুগের ওলামাগণ তাকে এজন্য কাফির বলতেন যে, তিনি সেই সমস্ত মুসলমানকে মুশরিক বলতেন যারা রাসুল (সা.)-কে উসিলা বানিয়েছিলেন। তারপর ‘মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহাব’ বৃটিশ প্রশাসনের পা চাটা চ্যালা উত্থান করে এবং হাম্বলী মাযহাবকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করে। সে ইবনে তাইমিয়াহ্’র ফতোয়ার উপর আমল করে।

এভাবেই আহমদ বিন হাম্বলের নাম হারিয়ে গেল কেননা এখন তার মাযহাবকে লোকেরা ‘ওয়াহাবী’ মাযহাব বলে থাকে। এতে কোন সন্দেহ নাই যে, ঐ মাযহাবগুলোর উন্নতি, খ্যাতি আর বিস্তৃতি শাসকগণের বিশেষ সহায়তা ও করুনার মুখাপেক্ষি। আর এতেও কোন সন্দেহ নাই যে, ঐ সকল শাসকগণ আহলে বাইতের মহান ইমামগণের শত্রু ছিল। কেননা তারা তাদের নিয়মনীতির জন্য আহলে বাইতের ইমামগণকে চ্যালেঞ্জ এবং নিজেদের রাজতন্ত্রের পতন বলে জ্ঞান করতো। বিধায় তারা সর্বদা তাঁদেরকে পৃথক রাখার চেষ্টা করতো এবং উম্মতের সম্মুখে মিথ্যাবাদী বলে উপস্থাপন করতো আর তাঁদের অনুশারীদেরকে তরবারী দ্বারা হত্যা করে ফেলতো।

মন্দ তো ইহাই ছিল যে, সেই সকল শাসক কিছু কিছু চাটুকার ধরণের ওলামাকে বড় বড় পদ-পদবী দান করতো যাতে ঐ সমস্ত ওলামাদের ফাতোয়াসমূহ শাসকের হুকুম অনুযায়ী হয়। আর ফতোয়া হলো মানুষের স্থায়ী প্রয়োজন, কেননা উহার মধ্যে শরীয়াতের মাসয়ালাগুলো স্থান দখল করে আছে। শাসকরা কোন যুগেই শরীয়াতের কোন বিষয়েই জ্ঞাত ছিল না, আর না ফিক্হ-কে বুঝার মত যোগ্যতা রাখতো। সুতরাং তাদের জন্য তেমন ধরণের ওলামা পুশে রাখা জরুরী ছিল যারা তাদের নামে ফতোয়া দিত আর মানুষকে এই কথা বিশ্বাস করাতো যে, দ্বীন হল ভিন্ন বিষয় আর রাজনীতি হল ভিন্ন বিষয়। অনুরূপভাবে, ‘খলিফা’ হতো একজন রাজনীতিবিদ আর ‘ফকীহ্’ হতো দ্বীন বিষয়ক ব্যক্তিত্ব।

যেমন আজও ইসলামী দেশগুলোতে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব রাষ্ট্র প্রধান হয়ে থাকে আর কোন একজন দ্বীনি আলেম তাকে সাহায্য করে থাকে, যাকে রাষ্ট্রীয় মুফতি বলা হয়। ঐ আলিমের দায়ীত্ব থাকে এই যে, সে ইবাদতসমূহ, দ্বীন সম্বলিত শ্লোগান এবং যুবকদের মাসয়ালা-মাসায়েলের প্রতি দৃষ্টি রাখে। কিন্তু বাস্তবতা এই যে, ফতোয়া বা হুকুম দেয়ার ক্ষেত্রে তার কোন অধিকার থাকে না বরং সে তাই বলে যা রাষ্ট্র ও রাষ্ট্র প্রধানের ইচ্ছা হয় অথবা অন্ততঃপক্ষে তার ফতোয়া রাষ্ট্র ও রাষ্ট্র প্রধানের বিরুদ্ধে না হয়। বস্তুতঃ এই চিন্তাধারাটি প্রথম তিন খলিফা তথা হযরত আবু বকর, উমর ও উসমানের যুগ থেকেই চলে আসছে। তারা দ্বীন ও রাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে নিজেদের অধিকার সংরক্ষণের দরজা খুলে নিয়েছিলেন আর সেটির উপর ভিত্তি করেই তাদের খেলাফতের পরিনামদর্শিতা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং স্থায়ীত্ব নির্ভরশীল ছিল।

