আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাইস্কুল [শুরু থেকে এপর্যন্ত]

ছন্দহীন জীবন বড়ই নীরস ১. আমার নাম রুবেল। হাজিরা খাতায় মোহাম্মদ রুবেল। কিন্তু ডাক্তারের কাছে, বাসের টিকিট কাটতে কিংবা খেলায় নাম লেখাতে গেলে লিখি শান্ত রুবেল। এসব জায়গায় ইচ্ছেমতো নাম লেখালেও এফিডেভিটের পেছনে টাকা খরচের ধান্ধা করতে হয় না। জিনিয়া আমাকে একদিন শান্ত বলেছিলো।

নাম নয়, আমার স্বভাব না কি শান্ত। সেই থেকে এই নামের প্রতি আমার দুর্বলতা। আমি ক্লাশ নাইনে পড়ি। যদিও সিক্স থেকে হাইস্কুল শুরু, কিন্তু সেভেনে ওঠার পর ভাব আসা শুরু হয়। ভাব বলতে ব্যাটা ব্যাটা ভাব।

মেয়েরা যেমন সবসময় বয়স কমাতে চেষ্টা করে, আমাদের থাকে বয়স বাড়ানোর চিন্তা। সেভেনে থাকতেই গালে ব্লেড চালাই। কিন্তু তখন কোনো লাভ হয়নি। এইটের শেষের দিকে এসে দেখি গোঁফ-দাড়ির জায়গাগুলো এমনিতেই ঘন আর মোটা হতে শুরু করেছে। এখন তো নিয়মিত সেলুনে যাই।

আমাদের মহল্লার সেলুনে যে নাপিত, ওর নাম শঙ্কর। শঙ্করের একটা বাচ্চা আছে। এরপরও আমরা ওকে তুই করে বলি আর ও আমাদেরকে ডাকে আপনি বলে। সেলুনে গেলে ভাব আনার জন্য আগেই দোকান থেকে পাঁচ টাকা দামের একটা ব্লেড কিনে নিয়ে যাই। দোকানদাররা কোনো জিনিস কিনতে গেলে বলে কয় টাকা দামেরটা নেবেন? কোনটা ভালো কোনটা খারাপ সেটা জিজ্ঞেস করে লাভ নেই।

তাদের কাছে সবই ভালো। ব্লেড নিয়ে শঙ্করের হাতে দিয়ে বলি : এই নে, তোরা তো আবার একটা দিয়ে যতজনকে পারিস কামাস। কখন আবার এইডস বানিয়ে ফেলিস! ব্লেডে আবার এইডস অয় ক্যামতে? কীভাবে জানিস না? এইডসঅলা কাউকে কামাতে গিয়ে যদি কেটে ফেলিস, এরপর একই ব্লেড দিয়ে আরেকজনকে কামাতে গিয়েও রক্ত বের করিস, তার শরীরে এইডসঅলার রক্ত ঢুকে কাজ শুরু করে দেবে, বুঝলি? সেলুনে কেউ বাকি রাখে না। কিন্তু আমাদেরকে বাকি রাখতে হয়। নইলে ক্ষমতার প্রকাশ ঠিকভাবে হয় না।

ক্ষমতাবানদের সাথে সবাই সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করে। বিশেষ করে দুর্বলরা এই কাজটা বেশি করে। মেয়েরা যেহেতু নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে সবসময় চিন্তা করে, সেজন্য ওরা সাহসী ছেলেদেরকে খোঁজে। আমি যদি ক্ষমতা প্রকাশের চেষ্টায় না জড়াতাম, তাহলে এই বয়সে এতকিছু জানতাম না। খেয়াল করে দেখেছি, আমাদের ক্লাশে চার ধরনের ছেলে আছে।

এক ধরনের ছেলে আছে যারা স্বার্থপর। মেয়েদের চেয়েও বেশি স্বার্থপর। এরা মা-বাপের অতিযত্নে বড় হয়েছে। যত্ন মানে সবসময় আদর নাও হতে পারে। এর মানে লাইনে রাখার জন্য যেমন যত্ন করা দরকার তেমনটা।

এরা সমাজের ধনীক শ্রেণী নয়, কিন্তু নিজেদেরকে সবচেয়ে সভ্য মনে করে। অন্য শ্রেণীর সাথে এদের সম্পর্ক খুবই কম। কারো সুখে-দুঃখে এরা জড়ায় না। এইসব ছেলের রোল সাধারণত এক-দুই-তিনের মধ্যে থাকে। এদের প্রতি আমার চরম আক্রোশ।

