আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দরজার ওপাশ থেকে

যা লিখি, হয়ত কিছুই লিখি না। যা লিখব হয়ত অনেককিছুই লিখব। আসল কথা হলো, গল্প ছাড়া কিছুই লিখতে পারি না # বাস থেকে নামতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে যাওয়াতে আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে নীলু এদিক সেদিক তাকিয়ে কোনো কিছু খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়ে কী করবে বুঝে ওঠার আগেই সম্পূর্ণ ভিজে গেল। তার নতুন কেনা শাড়িটি গায়ের সাথে লেপ্টে গিয়ে কিছু পথচারীকে বাঁকা চোখে তাকানোর সুযোগ করে দিল, বিব্রত হয়ে সে হাঁটতে শুরু করল; গন্তব্য খুব বেশি দূরে নয়। গতকাল সারাদিন বৃষ্টি হলেও সকাল থেকে সূর্য ওঠায় নীলু ছাতা আনার কথা ভাবে নি।

ছাতা অনাবশ্যক জটিলতার সৃষ্টি করে এবং দিনশেষে ছাতা হারিয়ে ভিজতে ভিজতে বাড়িতে ফিরতে হয়। সুতরাং কাজে বের হয়ে এভাবে কাকভেজা হয়ে যাওয়া তার জন্য মোটেও নতুন কিছু না, এমনকি বৃষ্টিতে ভিজতে সে আনন্দবোধ করে, পবিত্রবোধ করে। আজ পরিস্থিতি ভিন্ন, আজ সে ভীষণ বিরক্ত হয়ে মাথা নিচু করে কিছুটা দৌড়ানোর ভঙ্গিতে এগোতে থাকল। টং এর দোকানের চা বানানোর টুংটাং আওয়াজ হচ্ছে। রিকশা-ওয়ালা, পথচারীরা ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে কিংবা নীলুর দিকে তাকিয়ে আছে।

এতগুলো উৎসুক চোখ পার হয়ে কাঙ্খিত ঠিকানায় পৌছে কলিং বেল খুঁজে না পেয়ে কাঠের দরজায়- প্রথমে ধীরে এবং পরে শব্দ করে ধাক্কা দিয়ে সাড়া পেতে ব্যর্থ হয়ে দরজার পাশে রাখা মোড়াটিতে বসামাত্র নীলু খেয়াল করল বৃষ্টি থেমে গেছে আর ভেতর থেকে ভেসে এলো নারীকন্ঠে কারো ফোঁপানোর শব্দ। ব্যাপারটা কী? কে কাঁদছে? নীলুর জানামতে এ বাড়িতে দুজন মানুষ থাকে। অভ্র আর অভ্রের মা। তারমানে অভ্রের মা কাঁদছে? নীলু উৎকন্ঠিত হয়ে এবার শব্দ করে জানতে চাইল- কেউ কী আছেন বাসায়? ওপাশ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে অভ্রের ফোনে ডায়াল করে মোবাইল বন্ধ পেয়ে নীলু আবার দরজায় করাঘাত করে। সাড়া না পেয়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া মাত্র আবার বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়।

নিজেকে হঠাৎ নিয়তিতাড়িত মনে হয় নীলুর। প্রকৃতি যেন চাইছে সে এখানে থাকুক, যেন এই মোড়াটা এখানে রাখা হয়েছে নীলু বৃষ্টিতে ভিজে আসবে, এখানে বসবে তারপর বিরক্ত হয়ে বারবার ঘড়ি দেখবে যদিও কোথাও যাওয়ার তাড়া তার থাকবে না। কাল রাতে সে অভ্রকে জানিয়েছিল বাসায় আসার কথা। পাত্তাই দেয় নি। বলেছিল, বাসায় এসে কী করবে? আমি তোমার মায়ের সাথে দেখা করব।

