আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাঝরাতে দুই ভবঘুরের দোকানদারি

আকাশ ভরা গাঙচিল কোন কোন দিন এমন হয় যে, মনে খুব বেশি কাব্য ঘুরে বেড়ায়। আর একটা ঘটনা ঘটে; মনে হয় আমার সাথে যদি কেউ থাকতো যে কি না আমি যা বলবো তার পরের লাইনটা খুব সুন্দর করে আমার মনের মতো করে বলে ফেলবে। সব দিন এমন হয় না আর সব দিন আমার মনে এতো বেশি কাব্য ঘুরেও বেড়ায় না। ঘুমিয়ে থেকো জেগে রবো ছুঁয়ো না ভেসে যাব সেদিন এই স্ট্যাটাস দেয়ার পর নোমান ভাই পরের লাইনটা লিখলেন- ঘুমিয়ে গেলাম তোমার চোখের দাম্ভিক স্বপ্নে। জেগে যাব হয়ত তোমার পেতে দেয়া খেপাটে বাস্তবতার অক্ষম ডাকে।

অসম্ভব ভাল লাগলো। আমি রিপ্লে দিলাম- নোমান ভাই থাকেন না ভাই, আজ কবিতা কবিতা খেলি। ব্যস শুরু হয়ে গেলো। খুব সুন্দর কিছু কবিতার লাইন নোমান ভাই লিখলেন। এমনিতে নোমান ভাই ফানি পোস্ট অথবা গল্প লিখলেও তিনি খুব সুন্দর কবিতা লিখতে পারেন।

এর আগে একবার চরম সুন্দর একটা কবিতা লিখেছিলেন। এই সেই কবিতা। সন্দেহের কলঙ্কে শ্রাদ্ধ হয় বিশ্বাসের পান্ডুলিপি, অদৃশ্য আকাশে উড়ে দৃশ্যত শকুন জোনাকি। আর সে দিন থেকেই আমি নোমান ভাইয়ের এক প্রকার ভক্ত হয়ে গেছি। আজকের পোস্ট কবিতা নিয়ে।

অনেক দিন পর ব্যাক করলাম আমার প্রিয় কবিতা নিয়ে। নোমান ভাইয়ের বিপরীতে আমার কবিতা খুব একটা ভাল হয়নি তবে আমার কাছে প্রথম কবিতাটা খুব ভাল লেগেছে। ঘুমিয়ে থেকো জেগে রবো ছুঁয়ো না ভেসে যাব নোমান ভাইয়ের রিপ্লের এর পরে আমার লেখাটা ছিল একটু অভিমান ভরা। কোন নারীর প্রতি অভিমানে অথবা ক্ষোভ নিয়ে লিখেছিলাম- ঘুম ভেঙ্গো না মূর্ছা যাবে শ্রীকান্তরা মরে না তোমায় দেখে ঘোলা মেঘে এর পর নোমান ভাইয়ের উত্তর ছিল- ঘুম কাতুরে তোমার চোখ দিক না ঘুমের দিক্ষা। আমি তবু শিখে নিব জেগে থাকার শিক্ষা এখনো ক্ষোভ আমার কমলো না।

সে আসেনি এখনো আমার বসুন্ধরায়- শিখে গেলাম জেগে থাকা রাত্রি দিন তোমায় ভাবা অসমাপ্ত অপেক্ষা পায় না তোমার দেখা আমার এই ক্ষোভ ধীরে ধীরে নোমান ভাইয়ের মাঝেও ছরিয়ে দিয়েছি ভেবে একটু খারাপই লাগলো। ঘুমিয়ে যাওয়ার হাজারো রাস্তা আছে নেই কেবল জেগে উঠার উৎসাহ। বৃষ্টি চিরকালই আমার প্রিয়। আমার সব চাইতে প্রিয় ঋতু বর্ষা। তাকে খুব মিস করছিলাম।