এদের সমাজে মদও চলে কিন্তু এমনভাবে যাতে মাতাল না হওয়া লাগে। ডায়েট কন্ট্রোল কালচারটা এদের মধ্যে বেশি। দ্বিতীয় শ্রেণীতেও কিছু আছে যারা হয় প্রচণ্ড মেধাবী। এদের সাইজ সাধারণত ছোট থাকে। প্রথম যে শ্রেণীর কথা বললাম, ওরা কোনো মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে বড় চাকরি নিয়ে বিদেশে যায়।

আর এই শ্রেণীর ছেলেরা মেধার জোরে দেশেই সরকারী বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণীর চাকরি পেয়ে যায়। বিদেশেও স্কলারশিপ নিয়ে যায়। তৃতীয় এবং বড় যে অংশটা আছে, তারা ঠিক জানে না তারা কী হবে। তারা হলো মধ্য শ্রেণী। এরা ক্ষুদ্র ব্যবসা কিংবা ছোট চাকরিতে লেগে যায়।

বেকারও থাকে অনেক। চতুর্থ শ্রেণীতে আছে আমার মতো ছেলেরা। এদের মধ্যে যে মেধাবী নেই তা নয়। কিন্তু এরা লেখাপড়া করবে না। এই শ্রেণীর আবার দুইটা ভাগ আছে।

প্রথম ভাগে আমার মতো বড়লোকের ছেলেরা, যারা ইচ্ছে করলে যখন-তখন ব্যবসা বা বিদেশ করতে পারে। দ্বিতীয় ভাগে অতিগরিব ছেলেরা, যারা হয় সন্ত্রাস না হয় কারিগরী/অকারিগরী কাজে লেগে যায়। অকারিগরী কাজ বলতে যে কাজে কোনো যন্ত্রপাতি লাগে না। অন্যদের কথা অনেক বললাম। এবার আমার কথায় আসি আবার।

আমার আব্বু তো আগেই বললাম ব্যবসায়ী। আমি কী করি না করি তা নিয়ে আব্বুর অত মাথা ঘামানোর সময় নেই। আমরা যা চাই সাথে সাথে পেয়ে যাই। আম্মু থাকেন হিন্দি সিরিয়াল, শপিং আর বেড়ানো নিয়ে। এর মধ্যে খাবারের ব্যাপারটা উল্লেখ না করলেই নয়।

ডাক্তার তাকে বলেছেন খাবার কমাতে। কিন্তু তার কাছে দুনিয়ার যেকোনো খাবারই মজা লাগে। ডাইনিং টেবিলের কাছ দিয়ে গেলে আর তার বাধ মানে না। তিনি ওজন কমাতে রাজী; কিন্তু না খেয়ে নয়। আমার বোন আমার চেয়ে ছোট।

ওর নাম রুজিনা। রুবেল-রুজিনা নামগুলো পুরনো মনে হয় না? আমার আব্বু যদিও বিএ পাশ, কিন্তু মফস্বলে থেকে পড়ালেখা করেছেন। সেজন্য এরকম পুরনো নাম রেখেছেন আমাদের। রুজিনা পড়ে সেভেনে। ও আবার আম্মুর বিপরীত।

খুবই স্বাস্থ্যসচেতন। তবে কলা ওর পছন্দের খাবার। কলা খেলে না কি চেহারার লাবণ্য বাড়ে। কলা আসে নরসিংদী থেকে। একদম গাছপাকা।

আমাদের সব খাবারই এভাবে বিভিন্ন জায়গা থেকে খাঁটিগুলো আসে। মাছ নারায়ণগঞ্জ, সবজি কুমিল্লা, চাউল ঠাকুরগাঁও, ঘি-মধু খুলনা-বাগেরহাট। এর জন্য আমাদের কোনো বাড়তি খরচ নেই। আব্বুর টেক্সটাইলের শ্রমিকরা যে যেখানকার, তাকে দিয়ে সেখান থেকে এসব আনানো হয়। রুজিনা এসবের কারণে বাইরের খাবার বলতে গেলে খায়ই না।

পোশাকের ব্যাপারেও ওর ভিন্ন রুচি। ওর ডিজাইনের পোশাক দুনিয়ার আর কারো গায়ে থাকতে পারবে না। সেজন্য ওর পোশাক আম্মু কখনো কিনতে পারে না। ও নিজেই ডিজাইন করিয়ে নেয়। রুজিনার কথা বলতে বলতে ও চলে এসেছে।

এখন ওর সাথে একচোট ঝগড়া হবে। ভাইয়া, তুমি আমার রুমে গিয়েছিলে আবার? কেন? আমার ড্রয়ারে অ্যালবামের ছবিগুলো সব এলোমেলো। এলোমেলো হলেই আমি করেছি? অন্য কেউ করতে পারে না? এই, তুমি আমার দিকে তাকিয়ে বলো। পাশে বসে আমার দিকে তাকিয়ে বললো। আমি খাটে শুয়ে আছি।