এই উত্তরে অভ্রের হাসি শুনে ফোন রেখে দিয়ে ভেবেছিল, আর কোনোদিন কথা বলবে না। অথচ সকাল পার হয়ে যখন দুপুর হবে হবে করছে তখন নিজের অজান্তেই রেডি হয়ে গেল, অনেক যত্ন করে শাড়ি পড়ল, কপালে ছোট্ট একটা টিপ দিল। আজ ছুটির দিনে অভ্র বাসায় থাকবে, এটা ভেবেই সে বের হয়েছিল। মা কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়েছিল। চোখে ছিল জিজ্ঞাসা।

জানতে চান নি কিছু, কখনো জানতে চান না। শুধু একবার বললেন, ছাতা নিয়ে যা, বৃষ্টি পড়তে পারে। মা’র কথা শোনে নি আর এখন বৃষ্টিভেজা শাড়ি পড়ে বসে আছে। সিএনজি থামার শব্দ হলো। মূল ফটক পার হয়ে ছোট্ট একটা বাগানের মতো, তারপর একতলা এই বাড়িটি।

বারান্দায় বসে থাকা নীলুকে দেখে অভ্রের কোনো ভাবোদোয় হলো না। শান্ত ভঙ্গিতে এসে বলল, একেবারে ভিজে গেছ। সাঁতার কেটে এলে নাকি? এই কথা বলে শান্তভঙ্গিতে দরজা খুলল। বিস্মিত হয়ে নীলু দেখল দরজায় বিশাল বড় তালা ঝোলানো, মানে বাড়িতে কেউ নেই। নাকি অভ্র মা’কে তালা দিয়ে বের হয়েছে? কান্নার শব্দ এলো কোথা থেকে? আপনি খালাম্মাকে তালা দিয়ে বের হয়েছেন কেন? ঘরে ঢুকতে ঢুকতে নীলুর প্রশ্ন শুনে অভ্র বলল, মা বাসায় নেই।

গ্রামের বাড়িতে গিয়েছে। ভালোই হয়েছে তুমি এসেছ। মেঘলা আবহাওয়া, আমি আছি আর তুমি আছো। একদম ভেতর থেকে কেঁপে উঠল নীলু। আজ বের হবার আগে মা ওভাবে তাকিয়েছিল কেন? আজ কী কিছু হবে? মা’তো কোনোদিন ছাতা নিয়ে বের হতে বলে না, আজ কেন বললেন? আর বাসায় কেউ না থাকলে আমি কার কান্নার আওয়াজ শুনলাম? চুপচাপ পেছন পেছন ভেতরে ঢোকে নীলু।

অথচ মনে হচ্ছিল তার পা আটকে আছে, তারপর ও কে যেন তাকে ধাক্কা দিয়ে ভেতরে পাঠিয়ে দিল। বসার ঘরে আলোছায়ার খেলা। অভ্র লাইট জালিয়ে দিলে নীলুর কিছুক্ষণ সময় লাগে ধাতস্থ হতে। আগে কোনোদিন আসে নি। ভালো করে তাকিয়ে দেখি নির্জনতার মাঝেও বড় বেশি নির্জন বাসাটি।

ড্রয়িং রুমে গিয়ে বসে সে। আহামরি কোনো সোফা সেট নয়। মনে হচ্ছে তাদের বাড়ির মতোই সেগুন কাঠের সোফা। অভ্র বলল, তুমি বসো। আমি আসছি তোয়ালে নিয়ে, একেবারে ভিজে গেছ।

ভিজে যাওয়ার কথাটা শুনে নীলু বুঝতে পারল সে দৃষ্টিকুটু ভাবে ভিজে আছে। অরেঞ্জ কালারের পিউর সিল্ক শাড়িতে কী তাকে অরেঞ্জের মতো লাগছে? তাকে কী খুব আকর্ষণীয় লাগছে? জিজ্ঞেস করতে গিয়েও করে না। তবে এটা জানে, অভ্র কমলা খেতে খুব পছন্দ করে। তুলনাটা অশ্লীল, নীলু নিজেই লজ্জা পেয়ে যায়। খেয়াল করে সোফার পাশেই খাট রাখা, সিঙ্গেল খাট।