এই নির্লিপ্ত নারীর ঘুম ভাঙ্গাতে গিয়ে ক্লান্ত আমি ক্ষোভ দুঃখ ভুলে অসময়ের এই ভুল বৃষ্টিতে ভেজার আকুলতা লিখলাম- এই বৃষ্টি ক্ষণকাল দৃষ্টি নিমগ্নতা হেরে যাওয়া শুন্যতা নোমান ভাই বুঝি ঘুমের একটু বেশি গভীরেই ডুবে গিয়েছিলেন- ঘুমেরও হবে জাগরন ঘুম হবে আমরন। ট্র্যাক চেঞ্জ করলাম আবারো। লিখলাম- ভুলের সাতকাহন অবিয়াম আকাশ দখল হল না স্বপ্ন লেখোন অনেক হয়েছে ভুল কড়া নারোন... সিগারেট ছাড়া আমাদের এক মুহূর্ত ও চলে না। কি করবো, সেই তো আমাদের সব চেয়ে প্রিয় বন্ধু। সবাই ছেড়ে গেলেও সিগারেট আমাদের ছেড়ে যায় না।

জ্বলতে থাকে আঙ্গুলের ফাঁকের খুদ্র একটু আশ্রয়ে। সিগারেট বিরতির আগে নোমান ভাইয়ের লেখা শেষ কবিতা ছিল এমন- মাঝরাতে দুই ভবঘুরের দোকানদারি সিগারেটের ছাইতে সুখ আহা রকমারি। আমার সাতকাহনের আন্সার কিন্তু নোমান ভাই না দিয়েই চলে গিয়েছিলেন তার প্রিয় বন্ধুর সাথে কিছুটা নিভৃতে সময় কাটাতে। এসেই লিখলেন- সাতকাহন আর আটকাহন সব কাহনেই এক কাহন যন্ত্রনা ভরন পোষন। অভিমান কি এতো সহজে মরে? না, মরে না।

আমিও মেরে ফেলতে পারিনি। আবারো সেই বৃত্তের পরিধি ঘুরে চলে এলাম শুরুর বিন্দুতে, সাথে চিরচেনা প্রিয় বৃষ্টি- মেঘের বৃষ্টি নিয়ে সাজিয়েছি বাসর আমি মেঘ তুমি কান্না হও আমি নির্লিপ্ত তুমি দুঃখ হও রোদে পুড়ে দেনা পাওনা শেষ হোক যাক ধূসর হয়ে এই ভুল বাসর... নোমান ভাই কি হঠাৎ করে বিদ্রোহী হয়ে উঠলেন? কি জানি- জমুক তবে বৃষ্টি বাসর ছন্নছাড়া কপাল পাথর। বিষন্নতার চৌদ্দ পুরুষ আকাশ বাতাস কেঁপে উঠুক শেষ কবিতায় এসে আমরা একটু ছন্নছাড়া হয়ে গিয়েছিলাম। নোমান ভাই আবার লিখলেন- ঘুমকে নিয়ে আমার বাসর ঘুম করছে পরকীয়া। চুমুহীন ভুল বাসরে গোলাপ ঝুলছে অশ্রু নিয়ে।

মনকে সান্ত্বনা দেয়া ছাড়া আর কি করতে পাড়ি আমি? জানি তুমি আসবে না কখনো। আর এও জানি তোমাকে ছাড়াও আমি হয়তো বাঁচবো কিন্তু তাকে কি বেঁচে থাকা বলবে? ভুল ভাবে একটু আঘাত করলাম তোমাকে। তুমি কি ব্যথা পেয়েছ? তুমি কি কাদছ আমাকে অন্য কারো হয়ে যেতে দেখে? মেঘ বালক, ছন্নছাড়া আবার হবে দেখা তুমি থেকো, আমি থাকবো না আর একা। কষ্ট পেয় না। ভয়ে আঁতকে উঠো না।

তোমার মেঘবালক তোমারই আছে মেঘা। উৎসর্গঃ পোস্ট উৎসর্গ নোমান ভাইকে । নোমান ভাই আমার সমবয়সী হলেও আমি তাকে ভাই এবং আপনি করে ডাকি। সাথে একটা নাইস নামেও ডাকি। শুনবেন সেটা কি? একদিন পূর্ণিমার রাতে নোমান ভাই খুব বেশি আবেগাক্রান্ত হয়ে স্ট্যাটাস দিলেন; যার সারকথা হচ্ছে তিনি জোছনায় ভিজে গেছেন।

সেই থেকে তার নাম ভেজা ভাই। সেই থেকে তিনি ভেজা নোমান আবার কখনো শুধুই ভেজা ভেজা। আমার আর প্রিয় ডেমনের স্ট্যাটাস কাব্য এখানে। ছবিঃ ইন্টারনেট থেকে।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।