ওর দিকে তাকাতেই ও বললো : তোমার শরম নেই তুমি মেয়েদের ছবি দেখো? কেন, তোর বান্ধবীদের ছবিগুলো বলেছে যে আমরা শরম পাই? ওগুলো আমাদের সিক্রেট ছবি না? চিন্তা নেই, তোর বান্ধবীদের কাউকে আমি পছন্দ করি না। আমার বান্ধবীরা মনে হয় তোমার জন্য পাগল! তোর বান্ধবীরা কেন, ওদের মা-বাপসুদ্ধ পাগল। আমি পয়সাঅলার ছেলে না? ওদের মনে হয় পয়সা নেই! রুজিনা এসব নিয়ে কথা বলার জন্য আসেনি, আমি জানি। ও এখন যেটা বললো, তার অপক্ষায়ই আমি ছিলাম। খপ করে ও আমার হাত ধরে ফেললো।

ভাইয়া, আমার ঐ কাগজটা দাও না। কোন কাগজটা? ভাইয়া, ঢং কোরো না। তুমি যে আমার রুমে গেছো, তার বড় প্রমাণ হলো আমার রুমে এখনো তোমার গন্ধ আছে। আমার গন্ধ? হুঁ, তুমি যে সিগারেট আর চুইংগাম সমানে খাও, গায়ে স্প্রে মেখে ভরে রাখো, যে-কেউ এসব গন্ধ টের পায়। ভাইয়া, এখন আমার কাগজটা দাও না।

রুজিনা আমার দিকে আরো বেশি নুয়ে পড়লো। আমি লজ্জায় সরে গিয়ে বললাম : আচ্ছা, তুই তোর রুমে যা। মেয়েদের হালকা-পাতলা পোশাকে আমি যখন সেভেন-এইটে, তখন খুব পুলকিত-উত্তেজিত হতাম। এখন এগুলো স্বাভাবিক হয়ে গেছে। তারপরও বোন বলে কথা।

আমার কাছে অবশ্য কেন জানি আমার চেয়ে বয়সে দ্বিগুণ যেসব নায়িকা, তাদেরকে ভালো লাগে। পপির চাহনি, প্রিয়াংকার হাসি—এগুলো আমাকে খুবই মুগ্ধ করে। রুজিনার কাছেও এসব কথা বলেছি। আমাদের মধ্যে প্রায় সব কথাই হয়। কিন্তু রুজিনা এখন যে-কাগজটা খুঁজতে এসেছে, সেটা যে একটা গোপন চিঠি, তা আমি জানি।

তবে কোনো ছেলেকে লেখা চিঠি নয়। ছেলেদের নিয়ে ওর মধ্যে খুব একটা গরজ নেই। ও জানে ও ধনীর দুলালী, যাকে চাইবে, তাকে খুব সহজেই পেয়ে যাবে। আমি বললাম : তুই যদি বলিস ওটার লেখা কীভাবে পড়তে হবে, তাহলেই আমি দেবো। মুহূর্তেই ওর চেহারা মলিন হয়ে গেলো।

আমি ওকে ডেকে বালিশের নিচ থেকে চিঠিটা বের করে দিয়ে দিলাম। চিঠিটায় কোনো অক্ষর নেই। বারো রঙের পেন্সিলের দাগ বিভিন্নভাবে দেয়া আছে। লম্বা, শোয়ানো, ডানে বাঁকা, বামে বাঁকা—এরকমভাবে। সব অক্ষরই ওতে আছে, আমি নিশ্চিত।

ছোটবেলা থেকেই ওর প্রতিটা জিনিস খুঁটিয়ে দেখা আমার স্বভাব। ২. : রুহিত, কানা সেলিমরে দিলাম দুইডা থাবড়া। : ক্যা? : আরে, আমারে কয় আমার কাছে ফেন্সি বেচবো না। হালায় আমি বলে অহনো ছুডো। : কী রে আলামিন, তুই যে মিজানের মুহের দিকে চাইয়া রইছোছ? ও, তুই তো আবার অর কাহিনী জানোছ না।

অয় আবার থাবড়াইতে ওস্তাদ। হেই সেভেনে থাকতে অয় ফিরোজ স্যারের কানে ডলা মারছিলো। : ক্যামনে? : আমগো লগে চ্যালেঞ্জ লাগলো, স্যারের কানডলা দিবো। স্যারে যহন পিরিয়ড শ্যাষ কইরা ক্লাশ থিকা বাইর ওইতাছে তহন অয় দৌড় দিয়া কইলো স্যার স্যার খাড়ান। অ্যারপর স্যারের কানে ডলা দিয়া একটা বিষপিঁপড়া আঙ্গুলের মাতায় ধইরা কইলো, দ্যাহেন স্যার আপনার কানে ঢুকতে লইছিলো।