এটা কিসের ইঙ্গিত দেয়? অনেক বাড়িতেই ড্রয়িং রুমে খাট থাকে ,গেস্ট এলে বাসার ছোট ছেলে নিজের রুম ছেড়ে দিয়ে সেখানে এসে থাকে। কিন্তু এখন এখানে খাট থাকায় নীলু আরো আড়ষ্ট বোধ করে। বেশকিছু সময় কেটে যায়, ভেতর থেকে খুটুর খুটুর শব্দ হচ্ছে। কিন্তু অভ্রের আসার নাম গন্ধ নেই। # নীলু সবেমাত্র ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে।

এখন থেকেই বিয়ের প্রস্তাব আসা শুরু করেছে। নীলুর এককথা অচেনা কাউকে বিয়ে করবে না, এখন-ই বিয়ে করবে না। বাংলাদেশের মেয়েদের এই অবস্থার ভেতর দিয়ে যেতে হয়, এটা নতুন কিছু না। তাছাড়া নীলুর ফ্যামিলি তাকে জোর করে বিয়ে চাপিয়ে দেবে না। নিশ্চিন্ত ছিল সে।

কিন্তু হঠাৎ করে সব ওলট-পালট হয়ে গেল। অন্যান্য দিনের মতো নির্জীব এক দুপুরে নীলুর ছোট ভাই স্বচ্ছ এসে তাকে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে বলল, আপু তোর জন্য মামা পাত্র ঠিক করে এনেছে। নীলু একটা হাই তুলে শুয়ে পড়তে নিলে স্বচ্ছ তাকে বলে, এবার একটা বুড়া ব্যাটাকে ধরে নিয়ে আসছে। তুই যা তো এখান থেকে। তাদের এই মধ্যবিত্ত পরিবারে প্রতিটা দিন একরকম হলেও মাঝে মাঝে এই বড় মামার কারণে উত্তেজনা তৈরী হয়।

কখনো দুই তিন হাজার টাকা দিয়ে বিশাল কোনো মাছ কিনে আনেন, কখনো বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসেন, কখনো নিজেই বিয়ে করবে বলে ঘোষণা দিয়ে বসে থাকেন। তো এই মামা যখন বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে বাসায় আসবেন তখন তা যে স্বাভাবিক হবে না এটাই স্বাভাবিক। নীলু পাত্তা না দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। তবে তখনো সে জানত না, এই ঘুমিয়ে পড়া পরবর্তীতে তাকে আর ঘুমোতে দেবে না অথবা সে নিজেই ঘুমোতে চাইবে না। সন্ধ্যার সময় ঘুম থেকে উঠে শুনে বাবার নাকি ছেলে খুব পছন্দ হয়েছে।

সস্তা রোমান্টিক কোনো ছেলে নয়, রীতিমতো প্রতিষ্ঠিত ইঞ্জিনিয়ার, নিজস্ব ফার্ম আছে, ঢাকায় নিজেদের বাড়ি আছে। তো এই পাত্র হাতছাড়া করবেন না, যদিও নীলুর বাবা মা যথেষ্ঠ উদার কিন্তু তারাও এবার বলছে রাজি হয়ে যেত। মামা হাসিমুখে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আর বলছেন ছেলে তো নয় যেন হীরের টুকরো। তারপর বিরক্ত হয়ে নীলু সিদ্ধান্ত নেয় সে কথা বলবে অভ্রের সাথে। আপনার নাম শুনেই অভ্র নাম শুনেই কী-বোর্ড মনে হয়।

এই কথা বলে শুরু হয়েছিল কথোপকথন আর এখন সে কথা খুঁজেই পায় না। সামনে এলেই হাত-পা কাঁপতে থাকে। অভ্র কিভাবে আকর্ষণ করল তাকে? ভেবে পায় না নীলু। এমন নয় যে সে কখনো কোনো ছেলের সাথে মেশেনি, কেউ তাকে ভালোবাসার কথা জানায়নি কিংবা তার কাউকে ভালো লাগে নি; তারপরও অভ্র অন্যরকম কিছু। সেই অন্যরকম হওয়াটা ঠিক কবে থেকে শুর হলো মনে করতে পারে না।