আর উক্ত খলিফাগণ নবী (সা.)-এর সঙ্গে থেকে সেই সকল হাদীসগুলো সংরক্ষণ করেছিলেন যা তাদর রাজনীতির বিরুদ্ধে ছিল না। বিখ্যাত রেওয়ায়েত দ্বারা জানা যায় যে, মোয়াবিয়া ৯ম হিজরীতে মুসলমান হয়েছিল আর খুব অল্প সময়ই নবী (সা.)-এর সঙ্গে ছিল এবং বয়ান উপযোগী হাদীসগুলোও তার স্মরণ ছিল না। বিধায় সে বাধ্য হয়ে আবু হুরায়রা, আমরু ইবনুল আ’স এবং কিছু সাহাবাকে এই বিষয়ে নিযুক্ত করল যেন তারা তার ইচ্ছানুসারে ফতোয়া দেয়। মোয়াবিয়ার পরে বনী উমাইয়া ও বনী আব্বাসীয়রাও তার উক্ত প্রশংসিত সুন্নাতের উপর আমল করেছে। সুতরাং প্রত্যেক শাসকের বগলে/পা চাটা একজন করে ‘কাজীউল কুজ্জাত’ উপস্থিত থাকতো।

যার দায়ীত্ব ও কর্তব্য ইহাই হতো সে যেন কাজীর মসনদে বসে ঐ সমস্ত ব্যক্তিবর্গকে নিযুক্ত করে যারা রাষ্ট্রের পক্ষে ও উহার বিধি-বিধান মতে আমলকারী হয়। এবার আপনাদের জন্য সেই সমস্ত কাজীদের প্রকৃতি সম্পর্কে জানা একান্ত জরুরী যারা নিজেদের সরদারকে খুশি করার জন্য নিজেদের প্রতিপালককে রাগান্বিত করেছে। অতঃপর ইহা জানা যাবে যে, রাষ্ট্রীয় পদ-পদবী হতে পবিত্র ইমামগণকে কেন দূরে সরিয়ে রাখা হতো। দীর্ঘ ইতিহাসে আপনি তাঁদের মধ্যেকার কাউকেই কাজী হিসাবে পাবেন না আর না ফতোয়ার মসনদে আসীন পাবেন। আবার আমরা সুন্নি মাযহাবের উন্নতির বিষয়ে যা হচ্ছে শাসক গোষ্ঠীর দয়ার উপর ভিত্তিশীল, যদি বেশি গভীরে অনুসন্ধান করি তাহলে আমি ইমাম মালিকের মাযহাব থেকে মুখোশ উন্মোচন করার জন্য একটি উদাহরণ উপস্থাপন করব।

কেননা এটিকেই সবচেয়ে বড় ও বিসস্তৃত মাযহাব বলে অনুমান করা হয়। মালিক সাহেব মোয়াত্তা রচনা করার কারণে বিখ্যাত হয়েছিলেন। এই কিতাব তিনি স্বয়ং রচনা করেছিলেন। বিধায় আহলে সুন্নাতের নিকট কোরআনের পরে ইহাই হল সর্বোচ্চ সহীহ্ শুদ্ধ কিতাব। আহলে সুন্নাতের কিছু কিছু লোক তো ইহাকে বুখারীর উপর প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।