স্যারে তাড়াতাড়ি শরমে ক্লাশ থিকা বাইর ওইয়া গ্যাছে। আসলে অয় কী করছিলো জানোছ? আগেত্থিকাই একটা পিঁপড়া হাতে রাখছিলো। আচ্ছা যাউক গা, অহন ক মাল আনছোছ কি না। : থাবড়াইলাম আর অয় মাল দিবো না? : ওই মাল কবি না। মাল হুনলেই আমার কেমুন জানি লাগে।

ছেমড়িগুলারেও কছ মাল, আবার নিচ দিয়া যেইডা বার অয় হেইডারেও কছ মাল। এইডা খাওনের জিনিস, তাও তর কাছে মাল? : তাইলে কি ফেন্সিডিল কমু? পুলিশের কানে খবর যাওনের লাইগা? : ক্যা, পানি কইতারোছ না? : আচ্ছা পানি কমু নে। অহন তাড়াতাড়ি খুল। : অ্যামনে দুইডা তিনজনে খাইয়া পোষাইতো না। একজনে দুইডা কইরা খাইতে ওইবো।

: খ্যাপই তো মারতে পারোছ না। : আরে কী খ্যাপ মারমু? ঐদিন এক জিনিস পাঁচশো ট্যাকায় ব্যাচলাম বড় ক্যালকুলেটর মনে কইরা। মারছিলাম এক প্রাইভেট কার থিকা। হালায় জানলা খুইল্লা টিপতাছিলো। পরে হুনলাম ঐডারে না কি ল্যাপটপ কম্পিউটার কয়।

কম সে কম তিরিশ হাজারে ব্যাচতে পারতাম। : আমি একটা জাগা পাইছি। পর্ধানমন্ত্রীর ওফিশ আর সংসদ ভবনের মাঝখানের যেই রাস্তাডা, হ্যানে কুনু পুলিশও থাকে না, পাবলিকও তেমুন থাকে না। পুলিশ থাকে রাস্তার মাতায়। ডেলি একটা জোড়া ধরতে পারলেই চলবো।

: হালায় কয় কী রে? নতুন আইছো তো চান্দু, তোমার নাম আবার আলামিন...। ইট্টু পরপর যে আর্মির খোপ আছে, দ্যাখছোছ? : আরে বলদা, জোড়ার কাছ থিকা মারা সহজ। কবি যে চিল্লাইলে মাইয়ারে রাস্তায় টানতে টানতে কমু আমগো ইজ্জত রাখোছ না? তর মতন বইনরে আমগো দরকার নাই। আর ছ্যাড়ারে মাইর দিতে দিতে কমু আমগো সোনার মতন বইনরে তুই পডাইছোছ? : আরে, তরেই তো আমগোর ওস্তাদ মানতে হইবো রে। নে নে চুমা নে।

কনে দিমু রে? গালে না কপালে? এই মিজানে তিন বছর ধইরা যা পায় নাই হেই লাইন তুই বাইর করছোছ। তুই একখান মাল রে। : এল্লাইগা আমার রানে থাবড়া দিবি? : তরে কইছি না অয় আবার থাবড়াইতে ওস্তাদ? : তাইলে দুইদিন পর নাম ওইয়া যাইবো গা থাবড়া মিজান। : কী করমু দোস্ত, ক। ইন্দুরের দাঁত য্যামনে সুলায়, আমার হাতও অমনে সুলায়।

: তাইলে তোমারে গাঞ্জা ধরায়া দিতে ওইবো। বইয়া বইয়া গাঞ্জা ডইলা গুঁড়া করবা। : বাদ দে। তাইলে রুহিত, আইজকা থিকা আমরা আলামিনরে ওস্তাদ মাইন্না নতুন অপারেশন শুরু করতাছি। : মিজান, আমি অন্য একটা লাইন পাইছি।

: কীয়ের লাইন? : একজনে আমগোরে একটা পরস্তাব দিছে। : খুইল্লা ক। : লুঙ্গি পরা আছি। লুঙ্গির নিচ পুরি খোলা। : ঠিক আছে, অহন ক।

: একটা হাউজিং কোম্পানি। অগোর য্যাহানো পরজেক্ট, হেই জাগার জমিগুলা কিন্না দ্যাওনের ব্যবস্থা করা। না ব্যাচতে চাইলে থেরেট দ্যাওন। : তরে খুঁইজ্জা পাইলো ক্যামনে? : পাইছে য্যামতেই ওউক। অহন রাজী কি না ক।

: কোম্পানির কি লোক নাই? : হ্যারা কি থেরেট দ্যাওনের কাম করতে পারে? : বুইজ্জা লই। কত দিবো? : কাম ওইলে পাঁচ হাজার কইরা। : ঠিক আছে, দেহুম নে। আইজকা কয় তারিখ, ক। : সাত তারিখ।