নীলু যখন অভ্রকে জানায় সে বিয়ে করতে পারবে না তখন অভ্র বলেছিল, যাক বাঁচালেন। স্বাভাবিকভাবেই নীলুর নারী স্বত্ত্বায় আঘাত লেগেছিল এই ভেবে যে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে এত খুশি হবার কী আছে? তখন সে কথা ঘুরিয়ে বলেছিল, আমাদের আসলে পরস্পরকে জানা প্রয়োজন। অভ্র কিছু বলে নি। মৃদু হেসে বলেছিল, জানা প্রয়োজন নাকি জানি না, তবে এটা জানি আমাদের বিয়ে না হলেই ভালো, কারণ আপনাকে আমার পছন্দ হয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে খুব একটা অদ্ভুত একটা কথা যে পছন্দ হলে বিয়ে কেন করতে চাইবে না।

এর পেছনে অভ্রের নিজস্ব যুক্তি ছিল যে অযথা কেন সে অন্য একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করবে। কিন্তু কেন নষ্ট হবে এই সম্পর্কে যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয় তার মাঝে ব্যাপক উদাসীনতা লক্ষ্য করা যায় এবং তখন সে আনমনে উপরের দিকে তাকিয়ে থাকে সেটা আকাশ হোক, আর কোনো রেস্টুরেন্টের ছাদ হোক। মাঝে মাঝে ভীষণ মেজাজ খারাপ হয় তার লোকটার কথা শুনে। না অভ্রের উপর না, নিজের উপর। কেননা অভ্র যখন ভীষণ জ্ঞানদায়ক কথা বলে সে তখন ছোট্ট খুকীর মতো শোনে।

তাকেই কেন শুধু শুনতে হবে? নীলু ভাবত তার যদি প্রেম হয় তবে সে রাত বিরেতে প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে হেঁটে বেড়াবে। অথচ অভ্রকে এসব বলার সুযোগ নেই। এখনো বলতে পারেনি ভালোবাসার কথা। অবশ্য বলার কী দরকার? বিয়ে তো হচ্ছেই। হ্যা, নীলু এই সিদ্ধান্ত জানাতেই আজ এসেছে।

সে বিয়ে করতে চায়, এভাবে ঝুলে থাকতে চায় না, কাউকে ঝুলাতেও চায় না। # ভাবনার জাল বিস্তার করার মুহূর্তে অভ্র চলে আসে, হাতে তোয়ালে নিয়ে। গা মুছে ফেল, ভয় পাচ্ছ নাকি? ভয় পাব কেন? তোয়ালে হাতে নিয়ে বসে থাকে নীলু। উঠে যাওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তোমার সাথে আমার জরুরী কিছু কথা আছে।

এভাবে বসে থেকো না। ঠান্ডা লাগবে, যাও ফ্রেশ হয়ে এসো। কিছুক্ষণ আগের দুষ্টুমির চালে বলা কথা বলতে থাকা অভ্র এখন নিমিষেই আবার বড় মানুষের মতো হয়ে যায়। নীলু তবু বসে থাকে, সে কী চায়, কী জন্য এসেছে এই মুহূর্তে কিছুই তার মনে পড়ছে না। তার মাথায় প্রশ্ন এখন কেবল একটা, ড্রয়িং রুমে খাট এত সুন্দর করে গোছানো কেন? এই খাট কী চাচ্ছে সে ওলট-পালট হোক? নীলু ঢুকতে থাকে কিংবা ধুঁকতে থাকে চিন্তার ভেতরে, চিন্তার গভীরে।

আসলে চিন্তাটা কী সেটাই ধরতে পারছে না অথবা বলা যায় ধরে ফেলেছে কিন্তু চাচ্ছে না প্রকাশ হোক। আমি আসলে আপনার কাছে একটা কথা বলতে এসেছি। আমার পক্ষে তোমাকে বিয়ে করা সম্ভব না। আপনাকে কে বলল, আমি বিয়ে করতে চাই? অভ্র চুপ করে বসে থাকে। নীলু চুপ করে বসে থাকে।

