সবুজ লালের চেতনায়.. বিজয় মাসে ভারতীয় প্রেম ও একটি রসহীন রসরচনা
খবরটোয়েন্টিফোর.কম: আমাদের দেশপ্রীতির ইতিহাস বিশ্বজোড়া। ১৯৭১ সালে বাংলা মায়ের সন্তানেরা যেভাবে দেশমাতাকে রক্ষা করতে ঝাপিয়ে পরেছিল তাতে সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশের নাম ছড়িয়ে পড়েছে অত্যন্ত দ্রুত। এমনকি দেশপ্রেমের উদাহরন হিসেবেও বাংলাদেসের নাম নেওয়া হয় শ্রদ্ধাভরে।
আমাদেরই পাশের দেশ ভারত। একেবারে নিকট প্রতিবেশী।
তাই প্রতিবেশীদের প্রতি আছে অনেক ভালোবাসা। কিন্তু এই ভালবাসার প্রকাশ যদি হয় তাদের সংস্কৃতি ও প্রথা এমনকি ভাষাকে অনুসরন করে তবে বাঙ্গালীর দেশপ্রীতির সংগা নতুন করে রচনা করাটাই উচিত হবে বলে মনে করি। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহ গুলোতে ছাড়া হচ্ছে ভারতীয় ছবি। আমার মনে হয় প্রেক্ষাগৃহ মালিকগন ভুলে গেছেন যে সামনে বিজয় মাস। এই বিজয় মাসে এহেন কাজটি কতটুকু যুক্তিসংগত বলে তাদের মনে হয়েছে জানি না।
বাঙ্গালি জাতির আরো একটি উপাধি বিশ্বজোড়া। আর তা হল বুদ্ধিমান জাতিস্বত্তা। বাংলাদেশিদের তথা নিজেদেরকে বুদ্ধিমান বলতে গিয়ে বেশ পুরানো একটা কৌতুক মনে পড়ে গেল। একবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে আয়জোন করেছেন আর্ন্তজাতিক এক অনুষ্ঠানের। বিশ্বের অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরাও আমন্ত্রিত।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা হল ইন্দিরা গান্ধীর,ভারতের তত্কালিন রাষ্ট্রপ্রধান। তো সেই মহাঅনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয়েছে এক মহাভোজের। মহাভোজ তো মহাভোজ একেবারে এলাহি কান্ড। সমস্ত প্লেট চামুচ সব-ই খাঁটি সোনার তৈরী। মিসেস ইন্দিরার খেয়াল হল চোখের সামনে এতসব স্বর্ণমোড়া জিনিসপত্র,একটা কিছু নিয়ে নিলে কেউ কি আর টের পাবে? বঙ্গবন্ধু আর মিসেস গান্ধী একই টেবিলে বসেছেন খেতে।
এমন সময় ইন্দিরা সবার অলক্ষে একটা চামুচ নিয়ে টুপ করে হাতব্যাগের ভিতর ঢুকিয়ে ফেলল। কিন্তু বিধিবাম,সবার চোখকে ফাঁকি দিলেও মুজিব সাহেবের চোখ এড়াতে পারে নি ব্যাপারটা। বঙ্গবন্ধু ভাবলেন একটা মজা হোক। খাওয়া দাওয়া শেষে তিনি সকলের উদ্দেশ্য ঘোষনা করলেন জাদু দেখাবেন। সকলেই উত্ফুল্ল।
তিনি টেবিল থেকে একটা স্বর্ণের চামুচ নিয়ে বললেন, “এই দেখুন
আমার হাতে একটা চামুচ, এই চামুচটা আমি আমার পকেটে ঢুকিয়ে মিসেস গান্ধীর হাত ব্যাগ থেকে বের করব”।
এই কৌতুকটি কাউকে ব্যাক্তিগতভাবে আঘাত করার জন্য নয়। বঙ্গবন্ধুর মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে আমরা পুরো বাঙালী জাতি যে বুদ্ধিমান তার-ই ক্ষুদ্র প্রমান,যদিও কোন বাস্তব ভিত্তি নেই।
বুদ্ধিমান জাতি হিসেবে পরিচিত বাঙালীর ঘটে যে আর বুদ্ধি অবশিষ্ট নেই তাই বোঝা যায় ভারতে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার মধ্য দিয়ে নিজেদেরকে পারমানবিক বিপদের দিকে ঠেলে দিয়ে। তেল-গ্যাস চুক্তির ফলাফলস্বরপ ধনী ভারতকে আরো ধনী করে দিয়ে নিজেদেরকে জ্বালানী শুন্য করে।
আর এখন নাকি বিজয় মাসে হল গুলোতে ছাড়া হবে ভারতীয় চলচ্চিত্র। দেশ তো দেশ এখন এর সংস্কৃতিতেও ভারত ধুকে পড়ছে । এই দেশটা ষোল কোটি মানুষের। কৌতুকের মধ্য দিয়ে সেদিন ভারতকে বুদ্ধির জোড়ে হারাতে পারলেও আজ আমরা ওদের কাছে হেরে যেতে চলেছি। হোক না সেটা জোক,ভারতের কাছে একটা চামুচও ছেড়ে দেই নি-রক্ষা করতে পেরেছি, এইবার এই দেশ, দেশের সংস্কৃতিকে রক্ষা করার সময় এল যে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।