কিন্তু তর ওই কামে আমি নাই। গার্মেসের ছেড়িগুলায় পায় কয় ট্যাকা, তুই আবার হেডি মারতে যাছ। : মারার লগে আরো কিছু থাকে। মজা লওন যায়। : এই কামডা কিন্তু তুই ভালা করোছ না।

: তাইলে তুই এই লাইনে আছোছ ক্যা? খারাপ লাইনে থাকবি, আবার ভালা কামও খুঁজবি! : মিজান, তুই কিন্তু ঠিক কইরা কতা ক। : হ, আমি বুজি না? তর আবার ভয় আমি কহন তর জেসমিনরে লাগাই। এল্লাইগাই তো তুই গার্মেসের মাইয়াগো মারতে চাছ না। আমার উপরে বিশ্বাস নাই, তাইলে থাকোছ ক্যা আমার লগে? : তর উপরে বিশ্বাস থাকবো ক্যামনে? গত মাসেও এক মাইয়ারে মাইরা ফালাইলি। : তাইলে আমার উপরে বিশ্বাস নাই? আমার লগেও তর থাকার দরকার নাই।

: মিজান কী করোছ? হায় হায় মিজান, তুই রুহিতের গলা কাইট্টা ফালাইলি? : সরদারের উপরে কতা কইলে এমনি অয়। আমি অরে এই লাইনে আনছি আর অয় আমারে সবক দ্যায়। তুই আমার লগে থাকলে চল হ্যানতে। : অরে...। : অরে ছুঁইলেই ফ্যাসাদে পড়বি।

চল। : মি-জা-ন, তু-ই আ-মা-রে ম-র-তে পা-র-লি? ৩. আশরাফুল হক দুই ক্যালকুলেটর টিপে যাচ্ছেন সমানে। সামনে বসে তার পা টিপে দিচ্ছে জোছনা। দুই ক্যালকুলেটর একসাথে চালানোর কৌশল তিনি শিখেছেন নবাবপুর রোডের আলাউদ্দিনের কাছ থেকে। বাড়ি করার সময় আলাউদ্দিনের কাছ থেকে লোহার অনেক জিনিসপাতি কিনতে হয়েছিলো।

আলাউদ্দিনের সামনেও দুই ক্যালকুলেটর থাকে। ভুঁড়ি এত বড়, চেয়ারে বসার পর মনে হয় টেবিলে ভুঁড়ি বিছিয়ে দিয়েছে। কাস্টমার গেলে কাস্টমারকে খাওয়াতে হয়। সেই সাথে সেও না খেয়ে পারে না। দুই কাস্টমারের ফিরিস্তি সে শুনতে থাকে আর ক্যালকুলেটর টিপতে থাকে।

একসাথে দুইজনকে বলে দেয় আপনার বিল সত্তুর হাজার ছয়শো, আপনার তিপ্পান্ন হাজার। এরপর তিনি নিজে নিজে চেষ্টা চালিয়ে দেখলেন এটা অসম্ভবের কিছুই না। এবং অনেকেই এরকম কাজ চালায়। জামাকাপড় বানাতে গিয়ে সেখানেও দেখলেন তিনজন মাপ নিয়ে বলে যাচ্ছে আর একজন লিখছে। অথচ আগেও তিনি জামাকাপড় বানাতে গেছেন।

তখন খেয়াল করেননি। আমরা খেয়াল করলে অনেক কিছুই জানতে পারি। আশরাফুল হক প্রতিদিন ব্যবসার পুরো হিসাব মিলিয়ে বাড়ি ফেরেন। সন্ধ্যাবেলা অ্যাকাউন্ট্যান্টের কাছ থেকে প্রত্যেকটা ব্যবসার অপারেশন শিট নিয়ে বসে যান নিজের চেম্বারে। সাথে থাকে জোছনা।

জোছনার আসল কাজ আশরাফুল হকের পা টিপে দেয়া নয়। ওর কাজ হলো প্রতিদিন অন্তত তিনটা ছবি দেখে সেগুলোর কাহিনী বলবে। সাথে পত্রিকার খবরগুলো তো আছেই। ব্যবসায়ীদেরকে সবকিছুর খবর রাখতে হয় সবার আগে। রাজনীতিবিদরা দেশ চালায় আর রাজনীতিবিদদেরকে চালায় ব্যবসায়ীরা।

আশরাফুল হকের গার্মেন্টসের ব্যবসা। নিটিং ডাইং এবং ফিনিশিং—তিনটাই তার এখানে হয়। কর্মচারী আছে দেড় হাজার। বিভিন্ন শিফটে যখন শ্রমিকরা গার্মেন্টসে ঢোকে কিংবা বের হয় তখন আশরাফুল হকের গর্ব অনেকটা বেড়ে যায়। রাজনীতিবিদদেরকে দেড় হাজার লোক জড়ো করার জন্য অনেক কসরৎ করতে হয়।