মালিক যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। এমনও বলা হতো যে, মদীনাতে মালিকের উপস্থিতিতে আর কেউ কি ফতোয়া দিতে পারে? তাকে ‘দারুল হিজরাত (মদীনা)’-এর উপাধীতে ভূষিত করা হয়েছিল। প্রকাশ থাকে যে, মালিক যখন ‘বায়াতে ইকরাহ্’-কে হারাম হওয়ার ফতোয়া দিয়েছিলেন তখন সেই সময়কার মদীনার হাকিম জাফর বিন সুলায়মান তাকে ৭০ কোড়া/চাবুক মারিয়ে ছিল। এ বিষয়টিকেই মালেকীরা সর্বদাই উপস্থাপন করে থাকেন এবং বলেন যে, মালিক তো সর্বদাই হুকুমাতের বিরোধিতা করতেন। এ কথাটি সত্য নয়, কেননা এই লোকেরা যে কাহিনীটি বয়ান করে তারাই আবার পরবর্তী কাহিনীটিও বয়ান করে থাকে।

এখন আমি আপনাদের সম্মুখে উহার বিস্তরিত বর্ণনা উপস্থাপন করছি। ইবনে কোতায়বাহ্ বলেন, লোকেরা বলে থাকে যে, মালিককে কোড়া/চাবুক মারার সংবাদটি আবু জাফর মনসুর যখন পেল তখন সে খুবই দুঃখিত হলো এবং মদীনা থেকে জাফর বিন সোলায়মানকে বরখাস্ত করার পত্র লিখে পাঠাল আর তাকে বাগদাদে আসার হুকুম দিল। তারপর মালিক ইবনে আনাসকে চিঠি লিখে বাগদাদে আগমনের দাওয়াত দিল। কিন্তু মালিক প্রত্যাখ্যান করলেন এবং আবু জাফরকে চিঠি লিখলেন যে, এ ব্যাপারে আমাকে ক্ষমা করা হোক এবং আমার ওজরকে কবুল করা হোক। আবু জাফর আবারো লিখে পাঠালো যে, আগামী বছর আপনি আমার সাথে হজ্জে দেখা করুন, ইনশা আল্লাহ আমি হজ্জে যাব।

[সূত্র: তারিখে খোলাফা হতে ইবনে কোতায়বাহ্, খন্ড-২, পৃ-১৪৯] আমীরুল মুু’মেনীন আব্বাসী খলিফা আবু জাফর মনসুর যখন নিজের চাচাতো ভাই জাফর বিন সোলায়মানকে মদীনার গভর্নারী থেকে শুধুমাত্র এই কথার জন্য বরখাস্ত করেছিল যে, সে ইমাম মালিককে কোড়া মারিয়ে ছিল, তখন এই কথাটিই স্বয়ং বিচার-বিবেচনা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে! কেননা জাফর বিন সোলায়মান নিজের চাচাতো ভাইয়ের খেলাফতের সমর্থনেই তো কোড়া মারিয়ে ছিল। এ দৃষ্টিকোণ থেকে তো আবু জাফর মনসুরের উচিৎ ছিল মদীনার গভর্নরকে আরো সম্মানিত করা আর পদন্নোতি দেয়া, নাকি এভাবে তার অসম্মান করে বরখাস্ত করা উচিৎ হল, যে তাকে বরখাস্ত করে কঠিন ভাষায় মদীনায় ডেকে পাঠান হল। তারপর খলিফা স্বয়ং পত্র লিখে মালিকের নিকট ক্ষমা চাইল এবং তাকে খুশি করার চেষ্টা করে। ইহা তো বড় আজব কথা! এর দ্বারা তো বুঝা যাচ্ছে যে, মদীনার গভর্নর জাফর বিন সোলায়মান কর্তৃক নির্বুদ্ধিতাবশতঃ এমন কাজ সম্পাদিত হয়েছিল। সে রাজনীতি আর উহার সুক্ষ্ম বিষয়াবলী সম্পর্কে অজ্ঞ ছিল যে, মালিক ছিল খলিফার বিশ্বস্ত এবং হারামাইন শরীফের কেন্দ্রবিন্দু।