তার কাঁদতে ইচ্ছে করছে কিন্তু চোখ আশ্চর্যরকম শুকনো। আমার মনে হয় তোমার চলে যাওয়া উচিত। নীলু ঠান্ডাস্বরে বলে, চলে যাচ্ছি। কিন্তু আমি কী জানতে পারি আপনি যদি আমাকে বিয়ে নাই করবেন তবে বিয়ের প্রস্তাব কেন পাঠালেন? আমি বিয়ের প্রস্তাব পাঠাইনি। এগুলো মা করেছে।

এরপর তুমি আমার সাথে কথা বলেছ, আমি বলেছি কিন্তু কখনো বলিনি যে বিয়ে করব। তবে এসব কথা অবান্তর, তুমি চলে যাও নীলু। অবান্তর হবে কেন? আমার কী জানার অধিকার নেই? নীলু গলা ধীরে ধীরে ভিজে আসছে সে বুঝতে পারে এটাও বুঝতে পারে এভাবে বসে থাকার কোনো মানে নেই, এখানে আসার কোনো মানে নেই এমনকি চলে যাওয়ার কোনো মানে নেই। চলে গেলেই বা কোথায় যাবে? মন এখানে পড়ে থাকবে, যদিও ক’দিন আগেও কেউ তাকে মন বিষয়ক এমন কোনো সূত্রের কথা কিংবা নিয়মের কথা বললে সে হেসেই উড়িয়ে দিত। অভ্র হাল ছেড়ে দেওয়ার ভঙ্গিতে বলে, তোমার আমার বয়সের পার্থক্য প্রায় বার বছর।

তুমি চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত বোধ করো, আমি তখন ঘুমোতে পছন্দ করি, তুমি বন্ধু-বান্ধব নিয়ে হৈ-হুল্লোড় করো আর আমার কাছে সেটা সময়ের অপচয়, তুমি কিছু হলেই চোখ লাল করে ফেল আর আমার মনে হয় ন্যাকামি। দু’টো মেরু কখনো এক হতে পারে না, এজন্য বলছি এসব অবান্তর। আপনি জেনারেশন গ্যাপের কথা বলছেন, তবে আপনি কেন আমাকে কাছে টানলেন? কেন আপনি থেকে তুমিতে নেমে আসলেন? আমি কাউকে কাছে টানিনি। এত ছোট একটা মেয়েকে তুমি করে ডাকব এটাই স্বাভাবিক। অভ্র এবার অসহায় বোধ করে।

প্রথম থেকে সে অসহায় ছিল কিন্তু এখন তা প্রকাশ পায় এবং নীলু সেটা বুঝতে পারে। আপনি এতদিন কেন কাউকে বিয়ে করেন নি? অভ্রকে কোনোদিন রাগ করতে দেখেনি নীলু। এবার অভ্র খেপে গিয়ে বলে, শুনতে চাও কেন? এরপর একটানা দুইমিনিট বলে যায় অভ্র। নীলু উঠে দাঁড়ায়। অচেনা এক অনুভূতিকে সাথে নিয়ে বের হওয়ার পথে পা বাড়ায়।

দরজার বাইরে এসে দেখে বৃষ্টি থেমে গেলেও আকাশ ভীষণভাবে মেঘলা। আর সাথে সাথেই আবার কান্নার শব্দ শুনতে পেল। আর বুঝতে পারল, এটা আসলে তার কান্নার শব্দ যা তার ভেতরে বসে আছে, বাইরে আসতে পারছে না, হয়ত কোনোদিন পারবে না। অভ্র বলেছিল, আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারি। তুমি মানসিকভাবে সুখী হবে কিন্তু কখনো আমাকে পাবে না।

আমি মেয়েদের ভালবাসতে পারি না, আমি সমকামি। তুমি কখনো শরীরের ভালোবাসা পাবে না। তুমি কী পারবে কেবলমাত্র মন দিয়ে জীবন কাটাতে? ( পুরোনো গল্প) ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।