অবশ্য আদর্শিক কোনো দল হলে আলাদা কথা। কিন্তু তিনি ইচ্ছে করলেই এই লোকগুলোকে একত্র করতে পারেন। টাকার কাছে মানুষ বাধ্য হয়েই ছুটে আসে। অবশ্য তিনি অতটা খারাপ লোক না। বেতন-বোনাস ভালোই পায় তার শ্রমিকরা।

তবে ওরা যাতে বিগড়ে না যায় সেজন্য তিনি একমাসের বেতন আটকে রেখেছেন সবার। জানুয়ারি মাসের বেতন হয় গিয়ে মার্চের দশ তারিখ। জীবনের এতটা পথ হেঁটে এসে আশরাফুল হক শিখেছেন মানুষকে ব্যবহার করতে হয় কীভাবে। এককালে তার নিজের জীবনটা কেটেছে অনেক কষ্টে। দুর্ভিক্ষের সময় একসের চালের আশায় তার মা শিকদারবাড়ির ঢেকিতে পাড় দিতে গেছেন।

এরপর সেই চাল দিয়ে পুরোপুরি ভাত রান্না হতো না। ফ্যানে-ভাতে মাখামাখি করে ওঠানো হতো। আটার জাউ খেতে খেতে ঘা হয়ে যাওয়া মুখে সেই ভাত যে কেমন মজার লাগতো! জৈষ্ঠ্যের খা খা রোদ্দুরে নাও নিয়ে বাপ যেতো বিলে মাছ ধরতে। কোনো বাতাস নেই। সব স্থির।

পাখিগুলো হা করে বাতাস নেয়ার চেষ্টা করছে। এসময় কোনো মাছ পানির ওপরে ওঠে না। তবুও শমসের আলী ছিপ ফেলতেন। আধা পোয়া নুন কেনার জন্য বেশ পরিমাণ মাছ ধরতে হতো। আশরাফুল হকের আর ভালো লাগে না।

শরিয়তপুর থেকে পদ্মা পার হয়ে চলে এলেন এপার, রাজধানী ঢাকায়। তখন তার বয়েস আর কত--বারো কি চৌদ্দ। মুড়ির টিন নামের সদরঘাট-কুড়িল সার্ভিস চলতো তখন। সামনের দিকটা ছিলো বর্তমানের বেডফোর্ড ট্রাকের মতো। বাসের জানালাগুলো ছিলো টিনের।

তিনি এসে নেমেছিলেন গেণ্ডারিয়া। কীভাবে এসেছিলেন এখন স্পষ্ট মনে নেই। হাঁটতে হাঁটতে চলে যেতেন গুলিস্তান, হাইকোর্ট মাজার, ফুলবাড়িয়া। সেদিনের দৃশ্যটা আজো তিনি ভুলতে পারেন না। হাইকোর্ট মাজারের সামনে এক লোক ভক করে বমি করে দিলো, আরেক লোক তা খেয়ে ফেললো।

কার্জন হলের সামনে এখনো যারা আছে, তারা হয়তো একজন আরেকজনের বমি খায় না; কিন্তু ওপরতলার ঝুটা খেয়েই তারা বাঁচে। এভাবেই তারা সন্তান জন্ম দিয়ে যাচ্ছে; চুলোচুলি করছে; দিন পার করছে। আশরাফুল হক লেগে গিয়েছিলেন বাইন্ডিংয়ের কাজে। বড় বড় নখের মধ্যে আঠা ঢুকে সবসময় কালো হয়ে থাকতো। সেগুলো নিয়েই বাইন্ডাররা ভাত খেতো, শরীর চুলকাতো, মালিকের কাছ থেকে মজুরি নিতো।

নখ বড় রাখার কারণ ছিলো ফর্মা ভাঁজ করতে এবং আঠা লাগাতে গেলে এই নখ খুব কাজে দেয়। বাইন্ডারদের জীবনে ঝক্কি-ঝামেলা কম। অন্ধকারের মধ্যে সারাদিন নীরবে কাজ করে যাও। এই কাজটা বাইরে করার যেহেতু কোনোই সুযোগ নেই, তাই ঘরেই থাকো সারাদিন। তবে হ্যাঁ, টেপ রেকর্ডার একটা ছিলো।

ফর্মার স্তূপের ওপর বসে বাইন্ডাররা বিনোদনে যোগ দিতো। । এখন কি তা বাদ দিয়েছে? এখন তো মনে হয় টেলিভিশনে অনেক খারাপ জিনিস দেখে। সেক্ষেত্রে কীসের ফর্মার ওপর তারা বসেছে তা খেয়াল করার কোনো বিষয় না। স্কুলে পড়ার সময় আশরাফুল হক শিখেছিলেন, বই যদি পায়ে লাগে বা নিচে পড়ে যায় তাহলে উঠিয়ে চুমু খেতে হয়।