যদি এমনটি না হতো তাহলে মনসুর কষ্মিনকালেও নিজের ভাইকে মদীনার গভর্নরী থেকে বরখাস্ত করতো না। কেননা মালিক ‘বায়াতে ইকরাহ’ হারাম হওযার ফতোয়া দিয়ে ছিলেন, এ দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি শাস্তি পাওয়ার যোগ্য ছিলেন, বিধায় জাফর তাকে শাস্তি দিয়ে ছিল। আর এমনটি তো আজও আমাদের চোখের সম্মুখে ঘটে থাকে যে একজন হাকিম রাষ্ট্রের আতংক এবং দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য কাউকে জেলে পাঠিয়ে দেয় কিন্তু পরবর্তীতে যখন তার সম্মান ও মর্যাদার কথা জানতে পারে যে তিনি হলেন কোন উজিরের নিকটাত্মীয় অথবা রাষ্ট্র প্রধানের স্ত্রীর পরিচিত কেউ তখন উক্ত হাকিমকে নিজের পদ থেকে বরখাস্ত হতে হয় এবং তাকে অন্য কোন দায়ীত্ব দেয়া হয় যার সম্পর্কে উক্ত হাকিম সাহেব নিজেও কিছু জানেন না। এ স্থানে আমার সেই ঘটনাটি স্মরণ পড়ে গেল যা তিউনিসে ফ্রান্সের আধিপত্যের যুগে ঘটেছিল। ঘটনাটি ছিল এই যে, খ্রীষ্টানদের ধর্মীয় গুরু এবং তার দলবল এক রাতে আল্লাহ আল্লাহ শ্লোগান আর তরবারী ও চুরি-চাকুর ঝনঝনানি দিতে দিতে পথ চলছিল।

এমন কি তারা নিজেদের স্বভাব বশতঃ ‘তাকিয়া শরীফ’ (যেমনটি সুফিদের ক্বাদেরিয়া ফেরকার হয়ে থাকে)পর্যন্ত পৌছে গেল। ঐ পথে একজন পুলিশ অফিসারের বাসা ছিল। সে তাদের হা-হু শব্দ দ্বারা বিরক্ত হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এলো এবং তাদের তরবারি ইত্যাদী ভাংচুর করে ফেলে দিল আর তাদের দলকে ছত্রভঙ্গ করে দিল, কারণ তারা পথচারি নিয়মের অসম্মান করেছিল, আবার রাত তখন ১২টা বাজে। অতঃপর সেখানকার সি.আই.ডি যখন গভর্নরকে উক্ত ঘটনার সংবাদ দিল তখন সে উক্ত পুলিশ অফিসারের প্রতি খুবই রাগান্বিত হয়ে তাকে বরখাস্ত করে দেয় এবং তিন দিনের মধ্যে কাফসা নামক শহরটি ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিল। খ্রীষ্টানদের ধর্মীয় গুরুকে ডেকে ফ্রান্স সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইল এবং তাকে অনেক মালামাল প্রদান করে সন্তুষ্ট করল।

আর এই মালামাল এ জন্য দেয়া হয়ে ছিল যেন সে নিজের তরবারী, ছুরি-চাকু ইত্যাদী ক্রয় করে নেয়। আর যখন দরবারের একজন ঘনিষ্ট ব্যক্তি গভর্নর সাহেবকে জিজ্ঞাসা করল যে, আপনি এমনটি কেন করলেন? তখন তিনি উত্তর দিলেন যে, উক্ত অসভ্যদেরকে এমন সব বিষয়ে মশগুল (ব্যস্ত) রাখাটাই আমাদের জন্য শ্রেয়। অন্যথায় তারা আমাদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করবে এবং আমাদেরকে গ্রাস করে ফেলবে, কারণ আমরা তাদের অধিকার খর্ব করেছি। আসুন এবার আমরা ইমাম মালিকের দিকে ফিরে যাই আর স্বয়ং তার মুখেই আবু জাফর মনসুরের সাথে তার সাক্ষাৎকারের কাহিনী শ্রবন করি। চলবে............ ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।