কয়েকমাস চাকুরি করার পরে ঈদের সময় চলে এলো। সব বাইন্ডার বাড়ি যাবে। আশরাফুল হক ভাবছিলেন কী করবেন। বেশ কিছু টাকা তখন জমেও গিয়েছিলো হাতে। বেতনের সব টাকা তো আর খরচ হতো না।

মালিককে যদি বলতেন, আমি থাকতে চাই ঈদে, ফলাফল উল্টেও যেতে পারতো। তিনি হয়তো ধরে ফেলতেন, এই ছেলে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে। তখন চাকুরি শেষও হয়ে যেতে পারতো। একটা সপ্তাহ ঘুরেফিরে কাটিয়ে দেয়া কোনো ব্যাপারই হবে না ভেবে তিনিও অন্যদের সাথে মালিকের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বের হয়ে পড়লেন। শুরু হলো ঢাকা শহর মুখস্থ করার পালা।

মিটফোর্ড হাসপাতালে জীবনে প্রথম ছিন্নভিন্ন লাশ দেখা, সোয়ারিঘাটে মাছের আমদানিতে মিশে যাওয়া, বুড়িগঙ্গার এপারে ঝোপের মধ্যে সতীত্ব বিনষ্ট হওয়ার সাক্ষী থাকা--এসব করে করে কাটছিলো দিন। ঈদের দিনটাও একইভাবে কেটে গিয়েছিলো। তবে সবখানে কাগজ কুড়ানো ছেলেদেরকে দেখে মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন উশকখুশ করছিলো। শেষ পর্যন্ত একদিন সদরঘাটে এক ছেলেকে ধরে জিজ্ঞেস করেই ফেললেন, 'এই কাগজ কোন জাগায় বেচছ?' বাইন্ডিং কারখানার গ্রিপারের কাগজগুলোও মালিক বিক্রি করতো। কিন্তু কোথায় বিক্রি করতো তা আশরাফুল হক জানতেন না।

ছেলেটা কতক্ষণ তাকে নিরীক্ষণ করলো। তারপর জবাব দিলো, 'নয়াটোলা চিনছ?' 'না। ' 'নয়াটোলা গেলে পুরান কাগজ কিনার অনেক দোকান আছে। আমরা হ্যানো বেচি। ' মনের মধ্যে রেখে দিলেন নয়াটোলা।

এরপর আরো দুটো ঈদ চলে গিয়েছিলো। বাইন্ডিং কারখানায় আর ফেরা হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কে্ন্টিনে বয়গিরি করেছেন সেই সময়। প্রত্যেকটা হলে অনেকগুলো কাগজ জমতো। সেগুলো হলেরই কর্মচারীরা গিয়ে বিক্রি করে দিয়ে আসতো।

আশরাফুল হক এক দুপুরের পরে সিনেমা দেখার নাম করে নয়াটোলা গিয়ে পুরান কাগজের আদ্যোপান্ত জেনে আসে। হলের কর্মচারী শরিফের সাথে তার চুক্তি হয়, কাগজ বিক্রি করে, একই দাম পাবে। তবে নীলক্ষেতে নয়, আশরাফুল যেখানে ইচ্ছে গিয়ে বিক্রি করে দিয়ে আসবে। ভ্যানে করে হলের কাগজগুলো নয়াটোলা নিয়ে বিক্রি করার নতুন অধ্যায় শুরু হলো, যার স্থায়িত্ব ছিলো মাত্র তিন মাস। কাগজের দোকানের ছেলেদের সাথে কথা বলে জানতে পারলেন, ছেলেগুলো পুরান বইখাতার মধ্যে টাকা, প্রেমের চিঠি, ছবি, ময়ূরের পালক--এগুলো পায়।

গেণ্ডারিয়ায় দোকান খুঁজে পেয়েও গেলেন আশরাফুল হক। নিজেই দিলেন পুরান কাগজ কেনার দোকান। সদ্যযৌবনপ্রাপ্তির সাথে সাথে তার ব্যবসারও যৌবনের নদী ভরে উঠতে লাগলো দুইকূলে। সেই পুঁজি দিয়েই ঝুটের ব্যবসা, নিটিংয়ের কারখানা, এরপর সব। এখন তার সামনে থেকে জোছনা তার পা টিপে দেয়।

তার হুকুমের সাথে সাথে কাজ হয়ে যায়। কিন্তু তারপরও অন্য অনেক মানুষের মতো তিনিও নস্টালজিয়ায় ভোগেন। মাঝেমধ্যেই মনে হয় আবার কাগজের ব্যবসাটা শুরু করি। নাইন-টেনের কোনো বইয়ের মধ্যে কিশোরী মেয়ের প্রেমের চিঠি পেয়ে পড়া শুরু করে দিই। অনেকেই মনে করেন ব্যবসায়ীরা শক্ত মনের মানুষ।

তারা শুধু লোভ আর ভোগ চেনে। কিন্তু তাদের ভেতরেও উপলব্ধি থাকে। তারাও তো মানুষ। কিন্তু সেই উপলব্ধির প্রকাশ ঘটানো হয়ে ওঠে না। কখনো সেটা সময়ের অভাবে; কখনো বা বস হওয়ার কারণে।

জোছনাকে তিনি হঠাৎ প্রশ্নটা করেই ফেললেন, 'জোছনা কি কখনো প্রেম করেছো?' এমন প্রশ্নে মেয়েটা হতভম্ব হয়ে গেলো। এটাও ভাবলো কি না যে, তার স্যার পাগল-টাগল হয়ে গেছে হয়তো। সে বললো, 'গরিব মানুষের কি স্যার প্রেম করার সময় থাকে?' হাসিমুখেই বললো কথাটা। 'প্রেম করোনি ভালো কথা। কখনো কি প্রেমে পড়োওনি?' এই প্রশ্নে আবার সে দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে পড়লো হয়তো।

আশরাফুল হকের দিকে তাকিয়ে রইলো কতক্ষণ। হয়তো ভাবছে একথাটা বলা ঠিক হবে কি না। তাই ওকে সহজ হওয়ার জন্য তিনি আবার বললেন, 'শোনো জোছনা। একজন মানুষকে আরেকজন মানুষের ভালো লাগতেই পারে। এতে দোষের কিছু নেই।

সে তাকে নিয়ে স্বপ্নও দেখে অনেক সময়, অনেকদিন। কিন্তু স্বপ্নগুলো কিন্তু স্বপ্ন হয়েই থাকে। তুমি বলতে পারো আমার কাছে। ভয়ের কিছু নেই। এমনিতেই প্রশ্নটা করলাম।

জোছনা নিচের দিকে তাকিয়ে ডান হাত দিয়ে বাম হাতের বুড়ো আঙ্গুলের নখ খুঁটতে খুঁটতে বললো, 'আমাদের ক্লাশে একটা ছেলে পড়তো। সে প্রতিদিন একটা শার্টই পরে আসতো। কিন্তু শার্টটা সবসময় পরিষ্কার থাকতো। সম্ভবত সে ঈদের সময় একটা জামা পেতো। সেই জামাই ছিলো তার স্কুলের ইউনিফর্ম।

এতেই চলতো পুরো বছর। আমরাও গরিব ছিলাম। কিন্তু সে মনে হয় আমাদের চেয়েও বেশি গরিব ছিলো। ' 'আচ্ছা; তারপর?' 'তারপর আর কী? স্কুল শেষ হওয়ার পর সে হয়তো কোনো কলেজে ভর্তি হয়েছে। আমরা মেয়েরা থানাসদরের একটা গার্লস কলেজে ভর্তি হয়ে গেলাম।

' 'ছেলেটার বাড়ি তো তোমাদের গ্রামেই। পরে জানতে পারোনি সে কী অবস্থায় চলে গেছে?' 'কলেজে পড়ার সময় আব্বা অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়েন। সেজন্য তখন একটা কঠিন সময় পার হয়েছে। এই সময় যদিও মেয়েরা অনেক মাতামাতি করে, কিন্তু আমার মন অন্য কোনোদিকে দেয়ার মতো অবস্থা ছিলো না। তারপর আমার পরীক্ষার সময়ই তো আব্বা মারা যান।

মা আমাকে পরীক্ষার পরপরই খালার বাসায় পাঠিয়ে দেন। সেই থেকে ঢাকায়ই আছি। ' 'তবে ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময়?' 'আব্বা মারা যাওয়ায় আমাদের পরিবারের অবস্থা খুবই খারাপ অবস্থায় চলে যায়। আমার ছোট ভাইটা কেবল ইন্টার পরীক্ষা দিলো। তখন ও পড়তো সিক্সে।

আমি সপ্তায় পাঁচটা টিউশনি করিয়েছি। সেই টাকা পাঠিয়েছি মায়ের কাছে। সেটা দিয়েই আমার মা আর ভাই কোনোমতে চলতো। ' আশরাফুল হক একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। ইবনে খালদুন বলেছেন বারো মাইল পরপর একেকটা অঞ্চলের মানুষের কালচারে পরিবর্তন দেখা যায়।

মানুষের জীবনটাও কি এরকম? পাঁচ বছর পরপর বদলে যায়? জীবন বদলেনি এমন মানুষ তিনি কমই পেয়েছেন। অনেকে এই বদলটা ধরতে পারে না। কারণ বেশিরভাগ মানুষ অর্থনৈতিক পরিবর্তনটাকেই কেবল পরিবর্তন হিসেবে দেখে। অন্যকিছু তাদের চোখে পড়ে না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.